পুঁজিবাজার
ফ্লোর প্রাইস ওঠা বিএটিবিসির শেয়ার বিক্রির হিড়িক!
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ–আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ বা বিএটিবিসির ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর উঠলো আজ। গত ৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) জারি করা সবশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার থেকে ফ্লোর প্রাইস ওঠেছে। তবে ফ্লোর প্রাইস ওঠার দিনে কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রিতে হিড়িক পড়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, ফ্লোর প্রাইস ওঠা বিএটিবিসির শেয়ার দিনের শুরুতেই দাম কমিয়ে বিক্রি শুরু করে বিনিয়োগকারীরা। গতকালের সমাপনী মূল্যের তুলনায় আজ বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৩৮ টাকা ৯০ পয়সা বা সাড়ে ৭ শতাংশ। তবে দাম কমিয়ে দেওয়ার পরেও খুব একটা ক্রেতা দেখা যায়নি কোম্পানিটির ট্রেডিং স্ক্রিনে।
দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ৫২৭ বার হাতবদলে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ হাজার ৭৬টি। যার আর্থিক মূল্য ১ কোটি ৯২ লাখ ২৮ হাজার টাকা। একইসময়ে ট্রেডিং স্ক্রিনে শেয়ার বিক্রির আবেদন ছিলো ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫২১টি। যার মধ্যে আজকের সর্বনিম্ন দামে (৪৭৯ টাকা ৮০ পয়সা) শেয়ার বিক্রির আবেদন ছিলো ৯ লাখ ৭৮ হাজার ২৫৭টি। বিপরীতে আলোচ্য সময়ে ট্রেডিং স্ক্রিনে কোন ক্রেতা দেখা যায়নি।
গতকাল ফ্লোর প্রাইস ওঠে যাওয়া গ্রামীণফোনের শেয়ার বিক্রিতেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে। আগের কার্যদিবসের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছিলো ২৫ টাকা বা ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছিলো কোম্পানিটি।
পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে গত ১৯ জানুয়ারি প্রায় দেড় বছর পর ‘ফ্লোর প্রাইস’ প্রত্যাহার করা হয়। তবে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হলেও ৩৫টি কোম্পানির সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বহাল রাখে বিএসইসি। পরবর্তীতে বাজারে লেনদেনের গতি কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় ধাপে ধাপে তা কমিয়ে মাত্র ৬ কোম্পানিতে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু তিন কোম্পানির বেলায় আলাদা শর্ত জুড়ে দেয় বিএসইসি। নির্দেশনায় জানানো হয়- রবি, জিপি এবং বিএটিবিসির ফ্লোর প্রাইস তাদের রেকর্ড তারিখের পরেরদিন উঠবে।
সমাপ্ত ২০২৩ হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা বিএটিবিসির রেকর্ড তারিখ ছিলো গতকাল রবিবার। ফলে বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী আজ কোম্পানিটি ফ্লোর প্রাইস ছাড়া লেনদেন করছে। তবে ফ্লোর প্রাইস বহাল না থাকলেও একদিনের লেনদেনে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা বহাল থাকবে।
শেয়ারবাজারের দরপতন ঠেকাতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে কোনো শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বিএসইসির বেঁধে দেওয়া দামের নিচে নামতে পারে না। ফলে শেয়ারবাজারে একধরনের স্থবিরতা বিরাজ করে, পাশাপাশি কমে যায় লেনদেন। এমন এক পরিস্থিতিতে গত ২১ জানুয়ারি প্রথম দফায় ৩৫টি বাদে বাকি সব প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৩ জানুয়ারি তুলে নেওয়া হয় আরও ২৩ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস। সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি আরও তিন কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকা ৬টি কোম্পানি হলো- বেক্সিমকো লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার, বিএসআরএম লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজিবাজার পাওয়ার।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সাপ্তাহিক দরপতনের তালিকায় ‘এ’ ক্যাটাগরির আধিপত্য
