অর্থনীতি
তিন রাজস্ব আইনের ইংরেজি সংস্করণের গেজেট প্রকাশ
মূল্য সংযোজন কর আইন, ২০১২; কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং আয়কর আইন, ২০২৩–এর অফিসিয়াল ও ‘অথেনটিক ইংলিশ টেক্সট বা ইংরেজি সংস্করণ’ সরকারি গেজেটে প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যবসায়ী, পেশাজীবী সংগঠন, বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দাবি ছিল এই তিনটি রাজস্ব আইনের স্বীকৃত ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশের।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) এনবিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের কর আইন বুঝতে ও বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে আইনগুলোর ইংরেজি সংস্করণ অত্যাবশ্যক বলে মনে করে আসছিলেন। ২০২৩ সালে আয়কর অর্ডিন্যান্সের ১৯৮৪ ও কাস্টমস আইন ১৯৬৯ বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নের পর থেকেই এ বিষয়ে চাহিদা বাড়ে।
এনবিআরের আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ইংরেজি সংস্করণ তৈরির কাজ করে তা বিশেষ কমিটির মাধ্যমে একাধিকবার পর্যালোচনা করেন। পরবর্তীতে আইনগুলো লেজিসলেটিভ বিভাগের ভেটিং শেষে বিজি প্রেসে পাঠানো হলে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
গেজেট অনুসারে প্রকাশিত আইনগুলো হলো—
আয়কর আইন ২০২৩ প্রকাশিত হয়েছে ১৬ অক্টোবর, মূসক আইন ২০১২ ও কাস্টমস আইন ২০২৩ প্রকাশিত হয়েছে ১৩ নভেম্বর। আর মূসক বিধি ২০১৬ এর ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশ হয়েছে ১০ নভেম্বর তারিখে।
এনবিআর জানায়, গেজেট প্রকাশের ফলে রাজস্ববিষয়ক আইন ও বিধিমালা সম্পর্কে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আরও স্পষ্ট ধারণা পাবেন, যা করদাতাদের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি আইনের প্রয়োগে অস্পষ্টতা দূর হয়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
অর্থনীতি
আন্তর্জাতিক কার্ড দিয়ে কেনা যাবে বিমান টিকিট
বিমানের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নীতিমালা অনুসারে এখন থেকে বাংলাদেশে কার্যরত সব এয়ারলাইন্সের টিকিট আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করেই কেনা যাবে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ নির্দেশনা জারি করেছে। প্রতিযোগিতামূলক দাম নিশ্চিত করা এবং যাত্রীদের ঝামেলাহীন সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এর আগে আন্তর্জাতিক কার্ড শুধু বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে খরচে ব্যবহারের সুযোগ ছিল। কিন্তু ডিজিটাল সেটেলমেন্ট সুবিধার ঘাটতির কারণে অনেক যাত্রী দেশেই ভালো দামে টিকিট কিনতে সমস্যা অনুভব করতেন। নতুন নীতিমালার ফলে যাত্রীরা দেশে বসেই আন্তর্জাতিক রুটের টিকিট সহজে এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে কিনতে পারবেন।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, বৈধ ভিসাধারী বাংলাদেশি নাগরিকরা এখন ঢাকা–সিঙ্গাপুর, ঢাকা–দুবাইসহ সব ধরনের বিদেশগামী রুটের টিকিট আন্তর্জাতিক কার্ডের মাধ্যমে কিনতে পারবেন। টিকিট বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত সব অর্থ দেশের অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে, যাতে বৈদেশিক মুদ্রা আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাহিত হয়।
ভ্রমণ বরাদ্দের আওতায় ইস্যু করা আন্তর্জাতিক কার্ডে টিকিট কেনার জন্য ব্যবহার করা অর্থ পুনরায় রিফিল করা যাবে। তবে সেটি শুধু তখনই সম্ভব হবে, যখন সংশ্লিষ্ট এডি ব্যাংক নিশ্চিত করবে যে, টিকিট বিক্রির পুরো অর্থ দেশে জমা হয়েছে।
একইসঙ্গে দেশে কার্যরত বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোও তাদের বিক্রয়লব্ধ বৈদেশিক মুদ্রা এডি ব্যাংকে পরিচালিত হিসাবেই জমা করবে এবং ব্যয় বাদ দিয়ে অবশিষ্ট অর্থ বৈধভাবে তাদের প্যারেন্ট অফিসে পাঠাতে পারবে।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ দেশের এভিয়েশন টিকিটিং ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক ডিজিটাল স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে, দেশি–বিদেশি টিকিট মূল্যের বৈষম্য কমাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন আরও সুসংগঠিত ও স্বচ্ছ হবে।
অর্থনীতি
ইস্টার্ন ব্যাংক চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব তলব
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ইস্টার্ন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও একাধিক নথিপত্র চেয়েছে দুদক।
