রাজনীতি
রাজনীতিটা এখন ডাস্টবিনের মতো হয়ে গেছে: রুমিন ফারহানা
রাজনীতি এখন ডাস্টবিনের মতো হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তিনি বলেছেন, একজন নারী যিনি শিক্ষিতা, যার একটি ডিগনিফাইড প্রফেশন আছে, যে একটা ভালো ফ্যামিলিতে বিলং করে তিনি এই নোংরার মধ্যে নামবেন কেন? রাজনীতিটা তো এখন একটা ডাস্টবিনের মতো হয়ে গেছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া এসে এবং সবার হাতে সেলফোন চলে যাওয়ার পরে ‘বট আইডি’ ও ‘এআই’ আসার পরে ইটস এন এবসোলেটলি ডাস্টবিন। একটা ভদ্র ফ্যামিলির এডুকেটেড মেয়ে হু হ্যাজ অ্যা ভেরি ব্রাইট ফিউচারড এহেড।
উনি কেন পলিটিক্সে আসবেন? সবকিছু বিবেচনায় যদি কেউ চলেও আসে দলগুলো হয়তো অতো আস্থা রাখতে পারে না।
বিএনপি এবার যে ২৩৭ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে, তাদের মধ্যে ১০ জন নারী রয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলেছেন— রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব কমছে। সেই সঙ্গে বলা হচ্ছে, নারী নেতৃত্বের ৩৩ শতাংশও পূরণ করেনি কোনো কোনো দল।
বেশ কিছু জরিপেও এই বিষয়টি উঠে এসেছে। আপনিও একজন নারী। নারী নেতৃত্বকে কি আরেকটু প্রাধান্য দেওয়া উচিত ছিল কিনা? আসলে কমতি কোন জায়গায়? যোগ্যতার মাফকাঠিতে কমতি নাকি রাজনৈতিক যে পরিবেশ সেদিক থেকে কমতি— এমন প্রশ্নের জবাবে রুমিন ফারহানা এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বড় বড় পলিটিক্যাল পার্টি যেগুলো আছে, সেখানে কিন্তু যোগ্য নারী নেতৃত্বের খুব একটা অভাব আছে বলে মনে করি না।
হয়তো পুরুষের তুলনায় তাদের সংখ্যা কম। কিন্তু সেটা এত কম নয় যে, মাত্র ৩ বা ৪ শতাংশ নমিনেশন তারা পাবে। ১০০ এর মধ্যে তিন বা চারজন, বাট দ্যাট ইজ টু লো একচুয়ালি।
‘বড় দলগুলো ছোট দলগুলোকে একীভূত করে রাজতন্ত্র কায়েম করতে চায় এবং এজন্যই জোটের বিরোধিতা, আরপিও সংশোধনের বিরোধিতার বিষয়টি উঠে এসেছে’ এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা এবার জোটের প্রার্থী হবেন, তাদের যদি দলের নিবন্ধন থাকে, তাদের নিজের দলের মার্কায় নির্বাচন করতে হবে। এ বিষয়টির পক্ষে-বিপক্ষে দুরকমই যুক্তি আছে।
তিনি বলেন, সরকারের তরফে যেটা বলা হয়েছে— ছোট দলগুলো কখনো বিকশিত হতে পারে না। তারা সবসময় দেখা যায় হয় নৌকার সমর্থন নিয়ে পার্লামেন্টে যাচ্ছে। কখনো ধানের শীষের সমর্থন নিয়ে পার্লামেন্টে যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা আরো স্ট্রং হতে থাকে। ছোট ছোট দল অনেকগুলো আছে কিন্তু তারা সেভাবে ইন্ডিপেন্ডেন্টলি ফ্লারিশ করতে পারে না। যেন দলগুলো ফ্লারিশ করতে পারে, সে কারণেই বলা হয়েছে এবার যার মার্কা, সেই মার্কাতেই তাকে নির্বাচন করতে হবে।
বিএনপির এই নেত্রী আরো বলেন, যদি কোনো দলের নিবন্ধন ও প্রতীক থাকে, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি আপনার রাজনীতি কেন করছেন না? মানে আপনি একটা দলের মার্কা নিয়েছেন এবং সেই দলের রাজনীতি আপনি ধারণ করেন, না হলে তো আপনি ধানের শীষ বা নৌকার দলই করতে পারেন। তাহলে একটা ছোট দল রাখবার প্রয়োজনটা কি? এই কথাগুলো সরকারের তরফ থেকে এসছে। অন্যদিকে বিএনপির তরফ থেকে খুব ক্লিয়ারলি বলা হয়েছে— লাস্ট মোমেন্টে এসে যে আরপিওটা সংশোধন হলো, দীর্ঘদিন যারা এই বড় দলের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করেছে, তাদের তো একটা এক্সপেক্টেশন আছে যে আমরা পার্লামেন্টে যেতে চাই। আমরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে চাই। সেই এক্সপেক্টেশন থেকে হয়তো তারা বড় দলগুলোর সঙ্গে জোট করেছে এবং বড় দলগুলোও একসময় দেখিয়েছে যে আমার সঙ্গে এতগুলো রাজনৈতিক দল আছে। এতগুলো দল মিলে একটা জোট তৈরি হয়েছে। এটার উভয়দিকেই তর্ক আছে।
রাজনীতি
জামায়াতের সঙ্গে জোট এনসিপির
