আন্তর্জাতিক
সেপ্টেম্বরে বিশ্ব খাদ্যমূল্য সূচক কমেছে: এফএও

বিশ্ব খাদ্যমূল্য সেপ্টেম্বরে কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। মূলত চিনি ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম কমার কারণে এই পতন ঘটেছে। শুক্রবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এ তথ্য জানিয়েছে।
এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক, আন্তর্জাতিকভাবে বাণিজ্য হওয়া বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের মাসিক মূল্য পরিবর্তন পরিমাপ করে। সেপ্টেম্বরে এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক গড়ে দাঁড়ায় ১২৮.৮ পয়েন্টে। আগের মাস আগস্টে সূচক ছিল ১২৯.৭ পয়েন্ট। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সূচক এখনো ৩ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি।
এফএওর আলাদা এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস ২.৯৭১ বিলিয়ন টনে উন্নীত করা হয়েছে। গত মাসে এই পূর্বাভাস ছিল ২.৯৬১ বিলিয়ন টন। যা গত বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশের বেশি। এটি ২০১৩ সালের পর সবচেয়ে বড় বার্ষিক বৃদ্ধি। মূলত গম, ভুট্টা ও চালের ভালো উৎপাদন প্রত্যাশার কারণে এই পূর্বাভাস বাড়ানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় পরিকল্পনার বিষয়ে হামাসের প্রতিক্রিয়া দেখে তিনি ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তি’র সম্ভাবনা দেখছেন। ফলে ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধ করতে বলেছেন তিনি।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, ‘ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে, যাতে আমরা দ্রুত ও নিরাপদে জিম্মিদের মুক্ত করতে পারি।’
হামাস এরইমধ্যে ট্রাম্পের প্রস্তাবের আনুষ্ঠানিক জবাব দিয়েছে। এতে সব ইসরায়েলি বন্দি মুক্তি, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর এবং গাজা প্রশাসন একটি স্বাধীন প্রযুক্তিগত (টেকনোক্র্যাট) ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি অনুমোদন করেছে।
ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে গাজায় ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, এর মধ্যে ২০ জন জীবিত। অন্যদিকে ইসরায়েলি কারাগারে প্রায় ১১ হাজার ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন, যাদের অনেকেই নির্যাতন, অনাহার ও চিকিৎসা সেবার অভাবে মারা গেছেন বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে।
হামাস টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, গাজার ভবিষ্যৎ ও ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলো জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আইন ও প্রস্তাব অনুযায়ী সমাধান হতে হবে। সংগঠনটি আরও জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ আরব, ইসলামি ও আন্তর্জাতিক মহলের প্রচেষ্টাকে তারা মূল্যায়ন করছে—যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময়, জরুরি মানবিক সহায়তা প্রবেশ, গাজা দখল প্রত্যাখ্যান এবং জনগণের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি রোধে।
এদিন ট্রাম্প হামাসকে আগামী রোববার ওয়াশিংটন সময় সন্ধ্যা ৬টা (বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোর ৪টা) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজাকে অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করা হবে এবং একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে ট্রাম্প নিজে এর বাস্তবায়ন তদারকি করবেন।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, অনুমোদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাসের হাতে থাকা সব ইসরায়েলি বন্দি মুক্তি পাবে এবং বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দি ইসরায়েলি কারাগার থেকে ছাড়া হবে। ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনারা গাজা থেকে সরে যাবে এবং একটি প্রযুক্তিগত প্রশাসন আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে শাসনভার গ্রহণ করবে।
২০০৭ সাল থেকে গাজায় অবরোধ জারি রেখেছে ইসরায়েল। গত মার্চে খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় অবরোধ আরও কঠোর হয়, ফলে ফিলিস্তিনি উপত্যকাটি দুর্ভিক্ষের মুখে পড়ে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৬ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজা এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে, সেখানে দুর্ভিক্ষ ও মহামারি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
আন্তর্জাতিক
ভারত থেকে কৃষিপণ্য, ওষুধ কিনবে রাশিয়া: পুতিন

ভারত থেকে কৃষিপণ্য ও ওষুধ কিনবে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য অসমতা কমানো হবে। রাশিয়া অনেক বেশি করে ভারতীয় কৃষিপণ্য ও ওষুধ কিনবে। এর ফলে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য ঘাটতি কমবে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেছেন, ভারত যাতে রাশিয়া থেকে তেল না কেনে, সে জন্য আমেরিকা প্রবল চাপ দিচ্ছে, তারা শুল্কও বসিয়েছে। কিন্তু ভারত একটি সার্বভৌম দেশ। আমি নরেন্দ্র মোদিকে জানি। তিনি আমার বন্ধু। তিনি কখনোই এমন সিদ্ধান্ত নেবেন না।
পুতিন বলেছেন, ভারতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য বা অতিরিক্ত শুল্কের জন্য ৯০০ থেকে এক হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি হবে। রাশিয়া থেকে তেল না কিনলেও সমপরিমাণ ক্ষতি হবে।
তার দাবি, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনে পুরোপুরি বাণিজ্যিক কারণে। এটাও মনে রাখতে হবে, ভারত হলো রাশিয়ার দীর্ঘদিনের বন্ধু।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন, শুরু হবে গণছাঁটাই ও কর্মসংস্থান সংকট

