অর্থনীতি
২০২৬ সালে ১০ শতাংশ কমবে জ্বালানি তেলের দাম: বিশ্বব্যাংক
তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নামবে, যা এখন প্রতি ব্যারেল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ ডলারে। ইতিবাচক প্রভাব পড়বে কৃষি ও খাদ্যখাতে। ফলে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭ শতাংশ কমতে পারে। মূলত চীনে তেলের ব্যবহার স্থিতিশীল। ফলে বৈশ্বিকভাবে তেলের বাজারে অস্থিরতা থাকবে না।
২০২৬ সালে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা টানা চতুর্থ বছর পতনের লক্ষণ। দুর্বল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান তেল উদ্বৃত্ত এবং ক্রমাগত নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে ২০২৫ এবং ২০২৬ উভয় সময়েই দাম ৭ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক অক্টোবর ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম নির্ধারণে জ্বালানি তেল বড় ভূমিকা রাখে। জ্বালানি খাতের দাম কমায় ২০২৫ সালে জ্বালানির দাম আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ১০ শতাংশ কমবে। ২০২৭ সালে তা আবার প্রায় ৬ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংস্থাটি জানায়, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে ২০২৫ সালের শুরু থেকেই। শুধু জ্বালানি তেলের দাম কমা নয় আরও কিছু কারণে কমেছে পণ্যের দাম। তার মধ্যে অন্যতম চীনে তেলের চাহিদা বৃদ্ধি কমে যাওয়া পাশাপাশি বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ বেড়ে যাওয়া। জ্বালানির দাম কমার ফলে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি কমছে, অন্যদিকে চাল ও গমের দাম কমার ফলে কিছু উন্নয়নশীল দেশে খাদ্য আরও সাশ্রয়ী হয়েছে।
পণ্য বাজার বিশ্ব অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করছে দাবি করে সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইন্দ্রমিত গিল বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের দামের পতন বিশ্বব্যাপী ভোক্তা-মূল্য মুদ্রাস্ফীতি কমার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। কিন্তু এই স্বস্তি স্থায়ী হবে না। সরকারগুলোর উচিত তাদের আর্থিকখাতকে সুশৃঙ্খল করা। প্রতিটা দেশের ব্যবসা-প্রস্তুত করতে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে আরও ত্বরান্বিত করতে বর্তমান সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’
সংস্থাটি জানায়, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড যানবাহনের চাহিদা বৃদ্ধি এবং চীনে তেলের ব্যবহার স্থবির হয়ে পড়ায় তেলের চাহিদা আরও ধীরে ধীরে কমছে। অপরিশোধিত তেলের দাম ২০২৫ সালে গড়ে ৬৮ ডলার থেকে ২০২৬ সালে ৬০ ডলারে নেমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে- যা পাঁচ বছরের সর্বনিম্ন।
সংস্থাটি জানায়, ২০২৫ সালে ৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ০ দশমিক ৩ শতাংশ কমবে খাদ্যের দাম। রেকর্ড উৎপাদন এবং বাণিজ্যিক অস্থিরতার কারণে ২০২৫ সালে সয়াবিনের দাম কমছে তবে আগামী দুই বছরে স্থিতিশীল হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ২০২৬ সালে কফি এবং কোকোর দাম কমার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে, ২০২৫ সালে সারের দাম ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, মূলত বাণিজ্য বিধিনিষেধের কারণে। তবে ২০২৬ সালে তা কমে আসবে। এই বৃদ্ধি কৃষকদের লাভের মার্জিনকে আরও ক্ষতি করবে এবং ভবিষ্যতের ফসলের ফলন নিয়ে উদ্বেগ বাড়বে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০২৫ সালে মূল্যবান ধাতুর দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, যার পেছনে রয়েছে নিরাপদ সম্পদের চাহিদা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রমাগত কেনাকাটা। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্যাপকভাবে সম্পদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে সোনা। ২০২৫ সাল শেষে সোনার দাম ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী বছর এটি আরও ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে ২০১৫-২০১৯ সালের গড় মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হবে। ২০২৫ সালে রূপার দাম রেকর্ড বার্ষিক গড় হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে, যা ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং ২০২৬ সালে আরও ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
সংস্থাটি আরও জানায়, দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য উত্তেজনা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তার মধ্যে যদি বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি কম তবে পণ্যের দাম প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হ্রাস পেতে পারে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি তেল উৎপাদন হয়েছে। বৈদ্যুতিক যানবাহনের বিক্রয় বেড়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে তেলের চাহিদা আরও কমিয়ে দিতে পারে।
