পুঁজিবাজার
সূচকের পতনের নেপথ্যে নতুন কৌশলে কারসাজি, কঠোর অবস্থানে বিএসইসি
দেশের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের পতনের পেছনে নতুন কৌশলে কারসাজি করছে একদল দুষ্ট চক্র। তাদের হাতে থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ার ইচ্ছাকৃতভাবে এক বিও হিসাব থেকে লোকসানে বিক্রি করে অন্য নামের বিও হিসাব থেকে নিজেই ক্রয় করেন। ফলে বাজারে অস্থিরতা বাড়িয়ে আবার সেসব শেয়ার আরও কম দামে কিনে নেয় এসব চক্র। এতে মূল্যসূচকের পতনে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের পাশাপাশি কম দামে বিক্রিত শেয়ার কিনে তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে তুলছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সার্ভেইল্যান্স টিমের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিএসইসি সূত্র জানায়, এসব কারসাজিতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এসব কারসাজির সাথে জড়িত ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে চিহ্নিত করে যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে আইপিও কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। একইসঙ্গে যেসব ব্যক্তি এসব কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে জরিমানার আওতায় নিয়ে আসা হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এসব কারসাজির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রমাণিত হলে সেসব প্রতিষ্ঠানের (ব্রোকারেজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক) সনদ নবায়ন স্থগিতসহ শিগগরই কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অর্থসংবাদকে বলেন, একটি বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ার ৩৫০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়। দুষ্ট চক্রের হাতে থাকা এই কোম্পানির শেয়ার তারা একটি বিও থেকে লোকসানে বিক্রি করে একই সুবিধাভুগী ব্যক্তির অন্য নামে আরেকটি বিও হিসাবে কম দামে শেয়ার ক্রয় করে। ফলে পুঁজিবাজারের মূল্যসূচকে বড় প্রভাব পড়ে। বাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখে ওই কোম্পানির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে তাদের হাতে থাকা শেয়ার আরও কম দামে বিক্রি করে দেয়। এই সুযোগটাই লুফে নেয় সূচকের পতনের নেপথ্যে নতুন কারসাজি চক্র। তারা বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার আরও কম দামে কিনে মুনাফা লাভের জন্য এ ফন্দি আঁটছে। ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে নেতিবাচক প্রভাব অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারের দামেও পড়ে। এসব কোম্পানির শেয়ারদর সামান্য কমলেও সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যেমন আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি কম দামে শেয়ার বিক্রির চাপে লাগাতার পতন কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। তবে বাজারে তারল্য প্রবাহ কম থাকায় কোনভাবেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। এ অবস্থায় বাজারে তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। সাধারণত পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা দুই ভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন। একটি শ্রেণি নিজেদের জমানো টাকা বিনিয়োগ করে। আরেক শ্রেণি নিজেদের বিনিয়োগের পাশাপাশি শেয়ার জিম্মায় রেখে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে, যা ‘মার্জিন লোন’ নামে পরিচিতি। এ ধরনের ঋণ নিয়ে যাঁরা বিনিয়োগ করেন, তাঁদের শেয়ারের দাম একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামলেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঋণের সমপরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে দেয়। শেয়ারবাজারে এ ধরনের বিক্রিকে বলা হয় ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রি। শেয়ারবাজারে যত পতনের ধারা বাড়ছে, ফোসর্ড সেলের চাপ তত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের অ্যানালাইসিস পোর্টাল সূত্র মতে, গত বৃহস্পতিবার সূচকের পতনের নেপথ্যে ভূমিকায় থাকা কোম্পানিগুলো হলো- বিকন ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ন্যাশনাল ব্যাংক, রেনাটা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্রাক ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংক পিএলসি। এসব কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কমার কারণে সবশেষ কার্যদিবসে ডিএসইর সূচক কমেছে ২৭ পয়েন্টের বেশি।
