Connect with us

ধর্ম ও জীবন

রোজার আগেই উদ্বোধন হলো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ

Published

on

দরবৃদ্ধি

পবিত্র রমজান মাস আসার আগেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে। আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে অবস্থিত এই মসজিদ বিশ্বে তৃতীয় হলেও এটি আফ্রিকার সবচেয়ে বড় মসজিদ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্য গ্রেট মস্ক অব আলজিয়ার্সের নামাজের জায়গায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারবেন। আলজিয়ার্সের গ্রেট মসজিদে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনার রয়েছে—যার উচ্চতা ২৬৫ মিটার (৮৬৯ ফুট)। রাষ্ট্রীয় খরচে ২০১০ এর প্রায় পুরো দশক ধরেই একটি চীনা নির্মাণ সংস্থা দ্বারা চলেছে এই মসজিদ তৈরির কাজ।

মসজিদটির নকশায় রয়েছে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের সমন্বিত ছোঁয়া। এতে আলজেরিয়ার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে আরব এবং উত্তর আফ্রিকার সমৃদ্ধিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মসজিদটিতে রয়েছে হেলিকপ্টার অবতরণের একটি প্যাড। একটি লাইব্রেরিও আছে এখানে। সেখানে রাখা যাবে প্রায় ১০ লাখ বই।

মসজিদের উদ্বোধন মুসলিমদের ভালো ও পরিমিতিবোধের দিকে ধাবিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মুসলিম ওলামাদের বিশ্ব ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি আলী মোহাম্মদ সালাবি।

আলজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি আবদেলমাদজিদ টেবোউন মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। তবে মসজিদটি প্রায় পাঁচ বছর ধরেই পর্যটক এবং রাষ্ট্রীয় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কেবল বিলম্বিত হয়েছে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। আসন্ন রমজানে নামাজ আদায় যাতে সম্ভব হয় সে কারণে মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হলো।

তবে প্রকল্পটির বিলম্ব ঘিরে ছিল নানা বিতর্ক। সাত বছর ধরে নির্মাণাধীন এই মসজিদ যে স্থানে অবস্থিত সে জায়গাকে বিশেষজ্ঞরা ভূমিকম্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে সতর্ক করেছিলেন। তবে এই সতর্কতার ব্যাপারটি গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এপিএসে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বীকার করা হয়নি।

অর্থসংবাদ/এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্ম ও জীবন

জুমার দিনের যেসব আমলে গুনাহ মাফ হয়

Published

on

দরবৃদ্ধি

আল্লাহ রাত ও দিনকে সৃষ্টি করেছেন। সব দিনের মধ্যে জুমাবার বা শুক্রবারকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে এই দিনের বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের জন্য এই দিনটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ।

হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আগের জাতিগুলোর কাছে জুমার মর্যাদা অজ্ঞাত রাখেন। তাই ইহুদিরা শনিবার নির্ধারণ করে। আর খ্রিস্টানরা রবিবার নির্ধারণ করে। অতঃপর আমরা আসি। আমাদের কাছে তিনি জুমার দিনের মর্যাদা প্রকাশ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮৫৬) জুমার দিনের পাঁচ বৈশিষ্ট্য

সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। তা হলো-এক. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন।

দুই. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন। তিন. এই দিনে আদম (আ.)-কে মৃত্যু দিয়েছেন। চার. এই দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা দেবেন। যতক্ষণ সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না। পাঁচ. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৫)

নিম্নে জুমার দিনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. জুমার নামাজ আদায়ের সওয়াব
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)

অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান মধ্যবর্তী সময়ের পাপ মোচন করে; যদি সেই ব্যক্তি সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)

২. জুমার দিন গোসল করার সওয়াব
জুমার দিন গোসল করা ও আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আউস বিন আউস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনল, তাঁর জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)

৩. মসজিদে প্রথমে প্রবেশের সওয়াব
জুমার দিন মসজিদে আগে প্রবেশ করা ও মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনার বিশেষ গুরুত্ব আছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, অতঃপর প্রথমে মসজিদে গেল সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে এরপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল। আর যে এরপর ঢুকল, সে যেন ছাগল কোরবানি করল, এরপর যে ঢুকল সে যেন মুরগি কোরবানি করল, আর যে এরপর ঢুকল সে ডিম সদকা করল। অতঃপর ইমাম খুতবার জন্য এলে ফেরেশতারা আলোচনা শোনা শুরু করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪১)