মনোনয়নপত্র জমার সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আসন বণ্টনের তীব্র দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিএনপি তার শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনা শেষ করার পর জামায়াতে ইসলামী এনসিপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। বিএনপির কাছ থেকে প্রত্যাশিত আসন না পাওয়া কয়েকটি দল এবং ক্ষুব্ধ নেতারা সরাসরি জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাতে নতুন রাজনৈতিক মিত্রতা তৈরি করা যায়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতায় যাচ্ছে—এমন গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হচ্ছে না। বরং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গী হতে যাচ্ছে এনসিপি। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের একাধিক বৈঠকে নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত। সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দুদফায় বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে দলটির একটি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভাগুলো থেকে জোটের বিষয়ে আলোচনা হলেও তা এড়িয়ে শুধু আসন সমঝোতার বিষয়টিতে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন দুই দলের নেতারা। সংস্কার, বিচারসহ বেশ কিছু মৌলিক ইস্যুতে একমত হয়েছেন তারা।
আসন সমঝোতা হলে এনসিপিকে কত আসন ছাড়তে হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বৈঠক সূত্র বলছে, এনসিপি অন্তত ৫০টি আসনের নিশ্চয়তা চায়। তবে জামায়াতে ইসলামী ৩০টি আসন দেওয়ার আলোচনা করেছে। বৈঠকে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত না হলেও ৩০-৫০টি আসন এনসিপিকে ছাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে এসব আসনে এনসিপির বর্তমান জোটসঙ্গী আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনও থাকতে পারে বলে জানা গেছে।
তবে এই প্রক্রিয়ায় জামায়াতের ১৮ আসন নিয়ে বিভিন্ন দলের মধ্যে টানাপোড়েনও শুরু হয়েছে। চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন ১০০ আসনের দাবি করলেও জামায়াত এতে সহজে সাড়া দিচ্ছে না। একইভাবে, মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও অন্তত ২৫টি আসনের জন্য অনড়। কিছু দল এমন শর্তও দিয়েছেন, যদি প্রত্যাশিত আসন সংখ্যা না পান, তারা সমঝোতা থেকে সরে যাবে। এই দলগুলো চাচ্ছে জামায়াত ১৫০ আসনে প্রার্থী দেন, বাকি ১৫০ আসন তাদের পক্ষের হবে।
জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আসন বণ্টন তিন দফার জরিপের ভিত্তিতে করা হচ্ছে। দলগুলোর মধ্যে কিছু মিত্র এমন আসন চাচ্ছে যেখানে তাদের হার নিশ্চিত, অথচ সেই আসনগুলোতে জামায়াতের প্রার্থীরা অবস্থান করছেন। নেতারা বলেছেন, প্রার্থীর পরিচিতি এবং জায়গার গুরুত্ব বিবেচনা করে সেই আসন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কিন্তু নিশ্চিত পরাজয়ের জন্য আসন কমানো হবে না।
জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, তারা দুই শতাধিক আসনে প্রার্থী দেবে। এনসিপি, এবি পার্টি এবং অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে মিলিয়ে প্রায় ৮০টি আসন তারা ছেড়ে দেবে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের বাসায় যান। আনুষ্ঠানিকভাবে অসুস্থ নেতাকে দেখতে যাওয়ার কথা বলা হলেও, দুই দলের সূত্র বলছে, আসন সমঝোতার বিষয়টিও বৈঠকে আলোচিত হয়েছে। আবদুল্লাহ তাহের বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে।’ নাহিদ ইসলামের বক্তব্য সরাসরি পাওয়া যায়নি, তবে তার দলের নির্বাহী পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ সদস্য জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতার পক্ষে মত দিয়েছেন।
এই জোট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে ফেসবুকে লিখেছেন, তারুণ্যের রাজনীতির কবর রচিত হতে যাচ্ছে। এনসিপি অবশেষে জামাতের সঙ্গে সরাসরি জোট বাঁধছে। সারাদেশে মানুষের এবং নেতাকর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে কিছু নেতার স্বার্থ হাসিল করতেই এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও লিখেছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। জোট চূড়ান্ত হওয়ার শর্তাবলীও স্পষ্ট করা হয়েছে। এনসিপি জামাত থেকে প্রাথমিকভাবে ৫০ আসন চেয়েছিল, কিন্তু আলোচনা শেষে চূড়ান্ত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ আসনে। এছাড়া, জোটের শর্ত অনুযায়ী বাকি ২৭০ আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী দিতে পারবে না এবং ওই আসনগুলোতে জামায়াতকে সমর্থন করবে। জোটসঙ্গী হিসেবে জামায়াত এনসিপিকে আসন প্রতি ১.৫ কোটি টাকা নির্বাচনী খরচও প্রদান করবে।
