রাজনীতি
মামুনুল হকের নগদ আছে ৮৩ লাখ টাকা, নেই বাড়ি
ঢাকা-১৩ আসন থেকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তিনি হলফনামাও জমা দিয়েছেন।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার হাতে নগদ অর্থ রয়েছে ৮৩ লাখ ২ হাজার ৮৩৭ টাকা। ব্যবসা থেকে বছরে তার আয় ৬ লাখ ৫৮ হাজার ৪৪৪ টাকা এবং শিক্ষকতা পেশা থেকে বছরে আয় ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯০ টাকা।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। এ সময় তিনি হলফনামাও দাখিল করেন। সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তিনি মাস্টার্স/এম বি এ উল্লেখ করেছেন।
তথ্য অনুযায়ী, তার নামে ৩৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি বিচারাধীন, একটি তন্তাধীন, বাকি মামলাগুলোতে তিনি প্রত্যাহার, অব্যাহতি বা খালাস পেয়েছেন।
মামুনুল হকের জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকে তার কোনো টাকা নেই। তার বন্ড, ঋণপত্র বা স্টক এক্সচেঞ্জভুক্ত কোনো শেয়ার নেই। তবে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার আছে এক লাখ টাকার। তার নামে দুই লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই। অকৃষি জমির মূল্য ৮১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৫৮ টাকা। তার নামে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ভবন বা কৃষি জমি নেই।
তিনি ২০২৫-২০২৬ সালের আয়কর রিটার্নে আয়ের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৮৯০ টাকা। আয়কর রিটার্নে সম্পদের মোট মূল্য ১ কোটি ৬৭ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৫ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে এবং তিনি ৪৯ হাজার ৩৪ টাকা আয়কর দিয়েছেন।
রাজনীতি
ফার্স্ট লেডি থেকে প্রধানমন্ত্রী: খালেদা জিয়ার ১০টি অনন্য অর্জন
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
চার দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক ব্যতিক্রমী ও প্রভাবশালী চরিত্র। ক্ষমতার পালাবদল, রাজনৈতিক সংকট, কারাবাস—সবকিছু পেরিয়েও নির্বাচনী রাজনীতিতে তিনি ছিলেন প্রায় অপ্রতিরোধ্য। তার রাজনৈতিক জীবনে এমন কিছু রেকর্ড ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত রয়েছে, যা তাকে সমসাময়িক অন্য সব নেতার থেকে স্বতন্ত্র উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
নিচে তুলে ধরা হলো বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিরল ১০টি রেকর্ড—
নির্বাচনে কখনো পরাজিত না হওয়া
বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রেকর্ড হলো-তিনি জীবনে অংশগ্রহণ করা কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনে (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনসহ) তিনি মোট ২৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং প্রতিটিতেই বিজয়ী হন। এতগুলো ভিন্ন আসনে দাঁড়িয়ে শতভাগ সাফল্যের নজির বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল।
পাঁচ আসনে জয়ের ‘হ্যাটট্রিক’
তৎকালীন নির্বাচনী আইন অনুযায়ী একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচটি আসনে নির্বাচন করতে পারতেন। ১৯৯১, ১৯৯৬ (জুন) ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া পাঁচটি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবগুলোতেই জয় পান। পরবর্তীতে আইন পরিবর্তনের পর ২০০৮ সালে তিনটি আসনে দাঁড়িয়ে তিনটিতেই বিজয়ী হন।
ছয়টি ভিন্ন জেলা থেকে সংসদ সদস্য
খালেদা জিয়া দেশের ছয়টি ভিন্ন জেলা—বগুড়া, ফেনী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও খুলনা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হওয়ার এমন রেকর্ড অন্য কোনো শীর্ষ রাজনীতিবিদের নেই।
ফার্স্ট লেডি থেকে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র নারী যিনি ফার্স্ট লেডি এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী—দু’টি পরিচয়েই রাষ্ট্র পরিচালনার অংশ ছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব পালনের পর তিনি নিজেই সরকারপ্রধান হন।
সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের নায়ক
১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে বেগম খালেদা জিয়া দ্বাদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থা বাতিল করে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে তার অন্যতম বড় রাজনৈতিক অবদান হিসেবে দেখা হয়।
নারী শিক্ষায় যুগান্তকারী উদ্যোগ