৪. জুমার দিন দোয়া কবুল হয়
জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আছরের পর অনুসন্ধান কোরো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান কোরো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)

৫. সুরা কাহাফ পাঠ
জুমার অন্যতম আমল সুরা কাহাফ পাঠ করা। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। যে ব্যক্তি অজুর পর এই দোয়া পড়বে তার নাম একটি চিঠিতে লেখা হবে। অতঃপর তাতে সিল দেওয়া হবে, যা কেয়ামত পর্যন্ত আর ভাঙা হবে না।’ (সহিহ তারগিব, হাদিস : ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক : ২/৩৯৯)

৬. দরুদ পাঠ
জুমার দিন নবীজি (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। আউস বিন আবি আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং এই দিনে সবাইকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব, তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণ দরুদ পড়ো। কারণ জুমার দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।’ সাহাবারা বললেন, আমাদের দরুদ আপনার কাছে কিভাবে পেশ করা হবে, অথচ আপনার দেহ একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ জমিনের জন্য আমার দেহের ভক্ষণ নিষিদ্ধ করেছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)

৭. দোয়া কবুল করা হয়
জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আছরের পর অনুসন্ধান কোরো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)

অন্য হাদিসে এসেছে, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান কোরো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)

আবু দারদা ইবনে আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে বলেছেন, ইমামের মিম্বরে বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টিই সেই বিশেষ মুহূর্ত। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৯)

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

জুমার দিনে যে পাঁচ ভুল কাম্য নয়

Published

on

দরবৃদ্ধি

জুমার নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের অন্যতম একটি ইবাদত। জুমার দিনে অন্যান্য ইবাদাতের জন্যেও রয়েছে অতিরিক্ত সওয়াবের হুকুম। তাই এই দিনটিকে সঠিকভাবে পালন করা জরুরি।

শুক্রবারে জুমার নামাজ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। মোটামুটি সব মুসলমান জুমার নামাজ আদায় করেন। কিন্তু এই নামাজের সময় আমরা কিছু ভুল হয়ে যায়। সে রকম পাঁচটি ভুল নিয়ে সংক্ষিপ্ত কথা—

পরিচ্ছন্ন না হয়ে জুমায় যাওয়া
জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করা জরুরি। অনেকে এই দিনে এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে, কোনো রকম জুমার ফরজ দুই রাকাত আদায় করে চলে আসেন। অথচ আবু সাইদ খুদ্রি (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য গোসল করা ওয়াজিব (জরুরি)। আর মিসওয়াক করবে এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে। ’ (বুখারি, হাদিস ৮৮০, মুসলিম, হাদিস ৮৪৬)

তাই সবার উচিত জুমার দিন গোসল করা এবং মিসওয়াক করা। যদি সামর্থ্য থাকে, সুগন্ধি ব্যবহার করা। এছাড়াও ভাল ও পরিচ্ছন্ন জামা পড়ে মসজিদে যাওয়া। রাসুল (সা.) নিজেও এই দিন ভাল ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতেন।

মসজিদে দেরি করে যাওয়া
জুমার নামাজ কেবল দুই রাকাত নামাজ আদায়ে যথেষ্ট নয়। জুমার খুতবা শোনাও জরুরি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাত (সহবাস পরবর্তীকালে) গোসলের মতো গোসল করে এবং নামাজের জন্য আগমন করে, সে যেন একটি উট কোরবানি করলো। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে, সে যেন একটি গাভি কোরবানি করলো। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে, সে যেন একটি শিং-বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করলো। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করলো সে যেন একটি মুরগি কোরবানি করলো। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করলো, সে যেন একটি ডিম কোরবানি করলো। (বুখারি, হাদিস ৮৮১)

তাই জুমার নামাজের দিন পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া উত্তম। তাহলে সময়মতো ও সঠিকভাবে নামাজ আদায় সম্ভব।

জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা
জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা নিষিদ্ধ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মসজিদের দিকে যাওয়া জরুরি। জুমার প্রথম আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায় কিংবা অন্য কাজ বন্ধ করে দেওয়া অথবা নামাজের জন্য বিরতি দেওয়া উচিত। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাইদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, আয়েশা (রা.) বলেছেন, লোকজন নিজেদের কাজকর্ম নিজেরাই করতেন। যখন তারা দুপুরের পরে জুমার জন্য যেতেন, তখন সে অবস্থায়ই চলে যেতেন। তাই তাদের বলা হলো, যদি তোমরা গোসল করে নিতে ভালো হতো…। (বুখারি, হাদিস ৯০৩, মুসলিম, হাদিস ৮৪৭)

