আন্তর্জাতিক
ভূমিকম্পে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশে যেতে ভিসা লাগে না বাংলাদেশিদের
ভূমিকম্পে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশে যেতে ভিসা লাগে না বাংলাদেশিদের। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নিঃসন্দেহে এটি এক দারুণ খবর! কিন্তু কোথায় সেই দেশ? উত্তর হলো, দক্ষিণ আমেরিকার বাহামা দ্বীপপুঞ্জ।
ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসের হিসাবে, ভূমিকম্পের সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে চাদ, নাইজার, বাহামা, আইভরি কোস্ট, বুরকিনা ফাসো, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, লাটভিয়া, আয়ারল্যান্ড ও উরুগুয়ে। এই দেশগুলো প্রধান ভূমিকম্পের ফল্টলাইন থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে ভূমিকম্প হয় না।
বাহামায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি কেন কম?
বাহামা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত। দেশটির নিকটতম প্রধান ফল্ট লাইন– উত্তর আমেরিকান ও ক্যারিবীয় টেকটোনিক প্লেটের সীমান্ত প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে। ফলে বাহামায় ভূমিকম্প খুবই বিরল। তবে ওই ফল্ট লাইন ক্যারিবীয় অন্যান্য দেশে ভূমিকম্প সৃষ্টি করলে তার প্রভাব কিছু ক্ষেত্রে দূরবর্তী অঞ্চল হিসেবে বাহামাতেও অনুভূত হতে পারে।
পাসপোর্ট ইনডেক্সের তথ্যমতে, বাংলাদেশের নাগরিকরা বর্তমানে মাত্র ১৫টি দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পান। সেগুলো হলো বাহামা, বার্বাডোজ, ভুটান, ডমিনিকা, ফিজি, গাম্বিয়া, গ্রেনাডা, হাইতি, জ্যামাইকা, কিরিবাতি, মাইক্রোনেশিয়া, রুয়ান্ডা, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইনস, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো এবং ভানুয়াতু।
বাহামার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ভিসা নিয়ন্ত্রণ চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বাহামিয়ান ভিসার প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করা হয়েছে। বাংলাদেশিরা বাহামায় পর্যটক হিসেবে তিন মাস বা কিছু ক্ষেত্রে আট মাস পর্যন্ত থাকতে পারবেন।
বাহামায় যেতে কী কী কাগজপত্র লাগে?
বাহামার আইন অনুযায়ী, কেউ যদি বাহামার নাগরিক বা বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত না হন এবং তার দেশের সঙ্গে বাহামার ভিসা নিয়ন্ত্রণ চুক্তি না থাকে, তবে তাকে দেশটিতে প্রবেশের সময় নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—
ফেরার টিকিট থাকতে হবে বা বাহামা ছাড়ার নিশ্চিত ব্যবস্থা থাকতে হবে।
বাহামায় থেকে কোনো ধরনের কাজ বা আয়ের উদ্দেশ্যে থাকতে পারবেন না।
ভ্রমণের সময় নিজের খরচ চালানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে, অথবা সেখানে কোনো স্থানীয় স্পন্সরকে উল্লেখ করতে হবে যিনি খরচ বহন করবেন।
পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে। শুধু পাসপোর্ট কার্ড হলে গ্রহণযোগ্য নয়।
বাহামাস ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের একটি সম্পূর্ণ ডিসএমবার্কেশন কার্ড পূরণ করতে হবে।
যারা নৌপথে বাহামায় যাবেন, তাদের জন্য ‘ইনওয়ার্ড প্যাসেঞ্জার অ্যান্ড ক্রু ম্যানিফেস্ট’ ফরম পূরণ করতে হবে।
সতর্কতা
মনে রাখতে হবে— শুধু এই শর্তগুলো পূরণ করলেই প্রবেশের অনুমতি নিশ্চিত নয়। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রবেশের অনুমতি না-ও দিতে পারেন।
ভ্রমণের আগে সবসময় বাহামা ইমিগ্রেশন বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ নিয়মাবলি দেখে নেওয়া উচিত, কারণ ভিসার নিয়ম পরিবর্তন হতে পারে।
ভূমিকম্প না হলেও অন্য দুর্যোগের ঝুঁকি
বাহামায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম হলেও দেশটি উপকূলীয় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত। নিম্নভূমি এবং উপকূলসংলগ্ন অঞ্চলগুলোর অবস্থান ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও উপকূলীয় বন্যা বাহামায় বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
এছাড়া ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর নিকটবর্তী অবস্থানের কারণে বাহামায় সুনামির মধ্যমস্তরের ঝুঁকিও রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির নিম্নভূমি অঞ্চলে সুনামির প্রভাব মারাত্মক হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস, বাহামাস ইমিগ্রেশন, পাসপোর্ট ইনডেক্স।
এমকে
আন্তর্জাতিক
শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পর্যালোচনা করা হচ্ছে: ভারত
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে ঢাকার করা অনুরোধ পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারত। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে ভারত।
জয়সওয়াল বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে নতুন করে একটি অনুরোধ এসেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর এই অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।
শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ভারতে অবস্থান করছেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা নেতৃত্বাধীন তুমুল আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তিনি।
