জাতীয়
আইজিপি বাহারুলের বরখাস্ত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন
২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে নাম আসায় পুলিশের মহাপরিদর্শকের পদ থেকে মো. বাহারুল আলমের বরখাস্ত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করা হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এসএম জুলফিকার আলী জুনু ডাকযোগে চিঠি পাঠিয়েছেন।
আবেদনে বলা হয়, জাতীয় জীবনের এক করুণতম অধ্যায় ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড, যেখানে দেশের ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ অসংখ্য সদস্য নির্মমভাবে শহীদ হন, এখনও জাতীয় বেদনা ও বিচার প্রত্যাশার এক অমলিন স্মৃতি হয়ে আছে। সম্প্রতি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের দাখিলকৃত রিপোর্টে বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. বাহারুল আলমের নাম উত্থাপিত হওয়ায় দেশের ন্যায়বিচার, জনআস্থা এবং বিচার প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে।
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালনরত একজন কর্মকর্তার নাম এমন একটি রাষ্ট্রদ্রোহী ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখ হওয়া, ঘটনাটিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুতর করে তুলেছে। জাতির রক্তাক্ত স্মৃতি-বহনকারী এই ঘটনায় যেকোনো অভিযোগ, সংশ্লিষ্টতা, গাফিলতি বা দায়িত্বে ব্যর্থতা বিষয়ে পদে বহাল অবস্থায় থাকা ব্যক্তি অপরাধ বিচারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও জনবিশ্বাসের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।
আপনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ, দুর্নীতি-দমন এবং রাষ্ট্রের আস্থা পুনঃনির্মাণ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্টে নাম আসা সত্ত্বেও তার দায়িত্বে বহাল থাকা, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থার ওপর জনমনে সন্দেহ তৈরি করছে।
ন্যায়বিচারের স্বীকৃতি শুধু আদালতের রায়ে নয় বরং সরকারের যথাযথ পদক্ষেপে প্রতিফলিত হওয়াও জরুরি, আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসএম জুলফিকার আলী বলেন, ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্ত রিপোর্টে নাম আসায় বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমকে অবিলম্বে আইজিপি পদ থেকে অব্যাহতি বা বরখাস্ত করা করা হোক। মামলার পূর্ণাঙ্গ ন্যায়বিচার ও তদন্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার ভূমিকা ও দায় নির্ণয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া, স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি, যাতে রাষ্ট্র ও জনগণ উভয়ে ন্যায়বিচারের বাস্তব প্রতিফলন অনুভব করতে পারে।
এমকে
জাতীয়
সামনের নির্বাচন আমাদের জন্য বড় পরীক্ষা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সামনের নির্বাচন আমাদের জন্য বড় পরীক্ষা বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, সব কিছুর ভিত্তি হলো আইনশৃঙ্খলা। এটি ভালো না থাকলে কোন কিছুই অর্জন করা যাবে না। আমরা জানি, এ নিয়ে খুব খারাপ সময় আমাদের গেছে। আশার কথা হলো, পুলিশ শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থানটা সংহত করতে পেরেছে।
শনিবার রংপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। বক্তব্যে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে প্রার্থীর হারার সম্ভাবনা আছে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, গণ্ডগোলের চেষ্টা হতে পারে। সেটা মাথায় রেখেই আমি মনে করি যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মিটিং করেছেন। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যথেষ্ট সজাগ।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটা সরকার গঠন হবে এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব তাদের বুঝিয়ে দিয়ে চলে যেতে পারবো।
এসময় উত্তরবঙ্গ থেকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নিম্নমুখী হার প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, কোনো বিদেশি নিয়োগদাতা যদি কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে চায়, তাহলে বাংলাদেশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তাদের জন্য ছেড়ে দেয়া হবে।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান, মহানগর উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তোফায়েল আহমেদ, পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইনসহ জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমকে
জাতীয়
জুলাই আন্দোলনের শহীদ স্কাউটরা নতুন দেশ গড়ার প্রেরণা: শিক্ষা উপদেষ্টা
দেশের সংকট ও রূপান্তরের প্রতিটি মুহূর্তে স্কাউটদের মানবিক মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ ও সাহসিকতা আমাদের সামনে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া ১১ স্কাউটের আত্মত্যাগ জাতিকে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে বল মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার।
তাদের ত্যাগ স্মরণ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সততা, নৈতিকতা ও দেশগড়ার চেতনায় এগিয়ে আসতে হবে।
শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আবরার বলেন, স্কাউটিং শুধু ব্যাজ অর্জনের বিষয় নয়। এটি চরিত্র গঠন, মানবিক মূল্যবোধ, দলগত নেতৃত্ব, দায়িত্ববোধ ও সমাজসেবায় দক্ষতা অর্জনের অনন্য প্রশিক্ষণ। দুর্যোগ মোকাবিলায় স্কাউটদের ভূমিকা অনন্য। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের সর্বত্র মানুষের পাশে দাঁড়ায় স্কাউট সদস্যরা। আত্মনির্ভরশীল ও সেবামুখী নাগরিক তৈরিতে স্কাউটিংয়ের বিস্তার আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।
জুলাই আন্দোলনে ১১ স্কাউট সদস্যের আত্মত্যাগ স্মরণ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আন্দোলনে শহীদ ১১ জন স্কাউট ও আহতদের আত্মত্যাগ আমাদের নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের প্রেরণা হয়ে আছে। তাদের ত্যাগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাহস ও অনুপ্রেরণা জোগায়। বিশ্বের ১৭৬টি স্কাউট দেশের মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। এটি গৌরবের। এশিয়া–প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন কমিটি ও সাবকমিটিতে বাংলাদেশি স্কাউটদের নেতৃত্বও দেশের সক্ষমতার স্বীকৃতি।
বাংলাদেশ স্কাউটসে নারীদের অংশগ্রহণে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তোমরাই জাতির আগামী নেতৃত্ব। সততা, সাহস, দৃঢ়তা ও মানবিকতার মাধ্যমে নিজেদের শ্রেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই দেশের প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটসে অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
এসময় দেশের বিভিন্ন জেলার স্কাউট সদস্যদের হাতে শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড, প্রেসিডেন্ট স্কাউট অ্যাওয়ার্ড এবং প্রেসিডেন্টস রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়।
এমকে
জাতীয়
প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ছাড়াল ১ লাখ ৯৩ হাজার
