জাতীয়
৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ

মা ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ রক্ষায় আগামী ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুত, বেচাকেনা ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর জেলা নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান।
জানা যায়, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান চালাতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে জেলেরা নৌকা ও জালসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম তীরে তুলতে শুরু করেছেন।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে বুধবার দিনব্যাপী চাঁদপুর সদর উপজেলার আনন্দবাজার, লালপুর মৎস্যবাজার, আমীরাবাদ ঘাট, চর উমেদ ও রাজরাজেশ্বর এলাকায় পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ইলিশের জন্যই চাঁদপুর সারা দেশে পরিচিত। মা ইলিশকে নিরাপদে ডিম ছাড়তে না দিলে ভবিষ্যতে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই মা ইলিশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু শাস্তির জন্য নয়, বরং জেলেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য। আজ যদি আমরা মা ইলিশ রক্ষা করি, আগামী দিনে আরও বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে এবং উপকৃত হবেন আপনারাই।
তিনি আরও বলেন, আইন অমান্য করলে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে জেলেদের সহায়তায় সরকার খাদ্য সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। চাঁদপুরের ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে এ বছর ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হবে, যা গতবারের তুলনায় ৫ কেজি বেশি।
কড়া নজরদারিতে নদী
নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময়ে কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, মৎস্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ টিম প্রতিদিন নদীতে টহল দেবে।
পথসভায় বক্তব্য রাখেন নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাপ্পি দত্ত রনি, নৌ পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহম্মেদ, কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনের চীফ পেটি অফিসার আব্দুস সামাদ।
চাঁদপুর জেলা নৌ পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জেলেদের উদ্দেশে বলেন, ২২ দিন ধৈর্য ধারণ করুন, মা ইলিশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখুন এবং সরকার প্রদত্ত সহায়তা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জাতীয়
বাংলাদেশে সব ধর্মই সম্মানের সঙ্গে পালন করা সম্ভব: প্রেস সচিব

বাংলাদেশে সব ধর্মই মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে পালন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, দেশের ৩৩ হাজারেরও বেশি মণ্ডপ ও মন্দিরে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যেই পূজা উদযাপন হয়েছে। ঐক্যের মাধ্যমে ভিন্নতায়ও অসাধারণ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকে তার ভেরিফাইড একাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আরেকটি চমৎকার দুর্গাপূজা উপহার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সর্বত্র সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ! অন্তর্বর্তী সরকার ১৪ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছে, আর এ নিয়ে দ্বিতীয় বছর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পেরেছি এই সর্ববৃহৎ হিন্দু ধর্মীয় উৎসব।
তিনি লেখেন, যখন প্রধান উপদেষ্টা নিউইয়র্ক থেকে গভীর আগ্রহ নিয়ে উৎসব পর্যবেক্ষণ করেছেন, আমি সৌভাগ্যবান যে আজ সকালে ঢাকায় পূজা উদযাপনে অংশ নিতে পেরেছি। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গিয়ে যে উচ্ছ্বাস, রঙ ও মিলনমেলার আবহে আমি ভেসে গেছি—তা সত্যিই অবিস্মরণীয়।
তিনি আরও লেখেন, হ্যাঁ, এখানে-সেখানে কিছু প্ররোচনার ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু সার্বিকভাবে আমরা দেশের ৩৩ হাজারেরও বেশি মণ্ডপ ও মন্দিরে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যেই পূজা উদযাপন করেছি। এটি আবারও প্রমাণ করেছে যে বাংলাদেশে সব ধর্মই মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে পালন করা সম্ভব। আর এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—ঐক্যের মাধ্যমে ভিন্নতায়ও আমরা কত অসাধারণ সাফল্য অর্জন করতে পারি।
জাতীয়
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক মারা গেছেন

ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহহি রাজিউন)। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তিনি মারা যান। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
আহমদ রফিকের স্বাস্থ্যের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী। তিনি চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আহমদ রফিকের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। ইসমাইল সাদী বলেন, ‘আহমদ রফিক আজ রাত ১০টা ১২ মিনিটে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
ভাষা আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিষয়ে গবেষণা করেছেন আহমদ রফিক। তাঁর কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে লিখিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি দুই বাংলায় অগ্রগণ্য। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন আহমদ রফিক।
আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিনি রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। আহমদ রফিকের স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে। তিনি নিঃসন্তান।
জাতীয়
বুড়িগঙ্গায় চলছে প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে কড়া নিরাপত্তা

হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হচ্ছে আজ। সকাল থেকে বিজয়া দশমীতে পূজা অর্চনার পর বিকেল ৪টা থেকে চলছে প্রতিমা বিসর্জন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর বিনাস্মৃতি স্নান ঘাট, লালকুঠি ঘাট ও নওয়াব বাড়ি ঘাটে চলছে এই বিসর্জন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, বুড়িগঙ্গা নদীর ওয়াইজঘাট এলাকার বিনাস্মৃতি স্মান ঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে ঢাকার বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে আসা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। অনেকে মন্ত্র পাঠে বিদায় দিচ্ছেন দেবীদুর্গাকে। কেউ কেউ আবার নেচে-গেয়ে আনন্দ করছেন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বিনাস্মৃতি স্মান ঘাটে ১৭টি মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ডুবুরি দল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র্যাবসহ নৌ পুলিশের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় দেবী বিসর্জনের কার্যক্রম চলছে। বিসর্জন উপলক্ষে ভিক্টোরিয়া পার্ক, সদরঘাটের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নদীতে সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছেন নৌ পুলিশ ও ডুবুরি দল।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কোতোয়ালি শাখার সভাপতি সুজন কুমার মজুমদার বলেন, দীর্ঘ লাইনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমা নিয়ে আসছে পূজা উদযাপন কমিটি। বাংলা বাজার মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত যানজট লেগে আছে।
তিনি বলেন, যে পরিমাণ মণ্ডপ এখনো বাকি আছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে রাত ১২টার পরও বিসর্জন কার্ক্রম চলতে পারে।
জাতীয়
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি

এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ৭ অক্টোবর নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কীভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু করা যায় সংলাপে সে বিষয়ে মতামত নেবে ইসি।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ইসির জনসংযোগ শাখার কর্মকর্তারা বিষয়টি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ৭ অক্টোবর সকালে ইসির সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপে বসবে সংস্থাটি। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মোহাম্মদ আবু হেনাসহ সংশ্লিষ্টদের এতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। ওইদিন বিকেলে নারী নেত্রীদের সঙ্গে বসবে ইসি। এতে মোট ৪০ জনের মতামত বা পরামর্শ নেওয়ার কথা রয়েছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভোটের সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। ওইদিন সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া জুলাই যোদ্ধা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বসবে ইসি।
জাতীয়
শাপলা’র বিকল্প প্রতীক বেছে নিতে এনসিপিকে চিঠি ইসির

নিবন্ধনের প্রাথমিক পর্যালোচনায় বিবেচিত হওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ৭ অক্টোবরের মধ্যে একটি প্রতীক বেছে নিতে হবে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে এনসিপিকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি নির্বাচন পরিচালনার বিধিমালায় না থাকায় এনসিপির পছন্দের তালিকায় রাখা প্রথম প্রতীক ‘শাপলা’ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানানো হয় চিঠিতে।
গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ নতুন দল নিবন্ধন নিয়ে ইসির সিদ্ধান্ত বিষয়ে এ চিঠি পাঠান।
চিঠিতে ইসি জানায়, জাতীয় নাগরিক পার্টি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল, যা প্রাথমিক পর্যালোচনায় গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। দলটির আবেদনপত্রে পছন্দের প্রতীকের ক্রমানুযায়ী শাপলা, কলম ও মোবাইল উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৯(১) অনুযায়ী প্রার্থীর অনুকূলে বরাদ্দের জন্য নির্ধারিত প্রতীকের তালিকায় ‘শাপলা’ প্রতীকটি বর্তমানে অন্তর্ভুক্ত নেই।
এ অবস্থায় দলটিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৯০৮ (১) (খ)-এর বিধান সম্পর্কে অবগত করা হয়। ওই বিধান অনুযায়ী, কোনো দল কর্তৃক মনোনীত সব প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত প্রতীক থেকে পছন্দকৃত যে কোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এইভাবে বরাদ্দকৃত প্রতীক দলটির জন্য সংরক্ষিত থাকবে। যদি না দলটি পরবর্তীতে অন্য কোনো প্রতীক লাভে ইচ্ছা প্রকাশ করে।
এই জটিলতা নিরসনে নির্বাচন কমিশন এখন জাতীয় নাগরিক পার্টিকে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৯ (১) অনুযায়ী ইসির দেওয়া প্রতীকের তালিকা থেকে এখনো বরাদ্দ হয়নি এমন একটি প্রতীক দ্রুত পছন্দ করে নিতে বলেছে।
দলের নিবন্ধনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পছন্দের প্রতীক আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে কমিশনকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।