শিল্প-বাণিজ্য
নির্বাচনে জয়ী হলেন যেসব ব্যবসায়ী
আওয়ামী লীগের টিকিটে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ব্যবসায়িক অঙ্গনের পরিচিত অনেকেই। একই সঙ্গে জনসমর্থন নিয়ে এবার অনেক ব্যবসায়ী জাতীয় সংসদে আসছেন স্বতন্ত্র পরিচয়ে।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ব্যবসায়িক অঙ্গনের কেউ ধরে রেখেছেন সংসদ সদস্যের ধারাবাহিকতা, কেউ বা আসছেন প্রথমবারের মতো।
এর মধ্যে অন্যতম ঢাকা-১ আসনের নৌকার প্রার্থী ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)। দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে পরপর দুবার মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হন বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক এ সভাপতি।
ধামরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত ঢাকা-২০ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে জয় পেয়েছেন জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) একাধিক বারের সভাপতি বেনজীর আহমেদ।
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসন থেকে ৫ম বারের মতো বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। রফতানিমুখী পোশাক শিল্প, ব্যাংকসহ বিভিন্ন শিল্প উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত তিনি। পোশাক খাতে ফেবিয়ান গ্রুপ নামের বড় একটি শিল্প রয়েছে তার।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, লালমাই এবং নাঙ্গলকোট উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-১০ আসনে ৫ম বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। চার্টার্ড অ্যাকাউটেন্ট হিসাবে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে জনশক্তি রফতানিসহ বিভিন্ন রফতানিমুখী শিল্প উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হোন তিনি।
নোয়াখালী-২ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ৩ হাজার ৩২৩ ভোটে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীকে হারিয়ে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম। রফতানিমুখী প্লাস্টিক, গার্মেন্টস, কেমিক্যাল ও ফুড প্রসেসিং শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা রয়েছে তার।
নোয়াখালী-৩ আসনে নৌকার টিকি টে হাট্রটিক জয় পেয়েছেন মামুনুর রশিদ কিরণ। ফার্মাসিউটিক্যাল, কোমল পানীয়, বিস্কুট ও কৃষিখাতের প্রতিষ্ঠান গ্লোবের পরিচালক তিনি।
খুলনা-৪ আসনে আবারও বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ও এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম মুর্শেদী।
রংপুর-৪ আসনে ৪৬ হাজার ৪৭২ ভোট পেয়ে আবারও জয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এবং সেপাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা।
রাজশাহী-৬ আসনে ১ লাখ ১ হাজার ৮২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রেনেসাঁ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার আলম।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। প্লাস্টিক গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে তার।
এর বাইরেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পেয়েছেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা। এবারের নির্বাচনে বস্ত্র ও পোশাক খাতের যেসব ব্যবসায়ী সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হা-মীম গ্রুপের কর্ণধার এ কে আজাদ। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-এর সাবেক এ সভাপতি ফরিদপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঢাকা-১৮ আসনে কেটলি প্রতীক নিয়ে ৬৯ হাজার ৮৩১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ খসরু চৌধুরী। নিপা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজিএমইএর পরিচালক তিনি।
চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন শিল্পগোষ্ঠী ওয়েল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। মোট ৭৮ হাজার ২৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে লাঙল প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
অসাধু জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের তালিকা করবে বাজুস
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সদস্য হয়ে অসাধু উপায়ে জুয়েলারি ব্যবসা করা যাবে না। জুয়েলারি ব্যবসা করেতে হলে মানতে হবে বাজুসের নিয়ম-কানুন। বাজুসের বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে গিয়ে বিক্রি করতে পারবে না সোনা।
শুক্রবার (৩ মে) বাজুসের চাঁদপুর জেলা শাখার মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন সমিতির সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসান।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বড় এবং ছোট সব ব্যবসায়ীরাই যাতে সৎভাবে ব্যবসা করতে পারে সেলক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বাজুস। যারা সোনার ব্যবসা করবেন তাদের অবশ্যই বাজুসের সদস্য হতে হবে। এরই মধ্যে ঢাকায় যারা সদস্য নয় তাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাজুসের চাঁপুরের শাখার সভাপতি মো. মোস্তফা ফুল মিয়ার। এছাড়া সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সহ-সম্পাদক মো. ইমরান চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. মজিবর রহমান খান।
