অর্থনীতি
১০০ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ কতটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্য বলছে, দেশটির বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে গত ডিসেম্বরেই। অর্থাৎ ডলার প্রতি মূল্য ১১০ টাকা করে হিসেব করলে বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে নেয়ার ঋণের পরিমাণ প্রায় এগারো লাখ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৃহস্পতিবার ২০শে মার্চে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি ঋণের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঋণের পরিমাণ একশো বিলিয়ন ডলার ছাড়ালেও তা জিডিপির তুলনায় বেশি নয়, বরং আরও ঋণ নেয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন জিডিপির তুলনায় একশো বিলিয়ন ডলার ঋণ বেশি না হলেও রাজস্ব আয়, রপ্তানি এবং রেমিট্যান্স না বাড়াতে পারলে এবং একই সাথে বিদেশি ঋণের প্রবাহ কমিয়ে না আনতে পারলে এ ঋণই বিশাল চাপ তৈরি করতে পারে আগামী কয়েক বছরে।
বিশেষ করে ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে এবং এর মধ্যেই চলতি বছর থেকেই বড় বড় কিছু প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শোধ করাও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি ও রেমিট্যান্সও কাঙ্ক্ষিত আকারে বাড়ানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের সরবরাহ না বাড়ানো গেলে বিদেশি ঋণকে ঘিরে সংকট জোরালো হওয়ার আশংকা তৈরি হতে পারে বলছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যখন মেগা প্রকল্পগুলোর মূল অর্থ পরিশোধ শুরু হবে তখন পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিয়েই উদ্বিগ্ন অনেকে।
ঋণের মূল অর্থ দিতে হবে কখন
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কিছু মেগা প্রকল্পের মূল অর্থ পরিশোধ শুরু হবে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে এবং সেই বছরে ৫৩১ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার কথা রয়েছে। এরপর ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৫১৯ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৮-২৯ সালে ৫০৭ মিলিয়ন ডলার শোধ করার আশা করছে সরকার। অন্যদিকে, ২০২২-২৩ বছর থেকেই যে বৈদেশিক ঋণ শোধ করা শুরু হয়েছে সেগুলো মূলত ঋণের সুদ।
সরকারি হিসেব মতে আগামী জুলাই থেকে শুরু হওয়া অর্থবছরে বিদেশি ঋণ হিসাবে চার দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার শোধের পরিকল্পনা আছে সরকারের। এরপর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সুদসহ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ দাঁড়াবে অন্তত সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে মূলত ভারত, চীন এবং রাশিয়ার কাছ থেকেই ঋণ নিয়েছে বেশি। এসব প্রকল্প সময়মত শেষ না করতে পারলে ঋণ আরও বাড়তে পারে। তবে সব মিলিয়ে একটি দেশের বিদেশি ঋণ হচ্ছে, ওই দেশটি বিভিন্ন দেশ, বিদেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যে ঋণ নেয় সেটি।
বাংলাদেশ সাধারণত বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকে।
‘এটি সংকট নয়, তবে অস্বস্তির’
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলছেন, জিডিপির অনুপাতে বিদেশি ঋণ এখনও কম- এটি সত্যি, কিন্তু এ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার কোন অবকাশ নেই। “মনে রাখতে হবে ঋণের ব্যবহার কেমন হচ্ছে এবং সেখান থেকে ডলারের অংকে উৎপাদনশীলতা আসছে কি-না -এটি নিশ্চিত করতে না পারলে সংকট তৈরি হবে সামনে,” বলছিলেন তিনি।
অর্থনীতিবিদদের হিসেবে জিডিপির অনুপাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ এখন ২৩ থেকে ২৫ শতাংশের মতো। আবার বিদেশি ঋণ হিসেবে যে অর্থ বাংলাদেশ নিয়েছে তার মধ্যে বিভিন্ন ধরণের ঋণ আছে। মি. হোসেন বলছেন, সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক ঋণ বেশী বেড়েছে। এগুলোর মেয়াদ কম কিন্তু খরচ বেশি। যেমন রূপপুর পরিমাণ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে এবং পদ্মা সেতুতে রেল লাইন সংযোগ প্রকল্পের জন্য চীন বাণিজ্যিক চুক্তিতে শর্তযুক্ত ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ।
“এখন ধরুন, রূপপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ আসলো এবং সেটি অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখলো। দেশের রপ্তানিও বাড়লো। তাহলে সমস্যা হবে না। কিন্তু যদি প্রকল্প পেছাতে থাকে এবং সময়মত রিটার্ন না আসে – তাহলেই ঋণটা চাপ হয়ে উঠবে,” বলছিলেন মি. হোসেন।
আবার ডলার প্রবাহ না থাকলে সেটাও বহি:বাণিজ্যিক ভারসাম্যে যেমন চাপ তৈরি করবে, তেমনি বাজেটেও চাপ তৈরি করবে। সেক্ষেত্রে রাজস্ব আদায় না বাড়লেও ঋণ পরিশোধ কিন্তু সরকারকে করতেই হবে। সে কারণে পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলছেন, বিদেশি ঋণ জিডিপির তুলনায় যেমনই হোক দেখতে হবে সেটি রপ্তানির বিবেচনায় কেমন।
“এভাবে দেখলে বিষয়টি হবে অস্বস্তির, কারণ সত্যিকার অর্থে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি এখন কম। অথচ ঋণটা দ্রুত বাড়ছে,” বলছিলেন তিনি। তবে তা সত্ত্বেও একশো বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ হয়ে গেছে বলে এতে ঠিক ‘সংকট’ বলতে চান না তিনি। বরং তার ভাষ্য হলো- ‘এটি অস্বস্তির’।
