রাজনীতি
৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি: সারজিস আলম
আগামী নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে যদি প্রতিটা ওয়ার্ডে আমাদের আহ্বায়ক কমিটি থাকে তাহলে ৩০০ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী দিতে পারবো। কমিটি গঠনের বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এনসিপির চার জেলার আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবদের সাক্ষাৎকার-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর জাতীয় পার্টির আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো অধিকার নেই। তারা যখন বলে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাদের জন্মদাতা যে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ যে তাদের পেলেপোষে বড় করেছে এর প্রমাণ তারা আবার নতুন করে দিচ্ছে। একদম স্পষ্ট করে বলি, আগামী নির্বাচনে ২৪-এর অভ্যুত্থানে যাদের নির্দেশে হাজারের অধিক খুন করা হয়েছে, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা থেকে শুরু করে হাজারে হাজারে গুম, খুন, বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড করা হয়েছে যাদের নির্দেশে, সেই খুনিরা এই বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না।
তিনি বলেন, আগামী বাংলাদেশ এবং জণগণের স্বার্থকে সামনে রেখে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়ে এলায়েন্সের সুযোগ থাকে, যদি আমরা ঐকমত্য হতে পারি তাহলে জনগণের স্বার্থে এলায়েন্স হতে পারে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলমান, তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন আমাদের শাপলা প্রতীক দিতে গিয়ে তারা তাদের জায়গা থেকে একটি লম্বা সময় স্বেচ্ছাচারিতা করেছে। আমাদেরকে শাপলা না দিয়ে শাপলা কলি দেওয়া হয়েছে। আমরা শাপলা কলি নিয়েই যাচ্ছি। নির্বাচন কমিশনকে আমাদের জায়গা থেকে আহ্বান করবো, তারা যদি ওই একই ধরনের আচরণ আগামীতে করেন তাহলে তাদের ওপর আস্থার সংকট তৈরি হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম প্রমুখ।
রাজনীতি
বিএনপি নেতাকর্মীদের সমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ পূর্বাচল
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ স্বদেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার পূর্বাচল-সংলগ্ন ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফুট এলাকা) এখন এক জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন আর স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা গণসংবর্ধনাস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে শুরু করে ৩০০ ফুট সড়কের দুই পাশ এখন লোকে লোকারণ্য। হাতে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকার পাশাপাশি তারেক রহমানের ছবি-সংবলিত ফেস্টুন নিয়ে কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন—‘মা-মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে’, ‘তারেক রহমান আসছে, বাংলাদেশ হাসছে’।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য সড়কের উত্তর অংশে দক্ষিণমুখী করে ৪৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৬ ফুট প্রস্থের একটি বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। বিশাল এই জমায়েতে আসা মানুষের সুবিধার্থে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন স্থানে বড় স্ক্রিন বসানো হয়েছে। এ ছাড়া রাস্তার ল্যাম্পপোস্টগুলোতে লাগানো হয়েছে শতাধিক মাইক, যাতে দূর-দূরান্তের কর্মীরাও বক্তব্য শুনতে পারেন।
ঐতিহাসিক এই মুহূর্তকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির পাশাপাশি সাদাপোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুবিধার্থে মঞ্চের দুই পাশে অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে।
নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, আজ বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে। বিমানবন্দর থেকে নেতা-কর্মীদের অভিবাদন গ্রহণ করে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের গণসংবর্ধনা মঞ্চে আসবেন। সেখান থেকে তিনি তাঁর মা, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আজ তিনি আবার বাংলার মাটিতে পা রাখছেন।
রাজনীতি
৫৫ বছরের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে: সালাহউদ্দিন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বাংলাদেশের বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিভিআইপি গেটে সাংবাদিকদের তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, তারেক রহমানকে একনজর দেখার জন্য আমরা সবাই অপেক্ষা করছি। বাংলাদেশের বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। দেশবাসী দেখবেন, সারা বিশ্ববাসী দেখবে। ইনশাল্লাহ আমরা আশা করি, এই মুহূর্তটিকে আমরা ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে পালন করতে পারবো ভবিষ্যতের জন্য। আমরা দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর অবিরাম সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সমাপ্তি হয়েছে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, ফ্যাসিস্ট পালিয়েছে। গণতন্ত্র অবমুক্ত হয়েছে।
মগবাজারে বোমা হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং তাদের দোসররা দেশে এবং বিদেশে সক্রিয়। তারা চেষ্টা করবে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে। পারতপক্ষে নির্বাচনকে বানচাল করতে পারে। অবশ্যই সেটা দুঃস্বপ্ন। যারা এই অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সন্ত্রাসী কায়দায় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে আমরা সম্মিলিতভাবে সকলকে নিয়ে প্রতিহত করব ইনশাল্লাহ। এ সময় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে দেশবাসীর সহযোগিতা চান তিনি।
রাজনীতি
সিলেট পৌঁছেছেন তারেক রহমান
যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সিলেট এসে পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
উড়োজাহাজটি যাত্রাবিরতি শেষে সিলেট থেকে রওনা হয়ে দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
এর আগে তারেক রহমানকে বহনকারী বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিজি-২০২ ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। প্রায় ১৭ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরার এই যাত্রায় তার সঙ্গে আছেন স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।