সমঝোতার আওতায় ৩০ আসনে কোন প্রার্থী চূড়ান্ত হবেন, তা নির্ধারণ করা হয়েছে দু’জনের মাধ্যমে—জামায়াতের পক্ষে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং এনসিপির পক্ষে নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী। এই দুইজন মিলিতভাবে এনসিপির ৩০ জন প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন।
এছাড়া, নাহিদ ইসলাম এবং ছোটন গং-এর মধ্যে আরও এক ধাপের সমঝোতা হয়েছে। ছোটন গং জানিয়েছেন, পশ্চিমারা প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে জামায়াতকে সংসদে দেখতে চায় না। সেই অনুযায়ী, নির্বাচনে জিতলে নাহিদ ইসলাম প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং বিরোধী দলে গেলে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হবেন।
তবে এই জোট ঘোষণার প্রক্রিয়া তরুণ রাজনীতিবিদদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
রাজনীতি
১৭ বছর পর ঢাকায় পা রাখলেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বহনকারী উড়োজাহাজ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটটি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে বেলা ১১টা ১২ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইট। এরও আগে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ফ্লাইটটি সিলেট ওসামানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সিলেটে অবতরণের কিছুক্ষণ আগেই তারেক রহমান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে লেখেন—‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’
১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে বাংলাদেশে ফিরলেন তারেক রহমান। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দিনগত রাত সোয়া ১২টা) তারেক রহমান ও তার স্ত্রী-কন্যাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
এদিকে তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও সিলেটে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিশেষ করে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় তার জন্য বিশাল সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি সংবর্ধনা মঞ্চে যোগ দেবেন। এরপর তিনি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখান গুলশানে তার ১৯৬ নম্বর বাসভবনে উঠবেন।
রাজনীতি
জামায়াতের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এনসিপি: আব্দুল কাদের
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের। এতে তারুণ্যের রাজনীতির কবর রচিত হতে যাচ্ছে এবং কার্যত এনসিপি জামায়াতের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব তথ্য জানান আব্দুল কাদের।
বিলুপ্ত গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাদের তার ফেসবুকে লেখেন, তারুণ্যের রাজনীতির কবর রচিত হতে যাচ্ছে। এনসিপি অবশেষে জামায়াতের সাথেই সরাসরি জোট বাঁধতেছে। সারাদেশে মানুষের, নেতাকর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জলাঞ্জলি দিয়ে গুটিকয়েক নেতার স্বার্থ হাসিল করতেই এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল এই জোটের ঘোষণা আসতে পারে। আর এরমধ্য দিয়ে কার্যত এনসিপি জামায়াতের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।’
আব্দুল কাদের আরও লেখেন, জামায়াতের থেকে এনসিপি চেয়েছিল ৫০ আসন, দরকষাকষির সর্বশেষ পর্যায়ে সেটা ৩০ আসনে গিয়ে চূড়ান্ত হয়েছে। জোটের শর্ত অনুযায়ী এনসিপি বাকি ২৭০ আসনে কোনো প্রার্থী দিতে পারবে না, সেগুলোতে জামায়াতকে সহযোগিতা করবে এনসিপি।
আব্দুল কাদের দাবি করেন, জামায়াতের পক্ষ থেকে জোটসঙ্গী হিসেবে আসনপ্রতি এনসিপিকে নির্বাচনি খরচ দেওয়া হবে দেড় কোটি টাকা। সমঝোতার ৩০ আসনে কারা চূড়ান্ত হবেন সেই দায়িত্ব জামায়াতের পক্ষ থেকে এনসিপির একজনকে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। তিনি হচ্ছেন জামায়াতের অন্যতম আস্থাভাজন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আর জামায়াতের দিক থেকে থাকবেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এই দুজন মিলেই এনসিপির ৩০ জন প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এই সমন্বয়ক বলেন, ছোটন গংয়ের সাথে নাহিদ ইসলামের আরও এক ধাপ আগানো সমঝোতা হয়েছে। ছোটন গং জানিয়েছে, পশ্চিমারা প্রধানমন্ত্রী কিংবা বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে সংসদে জামায়াতকে চায় না। সেই হিসেবে নির্বাচনে জিতলে নাহিদ ইসলাম হবেন প্রধানমন্ত্রী আর বিরোধী দলে গেলে নাহিদ হবেন বিরোধীদলীয় নেতা।
