আইন-আদালত
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল
বহুল আলোচিত নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় অবৈধ ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ত্রয়োদশ সংশোধনী বৈধ ঘোষণা করে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করেছেন দেশের সব্বোর্চ আদালত।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ ঐতিহাসিক এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর ৬ বিচারপতি হলেন— বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
রায় ঘোষণার সময় আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ ছিল।
এ রায়ের মাধ্যমে সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে অন্তর্বর্তী সরকারে অধীনে। চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় দিয়েছেন।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়।
টানা ১০ দিন শুনানি শেষে দেশের সর্ব্বোচ আদালত ঐতিহাসিক এ মামলার রায়ের দিন ঠিক করেন।
গত ২, ৪, ৫, ৬, ১১ নভেম্বর ও ২৯, ২৮, ২৩, ২২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের টানা শুনানি হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহামদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ, ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
গত ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ ছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
আইন-আদালত
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে আপিলের রায় আজ
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরবে কিনা আজ জানা যাবে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রায় ঘোষণা করবেন। গত ১১ নভেম্বর টানা দশ দিনের শুনানি শেষে আজকের দিনটি রায়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন,বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
এর আগে টানা ১০ দিন ২, ৪, ৫, ৬, ১১ নভেম্বর এবং ২২, ২৩, ২৮, ২৯ অক্টোবর শুনানি শেষে গত ১১ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ হিসেবে ২০ নভেম্বর নির্ধারণ করেন আদালত। ২১ অক্টোবর শুরু হওয়া এই মামলাটি দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত সাংবিধানিক মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আপিলকারীদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।বিএনপির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
বাংলাদেশের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত হয় ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বৈধতা ঘোষণা করে।
পরবর্তীতে ২০০৫ সালে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন। এর পরই ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী, যেখানে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়।
সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি।এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনও আলাদাভাবে রিভিউ আবেদন করেন।
সব আবেদন একত্রে শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আজ রায় দিতে যাচ্ছে। এই রায় দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচনব্যবস্থা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাংবিধানিক কাঠামোয় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। আজকের রায়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ দেশের সব মহলের দৃষ্টি এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে।
আইন-আদালত
আদানি গ্রুপের সঙ্গে সালিশি কার্যক্রমে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে সরকারি তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে সালিশি কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি উর্মি রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এক আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা বা বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আবদুল কাইয়ুম। গত ৬ নভেম্বর পিডিবি চেয়ারম্যান ও জ্বালানি সচিবকে তিন দিনের মধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে একতরফা বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা বা বাতিল করতে আইনি নোটিশ পাঠান এই আইনজীবী।
আবেদনকারী আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগেই যদি সিঙ্গাপুরে আদানি তাদের পাওনা নিয়ে সালিশি কার্যক্রম শুরু করে, তাহলে ওই তদন্তের গুরুত্ব থাকবে না। এ কারণে তারা নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। আদানির সঙ্গে করা চুক্তিতে অনেক অনিয়ম হয়েছে বলে জানান আইনজীবী।
ঠিক এক বছর আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ চুক্তি নিয়ে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। এতে আদানির সঙ্গে হওয়া চুক্তির বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন আদালত।
আইন-আদালত
নগদের সাবেক এমডি ও স্বার্থসংশ্লিষ্টদের ৭৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
অর্থ আত্মসাৎপূর্বক বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন থাকায় মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) নগদ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর আহমেদ, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের স্বার্থে নগদ লিমিটেড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ চেয়ে আবেদন করেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. শেখ রাসেল।