বৃহস্পতিবার ডিএসইর সূচক পতনের শীর্ষ ভূমিকায় ছিল বিকন ফার্মা। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৭ টাকা ৯০ পয়সা। শেয়ারের দাম স্বাভাবিক চোখে খুব একটা না কমলেও কোম্পানিটির কারণে ডিএসইর সূচক কমেছে ৫ দশমিক ১৮ পয়েন্ট। এদিন ডিএসইর সূচক পতনের দ্বিতীয় ভূমিকায় ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো। কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছিলো ৫ টাকা ৫৬ পয়সা বা ১ শতাংশের একটু বেশি। এতেই ডিএসইর সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট।
একইভাবে গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর সূচক কমায় ন্যাশনাল ব্যাংক ৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট, রেনাটা ৩ দশমিক ২৯ পয়েন্ট, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ২ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট, ব্র্যাক ব্যাংক ২ দশমিক ০৪ পয়েন্ট, উত্তরা ব্যাংক ১ দশমিক ৯২ পয়েন্ট, লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ ১ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট এবং পূবালী ব্যাংক পিএলসি ১ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট ভূমিকা রেখেছে। বড় মূলধনী প্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিকন ফার্মা, বিএটিবিসি, অলিম্পিক এবং রেনাটার শেয়ারদর খুব একটা না কমলেও বৃহস্পতিবার শুধু এই চার কোম্পানির কারণে পুঁজিবাজারের মূল্যসূচক কমেছে ১৪ দশমিক ৬০ পয়েন্ট।
ডিএসই সূত্রে মতে, গত ১১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে শেয়ারবাজারে টানা দরপতনে লেনদেন শেষ হচ্ছে। এতে সবশেষ ৪২ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসইর) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭৬০ পয়েন্টের বেশি, হারিয়েছে বড় অঙ্কের বাজার মূলধনও। গেল ১১ ফেব্রুয়ারি সূচক বছরের সর্বোচ্চ অবস্থান ৬ হাজার ৪৪৭ দশমিক ০৭ পয়েন্টে ছিল। যা গত বৃহস্পতিবার তথা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ৫ হাজার ৬৮৬ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এ হিসাবে প্রায় তিন মাস বা ৪২ কার্যদিবসে সূচক কমেছে ৭৬০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট। এ সময়ে ৩১ কার্যদিবসই সূচকের পতন হয়েছে। আর বাকি মাত্র ১১ কার্যদিবস সূচক নামমাত্র বেড়েছে। তবে ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে টানা চার কার্যদিবসে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েও হতাশ করে বিনিয়োগকারীদের। ঈদের ছুটি শেষে টানা চার কার্যদিবসেই সূচকের পতন হয়েছে। এতে বাজারের পতন আরও দীর্ঘায়িত হয়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকার। তবে গত বৃহস্পতিবার তা নেমে আসে ৭ লাখ ০৬ হাজার ৩২৫ কোটি টাকায়। এ হিসাবে গত ৪২ কার্যদিবসে বাজার মূলধন কমেছে ৬৯ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। এদিকে সপ্তাহের শেষ কর্যদিবসে (১৮ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭৭ পয়েন্ট। সূচকের এমন পতনের নেপথ্যে ভূমিকায় ছিল ১০ কোম্পানির শেয়ার।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে দরপতন ঠেকাতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফ্লোর প্রাইস এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে কোনো শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বিএসইসির বেঁধে দেয়া দামের নিচে নামতে পারে না। দেড় বছর ধরে পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস ব্যবস্থা আরোপিত ছিল। তাতে পুঁজিবাজারে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে আসে। কমে যায় লেনদেন। এমন এক পরিস্থিতিতে গত ২১ জানুয়ারি প্রথম দফায় ৩৫টি বাদে বাকি সব প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৩ জানুয়ারি তুলে নেয়া হয় আরও ২৩ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস। সর্বশেষ ৬ ফেব্রুয়ারি আরও ৬ কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
লেনদেনের সঙ্গে বাজার মূলধন বাড়লো ৬ হাজার কোটি টাকা
বিদায়ী সপ্তাহে (২৮ এপ্রিল থেকে ০২ মে) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব মূল্য সূচকের উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন ও বাজার মূলধনের পরিমান। আলোচ্যে সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গেলো সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬১ কোটি ১০ লাখ টাকা। আর সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫ হাজার ৭৯১ কোটি ০৬ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ০ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৬ হাজার ২২৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ২ হাজার ৮২৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭৬৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ৫৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
