জাতীয়
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনগত কোনো বাধা নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঝিনাইদহ জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্ক মিলনায়তনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছিল। ওই সময় প্রশাসনে দায়িত্বপালনকালে যারা বড় ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তারা রাষ্ট্রের জন্য আগামীতেও চাকরি করবেন।
তিনি বলেন, তবে যারা আওয়ামী লীগের নির্দেশে অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সরকার তাদের অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নিবেন।
এর আগে সকাল ১০টায় ঢাকাস্থ ঝিনাইদহ সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে জেলার স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল।
ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল মাখন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ, ঢাকাস্থ ঝিনাইদহ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী হাসান পলাশ, সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ বেগম পলি, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নেওয়াজ খান সুমন, ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা।
জাতীয়
হাসিনার রায় নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা সামদাসানি বলেছেন, গত বছরের বিক্ষোভ দমনকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মুখপাত্র রাভিনা সামদাসানি বলেন, জাতিসংঘ মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগকে দুঃখজনক হিসেবে মনে করে এবং সব পরিস্থিতিতে এটি সমর্থনযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ প্রকাশিত জাতিসংঘের অনুসন্ধান প্রতিবেদনের পর থেকে আমরা আহ্বান জানিয়ে আসছি যে নেতৃত্ব ও দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিসহ সব অপরাধীকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আইনের আওতায় আনা হোক। এছাড়া ভুক্তভোগীদের জন্য কার্যকর প্রতিকার এবং ক্ষতিপূরণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, যদিও আমরা এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। সবসময় আন্তর্জাতিক অপরাধের মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যায্য ও স্বচ্ছ হওয়া নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ সত্য বক্তব্য, ক্ষতিপূরণ এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমে জাতীয় পুনর্মিলনের পথে এগোবে। এ সঙ্গে অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক নিরাপত্তা খাত সংস্কারও গুরুত্বপূর্ণ, যাতে অতীতের লঙ্ঘন ও শোষণ পুনরায় না ঘটে। জাতিসংঘ অফিস এ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে সমর্থন দিতে প্রস্তুত।
সবার প্রতি ধৈর্য, সংযম এবং শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার।
জাতীয়
২২ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
আগামী ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। বাংলাদেশ সফরকালীন তাকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) আইন, ০২১ এর ধারা ২(ক)-এ দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগেকে আগামী ২২-২৪ নভেম্বর তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরকালীন ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করলো।
জাতীয়
কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়: প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এই রায় প্রমাণ করেছে যে- ক্ষমতা যাই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত-নির্যাতিত হাজারো মানুষের জন্য এই রায় ‘গুরুত্বপূর্ণ হলেও অপর্যাপ্ত’ বিচার নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই রায় শুধু আইনি স্বীকৃতি নয়; এটি সেই পরিবারগুলোর প্রতি সম্মান, যারা এখনো তাদের প্রিয়জন হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে আছেন।’
তিনি বলেন, বহু বছরের দমন-পীড়নে বিপর্যস্ত গণতান্ত্রিক ভিত্তি এখন পুনর্গঠনের পথে। মামলায় আলোচিত অপরাধ—যুবক ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ—রাষ্ট্র ও নাগরিকদের মধ্যকার মৌলিক সম্পর্ককে ভঙ্গ করেছে।
‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মানুষের মর্যাদা, সহনশীলতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারকে আঘাত করেছে,’ উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। তারা কেবল সংখ্যা নয়, ছাত্র, অভিভাবক ও অধিকারসম্পন্ন সাধারণ নাগরিক—উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মাসের পর মাসের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর, এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়েছিল। আদালতের এই রায় তাদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে বিচারব্যবস্থা অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনবে।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশ আবারও বৈশ্বিক ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির ধারায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করছে। যে শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা পরিবর্তনের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন, তারা এই সত্য গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন এবং অনেকেই তাদের জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন। তারা তাদের আজ উৎসর্গ করেছেন আমাদের আগামীর জন্য।
তবে তিনি মনে করেন, সামনে পথচলার জন্য কেবল আইনি প্রক্রিয়া যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যকার আস্থা পুনর্নির্মাণ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মানুষ কেন সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বের জন্য জীবন বাজি রাখে- সেটি বোঝা এবং সেই আস্থার যোগ্য ব্যবস্থা গড়া অপরিহার্য।
বিবৃতির শেষে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকার বজায় রাখলে ন্যায়বিচার শুধু টিকে থাকবে না; এটি বিকশিত হবে এবং স্থায়ী হবে।
জাতীয়
চূড়ান্ত নিবন্ধন পেলো এনসিপি-বাসদ মার্কসবাদী
নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত নিবন্ধন পেলো জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)। দল দুটির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জমা না হওয়ায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।
এর ফলে আসন্ন নির্বাচনে দল দুটি নিজ প্রতীকেই অংশ নিতে পারবে। বুধবার (১৮ নভেম্বর) ইসির সংলাপে এ দুটি দলকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় দলটির নিবন্ধন রোববার (১৬ নভেম্বর) পর্যন্ত চূড়ান্ত করেনি ইসি। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইসি সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর কমিশন তিন দলকে নিবন্ধন দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সময়সীমা নির্ধারণ করে। ওই সময়ের মধ্যে কোনো দাবি বা আপত্তি জমায় হয়নি। এ তিন দলের মধ্যে শুধু বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধেই ১০ থেকে ১৫টি দাবি-আপত্তি কমিশনে জমা পড়ে। এসব আবেদন কমিশনের পর্যালোচনায় রয়েছে।
জাতীয়
প্রতিবেশী দেশ অশান্তির উসকানি দিচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে প্রতিবেশী দেশ থেকে অশান্তির উসকানি দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব) জাহাঙ্গীর আলম।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষণার পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অশান্তির উসকানি দেয়া হচ্ছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির কিছু দেখছি না। এখনও কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি, বিক্ষিপ্ত ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে আত্মরক্ষার স্বার্থে গুলি করার বিধান আছে বলে দুর্বৃত্তদের হুঁশিয়ার করেন তিনি।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে প্রয়োজন হলে আবারও চিঠি দেয়া হবে।
এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দেন। মামলার দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। তবে এক নম্বর অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আর রাজসাক্ষী হয়ে সত্য উন্মোচনে সহায়তা করায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।



