আবহাওয়া
বাংলাদেশে দীর্ঘতম তাপপ্রবাহ চলতি বছরেই!
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ শেষ হতে পারেনি। ইতোমধ্যে ঢাকাসহ দেশের মোট চারটি বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়েই মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। তাই এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বাংলাদেশে কোনও স্থানের তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে সেখানে সতর্কবার্তা জারি করা হয়।
দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদগুলোতে নিদাঘের সূর্য তাতিয়ে উঠছে প্রতিদিন। বৈরি হয়ে উঠছে প্রকৃতি। হাঁসফাঁস করছে জনজীবন-প্রাণীকুল। দিবাভাগে অস্বস্তিকর প্রহর কাটাচ্ছে মানুষ। সর্বত্রই দিনের ব্যবধানে একটু একটু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও এক-দু’টি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, এ বছরের তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় গত কয়েকদিন ধরে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। এর মাঝে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে। বিদ্যমান তাপপ্রবাহের কারণে বাতাসে এখন জলীয় বাষ্পের আধিক্য থাকবে। এতে করে মানুষের শরীরে অস্বস্তিবোধ বৃদ্ধি হতে পারে।
বাংলাদেশে সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসকে বছরের উষ্ণতম সময় ধরা হয়। এর মধ্যে এপ্রিল মাসেই সাধারণত তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সাল ছিল উত্তপ্ত বছর। কিন্তু এগুলোর মাঝে ২০২৩ সালের কথা আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, গত বছর চরম তাপপ্রবাহ ছিল। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সারা দেশে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় জুড়ে তাপপ্রবাহ ছিল। গতবার দেশে রেকর্ডধারী তাপমাত্রা ছিল। সেই তুলনায় এবার তো এখনও কম আছে। শুধু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে না, সারা বিশ্বেই ২০২৩ সাল উষ্ণতম বছর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল।
ওই বছর বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহকে আবহাওয়াবিদ মল্লিক সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে, ২০২৩ বছরের তাপপ্রবাহকে ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি’ তাপপ্রবাহ বলে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে একটানা ২০ থেকে ২৩ দিন তাপপ্রবাহ ছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশে যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে, তা ৮ ও ৯ এপ্রিল নাগাদ কিছুটা কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, এপ্রিল উষ্ণতম মাস, এসময় তাপমাত্রা এমনিতেও বেশি থাকে। কিন্তু এটিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া দরকার। যখন ঝড় হয়, তখন ভারি বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আর বাড়ে না। কিন্তু আট-নয় তারিখের আগে ভারি বৃষ্টি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেইযোগ করেন তিনি।
এদিকে তাপপ্রবাহ কতদিন থাকবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনও প্যাটার্ন নেই। তবে তীব্র তাপপ্রবাহ সাধারণত গড়ে তিন থেকে সাতদিন ধরে চলে। মৃদু তাপপ্রবাহের দৈর্ঘ্য আবার অনেক বেশি থাকে। বাংলাদেশে মৃদু তাপপ্রবাহ সর্বোচ্চ ২৩ দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হওয়ারও রেকর্ড রয়েছে বলে জানান মল্লিক। তিনি মনে করেন, তাপপ্রবাহ দীর্ঘায়িত হলে তা নিয়ন্ত্রণে আসার জন্য বজ্রবৃষ্টি দরকার।
আবহাওয়াবিদ মল্লিক বলেন, অনেকদিন ধরে তাপপ্রবাহ হলে কোনও কোনও এলাকার বায়ুরচাপ কমে যায়। বায়ুরচাপ কমলে সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প বাতাসের কোথাও জড়ো হতে শুরু করে এবং তখন সেখানে বজ্রমেঘ তৈরি হয়। পরবর্তীতে সেই মেঘ বৃষ্টিপাত ঘটায় বাংলাদেশ বা ভারতের বিহার, আসাম, উড়িষ্যা, মেঘালয়, ত্রিপুরা, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে তাপপ্রবাহ বিদ্যমান। তাই, তাপমাত্রা কমিয়ে দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম হলো বজ্রবৃষ্টি।
এটা ঠিক যে বাংলাদেশে এপ্রিল মাস উষ্ণতম। কিন্তু প্রতি বছর এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ শুরু হয় না। কোনও কোনও বছর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহেই তাপপ্রবাহ শুরু হয়। আবার কোনও কোনও বছর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের পর তাপপ্রবাহ শুরু হতে দেখা দেয়।
আবহাওয়াবিদ মল্লিক বলেন, তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ার কোনও পর্যায়ভিত্তিক আবর্তনরীতি নাই। এই মাসের এক তারিখ তাপপ্রবাহ হল, আগামী বছরও যে একই তারিখে হবে, বিষয়টা এমন না।”
২০১৪ সাল ছিল বাংলাদেশের উষ্ণতম বছরগুলোর মাঝে অন্যতম। সে বছর ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৪ এপ্রিল, ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০১৬ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ২৪ এপ্রিলেই, ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৮ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি।