মনোযোগ দিয়ে খুতবা না শোনা
খুতবা শোনা জুমার নামাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই ঠিকভাবে খুতবা শোনাও জরুরি। তবে যদি মুসল্লি বেশি হওয়ার কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে খুতবার আওয়াজ না শোনা যায়, তবে নীরব থাকা নিয়ম।

আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমভাবে ওজু করে জুমার নামাজে এলো, নীরবে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনলো, তাহলে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি (অহেতুক) কঙ্কর স্পর্শ করলো, সে অনর্থক, বাতিল, ঘৃণিত ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য কাজ করলো। (মুসলিম, হাদিস ১৮৭৩)

প্রসঙ্গত আরবি ও বাংলায় দেওয়া উভয় খুতবাই মনোযোগ দিয়ে শোনা জরুরি।

খুতবার সময় কথা বলা
খুতবা শোনা ওয়াজিব। রাসুল (সা.) খুতবার সময় কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে। (বুখারি, হাদিস ৯৩৪, মুসলিম, হাদিস ৮৫১)

খুতবার সময় কেউ কথা বললে তাকে চুপ থাকতে বলাও উচিত নয়। অর্থাৎ খুতবার সময় মুখ পুরোপুরি বন্ধ রাখা চাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে জুমার নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

দুই কাজে নষ্ট হয় জুমার সওয়াব

Published

on

দরবৃদ্ধি

ইসলামে জুমার দিন সর্বশ্রেষ্ঠ দিন। ইদুল ফিতর ও ইদুল আজহার দিনের চেয়েও জুমার দিনের মর্যাদা ও গুরুত্ব বেশি। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

إِنّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الْأَيّامِ وَأَعْظَمُهَا عِنْدَ اللهِ مِنْ يَوْمِ الْأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ

জুমার দিন দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। জুমার দিন আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে মহান দিন। এমন কি এ দিন আল্লাহ তাআলার কাছে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর তথা ইসলামের দুই ঈদের দিন থেকেও মহান। (সুনানে ইবনে মাজা)

জুমার দিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গোসল করে মসজিদে গিয়ে উত্তমরূপে জুমার নামাজ আদায়ের অপরিসীম সওয়াবের কথা বর্ণনা করে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَتَطَهَّرَ بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، ثُمَّ ادَّهَنَ أَوْ مَسَّ مِنْ طِيبٍ، ثُمَّ رَاحَ فَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ، فَصَلَّى مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الإِمَامُ أَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى

যে ব্যাক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, মানুষকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে, ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে, তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৯১০)

এ হাদিসে জুমার সওয়াব লাভের জন্য আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেমন কিছু করণীয় কাজের কথা বলেছেন, দুটি বর্জনীয় কাজের কথাও বলেছেন যা থেকে বিরত থাকা জুমার সওয়াব লাভের শর্ত: ১. মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া ২. খুতবার সময় কথা বলা

এ হাদিসটিসহ বিভিন্ন হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে এ দুটি কাজ করতে নিষেধ করেছেন

মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া
জুমার দিন ইমামের কাছাকাছি বসার আগ্রহ ও চেষ্টা থাকা উচিত। কিন্তু সেজন্য আগে আগে মসজিদে উপস্থিত হতে হবে। মসজিদে পরে উপস্থিত হয়ে অন্য মুসল্লিদের ডিঙিয়ে তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করা অন্যায় ও গুনাহের কাজ।

খুতবা চলা অবস্থায় কেউ যদি কাতার ডিঙিয়ে সামনে যেতে চায়, তাহলে অন্য মুসল্লিদের উচিত তাকে এ কাজ করতে নিষেধ করা ও বসিয়ে দেওয়া। খতিব সাহেবের চোখে পড়লে তিনি নিজেই তাকে বসে যাওয়ার নির্দেষ দিতে পারেন। একবার রাসুল সা. জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। তার চোখে পড়লো এক ব্যক্তি মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি তাকে বললেন,

اجْلِسْ فَقَدْ آذَيْتَ وَآنَيْتَ

বসে পড়, তুমি দেরি করে এসেছ, মানুষকে কষ্টও দিচ্ছ। (সুনান আবু দাউদ)

