জাতীয়
নভেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ৫০৭ জনের
গত নভেম্বর মাসে দেশে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ৫৭৭টি দুর্ঘটনায় ৫৫৩ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু সড়ক দুর্ঘটনাতেই ৫২৬টি ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০৭ জন, আহত হয়েছেন ৮৯৯ জন।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নভেম্বর মাসে রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে সংঘটিত সাতটি দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হন এবং চারজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথ মিলিয়ে মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭৭টি।
এই সময়ে সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ছিল উদ্বেগজনক। নভেম্বর মাসে ১৯৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০১ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ, মোট নিহতের ৪১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং আহতের ২০ দশমিক ৮২ শতাংশ।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এখানে ১৫৫টি দুর্ঘটনায় ১৩২ জন নিহত এবং ২৫৭ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে ১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২১ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৯ জন।
সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ জন সদস্য, ১১৩ জন চালক, ৯৭ জন পথচারী, ৪১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৫ জন শিক্ষার্থী, ১২ জন শিক্ষক, ৮০ জন নারী, ৬০ জন শিশু, ৫ জন চিকিৎসক, ৫ জন সাংবাদিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৬ জন নেতাকর্মীর পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন ৪ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন র্যাব সদস্য, ১ জন সেনা সদস্য, ৫ জন চিকিৎসক, ১ জন সাংবাদিক, ১০৯ জন চালক, ৯৩ জন পথচারী, ৭১ জন নারী, ৫০ জন শিশু, ৪৩ জন শিক্ষার্থী, ১৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ১২ জন শিক্ষক এবং ৬ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নভেম্বর মাসে সংঘটিত দুর্ঘটনায় মোট ৭৪৬টি যানবাহনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২০ দশমিক ২৪ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৩ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭ দশমিক ১০ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯ দশমিক ১১ শতাংশ নছিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ কার, জিপ ও মাইক্রোবাস।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট দুর্ঘটনার ৪৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনায় ঘটেছে। এছাড়া ২৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষে, ১৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ অন্যান্য কারণে, ০ দশমিক ৫৭ শতাংশ ওড়না চাকায় পেঁচিয়ে এবং ০ দশমিক ৭৬ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষে ঘটে।
সড়কের ধরন অনুযায়ী দুর্ঘটনার চিত্রে দেখা যায়, ৩৮ দশমিক ০২ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৪ দশমিক ৭১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে এবং ৩০ দশমিক ২২ শতাংশ ফিডার রোডে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা মহানগরীতে ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ০ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং রেলক্রসিংয়ে ০ দশমিক ৭৬ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে গর্ত সৃষ্টি, মহাসড়কে অবাধে ঝুঁকিপূর্ণ যান চলাচল, রোড সাইন ও মার্কিংয়ের অভাব, মিডিয়ান না থাকা, নির্মাণ ও যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য, উল্টোপথে গাড়ি চালানো, চাঁদাবাজি, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং বেপরোয়া ও বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানো—এসবই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সংগঠনটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার জোরদার, মহাসড়কে আলোকসজ্জা, দক্ষ চালক তৈরি, ডিজিটাল ফিটনেস ব্যবস্থা, সার্ভিস লেন ও ফুটপাত নির্মাণ, চাঁদাবাজি বন্ধ, রোড সাইন ও মার্কিং স্থাপন, সড়ক পরিবহন আইন ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ, আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, মানসম্মত সড়ক নির্মাণ, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন স্ক্র্যাপের সুপারিশ করেছে।
এমকে
জাতীয়
নির্বাচন-গণভোট আয়োজনে ইসিকে সহযোগিতা দিতে পরিপত্র
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা দিতে পরিপত্র জারি করেছে সরকার। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব, সচিব, রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তা, সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং মাধ্যমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকদের কাছে এ পরিপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ এবং গণভোট একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লিখিত প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ইসি এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে। ইসি সচিবালয়ের অনুরোধক্রমে সরকারের পক্ষ হতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, নির্বাচনসংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রিসাইডিং অফিসার/সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার/পোলিং অফিসার নিয়োগ করার প্রয়োজন হবে। সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনের বিভিন্ন দায়িত্ব প্রদান করা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনগুলো ভোটকেন্দ্র হিসেবে এবং প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা প্রয়োজন হবে।
‘নির্বাচন কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। অতীতেও তারা নির্বাচনের কাজে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে ইসিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা দিয়েছেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘নির্বাচনি কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১’ বলবৎ রয়েছে। এতে কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী নির্বাচনসংক্রান্ত কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তিনি তার এরূপ নিয়োগের তারিখ থেকে নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ইসির অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন।’
পরিপত্রে বলা হয়, প্রেষণে চাকরিরত থাকাকালে নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের বিষয়ে ইসি এবং ক্ষেত্রমত রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণে থাকবেন এবং তিনি তার যাবতীয় আইনানুগ আদেশ বা নির্দেশ পালনে বাধ্য থাকবেন। প্রেষণে চাকরিরত থাকাকালে নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব প্রাধান্য পাবে। এমতাবস্থায়, সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে রিটার্নিং অফিসারের যে কোনো আইনানুগ নির্দেশ জরুরি ভিত্তিতে পালনের নিশ্চয়তা বিধান করা প্রয়োজন।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৬ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৫ অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে সহযোগিতা করা সবার একটি অবশ্যপালনীয় দায়িত্ব। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪৪৬ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী নির্বাচনি সময়সূচি জারি হওয়ার পর হতে ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত ইসির অনুমতি ছাড়া ওই অনুচ্ছেদে বর্ণিত কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করা যাবে না বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লিখিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে তিনটি ব্যবস্থা নিতে হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
১. আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে পালন করে ইসিকে সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থা হতে তাদের অধীন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অবিলম্বে নির্দেশ দিতে হবে।
২. শিক্ষা মন্ত্রণালয়/প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাদের প্রতিও এমন নির্দেশ জারি করতে হবে।
৩. নির্বাচন পরিচালনার কাজ অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠান/সংস্থাকে তাদের যে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী নির্বাচনের কাজে জড়িত আছেন, নির্বাচনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ছুটি প্রদান বা অন্যত্র বদলি করা বা নির্বাচনি দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো দায়িত্ব প্রদান হতে বিরত থাকতে হবে।
উল্লিখিত নির্দেশনা জারিসহ আনুষঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয় পরিপত্রে।
জাতীয়
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় করা মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মতিঝিল বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানার দায়েরকৃত একটি মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলাটি ডিবি মতিঝিল বিভাগ তদন্ত করবে।
এর আগে, রোববার রাতে ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানা মামলা হয়। পুলিশ বলেছে, মামলায় ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুলসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ জাবের বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। হত্যার পরিকল্পনা, অর্থের জোগানদাতা পৃষ্ঠপোষকতাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর দুপুরে নির্বাচনী প্রাচারণা চালানোর সময় রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে মতিঝিল দিক থেকে একটি কালো মোটরসাইকেলে করে দুজন ব্যক্তি আসে। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি ক্লোজ রেঞ্জ (খুব কাছ) থেকে হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। হামলার পরপরই মোটরসাইকেলটি দ্রুতগতিতে এলাকা ত্যাগ করে। এরপর হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছে। সেখানে থেকে গুরুতর অবস্থায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তবে, মূল আসামি এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে। গুলি করা সেই ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম জানান, ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী মূল আসামি দেশেই আছে। সন্দেহভাজন হামলাকারীদের পাসপোর্ট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
সুদানে নিহত সেনাদের নেমপ্লেট পরে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন প্যারাট্রুপাররা
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর নেমপ্লেট পরে প্যারাট্রুপিং করবেন মহান বিজয় দিবসে প্যারাট্রুপিং করতে যাওয়াদের মধ্যে ছয়জন।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন।’
‘এই ৫৪ জনের শেষ ছয়জন পোশাকে নিজেদের নেমপ্লেটের পরিবর্তে সুদানের ইউএন ঘাঁটিতে নিহত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের নেমপ্লেট পরে প্যারাট্রুপিং করবেন।’
এর আগে গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় শান্তিরক্ষী নিহত এবং আটজন আহত হন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর এবং তার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তাদের সবার পরিচয় জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআর জানায়, সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে শনিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক বিকেল ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলা চালায়।
হামলায় শহীদ শান্তিরক্ষীরা হলেন- নাটোরের মো. মাসুদ রানা (কর্পোরাল), কুড়িগ্রামের মো. মমিনুল ইসলাম (সৈনিক), রাজবাড়ীর শামীম রেজা (সৈনিক), কুড়িগ্রামের শান্ত মন্ডল (সৈনিক), কিশোরগঞ্জের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (মেস ওয়েটার) ও গাইবান্ধার মো. সবুজ মিয়া (লন্ড্রি কর্মচারী)।
জাতীয়
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম ডাকসু ভিপির
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনদফা দাবি আদায় না হলে তিন উপদেষ্টার পদত্যাগে আন্দোলন হবে। মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে একথা বলেন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে দাবি না মানা হলে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান পরিবর্তন না দেখাতে পারলে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।
সাদিক কায়েম যখন কথা বলছিলেন, তখন পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তাকে অনেকটা বিব্রতও দেখাচ্ছিল।
সাদিক কায়েম তিনটি দাবি পড়ে শোনান। বলেন, আমাদের ভাই ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী সকল সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ রাষ্ট্রের সকল সংশ্লিষ্ট অর্গানকে দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং যাদের গাফিলতি প্রমাণিত হবে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একই সঙ্গে যারা এই হামলাকে সমর্থন যুগিয়েছে, হাদি ভাই ও জুলাই বিপ্লবীদের হত্যাযোগ্য করে তুলেছে, সেই কালচারাল ফ্যাসিস্টদের সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ বয়কট করতে হবে। এসব ব্যবস্থা অনতিবিলম্বে দৃশ্যমান করতে হবে।
দ্বিতীয় দাবিতে তিনি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের সকল সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে হবে এবং সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের অবহেলা আর সহ্য করা হবে না।
শেষ দাবিতে বলা হয়, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম ও অপরিহার্য পদক্ষেপ হিসেবে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রদত্ত রায় কার্যকর করতে হবে। গণহত্যাকারী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে হবে। অভিযুক্তদের ফেরত না দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যাবে না।
এমকে
জাতীয়
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার সাংবাদিক আনিস আলমগীর
সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগটি মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানায় সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ডিবি হেফাজতে থাকা সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। থানা থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসছেন। তদন্তকারী থানা পুলিশের মাধ্যমে গ্রেফতার সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম থানায় অভিযোগটি দায়ের করেছিলেন।
অভিযোগে নাম আসা অপর দুজন হলেন মডেল মারিয়া কিসপট্টা ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।