২০১৯ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ দশমিক এক ডিগ্রি। আবার, ২০২০ সালে আবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৭ এপ্রিল, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর পরের তিন বছরেও কখনও এপ্রিলের শেষে, কখনও বা মার্চের শেষে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের গত কয়েকদিনের পূর্বাভাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে এখন বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা জানান, বাংলাদেশের ঐ অঞ্চলের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ ইত্যাদি রাজ্যের অবস্থান। কিন্তু এইসব প্রদেশের তাপমাত্রা অনেক বেশি। এসব জায়গায় বছরের এই সময়ে তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে ওঠানামা করে।
আবহাওয়াবিদ ড. মল্লিক বলেন, গত বছর ভারতের ওইসব অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেহেতু ওগুলো উত্তপ্ত অঞ্চল, তাই ওখানকার গরম বাতাস চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং তা আমাদের তাপমাত্রাকে গরম করে দেয়। এই আন্তঃমহাদেশীয় বাতাসের চলাচল ও স্থানীয় পর্যায়েও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দেশব্যাপী এবছর তাপপ্রবাহ তুলনামূলক বেশি থাকতে পারে। বিগত বছরের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এটা প্রতীয়মান হচ্ছে যে ২০২৪ সাল উত্তপ্ত বছর হিসেবে যাবে। আমরা এ বছর তাপপ্রবাহের দিন এবং হার বেশি পেতে যাচ্ছি। এর কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। বাংলাদেশের তাপমাত্রার উর্ধ্বগতিতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ছোঁয়া লেগেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের হিসেব অনুযায়ী তাপপ্রবাহকে তিন ভাগে ভাগ করে। কোনও স্থানের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটিকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে। তাপমাত্রা যখন ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, তাকে বলে মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর, তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটিকে আবার বলে তীব্র তাপপ্রবাহ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আবহাওয়া
ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির আভাস দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর
দেশের সাত অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শনিবার (৪ মে) দুপুর একটা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, বরিশাল, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তারের পূর্বাভাস বলছে, শনিবার দেশের বেশিরভাগ এলাকায় তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা গতকালের মতোই উষ্ণ থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। তবে দেশের কোথাও কোথাও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে কিছু জেলায়। ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তাপমাত্রা কমলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হবে না।
এদিকে যশোরে শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এদিন দেশের সর্বনিম্ন ১৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। এ ছাড়া ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৮.১ এবং সর্বনিম্ন ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আবহাওয়া
কালবৈশাখী ঘূর্ণিঝড়ের খবর দিলো আবহাওয়া অফিস
এপ্রিলে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে ৮১ শতাংশই কম তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি ঊর্ধ্বে : দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতে কমছে গরমের দাপট চলতি মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসে দেশে উচ্চ তাপপ্রবাহ ও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা, বজ্রপাত ও বজ্র-ঝড়, কালবৈশাখী ঝড় ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রদানের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার আবহাওয়া বিভাগের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় এই পূর্বাভাস দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেনআবহাওয়া বিভাগের পরিচালক ও কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান। দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, এ মাসে দেশে ৩ থেকে ৫ দিন বজ্র শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ধরনের কালবৈশাখী ঝড় এবং ২ থেকে ৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি থেকে প্রবল কালবৈশাখী ঝড় সংঘটিত হতে পারে।
তাছাড়া চলতি মে মাসে দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে ৩টি মৃদু তাপপ্রবাহ (তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সে.) এবং এক থেকে ২টি তীব্র তাপপ্রবাহ (তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২) বয়ে যেতে পারে। গত মাসের মতো এ মাসেও দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে ২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে এবং এর মধ্য থেকে একটি এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
