জাতীয়
ডিএমপির পাঁচ এডিসিকে বদলি
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাঁচ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে (এডিসি) বদলি করা হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাদের বদলি করা হয়।
কর্মকর্তাদের মধ্যে ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালাইসিস বিভাগের মো. নাজিম উদ্দিন আল আজাদকে লালবাগ বিভাগে, মোহাম্মদ আবু তাহেরকে ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগে, এস্টেট বিভাগের মো. শওকত আলীকে রমনা বিভাগে, ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের মো. জাহিদ হোসেনকে মতিঝিল বিভাগে এবং প্রটেকশন বিভাগের কে এইচ এম এরশাদকে উত্তরা বিভাগে বদলি করা হয়েছে।
জাতীয়
ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৭৯
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১৭৯ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১৫ জনে এবং শনাক্ত রোগী বেড়ে ৭৯ হাজার ৭২২ জনে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫১ জন, ঢাকা বিভাগে ২৩৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৫৭ জন, খুলনা বিভাগে ৭০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০৯ জন, রংপুর বিভাগে ১২ জন ও সিলেট বিভাগে আটজন রয়েছেন।
২৪ ঘণ্টায় দুজনেরই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে এক হাজার ১১৬ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৯ জন।
২০২৪ সালে দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মারা যান সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭০৫ জন এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
জাতীয়
একনেকে ৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ১২ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা শেষে বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে নতুন প্রকল্প ৮টি, সংশোধিত প্রকল্প ২টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির প্রকল্প ২টি।
অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আছে দুটি প্রকল্প— ‘মানিকগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ‘সাতক্ষীরা জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আছে দুটি প্রকল্প— ‘গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ এবং ‘চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন (২য় সংশোধিত)’; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আছে তিনটি প্রকল্প— ‘সমাপ্ত ৪র্থ সেক্টর কর্মসূচির অত্যাবশ্যকীয় পরিবার পরিকল্পনা, মা, শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার অসমাপ্ত কার্যাবলী বাস্তবায়ন’, ‘স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, নিপোর্ট এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত উন্নয়ন’ এবং ‘PFD, HEF, IFM, HRD এবং SWPMM এর অত্যাবশ্যকীয় অসমাপ্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন’ প্রকল্প।
এছাড়া, আরও আছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রকল্প— ‘কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার হাওর এলাকার ক্ষুদ্রসেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন (৩য় সংশোধন)’; মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প— ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)’; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প— ‘ঢাকা সেনানিবাসে নির্ঝর আবাসিক এলাকায় বি-টাইপ অফিসার্স বাসস্থান নির্মাণ’; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প— ‘নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামক স্থানে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণের (২য় সংশোধিত) ৪র্থ বার মেয়াদ বৃদ্ধি প্রকল্প’ এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প— ‘বিসিক শিল্প পার্ক, টাঙ্গাইল (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার অনুমোদিত আরও ৯ প্রকল্প সম্পর্কেও অবহিত করা হয়। এই প্রকল্পগুলো হলো— বহুস্তরীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শক্তিশালীকরণের জন্য সমন্বিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প; নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন (১ম সংশোধন) প্রকল্প; শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থলে সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (১ম পর্যায়) (১ম সংশোধিত); যুবদের আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রকল্প; তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন যুবদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প; প্রযুক্তি-ভিত্তিক বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উপকূলীয় স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির প্রকল্প; মেহেরপুর সদরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প; ঢাকা শহরের আশেপাশের এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প (ডিসিএনইউপি) (২য় সংশোধিত) প্রকল্প এবং র্যাবের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি আরও অংশগ্রহণ করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা।
এমকে
জাতীয়
মাঠ পর্যায় থেকে উঠে যাচ্ছে এনআইডির বয়স সংশোধন
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিশেষ করে বয়স সংশোধনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি মাঠ পর্যায়ের নির্বাচন অফিস থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সংস্থাটি। ভবিষ্যতে এসব সংশোধন কেবল ইসির প্রধান কার্যালয় থেকেই সম্পন্ন হবে।
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব এ এস এম হুমায়ুন কবীর এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এনআইডি সংশোধনের নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) বা আদর্শ পরিচালনা পদ্ধতিতে এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
