আন্তর্জাতিক
ভারতের প্রধান বিচারপতির দিকে জুতা ছুড়ে মারলেন আইনজীবী

ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এক নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) দেশটির প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়কে লক্ষ্য করে এক বৃদ্ধ ব্যক্তি জুতা ছুড়ে মেরেছেন। তবে জুতাটি বেঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছায়নি। তৎক্ষণাৎ নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত ওই ব্যক্তিকে আটক করেন।
এমন ঘটনায় বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে দেশটির প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘আমিই শেষ ব্যক্তি যিনি এই ধরণের ঘটনায় আক্রান্ত। শুনানি চলতে দিন।’ ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, প্রধান বিচারপতির দিকে জুতা নিক্ষেপকারী ব্যক্তি একজন আইনজীবী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দিনের প্রথম শুনানি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই বৃদ্ধ ব্যক্তি স্লোগান দিতে থাকেন, ‘সনাতনের অপমান ভারত সহ্য করবে না।’ এরপরই তিনি প্রধান বিচারপতির দিকে জুতা ছুড়ে মারেন।
নিরাপত্তাকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে এগিয়ে গিয়ে তাকে কোর্টরুম থেকে বের করে নিয়ে যান। জানা গেছে, ওই ব্যক্তির কাছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও কর্মচারীদের জন্য প্রদত্ত প্রক্সিমিটি কার্ড ছিল। কার্ডে তার নাম লেখা ছিল কিশোর রাকেশ।
এনডিভির খবরে বলা হয়, প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করার পেছনে তার উদ্দেশ্য জানা যায়নি। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিস্তারিত জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ঘটনার সময় প্রধান বিচারপতি গাভাই ছিলেন সম্পূর্ণ শান্ত। এক আইনজীবী জানান, তিনি হেসে বলেন, ‘আমিই শেষ ব্যক্তি যিনি এই ধরনের ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছি। অনুগ্রহ করে শুনানি চালিয়ে যান।’
সিনিয়র আইনবিদ ইন্দিরা জয়সিং এক্স বার্তায় বলেন, ‘ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা উচিত। আইনজীবীর নাম প্রকাশ করা উচিত এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এটি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ওপর একটি স্পষ্ট বর্ণবাদী আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে।’
কয়েক দিন আগে খাজুরাহোর একটি ৭ ফুট ভাঙা বিষ্ণুমূর্তি পুনর্নির্মাণের আবেদন সংক্রান্ত এক মামলায় মন্তব্য করে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ভারতের প্রধান বিচারপতি। আবেদনটি খারিজ করার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘যাও, দেবতাকে নিজেই কিছু করতে বলো।’
এই মন্তব্যকে অনেকেই ভগবান বিষ্ণুর ভক্তদের প্রতি অসম্মানজনক বলে আখ্যা দেন। পরে গাভাই ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে আমার মন্তব্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি সব ধর্মকেই সম্মান করি।’