চলতি মে মাসে উজানে ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীসমূহের পানি দ্রæত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কতিপয় স্থানে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মে মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞ কমিটির উক্ত সভায় পর্যালোচনায় জানা গেছে, গেল এপ্রিল মাসে (চৈত্র-বৈশাখ) সারা দেশে গড়ে মৌসুমের এ সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৮১ শতাংশই কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবার বিভাগ-জেলাওয়ারি হিসাবে বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি রয়েছে।
উত্তর জনপদের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কোন বৃষ্টিপাতই হয়নি। ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৯১ ভাগ কম, চট্টগ্রামে ৮৪ ভাগ কম, খুলনায় ৮৯ ভাগ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবার সিলেট বিভাগে মৌসুমের এ সময়ে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ২৯৬ মিলিমিটারের স্থলে ২৯৩ মি.মি., অর্থাৎ স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ নিয়ে সারা দেশে পর পর চার মাসে দেশে ধারাবাহিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগের পর্যালোচনায় আরো জানা গেছে, গেল এপ্রিল মাসে মার্চে দেশে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় যথাক্রমে গড়ে ৩ দশমিক ২ এবং ২ দশমিক ৮ সেলসিয়াস বেশি ছিল। সারা দেশে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি সে. ঊর্ধ্বে ছিল। আগের মাসে মার্চে দেশে গড় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সে. কম ছিল। গত এপ্রিল মাসে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩০ এপ্রিল যশোর জেলায় ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সে.।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব, বৈশি^ক উষ্ণতা, আবহাওয়ায় ‘এল নিনো’ অবস্থার কারণে গত এপ্রিল মাসে দেশে ৫২ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, ৭৬ বছরের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী টানা উচ্চতাপ এবং ৪৩ বছরের মধ্যে কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি, বজ্র-ঝড় বৃষ্টিহীন চৈত্র-বৈশাখ মাসের ব্যতিক্রম এবং চরম-ভাবাপন্ন আবহাওয়া বিরাজ করে।
এ অবস্থায় ফল-ফসল, কৃষি-খামার, চিংড়িসহ মৎস্য, পোলট্রি ও ডেইরী খাত, জনস্বাস্থ্য, প্রাণ-প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অনেকেই। হিট শকে আধাপাকা ইরি-বোরো ধান, অর্থকরী ফল-ফলাদি আম, লিচু, পেঁপে, আতা, সফেদা, জামরুল ইত্যাদির ফলন বা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বৃষ্টি বজ্রবৃষ্টিতে কিছুটা কমছে গরমের দাপট : চলমান তাপদাহ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় অব্যাহত রয়েছে। তবে গত মঙ্গলবারের তুলনায় গত দুই দিনে উচ্চতাপের দাপট কিছুটা কমেছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বুধবার যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.৮, তার আগের দিন মঙ্গলবারে (৩০ এপ্রিল) মৌসুমের রেকর্ড তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৪৩.৮ ডিগ্রি সে.। গতকাল ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৩৮.৩ এবং সর্বনিম্ন ২৯.৩ ডিগ্রি সে.। এছাড়া উচ্চ তাপ ছিল রাজশাহী, পাবনা ও যশোরে ৪১, কুষ্টিয়ায় ৪০.৫ ডিগ্রি সে.।
এক মাসের টানা উচ্চ তাপপ্রবাহ খরা-অনাবৃষ্টির পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, বজ্র-ঝড়, বজ্রবৃষ্টির সুবাদে চলমান উচ্চ তাপপ্রবাহের দাপট কিছুটা কমতে শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিতে স্বস্তি দেখা দিচ্ছে জনজীবনে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে কুতুবদিয়ায় ২৭ মিলিমিটার। এছাড়া চট্টগ্রাম, ফেনী ও স›দ্বীপে ৭, সীতাকুÐে ৬, বান্দরবানও নোয়াখালীতে ৪, রাঙ্গামাটিতে ২২, কক্সবাজারে ১১ মি.মি. ছাড়াওÑ রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে হালকা কিংবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে সকালে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে হিমেল দমকা হাওয়ার সাথে ঘণ্টাখানেক বৃষ্টিপাত হয়। এ সময়ে অনেকেই রাস্তাঘাটে-মাঠে বৃষ্টিতে ভিজে স্বস্তি প্রকাশ করেন। এক মাস টানা উচ্চতাপ ও খরার পর চট্টগ্রামে ক্ষণিকের বৃষ্টিতে সাময়িক স্বস্তি দেখা দেয়।
আগামী এক সপ্তাহের পূর্বাভাস
শুক্রবার (৩মে) সন্ধ্যাসহ পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার (তিন দিন) আবহাওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
যশোর, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী জেলাসমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারী তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ কিছু জায়গায় কমে আসতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি সে. হ্রাস পেতে পারে।
আগামীকাল শনিবার (৪মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী রোববার (৫মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা হ্রাস ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