বিদায়ী সপ্তাহে (২৮ এপ্রিল-০২ মে) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৪০৫ কোম্পানির মধ্যে ১৩৩টির শেয়ারদর কমেছে। তাতে সপ্তাহ শেষে দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে রূপালী ব্যাংক পিএলসি। তবে আলোচ্য সপ্তাহে দরপতনের তালিকায় ‘এ’ ক্যাটাগরি কোম্পানির আধ্যিকতা দেখা গিয়েছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী সপ্তাহে রূপালী ব্যাংকের শেয়ারদর আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪ টাকা ৬০ পয়সা বা ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ কমেছে। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির সমাপনী মূল্য ছিলো ২৩ টাকা ১০ পয়সা।
দরপতনের তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে উঠে আসা এডিএন টেলিকমের শেয়ারদর কমেছে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর শেয়ারের দাম ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ কমায় তালিকার তৃতীয়স্থানে অবস্থান নিয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি।
সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইফাদ অটোসের ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, এইচআর টেক্সটাইলের ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, আফতাব অটোমোবাইলসের ৮ দশমিক ১১ শতাংশ, মেঘনা সিমেন্ট মিলসের ৮ শতাংশ, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের ৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির শীর্ষে জেএমআই সিরিঞ্জ
বিদায়ী সপ্তাহে (২৮ এপ্রিল-০২ মে) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৪০৫ কোম্পানির মধ্যে ২২৮টির শেয়ারদর বেড়েছে। তাতে সপ্তাহ শেষে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে জেএমআই সিরিঞ্জ এন্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেড।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য অনুযায়ী, সমাপ্ত সপ্তাহে জেএমআই সিরিঞ্জের শেয়ারদর আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৪ দশমিক ০১ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির সমাপনী মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫৭ টাকায়।
দরবৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা এপেক্স ট্যানারির শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারদর বাড়ায় তালিকার তৃতীয়স্থানে অবস্থান করেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, সোনারগাঁও টেক্সটাইলের ২২ দশমিক ৩২ শতাংশ, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডের ২২ দশমিক ১২ শতাংশ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের ২০ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ফার ইস্ট নিটিংয়ের ২০ শতাংশ এবং অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
মালেক স্পিনিংয়ের ৩৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন
বিদায়ী সপ্তাহে (২৮ এপ্রিল-০২ মে) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪০৫ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। তাতে সপ্তাহ শেষে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে মালেক স্পিনিং মিলস পিএলসি।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য অনুযায়ী, সমাপ্ত সপ্তাহে কোম্পানিটির ৩৯ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তাতে লেনদেনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ অবদান মালেক স্পিনিংয়ের।
লেনদেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবের সপ্তাহজুড়ে ৩৬ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে আসা আলিফ ইন্ড্রাস্ট্রিজের বিদায়ী সপ্তাহে শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৩৪ কোটি ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার।
সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে লাভেলো আইসক্রিমের ৩২ কোটি ৬৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৩১ কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকা, আইটিসির ২২ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, সোনালী আঁশের ২১ কোটি ২৮ লাখ ১০ হাজার টাকা, গোল্ডেন সনের ১৬ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ওরিয়ন ফার্মার ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ১৪ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ডেরিভেটিভ পণ্য ঝুঁকি হ্রাসের কার্যকর হাতিয়ার: ডিএসই এমডি