জুমার খুতবার সময় কথা বলা
জুমার খুতবা শোনা ওয়াজিব। খুতবার সময় অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। রাসুল (সা.) খুতবার সময় চুপ থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে কেউ কথা বললে তাকে ‘চুপ কর’ বলতেও নিষেধ করেছেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন,

إذا قلت لصاحبك ’أنصت‘ يوم الجمعة والإمام يخطب فقد لغوت

জুমার দিন খুতবার সময় যদি তুমি তোমার সঙ্গীকে বলো, চুপ কর, তাহলেও তুমি অনর্থক কথা বললে। (সহিহ বুখারি)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন,

مَن تكلَّم يوم الجمعة والإمام يخطب فهو كمثل الحمار يحمل أسفارً

যে জুমার দিন ইমাম খুতবা দেওয়ার সময় কথা বলে সে কিতাবের বোঝা বহনকারী গাধার মতো। (মুসনাদে আহমদ)

ফকিহরা বলেন, যেসব কাজ নামাজের মধ্যে হারাম, তা খুতবা চলাকালীন সময়ও হারাম। খুতবার সময় সুন্নত-নফল নামাজ পড়াও বৈধ নয়।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

ওমরাহ নিয়ে সুখবর জানালো সৌদি আরব

Published

on

দরবৃদ্ধি

এখন থেকে যেকোনো ভিসায় ওমরাহ পালন করা যাবে বলে জানিয়েছে সৌদি আরব। গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) দেশটির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এর বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।

বার্তায় বলা হয়, যেকোনো ভিসা নিয়ে যেকোনো দেশ থেকে ওমরাহ পালন করা যাবে। আপনার ভিসা যে ধরনেরই হোক, আপনি ওমরাহ করতে পারবেন। ফ্যামিলি, ট্রানজিট, লেবার ও ই-ভিসা হোক, তা দিয়ে ওমরাহ করতে কোনো বাধা নেই।

এদিকে পবিত্র হজের অনুমোদন দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব। গত ২৪ এপ্রিল থেকে দেশটির স্থানীয় বাসিন্দা ও সেখানে বসবাসকারী মুসলিম বিদেশি নাগরিকদের হজের অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়। এতে আবাসন সুবিধা বিবেচনায় ৪ হাজার ৯৯ সৌদি রিয়াল থেকে শুরু করে ১৩ হাজার ২৬৫ রিয়াল পর্যন্ত চারটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।

এদিকে আসন্ন হজের প্রস্তুতি হিসেবে ওমরাহ পালনের সময়সীমা ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। আগামী ২৯ জিলকদ (৬ জুন) এর মধ্যে ওমরাহ যাত্রীদের সৌদি আরব ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সৌদি আরবে প্রবেশের পর থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত ওমরাহ ভিসার মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়।

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

ধর্ম ও জীবন

রিজিক বাড়ানোর ১২ আমল

Published

on

রিজিক বাড়ানোর ১২ আমল

প্রতিটি প্রাণীর জীবনধারণের জন্য আল্লাহ–তাআলার এমন বিশেষ দানকে রিজিক বলা হয়, যা নির্ধারিত সময়ে প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী প্রদান করা হয়; আর তার মাধ্যমে প্রাণীটির সার্বিক উপকার সাধিত হয়। রিজিক সেটাই, যা বান্দার উপকারে আসে। উপকারে আসার বিষয়টিও ব্যাপক—ইহকাল ও পরকাল তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং কোনো ব্যক্তি মানুষ বা প্রাণী যদি ইহকালে রিজিকপ্রাপ্ত না হয়, পরকালে সে অবশ্যই তা পাবে।

অনুরূপভাবে যা কিছু মানবদেহ ও আত্মার খোরাক মেটায়, তা-ই রিজিক। মোট কথা, আল্লাহ–তাআলার এক বিশেষ অনুগ্রহের নাম রিজিক, যা তিনি মানুষসহ সব প্রাণীকে নির্ধারিত সময়ে প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী দিয়ে থাকেন। তবে কিছু আমলের মাধ্যমে রিজিক বৃদ্ধি ঘটে এবং আয়-উপার্জনে বরকত আসে। রিজিক বাড়ানোর ১২ আমল করবেন যেভাবে-

১. তওবা-ইস্তিগফার করা

তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ (সুরা নুহ, আয়াত: ১০-১২; সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত: ৮২)

ইবনে আব্বাস (রা.)–র বিবরণে আছে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তিগফার করবে; আল্লাহ–তাআলা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১,৫১৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮১৯; মুস্তাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৯১, হাদিস: ৭,৬৭৭)

২. পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা রাখা

যেসব কাজকর্ম বা আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে; তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন করা এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না ।’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৩৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২,৩৪৪; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,১৬৪)

৩. হজ-ওমরাহ পালন

বারবার হজ ও ওমরাহ পালন করার দ্বারা রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)–র বিবরণে আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা লাগাতার হজ ও ওমরাহ পালন করতে থাকো। কারণ, এর দ্বারা এমনভাবে অভাব ও গুনাহ দূরীভূত হয়; যেমনভাবে কামারের হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮১০; নাসায়ি, হাদিস: ২,৬৩১)

৪. হিজরত করা এবং জিহাদে অংশ নেওয়া

আল্লাহ–তাআলার রাস্তায় হিজরত করা ও জিহাদে অংশগ্রহণ করার দ্বারা রিজিকে বরকত হয়। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহ–তাআলার রাস্তায় হিজরত করবে; জমিনে বহু আশ্রয়স্থল ও সচ্ছলতা পাবে সে।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১০০)

ইবনে উমর (রা.)–র বর্ণনায় আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার বর্শার ছায়াতলে আমার রিজিক রাখা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৫,৬৬৭; বায়হাকি, হাদিস: ১,১৫৪)

৫. নামাজ আদায়

সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহ–তাআলার ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। আল্লাহ–তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ (সুরা ত্বহা, আয়াত: ১৩২)

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ–তাআলা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো; আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ (তিরমিজি, হাদিস–২,৪৬৬; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,১০৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৮,৬৯৬)

৬. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা

রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম আরেকটি আমল হচ্ছে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করতে এবং তাঁদের হক যথাযথভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ–তাআলা। (সুরা নিসা, আয়াত: ৩৬; সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৬) আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং আয়ু দীর্ঘ করা হোক—সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বুখারি, হাদিস: ৫,৯৮৫; মুসলিম, হাদিস: ৪,৬৩৯)

আরও পড়ুন: যে কারণে আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দেন

৭. আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় এবং দান-সদকা

দান-সদকা করার মাধ্যমে রিজিক বাড়ে। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো; তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।’ (সুরা সাবা, আয়াত: ৩৯) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করে। তাদের একজন বলে, হে আল্লাহ! দানকারীকে তার দানের জন্য উত্তম প্রতিদান দিন। অপরজন বলে, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৪৪২, মুসলিম, হাদিস: ১,০১০)

৮. শোকর আদায় বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

যেসব কাজকর্ম বা আমলে রিজিক বাড়ে, তার মধ্যে অন্যতম হলো আল্লাহ–তাআলা যেসব নিয়ামত দান করেছেন, তার শোকর আদায় করা বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কারণ, শোকর আদায় করার দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘যদি তোমরা শোকর আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নিয়ামত) বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইব্রাহিম, আয়াত: ৭)

৯. বিয়ে করা

আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত এবং তোমাদের দাস–দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদের বিয়ে করিয়ে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, আল্লাহ–তাআলা নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। কারণ, আল্লাহ–তাআলা প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নূর, আয়াত: ৩২) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণির মানুষকে সাহায্য করাকে আল্লাহ–তাআলা নিজ দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তিন শ্রেণির অন্যতম হলো—বিয়ে করতে আগ্রহী সেই ব্যক্তি, যিনি বিয়ে করে পবিত্র জীবন যাপন করতে ইচ্ছুক।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১,৬৫৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২,৫১৮)

১০. গরিব-অসহায়ের প্রতি সদয় হওয়া

যেসব কাজকর্ম বা আমলে রিজিক বাড়ে, তার অন্যতম হলো গরিব-অসহায় মানুষের প্রতি সদয় হওয়া। রাস্তাঘাটে গরিব-অসহায় মানুষকে হাত বাড়াতে দেখলেই সবাইকে এক পাল্লায় মেপে খারাপ আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র ইরশাদ করেছেন, ‘তাদের (ধনী লোকদের) সম্পদে প্রার্থী (দরিদ্র) ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ১৯)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়।’ (বুখারি, হাদিস: ২,৮৯৬)