হুমায়ুন কবীর বলেন, বয়স সংশোধনের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলো এখন থেকে মাঠ পর্যায়ের নির্বাচন অফিসে না রেখে প্রধান কার্যালয়ে আনা হবে। তবে অন্যান্য কারেকশনের বিষয়গুলো আগের মতোই মাঠ পর্যায়ে করা যাবে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, সাম্প্রতিক সময়ে এনআইডি সংশোধনের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে অসৎ উদ্দেশে তথ্য পরিবর্তনের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ সুরক্ষার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তাই এই প্রক্রিয়াকে আরো কঠোর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ডিজি বলেন, আমরা দেখছি কিছু মানুষ প্রকৃত বিপদে নয়, বরং অপরাধী মনোভাব নিয়ে তথ্য পরিবর্তন করছে। ডাটাবেজ সুরক্ষিত রাখতে হলে এভাবে চলতে পারে না। তাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, এই প্রক্রিয়াকে এখনই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
তিনি জানান, শুধুমাত্র বয়স সংশোধন নয়, নতুন এসওপিতে আরও নানা দিক বিবেচনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে, সংশোধনের বিভিন্ন ফিল্ডে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা তৈরি, দীর্ঘদিন ধরে আবেদন ঝুলে থাকা রোধ করা, আবেদনকারীদের কাছ থেকে সময়মতো দালিলিক তথ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করা এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তির বিধান রাখা। এসব প্রস্তাব কমিশন পর্যায়ে আলোচনা শেষে অনুমোদিত হলে কার্যকর হবে।
এর আগে গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা ও তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিশনার ও কমিটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সভায় এনআইডি সংশোধনের আবেদন দাখিল ও নিষ্পত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভূমিকা, আদর্শ পরিচালনা পদ্ধতির (এসওপি) সংশোধন, ভোটার নিবন্ধন ও এনআইডি প্রণয়ণ, দেশে ও বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যের কড়া জবাব ঢাকার
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন, সেটির কড়া জবাব দিয়েছে ঢাকা। এক প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাজনাথ সিংয়ের ওই মন্তব্য ‘অযথার্থ’ এবং ‘শিষ্টাচার ও কূটনৈতিক সৌজন্যের প্রতি সম্মানজনক নয়’।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম শনিবার দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমরা মনে করি রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য সঠিক ও গঠনমূলক নয় এবং তা শিষ্টাচার ও কূটনৈতিক সৌজন্যের প্রতি সম্মানজনকও নয়।’
ভারতের নেটওয়ার্ক১৮ গ্রুপের প্রধান সম্পাদক রাহুল জোশির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজনাথ সিং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘নিজের কথাবার্তায় সতর্ক থাকার’ পরামর্শ দেন।
সাক্ষাৎকারে সিং বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো টানাপোড়েন চাই না, তবে ইউনূসকে তার বক্তব্যে সতর্ক থাকতে হবে।’
শুক্রবার নেটওয়ার্ক১৮ গ্রুপের একটি গণমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে।
এ প্রসঙ্গে মুখপাত্র মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বাংলাদেশের সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে।’
তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ‘সার্বভৌম সমতা, পরস্পরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার’ ভিত্তিতে পারস্পরিকভাবে লাভজনক সম্পর্ক বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
আলম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যগুলো গঠনমূলক ও শ্রদ্ধাশীল সংলাপের মাধ্যমেই সবচেয়ে ভালোভাবে সমাধান করা সম্ভব।’
সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশ সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব চায় না।
জাতীয়
প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, চলবে অবস্থান কর্মসূচি
দশম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। তবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি আগের মতোই চলবে।
রোববার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় সচিবালয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন মাসুদ।
তিনি জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আজ সকালে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।
শামসুদ্দিন মাসুদ বলেন, শিক্ষক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বৈঠকে তিনটি প্রধান দাবি তুলে ধরা হয়— সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা, চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির ব্যবস্থা করা। দাবিগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষক নেতাদের আশ্বাস দেয় যে, অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিষয়গুলো অবহিত করে দ্রুততম সময়ে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চলমান কর্মবিরতি কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিচ্ছি।
এর আগে, শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করে শিক্ষকদের চারটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।
ওইদিন বিকেলে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। এতে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডের দাবি জানালেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবার শিক্ষকরা সরাসরি দশম গ্রেডের দাবিতে মাঠে নেমেছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ভাষ্য, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর, সিনিয়র স্টাফ নার্স, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পান। অথচ সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বারবার উপেক্ষিত হচ্ছেন।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে যে ৩টি প্রধান দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো হলো:
১. দশম গ্রেড প্রদান: সহকারী শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রদান।
২. উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান: ১০ বছর ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান সংক্রান্ত জটিলতা ও সমস্যার স্থায়ী সমাধান।
৩. শতভাগ পদোন্নতি: সহকারী শিক্ষকদের জন্য শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা প্রদান।
শিক্ষকরা বলছেন, এই দাবিগুলো শুধু বেতনের বিষয় নয়, বরং প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পেশাগত মর্যাদা ও প্রণোদনার বিষয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা শহীদ মিনার চত্বর থেকে সরে যাবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।



