আইন-আদালত
আইসিটি মামলায় অভিযুক্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) দায়ের করা মামলায় যাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বা সরকারি কোনো পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সরকারের জারি করা গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩-এর সংশোধনের মাধ্যমে এই বিধান কার্যকর করা হয়েছে। সোমবার রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন অধ্যাদেশ জারি করে আইনে নতুন ২০(গ) ধারা সংযোজন করেন। অধ্যাদেশটি জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর হয়েছে।
নতুন ধারা অনুযায়ী, আইনের ৯(১) ধারার অধীনে আইসিটিতে যাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হয়েছে, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা সরকারি দায়িত্ব পালনে অযোগ্য বলে গণ্য হবেন। একইসঙ্গে, স্থানীয় সরকার সংস্থার সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচন বা নিয়োগেও তারা অযোগ্য হবেন। এ ছাড়া, এ ধরনের ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের কোনো সরকারি চাকরিতেও নিয়োগ বা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তবে, পরবর্তীতে যদি কেউ ট্রাইব্যুনাল থেকে অব্যাহতি পান বা খালাসপ্রাপ্ত হন, তাহলে তার ওপর থেকে এই অযোগ্যতা তুলে নেওয়া হবে।
এ আইনের সংশোধনের কারণ ব্যাখ্যা করে আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ের প্রয়োজনেই এই সংশোধন করা হয়েছে, কারণ দেশ এখন এক বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতিতে পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তবে এই সংশোধনের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এটি ন্যায়বিচারের সবচেয়ে মৌলিক নীতিকে লঙ্ঘন করে। কারণ অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত একজন ব্যক্তি নির্দোষ।
কেউ কেবল অভিযুক্ত হলেই যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন বা সরকারি চাকরিতে যেতে না পারেন, তা বিচার ছাড়া শাস্তি দেওয়ার শামিল।
তিনি আরও বলেন, ধরা যাক, আমি আর আপনি দুজনেই নির্বাচনে প্রার্থী। আমি চাইলে আপনার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করতে পারি। মামলার বিচার শুরু হওয়ার আগেই আপনাকে আপনার নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু ততদিনে নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে—এটা কি ন্যায়বিচার?
শাহদীন মালিক এই সংশোধনকে ‘পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি বিচার প্রক্রিয়ার মৌলিক ধারণার পরিপন্থী।
১৮শ সালের আগের যুগে ফিরে যখন মানবাধিকারের কোনো ধারণাই ছিল না, সে সময়ে ফিরে না গেলে এমন আইন দেখা যায় না। সংশোধিত এই খসড়াটির অনুমোদন গত ৪ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদে চূড়ান্ত হয়। তখন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছিলেন, আইসিটি আইনে অভিযুক্তদের সাধারণ অপরাধীর মতো দেখা যায় না; তারা বিপজ্জনক অপরাধী। সংবিধানের ৪৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের কিছু অধিকার আগেই সীমিত করা হয়েছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এই পদক্ষেপ বিবেচনার যোগ্য।
এ পর্যন্ত জুলাই বিদ্রোহ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি মামলায় ৬৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হয়েছে।

আইন-আদালত
নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না শেখ হাসিনা ও কামাল

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন। সে অনুযায়ী আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কারণ এরই মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন সংশোধন করে নতুন বিধানটি যুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্য হবেন না। এছাড়া স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। অন্য কোনো সরকারি পদেও অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না। তবে ট্রাইব্যুনালে কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করার পর অভিযোগ গঠন করে এখন সাক্ষীগ্রহণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এর ফলে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে, মামলায় অভিযোগ দাখিল হলেই নির্বাচনে অযোগ্য করা যৌক্তিক হবে কি না- এ প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, কাউকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল হলেই হবে না। তা গ্রহণ হতে হবে। যখন গ্রহণ করলো তখন কগনিজেন্স (আমলে) নেওয়া হলো ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ১৯০ ধারা অনুযায়ী।
আপিল বিভাগের সাবেক এ বিচারপতির মতে, তদন্ত করার পরে যদি অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয় তবেই একজন আসামি হন। এর আগে তাকে আসামি বলা যাবে না। তবে সবচেয়ে ভালো হবে অভিযুক্ত হলেই তাকে অযোগ্য করা।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে প্রস্তাব তৈরির জন্য ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি কমিশন তাদের সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে। সেখানে আদালতঘোষিত ফেরারি আসামিদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিশেষ আইনে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণার সুপারিশ করা হয়।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পরে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) বিল, ২০১৩ ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। বিলের ১২ ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে দণ্ডিত হলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য হবেন।
আইন-আদালত
ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্তরা এমপি হতে পারবেন না

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শাখা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নিম্ন লিখিত অবস্থানগুলোতে থাকার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্য হবেন না। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। এছাড়া অন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।
এতে আরও বলা হয়েছে, উপধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, উক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।
আইন-আদালত
এক সপ্তাহের মধ্যে অনেকগুলো ঘটনা ঘটবে: চিফ প্রসিকিউটর

বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে আলোচিত গুমের কয়েকটি মামলার তদন্ত রিপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এটা গতকালই বলে দিয়েছি, খুব শিগগিরই এ সপ্তাহের মধ্যে এটার (গুমের মামলার) বেশ অনেকগুলো ঘটনার কথা বলেছি, অনেকগুলো ঘটনা ঘটবে, আপনারা দেখবেন। আমরা আজকে এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলতে চাচ্ছি না।
বিচারে দেরি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এগুলো (বিভিন্ন মামলায় দেওয়া ফরমাল চার্জ) হচ্ছে তাদের জন্য জবাব। তদন্ত চলাকালে যে সময় দরকার ছিল, সে সময় পার হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টগুলো হাতে আসার পর একটার পর একটার ফরমাল চার্জ দাখিল হচ্ছে। বিচারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। অনেকগুলো মামলা চূড়ান্ত পর্বে রয়েছে। সুতরাং জাতির যে প্রত্যাশা ছিল যে এই নিকৃষ্টতম হত্যাকারীদের, গণহত্যাকারীদের, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারীদের বিচার এই বাংলাদেশে যাতে হয়, সেটা হওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সঠিক পথে আছে। আশা করছি মানুষের প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে এ বিচার কাজ সম্পন্ন হবে।
ওবায়দুল কাদেরের মামলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যেটা বারবার বলেছি, সব তো আর একবারে হবে না। ক্রমান্বয়ে একটার পর একটা হতে থাকবে। এগুলো মেচিউর স্টেজে আছে। যথাসময়ে তার ফলাফল আপনারা দেখতে পাবেন। প্রত্যেককে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কেউ পার পেয়ে যাবেন, কাউকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে, কেউ পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করবেন — এই ধরনের দুরাশা করে লাভ নেই। ন্যায়বিচার সব সময় তার নিজ গতিতে চলবে।
গুমের মামলার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এটা গতকালই বলে দিয়েছি, খুব শিগগিরই এ সপ্তাহের মধ্যে এটার বেশ অনেকগুলো ঘটনার কথা বলেছি, অনেকগুলো ঘটনা ঘটবে, আপনারা দেখবেন। আমরা আজকে এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলতে চাচ্ছি না।
তদন্ত শেষ হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, গুমের মামলা তো অনেক, সবগুলো শেষ না হলেও প্রধান কয়েকটি মামলার তদন্ত রিপোর্ট এই সপ্তাহে দাখিল হবে। এটা যেহেতু জটিল (কমপ্লেক্স) মামলা, সেই জন্য খুব খুঁটিনাটি বিষয় চেক করছি। তদন্তের রিপোর্ট এই সপ্তাহে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
প্রধান আসামি শেখ হাসিনার ব্যাপারে তিনি বলেন, বাকিটুকু দেখতে পাবেন।
আইন-আদালত
মাহবুব উল আলম হানিফসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় তিনটি অভিযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আল হানিফসহ চার জনের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ দেন।
পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, মাহবুব উল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হিসাবে আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্রলীগ যথেষ্ট-ওবায়দুল কাদেরের এমন মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে একমত পোষণ করা, ২৯ জুলাই কুষ্টিয়ায় একটি মিটিং করে ছাত্র জনতাকে হত্যার নির্দেশ দেওয়া ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এবং ছয়জনকে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। আজকে এসব অভিযোগ আমলে নিয়েছেন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আগামী ১৪ অক্টোবর পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে উপস্থিত করার জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।
এর আগে রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে দুপুর দেড়টা থেকে চারটার মধ্যে কুষ্টিয়ার বক চত্বর থেকে অনুমান ৫০ গজ উত্তরে শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, বার্মিজ গলিতে সুরুজ আলী বাবু, হরিপুর গামী রাস্তা আড়ং এর সামনে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুত্তাকিন, মো. উসামা, তুলা পট্টির গলিতে ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী ও ফায়ার সার্ভিসের বিপরীত দিকে রাস্তার ওপর চাকুরিজীবী ইউসুফ শেখ শহীদ হন।
কাফি
আইন-আদালত
থাইল্যান্ডে সিকদার পরিবারের ১৩৩ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধের আদেশ

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের তিন সন্তানের নামে থাইল্যান্ডের সাতটি কোম্পানিতে থাকা ১৩৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
জয়নুল হকের তিন সন্তান: রন হক শিকদার, রিক হক সিকদার ও পারভীন হক সিকদার। তাদের নামে থাইল্যান্ডের সাত কোম্পানিতে থাই মুদ্রায় প্রায় ৩৫ কোটি ৩০ লাখ বাথের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা) বিনিয়োগ রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
জব্দের আদেশ পাওয়া কোম্পানিগুলো হলো—কেওআই রেস্টুরেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, সিকদার গ্রুপ লিমিটেড, সিকদার হোল্ডিংস লিমিটেড, আর অ্যান্ড আর রেস্টুরেন্ট গ্রুপ লিমিটেড, জিরানা কোম্পানি লিমিটেড, জেআর আর্কিটেক্টস ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেড ও সিকদার অ্যান্ড গ্যারেট ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড।
দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান আবেদনটি করেন। আবেদনে বলা হয়, সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি তদন্ত দল সিকদার গ্রুপ সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করছে।
সেখানে আরও বলা হয়, আসামিরা তাদের অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছে। তারা যদি এ প্রক্রিয়ার মধ্যে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে সক্ষম হয়, তবে তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হবে। সরকারের পক্ষে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এসব সম্পত্তি জব্দ করা জরুরি।