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান বলেছেন, আর্থিক খাতের ডেরিভেটিস পণ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই সময়োপযোগী। ডেরিভেটিভ পণ্যগুলো অত্যন্ত পরিশীলিত পণ্য এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার যা পুঁজিবাজারের তারল্য প্রবাহ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অধিকতর দক্ষতা প্রদান করে অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, ডিএসই তার পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ আনতে আগ্রহী। আমরা নিয়ম ও বিধি প্রণয়নের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি এবং খুব শিগগিরেই ডেরিভেটিভ মার্কেট শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি।
গাজীপুরের ব্র্যাক সিডিএমে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড প্লাটফর্ম’ শীর্ষক কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ডিএসই কর্তৃক আয়োজিত বিএসইসি, সিডিবিএল, সিসিবিএল, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং এ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীদের অংশগ্রহণে গত ২ ও ৩ মে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম।
ডিএসইর এমডি ড. তারেক বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নত স্টক এক্সচেঞ্জের বিভিন্ন ধরনের ডেরিভেটিভস পণ্য রয়েছে। ডেরিভেটিভ মার্কেটের আকার ইক্যুইটি বাজারের তুলনায় বহুগুণ বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশী এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য পণ্যের বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে তার পার্শ্ববতী এক্সচেঞ্জের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য কাজ করছে। এছাড়া আরো কিছু আইন, টেকনিক্যাল এবং অবকাঠামো বিষয়সহ বেশ কিছু কাজ করতে হবে। তবে এর বাইরেও আরো গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় ট্রেনিং এবং আলোচনা যা আমরা করছি। এর মাধ্যমে এই পণ্য সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো। এই ধরনের ট্রেনিং প্রোগ্রাম অব্যাহত থাকবে যাতে করে আমরা ডেরিভেটিবস পণ্য খুব দ্রুত বাজারে চালু করতে পারি।
কর্মশালার উদ্দেশ্য নিয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন আমাদের এই মার্কেট খুবই ছোট ছিল। সে সময় আন্তর্জাতিক অনেক বড় মার্কেট দেখার সুযোগ হয় তার তুলনায় এই মার্কেট কিছুই ছিল না। তখন ভাবতাম এবং আশা করতাম যে আমাদের পুঁজিবাজার বড় হবে। কিন্তু এখনও বড় হয়নি। বাজার এখনো শিশু অবস্থায় রয়ে গেছে। মার্কেট এই অবস্থা হওয়ার কারণ হচ্ছে, আমাদের মার্কেটে পণ্য কম, ইক্যুইটি কেন্দ্রিক বাজার। এখানে বিনিয়োগের নতুন কোন ক্ষেত্র নেই এবং নতুন কোন পণ্য নেই। ফলে দেশে দেশী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে। এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মিলে ডেরিভেটিভস পণ্য চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এই পণ্য চালুকরণে টেকনিক্যাল ও অবকাঠামো তৈরিতে কাজ করবে।
কর্মশালার বিষয়বস্তুর ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া। মূল প্রবন্ধে তিনি ডেরিভেটিবসের প্রকারভেদ, ডেরিভেটিভ মার্কেটের তাৎপর্য ও প্রভাব, বিশ্বব্যাপী ডেরিভেটিভস মার্কেট বৃদ্ধির কারণ, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ডেরিভেটিভস-এর বৈশিষ্ট্য, ডেরিভেটিভস মার্কেটে সেটেলমেন্টের ধরণ, ফরোয়ার্ড এবং ফিউচারের মধ্যে পার্থক্য, ফরোয়ার্ড কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার কনট্রাক্টের সীমাবদ্ধতা, ফিউচার ট্রেডিংএর বিভিন্ন টার্মিনলজি, ফিউচার কন্ট্রাক্টের স্পেসিফিকেশন, ফিউচার ও অপশনের মধ্যে পার্থক্য, অপশনস ট্রেডিং এর বিভিন্ন টার্মিনোলজি, অপশন ট্রেডিং এর সুবিধা, অপশনের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, অপশন কন্ট্রান্টের স্পেসিফিকেশন, অপশন ট্রেডিং এর কৌশল, ডেরিভেটিভস ব্যবহার, হেজিং ও এর প্রকারভেদ, মৌলিক ঝুঁকি, ক্রস হেজ ও এর সাথে যুক্ত ঝুঁকি, হেজিং এর সীমাবদ্ধতা, এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে ফিউচারস অ্যান্ড অপশনস ট্রেডিংয়ে জড়িত পক্ষসমূহ, ডেরিভেটিভস ট্রেডিং প্রক্রিয়া, ফিউচার ও অপশনের জন্য স্টক ও সূচক নির্বাচনের মানদন্ড, বিভিন্ন ধরনের কর্পোরেট অ্যাকশন ব্যবস্থাপনা, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, মার্জিন ম্যানেজমেন্ট, ইনিশিয়াল মার্জিন, মেইনটেনেন্স মার্জিন ও মার্জিন কল, মার্জিনের পেমেন্ট, বিভিন্ন ধরনের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট, সেটেলমেন্টের প্রক্রিয়া এবং সর্বোপরি এক্সচেঞ্জ ডেরিভেটিভস চালুকরনে পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে আলোকপাত করেন।