চলমান তাপপ্রবাহ কিছু এলাকায় কমে আসতে পারে। উচ্চ তাপপ্রাবাহের তীব্রতা হ্রাস পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনে সারাদেশে বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং বৃষ্টিপাত ক্রমেই বিস্তার লাভ করতে পারে। তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। তাপপ্রবাহের এলাকা কমে যেতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
সিলেটে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির আভাস
ভারতের উজানে অতিবৃষ্টির ঢলে সিলেট অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কোন কোনটি বিপদসীমায় প্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে পাউবো। গতকাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেয়া পূর্বাভাস বুলেটিনে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও বৈশি^ক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব ভারতে উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জেলার ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন সুরমা নদীর কানাইঘাট, লুভাছড়া নদীর লুভাছড়া, সারিগোয়াইন নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জেলায় সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে স্বল্প মেয়াদে বিপদসীমার উপরে অবস্থান করতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট অঞ্চলের উজানে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ১২০ মিলিমিটার এবং আসামের সিলচরে ২৯ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আবহাওয়া
চলতি মাসে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিলো আবহাওয়া অফিস
বছরের সবচেয়ে উত্তপ্ত মাস এপ্রিল শেষ হয়েছে। মাসজুড়ে সূর্যের রোষানল টের পেয়েছে দেশের মানুষ। দিন যতই গড়িয়েছে সেই রোষের তীব্রতায় পুড়েছে প্রকৃতি। শেষদিকে তাপদাহ ছাড়িয়েছে সহনীয় সীমা। ৭২ বছরে প্রথমবারের মতো ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার সাক্ষীও হয়েছে দেশের মানুষ। এপ্রিলের তুলনায় চলতি মে মাসে দেশজুড়ে তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি একাধিক কালবৈশাখীর ও একটি ঘূর্ণিঝড়ও সংঘটিত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, চলতি মাসের মাঝামাঝি অর্থাৎ ১৫ তারিখের পর বঙ্গপোসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এরমধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। মে মাসে দেশে বৃষ্টিপাত বাড়বে এবং গরমের তীব্রতা কমে আসবে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দেওয়া এ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিই হতে পারে। তবে এর মাঝেও দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে তিনটি মৃদু ও মাঝারি এবং এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ফলে এ মাসেও দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার সম্ভাবনা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
মে মাসের তাপমাত্রা এপ্রিল মাসের চেয়ে কিছুটা কম থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হলেও তাপমাত্রা একটু বেশি থাকতে পারে। তবে তা এপ্রিলের মতো অবস্থায় যাবে না। তাপপ্রবাহ এত দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে না।
মে মাসে তিন থেকে পাঁচ দিন হালকা ধরনের কালবৈশাখী হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর দুই থেকে তিনদিন বজ্র–শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি ও তীব্র কালবৈশাখী হতে পারে।
এদিকে এ মাসেই দেশের উত্তরাঞ্চল বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের (সিলেটসহ হাওর অঞ্চলে) নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। কিছু কিছু জায়গায় তা অতিক্রম করতে পারে বিপৎসীমাও।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আবহাওয়া
সকালের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস
সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার (১ মে) রাত ৯ টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ২ নম্বর (পুনঃ) সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আবহাওয়া
ঢাকাসহ চার বিভাগে বৃষ্টির আভাস
দেশে এখনও চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। টানা চলমান এই গরমে স্বস্তিতে নেই সাধারণ মানুষ। তবে বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমনকি আগামী দিনগুলোতে এই বৃষ্টি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। একইসঙ্গে ধীরে ধীরে তাপপ্রবাহের তীব্রতা ও আওতা কমবে।
বুধবার (১ মে) সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, রাজশাহী, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর এবং খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এতে বিরাজমান তাপপ্রবাহ দেশের পূর্বাঞ্চলের কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
এদিকে মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। ১৯৮৯ এর পর গত ৩৫ বছরে এটিই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
দেশের পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগে আজও তাপমাত্রা এমনই থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।