তখন থেকে দেশটির অজ্ঞাত স্থানে অবস্থান করা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দুই দফায় ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এবারই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাওয়ার তথ্য স্বীকার করেছে দিল্লি।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা একটি অনুরোধ পেয়েছি। এই অনুরোধটি চলমান বিচারিক ও অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ—বিশেষ করে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং এ বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবো।’’
গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনকারীদের হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর চলতি মাসে তাকে ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লির কাছে প্রথমবারের মতো একই ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পাঠানো চিঠি চলমান বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভারতে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জয়সওয়াল। সূত্র: রয়টার্স, দ্য স্টেটসম্যান।
এমকে
আন্তর্জাতিক
এশিয়ার দুই দেশে আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্প
একই দিনে ফিলিপাইন ও জাপানে প্রায় ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে জাপানে দুই দফায় ভূকম্পনের খবর পাওয়া গেছে। যদিও এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস-এর বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দক্ষিণ ফিলিপাইনে এই ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৯।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটির দক্ষিণ মিন্দানাও দ্বীপের জলসীমার কাছে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার (প্রায় ৬.২ মাইল)।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমস-এর বরাত দিয়ে জানা গেছে, জাপানে একই দিনে দুইবার তুলনামূলক শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
মঙ্গলবার ভোরে জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ কিউশুতে ৫.৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। একই দিন সন্ধ্যা ৬টা ০১ মিনিটে কুমামোটো প্রিফেকচারে ৫.৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এই ভূকম্পনটি জাপানের ১০ পয়েন্ট ভূমিকম্পের তীব্রতার স্কেলে চতুর্থ সর্বোচ্চ স্তরের ছিল এবং এটির উৎপত্তি হয়েছিল ৯ কিলোমিটার গভীরে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছে, আগামী সপ্তাহ বা কাছাকাছি সময়ে একই মাত্রার ভূমিকম্পের জন্য যেন সবাই প্রস্তুত থাকে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, জাপান টাইমস।
এমকে
আন্তর্জাতিক
বিশ্বসেরা তরুণ পরমাণু বিজ্ঞানীর তালিকায় বাংলাদেশের বাহাউদ্দিন
বিশ্বসেরা তরুণ পরমাণু বিজ্ঞানীর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন বাংলাদেশের সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম। সম্প্রতি আমেরিকান নিউক্লিয়ার সোসাইটির (এএনএস) ‘নিউক্লিয়ার নিউজ ৪০ আন্ডার ৪০’ তালিকায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
আমেরিকান নিউক্লিয়ার সোসাইটি ১৯৫৪ সাল থেকে পারমাণবিক বিজ্ঞানের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছে। ২০২৪ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে ৪০ বছরের কম বয়সী শীর্ষ ৪০ জন পরমাণু বিজ্ঞানীদের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘নিউক্লিয়ার নিউজ ৪০ আন্ডার ৪০’ তালিকা প্রকাশ করছে সংস্থাটি।
এ বছর বাংলাদেশের জন্য গৌরব বহন করে এনেছেন চট্টগ্রামের উদীয়মান বিজ্ঞানী সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম। ৩৮ বছর বয়সী এই তরুণ বিজ্ঞানীকে ‘ডিজিটাল টুইনস’ (ডিজিটাল যমজ প্রযুক্তি), সাইবার নিরাপত্তা এবং উন্নত এআই মডেলস-এর মাধ্যমে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকার জন্য এই সম্মান দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবানা-চ্যাম্পেইন ক্যাম্পাসে নিউক্লিয়ার, প্লাজমা ও রেডিওলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলম। তিনি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের নিরাপত্তা ও দক্ষতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে গবেষণা করে থাকেন।
তার কাজের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার শিল্পে এআই-চালিত সিমুলেশন এবং সাইবার হুমকি প্রতিরোধের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী শক্তি খাতে বিপ্লব ঘটাতে পারে। এএনএস-এর অফিসিয়াল ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘বাহাউদ্দিন আলম পারমাণবিক ক্ষেত্রের এক উদীয়মান তারকা, যার গবেষণা ভবিষ্যতের নিরাপদ ও টেকসই শক্তি সমাধানের চাবিকাঠি।’
চট্টগ্রামের স্থানীয় একটি পরিবারে জন্ম নেওয়া বাহাউদ্দিন আলম তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন বাংলাদেশেই। পরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ‘সিলেক্টেড লিডারস’ প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত ~১০০ জনের একজন।
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এনপিআরই বিভাগের এক পোস্টে বলা হয়েছে, আমরা গর্বিত যে সৈয়দ বাহাউদ্দিন আলমকে এ বছরের নিউক্লিয়ার নিউজ ‘৪০ আন্ডার ৪০’ তালিকায় নির্বাচিত করা হয়েছে।
একই তালিকায় ইয়াসির আরাফাত নামে আরেকজন বিজ্ঞানীও স্থান পেয়েছেন, যিনি মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে বসবাস করতেন। বর্তমানে তিনি আলো অ্যাটমিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিটিও হিসেবে কাজ করছেন।
এমকে