আন্তর্জাতিক
চিকিৎসায় নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী

চিকিৎসাবিদ্যায় অনবদ্য অবদান রাখায় চলতি বছর যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন চিকিৎসাবিজ্ঞানী। সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় সুইডেনের স্টকহোম থেকে ২০২৫ সালের চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট।
চিকিৎসায় এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা হলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক মেরি ই. ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড রামসডেল এবং জাপানের শিমন সাকাগুচি। পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স নিয়ে গবেষণার জন্য চলতি বছর তাদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট বলেছে, মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমের কাজ হলো শরীরকে জীবাণু ও ভাইরাসের মতো বাইরের হুমকি থেকে রক্ষা করা। তবে কখনও কখনও এই ব্যবস্থা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব টিস্যুকেই আক্রমণ করে বসে; যার ফলে দেখা দেয় অটোইমিউন রোগ।
দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা মানবদেহের ‘সেন্ট্রাল টলারেন্স’ বা কেন্দ্রীয় সহনশীলতার ধারণার ওপর গবেষণা করে আসছিলেন। এতে টি-সেল নামের এক ধরনের প্রতিরোধক কোষ থাইমাসে গঠিত হওয়ার সময়ই শরীরের নিজস্ব উপাদানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখালেও পরে তা ধ্বংস হয়ে যায়।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ওলে কাম্পে বলেছেন, মানবদেহের সব সেলফ-রিঅ্যাক্টিভ টি-সেল থাইমাসে ধ্বংস হয় না; কিছু কোষ রক্তে থেকে যায়। এই কোষগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শরীরের বাইরে (থাইমাসের বাইরের অংশে) আরও একটি প্রক্রিয়া কাজ করে; সেটিকে পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স বলা হয়।
চলতি বছরের নোবেলজয়ী তিন বিজ্ঞানী এই প্রক্রিয়ার মূল রহস্য উদঘাটন করেছেন। গবেষণায় তারা দেখেছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখে বিশেষ এক ধরনের কোষ; যাকে রেগুলেটরি টি-সেল (Treg) বলা হয়। এসব কোষের বিকাশ ও কার্যক্রম নির্ভর করে ফক্সপিথ্রি (FOXP3) নামের একটি জিনের ওপর।
শিমন সাকাগুচি ১৯৯০-এর দশকে প্রথম প্রমাণ করেন, মানবদেহে এমন একটি রেগুলেটরি টি-সেল আছে, যা শরীরের নিজস্ব টিস্যুর বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় আক্রমণ রোধ করে। পরে মেরি ই. ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড র্যামসডেল ইঁদুর ও মানুষের শরীরে ফক্সপিথ্রি (FOXP3) জিনের ত্রুটি শনাক্ত করেন; যা এই টি-সেলের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
গবেষণায় তারা দেখান, ফক্সপিথ্রি (FOXP3) জিনই এসব কোষের বিকাশের মূল নিয়ন্ত্রক এবং এটি পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্সের ভিত্তি তৈরি করে। এই আবিষ্কারের ফলে এখন বিজ্ঞানীরা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছেন, কীভাবে মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, কেন এই প্রক্রিয়া ভেঙে গেলে অটোইমিউন রোগ দেখা দেয় এবং কীভাবে ক্যানসার কোষ কখনও কখনও এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ইমিউন সিস্টেমের আক্রমণ থেকে বেঁচে যায়।
চিকিৎসাশাস্ত্রের এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীরা ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে একটি মেডেল, সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা পাবেন।
এর আগে, গত বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের দুই চিকিৎসাবিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুনকে। মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট ট্রান্সক্রিপশন জিন নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখায় তাদের ওই পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রতিবছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল ঘোষণা করে সুইডেনের স্টোকহোমের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট। আগামীকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় পদার্থবিজ্ঞানের নোবেলবিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স।
১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নোবেল। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নাম অনুসারে। ঊনবিংশ শতকের এই বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন।
তিনি উইল করে গিয়েছিলেন যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য—এই ৫টি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারের নামকরণ হবে তার নামে। ১৯৬৯ সাল থেকে এই ৫ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতিও।
আন্তর্জাতিক
ফ্লোটিলায় আটক গ্রেটাসহ ১৬৫ অভিযাত্রীকে গ্রিসে পাঠাচ্ছে ইসরায়েল

সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলন ও রাজনৈতিক কর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ১৫৬ জন অভিযাত্রীকে গ্রিসে ফেরত পাঠাচ্ছে ইসরায়েল। শনিবার ইসরায়েলের টেলিভিশন সংবাদমাধ্যম আই ২৪ নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।
চ্যানেলটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লোটিলা অভিযানে গ্রিসের যতজন নাগরিক ছিলেন- তাদেরকে এবং গ্রেটাসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে একটি বিশেষ বিমানে গ্রিসে পাঠানো হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে গাজার উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের অন্তর্ভুক্ত ৪৩টি নৌযান। ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লেবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা- ফিলিস্তিনিভিত্তিক এই ৪ আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চার সংগঠনের জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ছিল এই মিশনের মূল উদ্যোক্তা।
সুইডেনের নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক ছিলেন সেই মিশনে। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।
গত বুধবার রাতে প্রথমে ১৩টি নৌযান আটকায় ইসরায়েলের নৌবাহিনী; কিন্তু তারপরও বাকি ৩০টি নৌযান গাজার উদ্দেশে এগিয়ে যাচ্ছিল। এই ৩০টি জাহাজের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল পোল্যান্ডের নৌযান ম্যারিনেত্তি।
পরের দিন বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একে একে সেই নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌ সেনারা। আটক নৌযানগুলো এবং অভিযাত্রীদের ইসরায়েলে আশদোদ বন্দরে রাখা হয়েছে।
আটক অভিযাত্রীদের মধ্যে গ্রেটা থুনবার্গও আছেন। আই ২৪-এর প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযাত্রীদের মধ্যে কয়েক জনকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাকিদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আটক অবস্থায় ইসরায়েলে সুইডেনের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়েছিল গ্রেটা-কে। কর্মকর্তাদের তিনি জানিয়েছেন যে তাকে ছারপোকায় পরিপূর্ণ একটি কারকক্ষে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি দেওয়া হচ্ছে না।
এমনকি তাকে জোর করে ইসরায়েলি পতাকাকে চুমু দেওয়া, সেই পতকা ধরে ছবি তুলতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গ্রেটা।
অভিযাত্রী দলের অন্যতম সদস্য ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো ডি’ আগুস্টিনো গার্ডিয়ানকে বলেছেন, “আমাদের সবার সামনেই গ্রেটাকে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে, ইসরায়েলের পতাকাকে চুমু খেতে এবং পতাকা গায়ে জড়িয়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে।” সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।
আন্তর্জাতিক
ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ধসে নিহত ৪৯, আহত শতাধিক

ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা প্রদেশে একটি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুলের ভবন ধসে অন্তত ৪৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একইসঙ্গে আহত হয়েছে শতাধিক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া, এ ঘটনায় এখনও নিখোঁজ আছে ১৮ জন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা ন্যাশনাল সার্চ অ্যানড রেসকিউ এজেন্সি (বাসারনাস)-এর এক বিবৃতি থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
দুর্যোগ সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধ্বংসাবশেষের অধিকাংশ সরানো সম্ভব হয়েছে এবং এখনো নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান চলছে। ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারানোদের অধিকাংশই কিশোর বয়সী ছাত্র।
বাসারনাসের অপারেশন বিভাগের পরিচালক ইউধি ব্রামান্তিও জানান, ভবনটির ৮০ শতাংশ ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। তবে, স্কুলভবনের সঙ্গে সংলগ্ন আরেকটি ভবনও ধসে গেছে। ফলে স্কুলচত্বর ও তার-সংলগ্ন এলাকায় ধ্বংসস্তূপে একাকার হয়ে গেছে এবং নিখোঁজদের বেশিরভাগই স্কুলভবন-সংলগ্ন ভবনটির।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্কুল ভবনের ওপরের তলায় চলমান নির্মাণকাজের কারণে এর মূলভিত্তি বা ফাউন্ডেশন বাড়তি চাপ সহ্য করতে পারেনি, ফলে পুরো কাঠামো ধসে পড়ে। এতে মুহূর্তেই শতাধিক ছাত্র ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যায়।
দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়াজুড়ে প্রায় ৪২ হাজার ইসলামিক স্কুল রয়েছে। দেশটির গণপূর্তমন্ত্রী ডোডি হ্যাংগোডো জানিয়েছেন, এর মধ্যে ভবন নির্মাণের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন আছে মাত্র ৫০টির।
তবে, আল খোজিনি স্কুলের নির্মাণ অনুমতি (বিল্ডিং পারমিট) ছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, রোববার দুপুরের দিকে পূর্ব জাভা প্রদেশের সিদোয়ার্জো শহরে অবস্থিত আল খোজিনি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুলের ভবন ও তার সংলগ্ন একটি ভবন ধসে পড়ে। এটি একটি জুনিয়র স্কুল এবং ভবন ধসের সময় সেখানে কয়েকশো ছাত্র ছিল। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
কাফি
আন্তর্জাতিক
গ্রেটা থুনবার্গের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর ‘নির্যাতনের’ অভিযোগ