১১. আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা

যেসব কাজকর্ম বা আমলে রিজিক বাড়ে, এর মধ্যে অন্যতম হলো আল্লাহ–তাআলার কাছে প্রার্থনা করা। কারণ, আমরা এমন এক স্রষ্টার সৃষ্টি—যিনি চাইলে খুশি; না চাইলে অখুশি। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো; আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা মুমিন, আয়াত: ৬০)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)–এর বিবরণে আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অভাবে পতিত হওয়ার পর মানুষের কাছে সোপর্দ করে, অর্থাৎ অভাব দূরীকরণে মানুষের ওপর নির্ভরশীল হয়; তার অভাব মোচন করা হয় না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অভাবে পতিত হওয়ার পর প্রতিকারের জন্য আল্লাহ–তাআলার ওপর নির্ভরশীল হয় (দোয়া-প্রার্থনা করে) অবিলম্বে অথবা বিলম্বে আল্লাহ–তাআলা তাকে রিজিক দান করেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২,৮৯৬ ও ২,৩২৬; মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৪২১৯)

১২. রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা

আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৪৮০; মুসলিম, হাদিস: ১,০৪২)

এমআই

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন
দরবৃদ্ধি
পুঁজিবাজার17 mins ago

সাপ্তাহিক দরবৃদ্ধির শীর্ষে জেএমআই সিরিঞ্জ

দরবৃদ্ধি
পুঁজিবাজার30 mins ago

মালেক স্পিনিংয়ের ৩৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন

দরবৃদ্ধি
পুঁজিবাজার44 mins ago

ডেরিভেটিভ পণ্য ঝুঁকি হ্রাসের কার্যকর হাতিয়ার: ডিএসই এমডি

দরবৃদ্ধি
আবহাওয়া1 hour ago

ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির আভাস দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর

দরবৃদ্ধি
জাতীয়1 hour ago

২৫ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আজ

দরবৃদ্ধি
আন্তর্জাতিক2 hours ago

ব্রাজিলে ভারী বর্ষণে নিহত ৩৯

দরবৃদ্ধি
রাজধানী2 hours ago

রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ শনিবার

দরবৃদ্ধি
জাতীয়2 hours ago

ট্রেনে বাড়তি ভাড়া শুরু, কোন রুটে কত বেড়েছে?

দরবৃদ্ধি
জাতীয়12 hours ago

ঢাকা-ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে ২ জোড়া কমিউটার ট্রেন চালু শনিবার

দরবৃদ্ধি
শিল্প-বাণিজ্য12 hours ago

অসাধু জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের তালিকা করবে বাজুস

দরবৃদ্ধি
অর্থনীতি13 hours ago

বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন ঘোষণা এডিবির

দরবৃদ্ধি
খেলাধুলা13 hours ago

তানজিদ তামিমের ফিফটিতে বাংলাদেশের জয়

দরবৃদ্ধি
ধর্ম ও জীবন13 hours ago

জুমার দিনের যেসব আমলে গুনাহ মাফ হয়

দরবৃদ্ধি
স্বাস্থ্য14 hours ago

ডেঙ্গুতে আরও তিন জনের মৃত্যু

দরবৃদ্ধি
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার14 hours ago

চাকরির সুযোগ দিচ্ছে এপেক্স

দরবৃদ্ধি
জাতীয়15 hours ago

শনিবার থেকে বাড়ছে রেলের ভাড়া

দরবৃদ্ধি
পুঁজিবাজার15 hours ago

লেনদেনের সঙ্গে বাজার মূলধন বাড়লো ৬ হাজার কোটি টাকা

দরবৃদ্ধি
খেলাধুলা15 hours ago

বাংলাদেশকে ১২৫ রানের লক্ষ্য দিলো জিম্বাবুয়ে

দরবৃদ্ধি
স্বাস্থ্য15 hours ago

আরও ১০ জনের করোনা শনাক্ত

দরবৃদ্ধি
আন্তর্জাতিক16 hours ago

যেসব স্থানে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আজ

দরবৃদ্ধি
জাতীয়16 hours ago

ট্যুরিজম বোর্ডের সঙ্গে কাজ করবে ডিএনসিসি

দরবৃদ্ধি
অর্থনীতি17 hours ago

এপ্রিলে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ১ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি

দরবৃদ্ধি
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার17 hours ago

চাকরির সুযোগ দিচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স

দরবৃদ্ধি
খেলাধুলা18 hours ago

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, তানজিদের অভিষেক

দরবৃদ্ধি
জাতীয়18 hours ago

হজযাত্রীদের সেবায় কমিটি গঠন করলো ডিএনসিসি

ফেসবুকে অর্থসংবাদ

২০১৮ সাল থেকে ২০২৩

অর্থসংবাদ আর্কাইভ

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১