গত ১৬ নভেম্বর এক চিঠিতে এসব তথ্য চায় দুদক। এর আগে ৯ অক্টোবর শওকত আলী চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম নথি চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চিঠিতে শওকত আলী চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে বা তাদের মালিকানাধীন/স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে অদ্যাবধি ব্যাংকে কোনো হিসাব স্কিম খোলা হয়ে থাকলে তা খোলার ফরম (সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রসহ) এবং লেনদেন বিবরণী শুরু থেকে, প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন ও পাসপোর্টের কপি চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া শওকত আলী চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের ব্যক্তিগত নামে বা তাদের মালিকানাধীন/স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ঋণ সুবিধা গ্রহণ করা হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে ঋণের আবেদন, শাখার প্রস্তাব এবং অনুমোদন সংক্রান্ত সকল রেকর্ডপত্র ও ঋণ হিসাব বিবরণী চেয়েছে দুদক। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতেও বলা হয়েছে চিঠিতে।
শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করতে তিন সদস্যের একটি টিম করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবে আট হাজার কোটি টাকা লেনদেন এবং এলসির মাধ্যমে জাহাজভাঙার নামে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শেল কোম্পানি দেখিয়ে বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর শওকত আলী চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে। গত ৩০ জুন ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বিএফআইইউ।
অর্থনীতি
স্বর্ণের দাম ভরিতে বাড়লো ২ হাজার ৬১২ টাকা
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। টানা ২ দফায় কমানোর পর এবার ভরিতে এক লাফে ২ হাজার ৬১২ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ৫২০ টাকা।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাতে বাজুসের এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর বিষয়টি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) টানা দ্বিতীয় দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমিয়েছিল বাজুস। ওইদিন ভরিতে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ লাখ ৬ হাজার ৯০৮ টাকা।
নতুন দাম অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম পড়বে ২ লাখ ৯ হাজার ৫২০ টাকা। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭১ হাজার ৪২৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৯২ টাকা।
সবমিলিয়ে চলতি বছর দেশে মোট ৭৯ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে বাজুস। যেখানে ৫৪ বারই দাম বাড়ানো হয়েছে, আর দাম কমেছে মাত্র ২৫ বার। অন্যদিকে গতবছর দেশের বাজারে মোট ৬২ বার সমন্বয় করা হয়েছিল স্বর্ণের দাম। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল। এছাড়া গতবছর ২৭ বার স্বর্ণের দাম কমিয়েছিল বাজুস।
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ অবলোপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা
খেলাপি ঋণ অবলোপনে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে নির্দেশনাও জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন এ নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে কোনো ঋণ মন্দ (Bad) বা ক্ষতিজনক (Loss) হিসেবে শ্রেণিকৃত হলে এবং তা আদায় হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে—সময়সীমা অপেক্ষা না করে অবলোপন করা যাবে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এমন সব মন্দ ও ক্ষতিজনক ঋণ অবলোপন করা যাবে। তবে পুরোনো শ্রেণিকৃত ঋণগুলো অগ্রাধিকার পাবে। পাশাপাশি অবলোপনের কমপক্ষে ১০ কর্মদিবস আগে ঋণগ্রহীতাকে নোটিশ দিয়ে বিষয়টি জানাতে হবে।
এ সার্কুলারের মাধ্যমে বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৪/২০২৪–এর অনুচ্ছেদ ২(১)-এর পূর্বের শর্ত—অর্থাৎ দুই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে থাকা ঋণই শুধু অবলোপনযোগ্য—বাতিল করা হলো। নতুন নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও নির্দেশনায় জানানো হয়।
অর্থনীতি
১৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯০ কোটি ডলার
চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ১০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নভেম্বরের প্রথম ১৮ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১৪৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
এছাড়া গত ১৮ নভেম্বর একদিনে প্রবাসীরা দেশে ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে ১ হাজার ২০৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। বছর ব্যবধানে যা বেড়েছে ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এর আগে গত অক্টোবর ও সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছে যথাক্রমে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ও ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত আগস্ট ও জুলাইয়ে যথাক্রমে দেশে এসেছিল ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ও ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
এদিকে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছর জুড়ে দেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।