আবেদনে বলা হয়েছে, নগদ লিমিটেড নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত ই-মানি ইস্যু এবং ট্রাস্ট কাম সেটেলমেন্ট হিসাব থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও কর্মকর্তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ আত্মসাৎপূর্বক বিদেশে অর্থ পাচার করে থাকতে পারে মর্মে অনুমিত হয়েছে।
এছাড়া, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ারের মূল্য অপেক্ষা অনেক কম মূল্যে শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার হয়ে থাকতে পারে মর্মে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (২০১৫ সালের সংশোধনীসহ) এর ২ (শ) (৫) ও ২ (শ) (১৪) ধারা অনুযায়ী যথাক্রমে প্রতারণা এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা পাচার সম্পৃক্ত অপরাধ বিধায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের নামে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ অবস্থায়, অভিযোগের বিষয়ে সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও ন্যায় বিচারের জন্য নগদ লিমিটেড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবসমূহ হতে সংগৃহীত অর্থ যেন স্থানান্তর করতে না পারে সে জন্য অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ীভাবে অবরুদ্ধের জন্য আদেশ দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
আইন-আদালত
মার্জিন ঋণ বিধিমালার একটি রিট খারিজ করল আদালত
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রণীত ‘মার্জিন ঋণ বিধিমালা, ২০২৫’-এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা দুটি রিটের মধ্যে একটি খারিজ করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আদালত এ রিটটি খারিজ করেন। একই বিধিমালার ওপর দুটি রিট থাকায় একটি রিট বাতিল করা হয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের আইনজীবী কামাল হোসেন জানান, একই সঙ্গে একাধিক রিট চলতে পারে না। তাই একটি রিট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তবে অপর একটি রিট চলমান থাকবে।
একটি রিটের প্রেক্ষিতে গত ১২ নভেম্বর মার্জিন ঋণ বিধিমালার বিষয়ে রুল জারি করেন আদালত। গত ১০ ও ১১ নভেম্বর শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও আসিফ হাসান এর দ্বৈত বেঞ্চ আলোচিত এই রুল জারি করেন। রুলে সংশোধিত মার্জিন ঋণ বিধিমালা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা আগামী সাতদিনের মধ্যে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়।
তবে, রুল জারি হলেও আইনটির কার্যকারিতা স্থগিত করেননি আদালত। এই রিট আবেদন করেছিলেন এসএম ইকবাল হোসেনসহ আরও কয়েকজন বিনিয়োগকারী। অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের অপর একটি পক্ষও একই বিষয়ে রিট করেন। উভয় পক্ষের আইনজীবীও এক।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর জারি হওয়া এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মার্জিন ঋণ বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকর করা হয়। নতুন বিধিমালায় মার্জিন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে বেশকিছু কড়াকড়ি বিধান আরোপ করা হয়।
এমকে
আইন-আদালত
৫ ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
সংকটে পড়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) শহিদুল ইসলাম নামে এক সাধারণ বিনিয়োগকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন এ রিট দায়ের করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থসচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৯ অক্টোবর সংকটে পড়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এই ৫ ব্যাংক নিয়ে নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠন করা হবে।
নতুন ব্যাংকের জন্য নাম প্রস্তাব করা হয়েছে দুটি— ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’। ব্যাংকটি পরিচালিত হবে বাণিজ্যিকভাবে ও পেশাদারত্বের ভিত্তিতে।
ব্যাংকগুলো একীভূত করার ফলে কেউ চাকরি হারাবেন না এবং কোনো আমানতকারী আমানত হারাবেন না বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। পাঁচ ব্যাংকের সব দায় ও সম্পত্তি গ্রহণ করে নতুন ব্যাংকটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার দেবে। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে নগদে, আর বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা সুকুক বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।
সুকুক হলো শরিয়াহভিত্তিক একটি ইসলামি বন্ড, যা সুদযুক্ত বন্ডের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ আইনি দলিল বা চুক্তিপত্র।
এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের শেয়ার দিয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা মূলধনে রূপান্তর করা হবে বেইল-ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। পরে আবার রেজল্যুশন পরিকল্পনা অনুযায়ী তা পরিশোধ করা হবে আমানতকারীদের। যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমানতকারী ও অন্যান্য পাওনাদারের ঋণের একাংশ বাতিল হয়ে শেয়ারে রূপান্তরিত হয়, সেটাই হচ্ছে বেইল-ইন।
নতুন ব্যাংকটি প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন হবে। পরে পর্যায়ক্রমে মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হবে। পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাংকটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের।
ব্যাংকটি সরকারি খাতে চলে যাওয়ায় গ্রাহকদের আতঙ্ক কমে আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি আতঙ্কিত ক্ষুদ্র গ্রাহকদের টাকা দ্রুত ফেরত দেওয়ার পরিকল্পনা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এমকে