সবশেষে আব্দুল কাদের লেখেন, ‘এতো এতো তরুণ নিজের গোছানো ক্যারিয়ার, পরিবার-পরিজন বাদ দিয়ে দেশের হাল ধরতে এসেছিল, একটা সম্ভাবনা তৈরি করেছিল, স্বপ্ন দেখেছিল; নাহিদ ইসলামরা গতকাল রাতে গিয়ে সেই স্বপ্নকে মাটিচাপা দিয়ে এসেছেন!’
রাজনীতি
বিএনপি নেতাকর্মীদের সমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ পূর্বাচল
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ স্বদেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার পূর্বাচল-সংলগ্ন ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফুট এলাকা) এখন এক জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন আর স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা গণসংবর্ধনাস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে শুরু করে ৩০০ ফুট সড়কের দুই পাশ এখন লোকে লোকারণ্য। হাতে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকার পাশাপাশি তারেক রহমানের ছবি-সংবলিত ফেস্টুন নিয়ে কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন—‘মা-মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে’, ‘তারেক রহমান আসছে, বাংলাদেশ হাসছে’।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য সড়কের উত্তর অংশে দক্ষিণমুখী করে ৪৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৬ ফুট প্রস্থের একটি বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। বিশাল এই জমায়েতে আসা মানুষের সুবিধার্থে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থানে বড় স্ক্রিন বসানো হয়েছে। এ ছাড়া রাস্তার ল্যাম্পপোস্টগুলোতে লাগানো হয়েছে শতাধিক মাইক, যাতে দূর-দূরান্তের কর্মীরাও বক্তব্য শুনতে পারেন।
ঐতিহাসিক এই মুহূর্তকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির পাশাপাশি সাদাপোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুবিধার্থে মঞ্চের দুই পাশে অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে।
নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, আজ বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে। বিমানবন্দর থেকে নেতা-কর্মীদের অভিবাদন গ্রহণ করে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের গণসংবর্ধনা মঞ্চে আসবেন। সেখান থেকে তিনি তাঁর মা, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আজ তিনি আবার বাংলার মাটিতে পা রাখছেন।
রাজনীতি
৫৫ বছরের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে: সালাহউদ্দিন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বাংলাদেশের বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিভিআইপি গেটে সাংবাদিকদের তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, তারেক রহমানকে একনজর দেখার জন্য আমরা সবাই অপেক্ষা করছি। বাংলাদেশের বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। দেশবাসী দেখবেন, সারা বিশ্ববাসী দেখবে। ইনশাল্লাহ আমরা আশা করি, এই মুহূর্তটিকে আমরা ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে পালন করতে পারবো ভবিষ্যতের জন্য। আমরা দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর অবিরাম সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সমাপ্তি হয়েছে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, ফ্যাসিস্ট পালিয়েছে। গণতন্ত্র অবমুক্ত হয়েছে।
মগবাজারে বোমা হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং তাদের দোসররা দেশে এবং বিদেশে সক্রিয়। তারা চেষ্টা করবে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে। পারতপক্ষে নির্বাচনকে বানচাল করতে পারে। অবশ্যই সেটা দুঃস্বপ্ন। যারা এই অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সন্ত্রাসী কায়দায় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে আমরা সম্মিলিতভাবে সকলকে নিয়ে প্রতিহত করব ইনশাল্লাহ। এ সময় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে দেশবাসীর সহযোগিতা চান তিনি।