উত্তরণের উপায় কী
আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, বিদেশি ঋণ নিয়ে এ অস্বস্তি মোকাবেলা করতে হলে এখনই ঋণ প্রবাহ কমিয়ে আনতে হবে, বিশেষ করে বাণিজ্যিক শর্তে ঋণ নেয়া অর্থাৎ সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট কমাতে হবে। “রাজস্ব আয়, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। তবে বাস্তবতা হলো রপ্তানি নির্ভরশীল হয়ে আছে একটি পণ্যের ওপর, যা অত্যন্ত ঝুঁকির বিষয়।
আবার রেমিট্যান্স প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে না। অর্থ পাচারের কারণে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। তবে আমরা যদি দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারতাম তাহলে এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অনেক বাড়তো,” বলছিলেন তিনি। জাহিদ হোসেনও বলছেন যে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স না বাড়াতে পারলে বিদেশি ঋণ ভবিষ্যতে সংকটের জন্ম দিতে পারে।
“রাজস্ব আয় না বাড়ালে সরকারের ব্যয় কমানো একটি বিকল্প হতে পারে। এছাড়া নতুন ঋণ দিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ অর্থাৎ রিফাইনান্সিংও অন্য একটি বিকল্প হতে পারে। তবে যেসব ব্যয় এখনই দরকার নেই, সেগুলো থেকে সরকার বিরত থাকলে ঋণের চাপ কমবে,” বলছিলেন মি. হোসেন।
এই দুইজন অর্থনীতিবিদই মনে করেন, বিদেশি ঋণের বিপরীতে টাকায় অর্থাৎ স্থানীয় মুদ্রায় রিটার্ন আসার কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ার কারণেও বিদেশি ঋণের ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য যে বিদেশি ঋণ অপেক্ষমাণ আছে সেগুলোর অতিরিক্ত সুদের ব্যয় এড়াতে দ্রুত ব্যবহার দরকার বলেও মনে করেন তারা। তবে, এত সতর্কতা ও উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও আগামী দুটি অর্থ বছরে সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এর বিপরীতে রাজস্ব আদায়ে যে লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরে নির্ধারণ করা হয়েছিলো সেটি কতটা অর্জিত হয় তা নিয়েও অর্থনীতিবিদদের মনে সংশয় আছে।
চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলো সরকার। এ সময়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায় করার কথা। আর বাকি অর্থ অন্য উৎস থেকে সংগ্রহ করার কথা রয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই

অর্থনীতি
আরেক দফা বাড়লো স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। এতে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর করা হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেই রেকর্ড ভেঙে গেলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনার দাম ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪৯৬ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৬ হাজার ৪৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১৪৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭৭ হাজার ১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮৩১ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ৩৫১ টাকা।
এর আগে গতকাল সোমবার ঘোষণা দিয়ে আজ সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতিভরি সোনার দাম ৪ হাজার ৬১৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৪ হাজার ৪০৯ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৪ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৩ হাজার ৬৭৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭৪ হাজার ৮৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি সোনার দাম ৩ হাজার ২১৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৪৫ হাজার ৫২০ টাকা। আজ মঙ্গলবার এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২০৫ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৫ হাজার ৯১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৫ হাজার ৭৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ৩ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
১৩ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৫ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা

চলতি অক্টোবরের প্রথম ১৩ দিনে দেশে এসেছে প্রায় ১২৭ কোটি (১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার বা ১ হাজার ১৯২ কোটি টাকার প্রবাসী আয়।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এ বছরের অক্টোবরের প্রথম ১৩ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৭ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০০ কোটি ডলার।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৮৮৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-১৩ অক্টোবর ২০২৪) রেমিট্যান্স এসেছিল ৭৫৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থবছর অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ছিল যথাক্রমে—জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।