নাসডাক মার্কেটপ্লেস টেকনোলজির হেড অব ট্রেডিং কার্ল স্লেজার প্রযুক্তি কীভাবে ডেরিভেটিভস ট্রেডিং এবং ব্যবসায়িক সুবিধা নিয়ে আসে এবং ডেরিভেটিভস ট্রেডিং এর বাজার ব্যবস্থা এবং অনুশীলন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম ফিউচারস ও অপশনস বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অপশনসের ট্রেডিং স্ট্রাটেজিং, রিটার্ণ বৃদ্ধির কৌশল, কভার্ড কল, ভ্যালু প্রটেকশন স্ট্রাটেজি, বুল, বিয়ার ও বাটারফ্লাই ট্রেড, লং ও সর্ট স্ট্রাংগেল, অপশন প্রাইসিং মেথডস, ব্লাক-সোলস মডেল, বায়নোমিয়াল ট্রি মডেল, কন্ট্রোল ভ্যারিয়েট টেকনিক, ফিউচার প্রাইসিং, ফিউচার কন্ট্রাকটস, প্রাইসিং ফরোয়ার্ড, স্টক ইনডেক্স, ইনডেক্স আরবিট্রেজ, প্রাইসিং ফরোয়ার্ড বনাম ফিউচারস, লং অ্যান্ড সর্ট পজিশনস, হেজিং প্রিন্সিপাল, শর্ট অ্যান্ড লং হেজ, পারফেক্ট হেজ, বেসিস অ্যান্ড বেসিস রিক্স, হেজ ফরোয়ার্ড বনাম ফিউচারস ও অপটিমাল হেজ রেশিও এর উপর আলোকপাত করেন।
কর্মশালার বিশেষ অতিথি ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে পণ্যের ভিন্নতা আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো পিছিয়ে রয়েছে। ডিএসইর বর্তমানে যে এমডি রয়েছে তার নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের কাজ করার সুযোগ তৈরি করতে হবে। তিনি এর আগে বিএসইসিতে ছিলেন। এ বাজার সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা ও কাজের দক্ষতা আছে। তিনি এখানে কি সমস্যা আছে সেগুলো জানেন। সেক্ষেত্রে তার এই বিষয়গুলো কাজে লাগাতে পারলে আমরা একটি নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ দেখব।
তিনি বলেন, পণ্যে ভিন্নতা আনতে অনেক আগে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সেই জন্য এ বাজারে কোনো মেধাবী থাকে না। কারণ যারা আসে, তারা এখানে কাজ করার মত কোনো নতুন পণ্য পায় না। আমাদের বাজার মূলত ইকুইটি কেন্দ্রিক। আর বর্তমানে বাজারে মাত্র ৪০০ কোম্পানি আছে যেখানে বাংলাদেশে কোম্পানির সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি। আর ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা মাত্র ১৭ লাখ। তাই এ জিনিসগুলো বিএসইসি ও ডিএসইর লক্ষ্য করা উচিত আসলে সমস্যা কোথায় আছে। তাই বাজার ভালো করতে হলে পণ্যে ভিন্নতা আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মার্কেটে বন্ড নিয়ে অনেক আগ থেকে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টা এখনো ভালো করে কার্যকর হয়নি। আর এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ট্যাক্স ইস্যু। এ বিষয় নিয়ে আমরা বিএসইসি ও এনবিআর একসাথে বসে সমাধান করার কথা বলে আসছি। এছাড়া সিসিবিএলের পাঁচ বছর হয়ে গেলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি। আর সিসিবিএল ছাড়া পণ্যে ভিন্নতা খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। বর্তমানে সিসিবিলের সিংহভাগ শেয়ার ডিএসইর কাছে। এছাড়া আরো শেয়ারহোল্ডাররা আছেন। তারা এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয় আছে পণ্যে ভিন্নতা আনতে সেগুলো নিয়ে কাজ করা দরকার।
সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটে পন্য কম থাকায় কেউ বিনিয়োগ করার সুযোগ পায় না। কেউ যখন শেয়ারে লাভ করে তখন বিক্রি করে টাকা নিয়ে যায়। কারণ তার কাছে বিনিয়োগের নতুন কোনো সুযোগ থাকে না। আজকে যদি নানা ধরনের পণ্য থাকত তাহলে শেয়ারে বিক্রি করে অন্য পণ্যে বিনিয়োগ করত। তাই বাজার ভালো রাখতে পণ্য ভিন্নতাল কোনো বিকল্প নেই। তাই এ নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএসইসির কমিশনার মোঃ আব্দুল হালিম তার বক্তব্যে বলেন, ডেরিভেটিবস নিয়ে আজকের ওয়ার্কশপই শেষ নয়। এটা নিয়ে আরো অনেক প্রোগ্রাম করতে হবে। বিশ্বের অনেকে দেশে এ বিষয়ে অনেক আগে থেকে চালু আছে। তাই যারা এ বিষয় নিয়ে কাজ করবেন তারা প্রয়োজনে সে সব দেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে আসতে হবে। শুধুই ইক্যুইটি দিয়ে মার্কেট বড় হবে না। মার্কেট বড় করতে আরও বিভিন্ন ধরনের পণ্য দরকার। সিসিবিএলের কিছুটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইতোমধ্যে ডেরিভেটিবস নিয়ে কাজ শুরু করেছে এবং সিএসই কমোডেটিজ নিয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে বাজার এ অবস্থায় থাকবে না। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে অনেক ভালো হবে। বাহির থেকে কেউ এসে বাজার ভালো করে দেবে না। এখানে যারা আছে তাঁদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে এখানে কি সমস্যা আছে, আর কি কাজ করা যায়। তাহলেই বাজার ভালো হবে। অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন হয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের রোল পরিবর্তন হওয়া উচিত। ২৫ সালের মধ্যে এই ডেরিভেটিস পণ্য চালু হবে বলে আমি আশাবাদী এরমধ্যে সিসিবিএলও তার কার্যক্রম শুরু করে দিবে৷
এ সময় ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ নাফিজ আল তারিক এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিন্যান্সিয়াল ডেরিভেটিভস এর বেসিক ফিচার, প্রকারভেদ অধীন প্রোডাক্টসমূহ,ট্রেডিং প্রক্রিয়া, জড়িত পক্ষ সমূহ; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচার এর বিনিয়োগকারী, ট্রেডিং-এ অংশগ্রহনকারী, ক্লিয়ারিং-এ অংশগ্রহনকারী, স্টক এক্সচেঞ্জ এর রেগুলেটর, সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির ভূমিকা; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচারের ক্লিয়ারিং এন্ড সেটেলমেন্ট ফ্লো; ঝুঁকি সমূহ; ঝুঁকি ব্যাবস্থাপনা; এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফিউচার এর মালয়েশিয়া ও ভারতের উদাহরণ এবং বাংলাদেশ এর জন্য যা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে ডিএসইর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্বিক আহমেদ শাহ বলেন, সময়ের পরিবর্তনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সকল ক্ষেত্রেই পরিবর্ধিত ও পরিবর্তিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে পণ্য বৈচিত্রকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে পণ্য বৈচিএময় করার জন্য এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ পোর্টফোলিও গঠনের জন্য এই মুহূর্তে ডেরিভেটিভস মার্কেটের বিকল্প নেই৷
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
লেনদেনের সঙ্গে বাজার মূলধন বাড়লো ৬ হাজার কোটি টাকা
বিদায়ী সপ্তাহে (২৮ এপ্রিল থেকে ০২ মে) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব মূল্য সূচকের উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন ও বাজার মূলধনের পরিমান। আলোচ্যে সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গেলো সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬১ কোটি ১০ লাখ টাকা। আর সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫ হাজার ৭৯১ কোটি ০৬ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ০ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৬ হাজার ২২৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ২ হাজার ৮২৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭৬৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ৫৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
গেল সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ৯৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে।
প্রধান সূচকের সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অপর দুই সূচকও বেড়েছে। শরীয়াহ সূচক ‘ডিএসই এস’ ১৫ দশমিক ১৬ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানিগুলোর সূচক ‘ডিএস ৩০’ এক সপ্তাহে ৩৩ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বেড়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৯৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারদরই ছিল অপরিবর্তিত। দর কমেছে ১৩৩টির, বিপরীতে ২২৮ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে।
এসএম