সুমুদ ফ্লোটিলার নেতৃত্ব দেয়া গ্রেটা থুনবার্গের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনী দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন গাজায় ত্রাণবহরে যোগদানের জন্য যাওয়া আন্তর্জাতিক কর্মীরা।
শনিবার (৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এদিন ইসরায়েলের হাতে আটক হওয়া কর্মীদের মধ্যে ১৩৭ জনকে তুরস্কে পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিকও রয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তুর্কি কর্মকর্তারা।
তুর্কি সাংবাদিক এবং গাজা সুমুদ ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারী এরসিন সেলিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তিনি গ্রেটা থুনবার্গকে নির্যাতন করতে দেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে তাকে (থুনবার্গ) মাটিতে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং ইসরায়েলি পতাকা চুম্বন করতে বাধ্য করা হয়েছিল, তা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন।
মালয়েশিয়ার কর্মী হাজওয়ানি হেলমি এবং আমেরিকান অংশগ্রহণকারী উইন্ডফিল্ড বিভার ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে একই রকম বর্ণনা দিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, থুনবার্গকে ধাক্কা দিয়ে ইসরায়েলি পতাকা দিয়ে প্যারেড করানো হয়। হেলমি বলেন, ‘পর্যাপ্ত পরিষ্কার পানি এবং ওষুধও দেয়নি ইসরায়েলি বাহিনী।’
বিভার বলেন, ‘থুনবার্গের সঙ্গে “ভয়ঙ্কর আচরণ” করা হয় এবং তা প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।’ তিনি আরও জানান যে কীভাবে অতি-ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইটামার বেন-গভির প্রবেশ করার সময় তাকে একটি ঘরে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
নৌবহরে থাকা ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো আগোস্তিনোও থুনবার্গের সঙ্গে বাজে আচরণের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি আনাদোলুকে বলেন, ‘গ্রেটা থুনবার্গ একজন সাহসী নারী, যার বয়স মাত্র ২২ বছর। তাকে অপমানিত করা হয় এবং ইসরায়েলি পতাকায় মুড়িয়ে ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়।’
অন্যরাও গুরুতর দুর্ব্যবহারের বর্ণনা দিয়েছেন। তুর্কি টিভি উপস্থাপক ইকবাল গুরপিনার বলেন, ‘তারা আমাদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করে। তারা আমাদের তিন দিন ধরে ক্ষুধার্তও রেখেছিল। তারা আমাদের পানি দেয়নি। টয়লেট থেকে আমাদের পানি পান করতে হয়েছে। এটি ছিল একটি ভয়াবহ গরম দিন এবং আমরা সবাই পুড়ে যাচ্ছিলাম তিনি জানান, এই অগ্নিপরীক্ষা তাকে গাজা সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা দিয়েছে।
এর আগে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের উদ্দেশে ফ্লোটিলা অভিযানের জন্য যাওয়া ৪০ নৌকা এবং ৪৫০ জনেরও বেশি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত আন্তর্জাতিক কর্মীকে আটক করে ইসরায়েল। এরপরই বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়ে তারা। তেল আবিব ঘোষণা করেছে, আটক বাকিদের শিগগিরই ইউরোপে পাঠানো হবে। সুত্র : আল জাজিরা।
আন্তর্জাতিক
গাজা থেকে সেনা সরিয়ে নিতে রাজি ইসরায়েল: ট্রাম্প

ফিলিস্তিনের গাজায় দীর্ঘ প্রায় দুই বছর আগ্রাসন চালানোর পর অবশেষে ভূখণ্ডটি থেকে নিজেদের কিছু সেনা সরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। এখন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস তাদের পক্ষ থেকে শর্ত অনুযায়ী পদক্ষেপ নিলেই তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে এমনই ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর বিবিসির।
সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া ২০ দফা প্রস্তাবের কিছু অংশ মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির এমন ঘোষণার পর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে নতুন আরেক অগ্রগতির কথা জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হোয়াইট হাউস গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছিল। ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিভিন্ন সীমারেখা দেখানো হয় সেখানে।
ট্রাম্প জানান, এই সীমারেখার মধ্যেই ইসরায়েল প্রাথমিক ধাপে কিছু সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। হামাস নিশ্চিত করলেই যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ না নিলে সব চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বিবিসি ভেরিফাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারের পরও গাজার প্রায় ৫৫ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থেকে যাবে।
এদিকে খুব শিগগিরিই গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তির ঘোষণা দিতে পারবেন, এমন আশা প্রকাশ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি দাবি করেছেন, কূটনৈতিক ও সামরিক চাপে ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে নেওয়া ছাড়া হামাসের কাছে অন্য কোনো বিকল্প নেই। দ্রুতই উপত্যকাটি থেকে হামাসের শাসনের সমাপ্তি ঘটানো হবে। এ সময় হামাসকে নিরস্ত্র করার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেন নেতানিয়াহু।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিগিগিরই মিশরে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বন্দি বিনিময় এবং যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসবে দুই পক্ষ। মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ এবং জারেড কুশনারও বৈঠকে অংশ নেবেন।
তবে, হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের হামলা ও হত্যাযজ্ঞ এখনও চলছে। ফ্লিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং দুই বছরের এই হত্যাযজ্ঞ ও অবরোধ অবিলম্বে বন্ধ করার অনুরোধ করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিদের্শ উপেক্ষা করে গাজায় এখনও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সবশেষ একদিনে আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরও গাজার বেসামরিক এলাকা ও শরণার্থী শিবিরগুলোতে একদিনেই ৯৩টি বিমান হামলা চালিয়েছে নেতানিয়াহু বাহিনী।