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দেশ থেকে ভোট দেওয়ার জন্য “পোস্টাল ভোট বিডি” অ্যাপে প্রবাসী নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৬৩ ও নারী ১৮ হাজার ৯৫১ জন।
শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত ইসির পোস্টাল ব্যালটের অ্যাপ (https://portal.ocv.gov.bd/report/by-country) থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নিবন্ধিত প্রবাসীদের নির্দিষ্ট সময়ে সংশ্লিষ্ট প্রবাসীদের ঠিকানায় ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এবারই প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে প্রবাসী, আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি, ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতরা এ ব্যবস্থায় ভোট দিতে পারবেন৷ এজন্য অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে৷ গত ১৯ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে, যা চলবে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যে সব দেশে নিবন্ধন চলছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, হংকং, ব্রাজিল, উগান্ডা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, বতসোয়ানা, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, ঘানা, গিনি, মরক্কো, দক্ষিণ সুদান, চিলি, সিয়েরা লিওন, ইকুয়েডর, তাইওয়ান, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গাম্বিয়া, পেরু, জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ইত্যাদি।
ইসি জানিয়েছে, অ্যাপে নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভোটার ভোট দিয়ে ফিরতি খামে তা আবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন।
উল্লেখ্য, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। এক্ষেত্রে ৫০ লাখ প্রবাসী ভোট টানার টার্গেট নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে সংস্থাটি।
এমকে
জাতীয়
লিবিয়া থেকে ফিরলো আরও ৩১০ বাংলাদেশি
অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় যাওয়া ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে করে তারা দেশে ফেরেন।
লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লিবিয়া সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।
ফেরত আসা বাংলাদেশিদের বেশির ভাগই সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার উদ্দেশ্যে মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করে বলে জানা যায়। তাদের অনেকে লিবিয়ায় বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা প্রত্যবসিত বাংলাদেশি নাগরিকদের বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের এই দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা সম্ভাব্য সবার সঙ্গে বিনিময় করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের অনুরোধ জানানো হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনকৃত প্রত্যেককে পথখরচা, কিছু খাদ্যসামগ্রী এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
এর আগে, গত সোমবার (১ ডিসেম্বর) ১৭৩ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
জাতীয়
উত্তরবঙ্গকে এগিয়ে নিতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পিছিয়ে পড়া উত্তরবঙ্গকে এগিয়ে নিতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, উত্তরবঙ্গ বহুদিন ধরেই উন্নয়নের ক্ষেত্রে উপেক্ষিত ছিল। বর্তমান সরকার সেই অবস্থার পরিবর্তনে বদ্ধপরিকর। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, শিল্পায়ন এগিয়ে নেওয়া এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি-এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই আমরা সমন্বিত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) রাতে রংপুরে ৪ দিনের সফরে আসেন তিনি। আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে যাবেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর নগরীর তাজহাট জমিদার বাড়ি পরিদশনে যান তিনি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর নগরীর সাকিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতের অবস্থানের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এই বিষয়ে ভারত এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক সাড়া দেয়নি। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। রাষ্ট্রীয় কূটনীতি সময় সাপেক্ষ বিষয়। কাজটি সতর্কতা ও সম্মানজনক পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে হয়।
বাংলাদেশ সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করছে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উভয় দেশের সংলাপ ও সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি বণ্টন ও আঞ্চলিক যোগাযোগ- এসব ক্ষেত্রেই আলোচনার অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা চাইলেই সব সিদ্ধান্ত সঙ্গে সঙ্গে হবে না।
কূটনৈতিকভাবে ধৈর্য ধরে এগোতে হয়। তবে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সরকার কখনোই আপস করবে না।’
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে উত্তরাঞ্চলের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কৃষি, পশুপালন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, মৎস্য ও হালকা শিল্প-সবক্ষেত্রেই এই অঞ্চলের অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে নীতি সহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তা-রেল যোগাযোগ বাড়ানোসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে উত্তরবঙ্গের পণ্য সহজে পৌঁছে দিতে লজিস্টিকস ও পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়নেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে সরকার স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, কর সুবিধা এবং রপ্তানি প্রণোদনা-সবগুলো বিষয়েই এখন বাস্তব অগ্রগতি রয়েছে। আমরা চাই উত্তরবঙ্গের তরুণেরা এখানেই কর্মসংস্থানের সুযোগ পাক। তাদের ঢাকায় বা অন্য কোথাও ছুটে যেতে না হয়।’
কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে তিনি বলেন, দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম আরো জোরদার করা হচ্ছে। আইসিটি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, টেক্সটাইল, সিরামিক ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন শিল্প স্থাপিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান ঘটবে, আর এর ফলে অঞ্চলটির সামগ্রিক অর্থনীতি প্রাণ ফিরে পাবে। উন্নয়ন শুধু ঢাকার নয়, সারা দেশের। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গকে উন্নয়নের মূলধারায় আনাই এখন আমাদের অগ্রাধিকার। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল খুব দ্রুতই জনগণ অনুভব করবে।
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা অঞ্চলভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, বিনিয়োগ সুযোগ এবং সীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণ সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব তুলে ধরেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন।