বাজুসের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফর করছে কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সফরের অংশ হিসেবে বরিশালেও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ।
এসময় বাজুসের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ এখন শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং মেইড ইন বাংলাদেশ সিল সম্বলিত সোনার অলংকার দেশে উৎপাদিত হবে।
শেখ মোহাম্মদ মুসার সভাপতিত্ব সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পবিত্র চন্দ্র ঘোষ, বাজুসের বরিশাল শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ও বরিশালের জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা।
দেশের ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্য সংগঠন বাজুসের সাংগঠনিক এ সফরের অংশ হিসেবে শুক্রবার পিরোজপুর, লক্ষ্মীপুর, নওগাঁ এবং জয়পুরহাটেও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী ৮০ সৌদি কম্পানি
বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ৮০টি সৌদি কম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশটির পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ হয়েছে বলে জানানো হয়ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশকে জ্বালানি সহযোগিতা দিতে আগ্রহের কথাও জানিয়েছে সৌদি আরব।
সৌদি আরব সফররত প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দেশটির মন্ত্রী ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বিশেষ সভায় যোগদান শেষে তিনি এ সব বৈঠক করেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (১ মে) জানানো হয়, মঙ্গলবার রাতে সৌদি আরবের সহকারী জ্বালানি মন্ত্রী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আল ইব্রাহিম এবং সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (পিআইএফ) চিফ অব স্টাফ ও পরিচালনা পর্ষদের মহাসচিব সাদ আল কোরডের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বৈঠকগুলোতে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে পিআইএফ মহাসচিব সাদ আল কোরডে পতেঙ্গা বন্দরে সৌদি কম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালে (আরএসজিটি) বিনিয়োগে সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ৮০টি সৌদি কম্পানির তালিকা প্রকাশ করেন এবং পিআইএফ তাদের কম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক যাত্রায় যোগ দেবে বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সৌদি আরবের সহকারী জ্বালানি মন্ত্রী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আল ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার অংশীদারির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে সৌদি সহকারী জ্বালানি মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
তারা এখন কারিগরি বিষয় নিয়ে কাজ করছে এবং বাংলাদেশের কারিগরি দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
জ্বালানি সহযোগিতার আগ্রহের কথা জানিয়ে আল ইব্রাহিম বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিলম্বিত অর্থপ্রদান পদ্ধতিতে অপরিশোধিত তেল কেনার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা সৌদি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন। বৈঠকে জেভি ডিএপটি সার কারখানা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
১০ মাসে রপ্তানি আয় ৪৭.৪৭ বিলিয়ন ডলার
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭ দশমিক ৪৭১ বিলিয়ন ডলার। যা কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় সাত শতাংশ কম।
তবে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানির গতি কিছুটা ধীর হওয়ার কারণে মোট রপ্তানি আয় লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মাসিক রপ্তানি চিত্রে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
মোট রপ্তানির ৮৫ শতাংশের বেশি জুড়ে রয়েছে তৈরি পোশাক। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে মোট রপ্তানির মধ্যে ৪০ দশমিক ৪৯৪ বিলিয়ন ডলারই তৈরি পোশাক। চলতি বছরে তৈরি পোশাক রপ্তানির গতি কিছুটা কমে গেলে মোট রপ্তানি কমে যায়।
চলতি বছরের প্রথম দশ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দমিক ৯৭ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। একই সময়ে মোট রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