মার্কিন সরকারে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে শাটডাউন। অর্থায়ন সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে (শাটডাউন)। কংগ্রেসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় এমন পরিস্থিতি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত গড়াতে পারে। মূল বিরোধ রয়েছে ওবামা কেয়ার ভর্তুকি নিয়ে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, হাজারো সরকারি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দ্রুতই আসতে পারে। তবে ‘অপরিহার্য’ হিসেবে ধরা কিছু সংস্থা ও কার্যক্রম চালু রয়েছে।
সবচেয়ে বড় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ডব্লিউআইসি কর্মসূচি নিয়ে—যা নিম্ন আয়ের নারী, শিশু ও নবজাতকদের জন্য খাদ্য সহায়তা দেয়। এ কর্মসূচি প্রায় ৭০ লাখ মানুষকে সেবা দেয়। অর্থ বরাদ্দ না হলে এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই এর অর্থ ফুরিয়ে যেতে পারে।
মার্কিন কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আপাতত ১৫০ মিলিয়ন ডলার জরুরি তহবিল রাজ্যগুলোকে দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি শিশুখাদ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানির রিবেট ও রাজ্যের নিজস্ব অর্থ ব্যবহার করা যাবে।
২০২৫ অর্থবছরে (যা ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে) ডব্লিউআইসি পেয়েছিল ৭.৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে সেনেট প্রস্তাব করছে ৮.২ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে শরৎকালীন ব্যস্ত ভ্রমণ মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রের বহু বিখ্যাত জাতীয় উদ্যান সরকারি অচলাবস্থার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী, উদ্যানের সড়ক, ট্রেইল ও মুক্ত আকাশের স্মৃতিস্তম্ভগুলো খোলা থাকবে, তবে যেখানে সংবেদনশীল প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘাটতির কারণে প্রবেশ নিষিদ্ধ হতে পারে।
ন্যাশনাল পার্কস কনজারভেশন অ্যাসোসিয়েশন (এসপিসিএ) সতর্ক করেছে, প্রতিদিনের অচলাবস্থায় উদ্যানগুলোতে ফি বাবদ প্রায় ১০ লাখ ডলার ক্ষতি হতে পারে। আর আশপাশের কমিউনিটিগুলোতে ক্ষতি দাঁড়াতে পারে দৈনিক ৮০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।
আন্তর্জাতিক
ভারতে প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে ১৩ জনের মৃত্যু

ভারতের মধ্যপ্রদেশে বিজয় দশমীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুটি আলাদা দুর্ঘটনায় এ মর্মান্তিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহত ১৩ জনের মধ্যে ১০ জনই শিশু।
আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুর্গাপূজার শেষদিন ছিল। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের উজ্জানের ইঙ্গোরিয়াতে একটি ট্রাক্টর-ট্রলিতে করে দুর্গা বিসর্জন দিতে যাচ্ছিলেন ভক্তরা। ওই সময় ট্রাক্টরটি রেলিংয়ে ধাক্কা খেয়ে চাম্বাল নদীতে পড়ে যায়। ১২ বছর বয়সী এক শিশু ভুল করে ট্রাক্টরটি চালু করে ফেললে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় নদীতে পড়ে যায় ১২ শিশু। এরমধ্যে দুজন প্রাণ হারায়। এছাড়া এক শিশু এখনো নিখোঁজ আছে। তার খোঁজে এখন আশপাশে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
অপরদিকে খানদাওয়া বিভাগের পান্দানা তেহসিলের আরেকটি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। সেখানে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, আর্দলা ও জামিলের ২০ থেকে ২৫ গ্রামবাসী ট্রাক্টর-ট্রলিতে করে দুর্গা বিসর্জন দিতে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের ট্রাক্টরটি রাস্তার পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়। সেখান থেকে ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যারমধ্যে ৮ মেয়ে শিশু রয়েছে। এখনো কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। ক্রেনে করে পুকুর থেকে ট্রাক্টরটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের খোঁজে পুকুরে নেমেছেন ডুবুরিরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ট্রাক্টরটি অতিরিক্ত মানুষে বোঝাই ছিল। ওই সময় এটি পুকুরে পড়ে যায়।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৪ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া যারা আহত হয়েছেন তাদের নিকটস্থ হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
ভূমিকম্পে কাঁপলো তুরস্ক

৫ দশমিক ০ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। ওই সময় ভয়ে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় চলে আসেন। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দেশটিতে নতুন করে আরও ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রেসিডেন্সি (এএফএডি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ইস্তাম্বুলের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের মারমারা সাগর। যা বড় একটি ফল্টলাইনের পাশে অবস্থিত। এই ফল্টলাইনটিকে শহরটির ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষের জন্য ঝুঁকি হিসেবে দেখা হয়।
গত রোববার তুরস্কের কুথায়া প্রদেশের সিমাভে ৫ দশমিক ৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। মাটির ৮ কিলোমিটার গভীরে হওয়া ভূমিকম্পটির কারণে আশপাশের অঞ্চল কেঁপে উঠেছিল। এরপর ৪ দশমিক ০ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে এ দুটি ভূমিকম্পে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তুরস্ক বেশ কয়েকটি প্রধান ফল্ট লাইনের উপর অবস্থিত। যে কারণে দেশটি তীব্র ভূমিকম্পপ্রবণ। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে দেশটির দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্বে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প। যেটির প্রভাবে ১১টি প্রদেশের ৫৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এবং হাজার হাজার ভবন ধসে পড়ে। ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে সিরিয়াতেও আরও ছয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।