গেল সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ৯৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে।
প্রধান সূচকের সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অপর দুই সূচকও বেড়েছে। শরীয়াহ সূচক ‘ডিএসই এস’ ১৫ দশমিক ১৬ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানিগুলোর সূচক ‘ডিএস ৩০’ এক সপ্তাহে ৩৩ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বেড়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৯৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারদরই ছিল অপরিবর্তিত। দর কমেছে ১৩৩টির, বিপরীতে ২২৮ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
গ্রামীণফোনের এজিএমে ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন
পুঁজিবাজারে গ্রামীণফোনের ২৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নীতিমালা মেনে ও শেয়ার হোল্ডারদের নির্বিঘ্ন ও অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বার্ষিক সাধারণ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়; যা কোম্পানির সামগ্রিক অগ্রগতি ও সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।
এজিএমে গ্রামীণফোনের বোর্ড চেয়ারম্যান হাকন ব্রুয়াসেট কেজোয়েল; গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমানসহ অন্যান্য বোর্ড সদস্য এবং কোম্পানিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রামীণফোনের বোর্ড চেয়ারম্যান হাকন ব্রুয়াসেট কেজোয়েল বলেন, ২০২৩ সালে গ্রামীণফোন গ্রাহক-কেন্দ্রিক ডিজিটালাইজেশন এবং মানুষের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল জীবনের চাহিদা পূরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করেছে। ভবিষ্যতের উপযোগী একটি টেলকো-টেক কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে আমাদের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ২০২৩ সালে ইবিআইটিডিএ ও রাজস্ব উভয় ক্ষেত্রে ভালো প্রবৃদ্ধি এবং ইতিবাচক টপ-লাইন প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে কোম্পানিটি। প্রতিনিয়ত আধুনিকীকরণে এবং ভবিষ্যতের উপযোগী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে বিনিয়োগের ফলে তা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের সেরা অভিজ্ঞতা প্রদানের লক্ষ্যে ডিজিটাল সক্ষমতা বাড়ানো, প্রোডাক্ট পোর্টফোলিওর সহজীকরণ এবং অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে গ্রামীণফোন।
তিনি বলেন, গ্রামীণফোন একটি টেলকো-টেক কোম্পানি হয়ে ওঠার জন্য প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে; যা ডিজিটালভাবে সংযুক্ত একটি সমাজ গড়ে তুলতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কানেক্টিভিটি ও ডিজিটাল অ্যাক্সেসের মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ গ্রামীণফোন। উদ্ভাবন, স্থায়িত্ব ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মূল্যবোধকে ধারণ করে বাংলাদেশে সবার জন্য একটি অগ্রসরমান, ভবিষ্যতের জন্য উপযোগী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ কোম্পানিটি।
গ্রামীণফোন-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, গ্রামীণফোনের জন্য ২০২৩ সাল ছিল রূপান্তরের বছর, এ বছর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে যা কোম্পানিটিকে ডিজিটাল ক্ষেত্রে আরো অগ্রসর করেছে। গ্রাহকরা সবসময়ের মতো আমাদের অগ্রাধিকারের শীর্ষে রয়েছে। গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদাগুলো পূরণ এবং সেরা গ্রাহক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, আধুনিকীকরণ এবং ক্রমাগত বিনিয়োগ করেছে গ্রামীণফোন। সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৈশ্বিক সংঘাত সত্ত্বেও সকল কর্মী, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে কোম্পানিটি।
একটি স্মার্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে গ্রামীণফোন গ্রাহক ও খুচরা বিক্রেতা উভয়ের জন্য ডিজিটালাইজড সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অত্যাধুনিক পণ্য এবং আইওটি সল্যুশন চালু করেছে। আমাদের প্রতিশ্রুতি শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নে সীমাবদ্ধ নয়। তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ কমানো, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো, জেন্ডার বৈষম্য কমানো এবং দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে কাজ করছি আমরা।