করোনা মহামারিতে তৈরি পোশাক রিপ্তানি কিছুটা ভাটার টান তৈরি হলেও দ্রুত ঠিক হয়েছে। মহামারির প্রকোপ কমার সাথে সাথে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনা পরবর্তী প্রায় দুই বছর রপ্তানির গতি অব্যাহত থাকে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আবার ধাক্কা লাগে। তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ মূল্যস্ফীতির আঘাত লাগে; কমে যায় মানুষের ক্রয় ক্ষমতা। এর ফলে আবারও রপ্তানিতে ভাটার টান তৈরি হয়। পরে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার জের ধরে লোহিত সাগরে হুতিদের হামলা শুরু হলে রপ্তানিতে আবারও নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, লোহিত সাগরে সমুদ্রগামী জাহাজে হামলা শুরু হলে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলক কাছের বাজার খুঁজতে থাকে। লোহিত সাগরের এ সমস্যা দূর না হলে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নতুন করে বাড়তি সমস্যা যোগ হবে, যাতে রপ্তানি ব্যাহত হতে পারে; কমবে প্রবৃদ্ধি।
ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, তুলনামূলক অন্যান্য কম রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি হয়েছে ৩২১ মিলিয়ন ডলার; পণ্যটি আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অন্যতম সম্ভাবনাময় চামড়া ও চামড়া পণ্য রপ্তানি কমেছে ১৩ দমমিক ৩২ শতাংশ; রপ্তানি হয়েছে ৮৭২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলারের। এক সময়ের প্রধান রপ্তানি পণ্য পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ৭ শতাংশ; ১০ মাসে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৭১৬ মিলিয়ন ডলারের।
আরেক সম্ভাবনাময় হোম টেক্সটাইল ১০ মাসে রপ্তানি সংকুচিত হয়েছে ২৫ শতাংশ; ১০ মাসে পণ্যটির রপ্তানি হয়েছে ৭০২ দমকি ৫৬ মিলিয়ন ডলার।
১০ মাসে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৭৭৪ মিলিয়ন ডলার; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দমিক ১২ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২০১ মিলিয়ন ডলারের; প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ শতাংশ। বিশেষ টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২৭০ মিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৮ শতাংশ বেশি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
সামিট করপোরেশনের নতুন এমডি ফয়সাল খান
সামিট করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ফয়সাল খান। তিনি ২০০৭ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, বন্দর ও রিয়েল এস্টেট খাতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপে যোগ দেন। তিনি সামিট গ্রুপের সব কোম্পানির বোর্ড সদস্য এবং বর্তমানে বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ফয়সাল খানের নিয়োগ প্রসঙ্গে সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, ‘ফয়সাল খান সামিট করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন। আমাদের সন্তানরা এমন ভালো মানুষ, সৎ মানুষ এবং ভালো একজন ব্যবস্থাপক হিসেবে বেড়ে উঠেছে দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।’
‘ফয়সাল ১৭ বছর ধরে পেশাগতভাবে আমার সঙ্গে আছেন এবং ২০১৭ সাল থেকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই তিনি এই পদের ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ জানেন। আমি নিশ্চিত, তার হাতেই সামিট আরও এগিয়ে যাবে,’ বলেন তিনি।
নিয়োগ পেয়ে ফয়সাল খান বলেন, ‘সামিটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আজিজ খানের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। তার দিকনির্দেশনা, প্রজ্ঞা এবং অবিচল সমর্থন কেবল আমার পেশাদার যাত্রা নয়, আমার ব্যক্তিগত জীবন গঠনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জটিলতা নিরসনে আমি পরিচালনা পর্ষদ, বিনিয়োগকারী, সরকার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সহকর্মীদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করার প্রত্যাশায় আছি।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
পণ্যবৈচিত্র্য না হলে রপ্তানি কমবে: এডিবি
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য কম। দেশের রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে গেলে রপ্তানি পণ্যে যে শুল্ক আরোপিত হবে, তার জেরে দেশের রপ্তানি ৫.৫ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
এই বাস্তবতায় দেশের রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলেই মনে করে সংস্থাটি।
এডিবির ‘এক্সপান্ডিং অ্যান্ড ডাইভারসিফাইং এক্সপোর্টস ইন বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড দ্য ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্যের বৈচিত্র্য না থাকায় এলডিসি গ্রুপের বাইরের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ তুলানমূলক সবচেয়ে কম। বাংলাদেশের চেয়ে কম জনসংখ্যার দেশগুলোর রপ্তানি অনেক বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানি যেখানে ৫৫ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ ৩৬০ বিলিয়নের বেশি, ইন্দোনেশিয়ার ২৪০ এবং থাইল্যান্ডের রপ্তানি প্রায় ৩২৩ বিলিয়ন ডলার।
এমনকি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে গড়পড়তা শুল্কের হার বেড়ে যেতে পারে। এতে কানাডায় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ, ভারতে ৮.৬, জাপানে ৮.৭ ও চীনে রপ্তানির ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপিত হতে পারে।