জানা যায়, ফ্লাইট ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের চার ঘণ্টা আগে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বাসা থেকে বের হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে।
ডা. জোবাইদা রহমান ও ব্যারিস্টার জাইমা রহমান ছাড়াও এ যাত্রায় তারেক রহমানের সফরসঙ্গী হয়েছেন তারেক রহমানের মিডিয়া টিমের প্রধান আবু আবদুল্লাহ সালেহ, ব্যক্তিগত সহকারী রহমান সানি ও তাবাসসুম ফারহানা।
রাজনীতি
ছয় স্তরের নিরাপত্তায় থাকবেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেগা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, যার আওতায় রয়েছে ছয় স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে গুলশান এলাকার তার বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে আচ্ছাদিত থাকবে। বিশেষভাবে, এভারকেয়ার হাসপাতাল, বিমানবন্দর এবং তিনশ’ ফিট রোড এলাকা ড্রোন উড়ানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নিরাপত্তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারেক রহমানের চারপাশে ১২ ঘণ্টা ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা টানেল তৈরি করবে। ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) থেকে প্রায় ১৫০-২০০ সাদা পোশাকধারী সদস্য মোতায়েন করা হবে, যারা তার কনভয়ের সঙ্গী হয়ে তাকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাবে। এছাড়া, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে নিরাপত্তার তদারকি করবে।
এদিকে, তারেক রহমানের সমাবেশ উপলক্ষে স্থাপিত মঞ্চের উচ্চতা ১৫ ফুট পর্যন্ত করা হয়েছে। স্নাইপার হামলা ও গ্রেনেড নিক্ষেপের সম্ভাবনা মাথায় রেখে মঞ্চের অবস্থান সাতবার পরিবর্তন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিবারই স্নাইপার অ্যাটাকের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং মঞ্চের চারপাশে বুলেটপ্রুফ কাঁচ স্থাপন করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ‘তারেক রহমানের নিরাপত্তায় কোনো রকম শঙ্কা নেই। ডিএমপি ও অন্যান্য সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।’
সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিএসএফ, সেনাবাহিনীর এয়ার ডিফেন্স ইউনিট, ডিবি, র্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ বিভিন্ন সংস্থা তাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা উঁচু ভবনের ছাদেও অবস্থান নিয়েছেন, যাতে স্নাইপার হামলার কোনো সুযোগ না থাকে।
ডিএমপি কমিশনার একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং তার চলাচলের সড়ক পথে যেকোনো প্রকার ড্রোন উড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ড্রোন উড্ডয়ন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, বিএনপি পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, দলের নেতারা শুধুমাত্র বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানাতে যাবেন। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য বিমানবন্দরের অভ্যর্থনাস্থল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে।
তারেক রহমানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সিএসএফ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং দশ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবকও নিরাপত্তা কাজে সহায়তা করবেন। এছাড়া, তার দেশে ফেরার পর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের দুটি কেবিন ক্রু সদস্যকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে, যাতে তার নিরাপত্তা কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।
রাজনীতি
রাজকীয় সংবর্ধনার জন্য প্রস্তুত মঞ্চ, ‘লিডার আসছে’ স্লোগানে মুখর ৩০০ ফিট
দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেশের মাটিতে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন ঘটতে যাচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজকীয় সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেছে তার দল বিএনপি; রাজধানীর পূর্বাচলে ৩০০ ফিট এলাকায় তৈরি করা হয়েছে সুবিশাল এক মঞ্চ।
এদিকে নেতাকে একনজর দেখতে এবং তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকেই ৩০০ ফিট হাইওয়ে এলাকায় ঢল নেমেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিএনপির নেতাকর্মীদের। কুড়িল থেকে শুরু করে মঞ্চ এলাকা পর্যন্ত যেন তিল ধারণের জায়গা নেই।
কেউ কেউ এলাকাভিত্তিক জটলা পাকিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, আবার কেউ সমবেতভাবে মিছিলে মুখর। এককথায় সবার মনেই উৎসবের আমেজ। সবার মুখে মুখে ফিরছে একটিই স্লোগান— লিডার আসছে।
এ ছাড়া, স্লোগান-প্ল্যাকার্ড আর নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাসে পুরো এলাকা যেন বিশাল ‘উৎসবকেন্দ্রে’ পরিণত হয়েছে। আর নেতাকর্মীদের খাবারের জোগান দিতে পথে পথে হরেক রকমের খাবার ও পানি বিক্রি করছেন হকাররা। কিছু দূর পরপর দেখা মিলছে স্পিকারবাহী ট্রাক। সেখানে বাজছে দলীয় ও দেশাত্মবোধক গান।
পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসংখ্য সদস্য। রাত ৯টার দিকে মঞ্চ এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বাহারুল আলম।
রংপুর থেকে সমাবেশ এলাকায় এসেছেন বিএনপি কর্মী রাজু আহমেদ। তিনি বলেন, বহু বছর পর নেতা দেশে আসছেন। এটি আমাদের কাছে ঈদের দিনের মতো উৎসবের। সব কষ্ট ভুলে আমরা এখানে উদযাপন করতে এসেছি। নেতার ফেরার মধ্য দিয়ে আমাদের দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে।
সরিষাবাড়ী থেকে আসা রুদ্র পলাশ বলেন, আমাদের দীর্ঘ সময় নির্যাতন সহ্য করে পার করতে হয়েছে। গ্রাম থেকে অনেক মানুষ উচ্ছ্বাস নিয়ে এসেছেন শুধু প্রিয় নেতার প্রত্যাবর্তন উদযাপন করতে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আজকের এই রাত আমাদের কাছে ‘চাঁদ রাতের’ মতো মনে হচ্ছে। আমরা সারারাত এখানেই থাকব।
জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে এসে সরাসরি সংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হবেন তারেক রহমান। এই প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করতে ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ। গত রোববার দুপুর থেকে দিন-রাত কঠোর পরিশ্রমে এটি প্রস্তুত করেছেন শ্রমিকরা। সংবর্ধনা কমিটির সদস্যরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান আসবেন। ওইদিন এই এলাকা মানুষের মহামিলন ও মহামেলায় পরিণত হবে বলে আমরা নিশ্চিত।
এমকে