টেকসই উন্নয়নের প্রতি গ্রামীণফোনের অঙ্গীকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে ব্লুমবার্গ। পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য একটি স্মার্ট ভবিষ্যৎ তৈরিতে আমাদের ভূমিকাও উঠে এসেছে। বর্তমানে যখন আমরা স্মার্ট ডিভাইস, কানেক্টিভিটি ও এআই কে সাদরে গ্রহণ করছি; একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও সুখী জীবনধারার দিকে এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময় ।”
এজিএম-এ গ্রামীণফোন লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালের জন্য পরিশোধিত মূলধনের ১২৫ শতাংশ হারে (অর্থাৎ প্রতি ১০ টাকার শেয়ারে ১২ টাকা ৫০ পয়সা) চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করেছে, যা ২০২৩ সালের কর পরবর্তী মুনাফার ৫১ দশমিক ০৩ শতাংশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী ই-ইঞ্জিনিয়ারিং
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ই-ইঞ্জিনিয়ারিং পিএলসি। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করতে চায় কোম্পানিটি। সম্প্রতি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি বাজার থেকে ১২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। আর সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে অটোক্লেভ প্যানেলস, কনক্রিট ব্লক, ইট ও টাইলস উৎপাদনের একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করবে কোম্পানিটি।
উল্লেখ, ই-ইঞ্জিনিয়ারিং পিএলসি হচ্ছে সাইফ পাওয়ারটেক পরিবারের একটি কোম্পানি। পুঁজিবাজারে এলে এটি হবে এই গ্রুপের দ্বিতীয় কোম্পানি। গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিটি মূলত সমুদ্রবন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত সেবা দিয়ে থাকে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ-দুবাই রুটে জাহাজ পরিচালনার ব্যবসায়ও যুক্ত হয়েছে কোম্পানিটি।
ই-ইঞ্জিনিয়ারিং পিএলসি মূলত একটি ইপিসি (ইঞ্জিনিয়ারিং , প্রকিউরমেন্ট এবং কনস্ট্রাকশন) কোম্পানি। এই কোম্পানি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুসারে, তাদের জন্য অবকাঠামোর ডিজাইন, পণ্য ক্রয়, অবকাঠামো তৈরি ও সংস্থাপন করে থাকে। এর পাশাপাশি ই-ইঞ্জিনিয়ারিং পিএলসি নিরাপত্তা ও আইটি সংশ্লিষ্ট ইক্যুইপমেন্ট, ড্রেজার, ক্রেন,ভারি মেশিনারিজ সরবরাহ ও সংস্থাপন সংক্রান্ত সেবা দিয়ে থাকে। কোম্পানিটির ব্যবসার পরিধির মধ্যে আরও রয়েছে নদী খনন, ভূমি উন্নয়ন, বহুতল ভবন নির্মাণ; সড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার ইত্যাদি নির্মাণ।
ই-ইঞ্জিনিয়ারিং পিএলসি বেশ কয়েকটি বিদেশী কোম্পানির সাথে ঘনিষ্টভাবে কাজ করে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির পণ্য ও সেবার পরিবেশক তারা। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রের এস্ট্রোফিজিকস, স্ক্যানস্ক্যান, আমেরিকান সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, তুরস্কের রিডোম্যাক টার্কি, সিঙ্গাপুরের এমটি কমিউনিকেশন, নেদারল্যান্ডসের ইউভি স্ক্যান।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কোম্পানিটির ১২ কোটি শেয়ার রয়েছে। তারা নতুন করে আর ৩ কোটি শেয়ার ইস্যু করার পরিকল্পনা করছে।
শিগগিরই কোম্পানিটি আইপিওর প্রক্রিয়া শুরু করবে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদনসাপেক্ষে আইপিওর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
এবি ব্যাংকের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
গত ৩১ মার্চ, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৪- মার্চ’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংক পিএলসি।
বৃহস্পতিবার (২ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুযায়ী, চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ১৩ পয়সা আয় হয়েছিল।
গত ৩১ মার্চ, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৬৭ পয়সায়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
এবি ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা
গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৩ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংক পিএলসি। আলোচ্য বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার প্রতি ২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেবে।
রোববার (২ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ০২ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৮১ পয়সা আয় হয়েছিল। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকটির আয় বেড়েছে প্রায় ২৬ শতাংশ।
গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৩ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৫৮ পয়সায়।
আগামী ১২ জুন কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৬ মে।
অর্থসংবাদ/এমআই