বিপরীতে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সংঘাত তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে এবং সোনা ও রুপার মতো নিরাপদ আশ্রয়স্থল পণ্যের চাহিদা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তেলের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞার বাজারের প্রভাবও মূল্যকে বেসলাইন পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দ্রুত সম্প্রসারণ এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে শক্তি এবং অ্যালুমিনিয়াম এবং তামার মতো বেস ধাতুর দাম বাড়তে পারে, যা এআই অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য।
বিশ্বব্যাংকের উপ-প্রধান অর্থনীতিবিদ আয়হান কোস বলেন, তেলের দাম কমলে উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান এগিয়ে একটি সময়োপযোগী সুযোগ তৈরি হয়। ব্যয়বহুল জ্বালানি ভর্তুকি পর্যায়ক্রমে অবকাঠামো এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে ব্যবহার করা যায়। যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘমেয়াদী উৎপাদনশীলতা জোরদার করে। এই ধরনের সংস্কার ব্যয়কে খরচ থেকে বিনিয়োগে স্থানান্তরিত করতে পারে। জ্বালানি ভর্তুকি না থাকলে টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।
অর্থনীতি
দেশের সব বন্দরে খুব দ্রতই আরটিজিএস চালু করা হবে: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘আমদানি-রপ্তানি কাজ সহজতর করার লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক লেনদেনের জন্য দেশের সকল বন্দর ও বিমান বন্দরে খুব দ্রতই আরটিজিএস (রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট) চালু করা হবে। দেশের প্রথম জেলা হিসেবে কক্সবাজার জেলাকে ক্যাশলেস জেলা হিসেবে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক নাগরিকের হাতে ছয়/সাত হাজার টাকার মধ্যে স্মার্ট ফোন পৌঁছাতে হবে। প্রান্তিক এলাকায় নারী এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’
শনিবার বিকেলে নগরের রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন বণিক সমিতি, চেম্বার প্রতিনিধি, বন্দর, কাস্টমস, শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও তফসিলি ব্যাংকের আঞ্চলিক প্রধানসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষরা এতে অংশ নেন।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য সিঙ্গাপুর, দুবাই ও হংকং এর ন্যায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি করতে হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চল বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এ অঞ্চল সমুদ্র, পাহাড় ও সমতলের এক অন্যন্য অঞ্চল। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল, ভারী শিল্প, জ্বালানি অবকাঠামো এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সিংহভাগ এ অঞ্চলের ওপর নির্ভরশীল। তবে এ সম্ভাবনাকে পূর্ণ রূপ দিতে আর্থিক খাতের সুদৃৃঢ় ভূমিকা অপরিহার্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো উৎপাদনমুখী খাতে পর্যাপ্ত ও স্বল্পমূল্যের ঋণপ্রবাহ নিশ্চিত করা।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন স্কিমসমূহের অব্যহৃত ফান্ড এ অঞ্চলের উপযুক্ত গ্রাহকের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। আর্থিক অর্ন্তভূক্তির অংশ হিসেবে প্রত্যেক ব্যাংককে অন্তত একটি বিদ্যালয়ে আর্থিক সাক্ষরতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লেনদেন ও ক্যাশলেস লেনদেনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর উপাচার্য ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. খসরু পারভেজ। বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম অফিসে প্রশাসন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আশিকুর রহমানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল আমিন চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করণীয় বিষয়ক ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন।
অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধরা অর্থনৈতিক, ব্যাংকিং, বন্দর, কাস্টমস, রপ্তানি, কৃষি, শিল্প খাতের নানা সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন ও সুপারিশ তুলে ধরেন। এ বিষয়ে গভর্নর তাৎক্ষণিক কিছু বিষয়ে সমাধান প্রদান করেন এবং কিছু বিষয়ে ভবিষ্যতে নীতি প্রণয়ণের বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন। সভাপতির বক্তব্যে মো. মকবুল হোসেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকে আর্থিকর সাক্ষরতার বিষয়টি অর্ন্তভূক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থনীতি
৫ শতাংশ টাকাও খরচ করতে পারেনি ৮ মন্ত্রণালয়-বিভাগ
চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) আটটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের বরাদ্দের ৫ শতাংশের বেশি টাকা খরচ করতে পারেনি। এর মধ্যে সংসদবিষয়ক সচিবালয় এক টাকাও খরচ করেনি।
অন্য সাতটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হলো—আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি), পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ।
সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) জুলাই-নভেম্বর মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে। সেখানে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, সংসদবিষয়ক সচিবালয়ের এক প্রকল্পে ২০ লাখ বরাদ্দ থাকলেও এখনো কোনো টাকা খরচ করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
একইভাবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ১৫টি প্রকল্পে ৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। পাঁচ মাসে খরচ হয়েছে মাত্র ২৯৩ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকার বিপরীতে খরচ মাত্র ৮৬ কোটি টাকা।
এ ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বরাদ্দের ২ দশমিক ৩১ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) ২ দশমিক ১২ শতাংশ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ, জননিরাপত্তা বিভাগ ১ দশমিক ২৫ শতাংশ খরচ করেছে।
গত জুলাই-নভেম্বর মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হার মাত্র ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সব মিলিয়ে ২৮ হাজার ৪৩ টাকা খরচ হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা কম।
চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকার এডিপি নেওয়া হয়েছে। ১১৯৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অর্থনীতি
রেমিট্যান্স সংগ্রহে চতুর্থ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
রেমিট্যান্স আহরণে অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ‘রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ অর্জন করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সারা দেশের মধ্যে রেমিট্যান্স সংগ্রহে চতুর্থ স্থান অধিকার করায় ব্যাংকটিকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয় ।
গত বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল-এর কাছ থেকে এই সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।
অ্যাওয়ার্ড গ্রহণকালে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহা. খালেদুজ্জামান এবং আন্তর্জাতিক ও হিসাব মহাবিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ দ্রুত এবং নিরাপদে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক আধুনিক প্রযুক্তি ও গ্রাহকবান্ধব সেবা নিশ্চিত করে আসছে। এই স্বীকৃতি ব্যাংকের প্রতি প্রবাসীদের আস্থা আরও সুদৃঢ় করবে এবং ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত করবে ।
অর্থনীতি
১৭ দিনেই রেমিট্যান্স ছাড়ালো দুই বিলিয়ন ডলার
চলতি মাসের শুরুতে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। প্রথম ১৭ দিনে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এ ধরনের প্রবাহ অব্যাহত থাকলে, ডিসেম্বর শেষে প্রবাসী আয় সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সূচনা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে প্রবাসী আয়ে উল্লম্মখ প্রবাহের ফলে ব্যাংকগুলোতে ডলারের উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার যোগান-চাহিদার ভারসাম্য ঠিক রাখতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত মোট ডলার ক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৭১ মিলিয়ন বা ২ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, চলতি মাসের ১৭ ডিসেম্বর এসেছে ১৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর ১ থেকে ১৭ ডিসেম্বর সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২০০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৭৬ কোটি ডলার। সেই হিসেবে ১৭ দিনে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৫০৫ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ২৯০ কোটি ডলার। ফলে এই সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগ, প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের উন্নতি রেমিট্যান্স আয় বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও স্বস্তিতে আছে।
এদিকে সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার ২৫২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
অর্থনীতি
রবিবার আইনশৃঙ্খলা পর্যালোচনায় বসছে ইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট উপলক্ষ্যে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনায় সভায় বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২১ ডিসেম্বর (রোববার) সকাল ১০টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে এই সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারসহ রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সভায় দেশের বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং নির্বাচনের আগে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে যৌথ বাহিনীর ভূমিকা ও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ। প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য প্রণীত ‘আচরণ বিধিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখা এবং বিধি বাস্তবায়ন ও বিবিধ বিষয়ে পর্যালোচনা।
যাদের উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে; সভার গুরুত্ব বিবেচনায় সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানগণ; প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব; সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার; মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি); এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালকরা এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার।