একক কোনো মাস হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চে রেমিট্যান্স প্রবাহ সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল, যা ছিল ওই অর্থবছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের (২০২৩-২৪) অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ওই অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স ছিল—জুলাইয়ে ১৯১.৩৭ কোটি, আগস্টে ২২২.১৩ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০.৪১ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯.৫০ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি, মার্চে ৩২৯ কোটি, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি, মে মাসে ২৯৭ কোটি এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
অর্থনীতি
১১৫ টাকা কেজি দরে ১৫ হাজার টন চিনি কিনছে সরকার

দরপত্র ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১১৫ টাকা ৫৮ পয়সা দরে ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) থেকে এ চিনি কিনতে ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ চিনি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১৫ হাজার মেট্রিক টন আখের সাদা চিনি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) থেকে এ চিনি সংগ্রহে ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ১১৫ টাকা ৫৮ পয়সা।
এদিকে বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ (চতুর্থ সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের ডব্লিউ-২৩ প্যাকেজের আওতায় নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ রাইস সাইলোর নির্মাণকাজের প্রথম ও চূড়ান্ত ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৮ টাকা। ভেরিয়েশনে প্রকল্পটির ৪ কোটি ২৩ লাখ ৬৮০ টাকা কমানোর ফলে সংশোধিত চুক্তিমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি ৫৩ লাখ ১১ হাজার ৯৩০ টাকা। যৌথভাবে এ প্রকল্পের কাজ করছে বাংলাদেশের কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্য জিএসআই গ্রুপ এলএলসি।
অর্থনীতি
৭২২ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তিতে কানাডা, মরক্কো এবং উন্মুক্ত পদ্ধতিতে সৌদি আরব ও কাফকো থেকে এক লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৭২২ কোটি ১৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭২০ টাকা। এর মধ্যে ৭০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি, ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে ভার্চ্যুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন (সিসিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)’র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৯বম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
কানাডা থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৫৬.২৫ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)’র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৮ম (ঐচ্ছিক-১ম) লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মরক্কো থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৮১ লাখ ৫৬ হাজার ২৪০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৫৬৮.৬৭ মার্কিন ডলার।
এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য সৌদি আরবের সাবিক কৃষি-পুষ্টি কোম্পানি থেকে ৪র্থ লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সৌদি আরব থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১৫৫ কোটি ৪৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৪২২.৬৬ মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ-এর কাছ থেকে ৬ষ্ঠ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
কাফকো থেকে এই সার কিনতে ব্যয় হবে ১৪৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৯০.৭৫ মার্কিন ডলার।
অর্থনীতি
সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর পূর্বাচলে এক অনুষ্ঠানে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানো ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
এদিকে, গতকাল (সোমবার) বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া প্রতি লিটার পাম ওয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ টাকা করে। ৩ টাকা বাড়নো হয়েছে খোলা সয়াবিন তেলের দাম।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গত আগস্টে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ব্যবসায়ীরা ১০ টাকা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের মাত্র এক টাকা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হন এবং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গনমাধ্যমকে জানাননি।
নতুন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ঠিক পরের দিন উপদেষ্টা জানালেন, তেলের দাম বাড়ানো হয়নি। অর্থাৎ, বাজারে তেলের দাম বাড়নোর প্রস্তাব অনুমোদন হয়নি।
কাফি