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের ভয়াবহ বিমান হামলায় আফগানিস্তানে নিহত ১০
আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মধ্যরাতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান এমন অভিযোগ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার। হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৯ জনই শিশু এবং অন্যজন নারী।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) তালেবান সরকারের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, খোস্ত প্রদেশের গোরবুজ জেলার একটি বাড়িতে রাতের অন্ধকারে এই বোমা বর্ষণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি দাবি করেন, স্থানীয় বাসিন্দা ওয়ালিয়াত খান কাজি মিরের ছেলে তার বাড়িটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
মুজাহিদ আরও বলেন, হামলায় পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ে শিশুসহ মোট ৯ জন শিশু এবং এক নারী নিহত হয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, শুধু খোস্তেই নয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুনার এবং পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশেও একাধিক বিমান হামলা হয়েছে। এসব হামলায় আরও অন্তত চারজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য ১ লাখ টন চাল কিনতে চায় পাকিস্তান
বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যে একটি টেন্ডার আহ্বান করেছে পাকিস্তানের ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিপি)। সোমবার এই দরপত্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দশকের পর দশক ধরে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের পর ২০২৪ সালের আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল কেনার এই দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ২৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা নির্ধারণ করেছে টিসিপি। ২০ নভেম্বর প্রকাশিত টিসিপির ওই দরপত্রের নথি ডন দেখেছে বলে জানিয়েছে।
দরপত্রের প্রস্তাবকারী কোম্পানি, পার্টনারশিপ ও একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ‘‘আলাদা সিল করা দরপত্র’’ আহ্বান করেছে টিসিপি। ১ লাখ টন লম্বা দানার সাদা চাল (আইআরআরআই-৬) কিনবে প্রতিষ্ঠানটি। পরে তা প্যাকেটজাত করে করাচি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে।
দরপত্র জমা দেওয়ার পর ২১ কার্যদিবস পর্যন্ত মূল্যপ্রস্তাব বৈধ থাকতে হবে। চুক্তি হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে চাল জাহাজীকরণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
দরপত্রে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টন কিংবা তার সমপরিমাণ চালের প্রস্তাব জমা দিতে হবে। সর্বোচ্চ পরিমাণ ১ লাখ টনও প্রস্তাব করা যাবে।
দরপত্র অনুযায়ী, চাল অবশ্যই পাকিস্তানে উৎপাদিত সর্বশেষ মৌসুমের ফসল এবং মানুষের ভক্ষণ উপযোগী হতে হবে। এতে কোনো দুর্গন্ধ, ছত্রাক, বিষাক্ত আগাছার বীজ, পোকামাকড় কিংবা সংক্রমণের চিহ্ন থাকা চলবে না।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানি চালকে বাংলাদেশের আমদানি সরবরাহ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন এই দরপত্রকে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ সম্প্রতি যে চাল কিনেছে, তার কিছু অংশে ভারতের উৎপাদিত চাল ব্যবহৃত হতে পারে।
সোমবার আরও একটি চাল আমদানির দরপত্র ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে স্থানীয় বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধারাবাহিকভাবে চাল আমদানির দরপত্র আহ্বান করছে ঢাকা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারি পর্যায়ে সরাসরি বাণিজ্য শুরু করে। ওই সময় ৫০ হাজার টন চাল আমদানির মাধ্যমে এই বাণিজ্যের শুরু হয়।
গত মাসে অনুষ্ঠিত নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) সভায় বাংলাদেশকে চীন ও মধ্য-এশীয় দেশসহ আঞ্চলিক বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে করাচি পোর্ট ট্রাস্টকে ব্যবহার করার প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান।
• চাল রপ্তানি
২০২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পাকিস্তানের চাল রপ্তানি ২৮ শতাংশ কমে গেছে; যা নীতিগত ও আইনি বাধা নিয়ে খাতটির মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
পাকিস্তান রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা এই কমতির কারণ হিসেবে ভারতের ২০২৪ সালে চাল রপ্তানি পুনরায় চালু, বাসমতিতে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (এমইপি) প্রত্যাহার এবং চাল রপ্তানিতে শূন্য হারের নীতি চালুর কথা জানিয়েছেন।
তবে সরাসরি মূল্যযুদ্ধে না গিয়ে পাকিস্তানি রপ্তানিকারকরা বাজার ধরে রাখায়, বিশ্ববাজারে ভারতের পুনরায় প্রবেশ গত বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানের চাল বাণিজ্যে তেমন কোনো বড় প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এছাড়া ২০২৪ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় বিভিন্ন পণ্যসহ বাসমতি চালের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় পাকিস্তানের জন্য মার্কিন বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভলজা গ্লোবাল ট্রেড প্ল্যাটফর্মের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানের মোট বাসমতি রপ্তানির ২৪ শতাংশই গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। সূত্র: ডন।
এমকে