তার সরকারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অর্জন ছিল মেয়েদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করা। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নারী শিক্ষায় বিপ্লব ঘটায় এবং আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা
২০০১ সালে তার সরকার প্রথমবারের মতো ‘মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করে। এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন নিষিদ্ধ
২০০২ সালে তার সরকার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। সে সময় এটি ছিল আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত ও প্রশংসিত একটি সিদ্ধান্ত।
সার্কের প্রথম নারী চেয়ারপারসন
১৯৯২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে তিনি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার প্রথম নারী চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন—যা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বের এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সাংবিধানিক স্বীকৃতি
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানের অংশ করেন বেগম খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ক্ষমতা ছাড়ার এই নজিরও তাকে অনন্য করে তোলে।
বর্ণাঢ্য এই রাজনৈতিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারমূলক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক স্থায়ী অধ্যায় হয়ে থাকবেন।
এমকে
রাজনীতি
সংবাদ সম্মেলনে অঝোরে কাঁদলেন ফখরুল ও রিজভী
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সংবাদ সম্মেলনে এসে কেঁদেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির এই দুই নেতাকে কাঁদতে দেখা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সংবাদটি নিয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়াতে হবে, আমরা সেটা কখনো ভাবিনি। আশা করছিলাম, তিনি আগের মতোই আবার সুস্থ হয়ে উঠবেন। আপনারা এরই মধ্যে শুনেছেন ড. শাহাবুদ্দিনের ঘোষণায়—আজ ভোর ৬টায় গণতন্ত্রের মা, আমাদের অভিভাবক, আমাদের জাতীয় অভিভাবক আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। এই শোক, এই ক্ষতি অপূরণীয়। এই ক্ষতি জাতি কোনোদিন পূরণ করতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, যে নেত্রী সারাটি জীবন জনগণের অধিকারের জন্য, কল্যাণের জন্য একটি তার সমগ্র জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন সে নেত্রী আমাদের মাঝে আর নেই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিশাল শূন্যতা তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনেরও বিশাল একটি শূন্যতা তৈরি হলো।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংকটে শোকে মাথার ওপর যেমন মায়ের একটি ছায়া থাকে, আজকে জাতি যেন সে ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো। তিনি অসুস্থ ছিলেন, হাসপাতালে ছিলেন, কখনো বাসায়, এতে করেও আমাদের মনে হতো, একজন মা তো আছেন। সে কারণে আমরা এতটা শক্তি পেতাম। এটা বোঝানোর এবং বলার ভাষা আমি পাচ্ছি না। সেই ছাত্র রাজনীতি থেকে একটা দীর্ঘ সময় যার নেতৃত্বে ছায়ায় বেড়ে ওঠা, তিনি এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন, এটা বড়ই বেদনার।
তিনি আরো বলেন, এই শোক এবং সংকট কাটিয়ে ওঠা জাতির জন্য খুব মুশকিল। এত নিপীড়ন সহ্য করে চোখের সামনে সন্তানের লাশ দেখে, শুধু দেশ এবং গণতন্ত্রের জন্য অটুট মনোবল দিয়ে তিনি টিকে থেকেছেন। সারা দেশ এবং সারা বিশ্ব নিপীড়িত মজলুম নেত্রীর জন্য গভীর শোক জানাচ্ছে।
এমকে
রাজনীতি
রাজনৈতিক চর্চায় উজ্জ্বল চরিত্র ছিলেন খালেদা জিয়া: চরমোনাই পীরের শোক
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম ৩০ ডিসেম্বর সকালে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
চরমোনাই পীর বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক চর্চায় ও ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া একজন উজ্জল ও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলেন। পীর সাহেব চরমোনাই তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
এমকে
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার জানাজা হতে পারে বুধবার
বিএনপ চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত হতে পারে তার জানাজা।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দলীয়ভাবে জানাজার প্রস্তুতি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পরামর্শের পর জানানো হবে।
এমকে
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৭ দিনব্যাপী শোক পালন করবে বিএনপি
বিএনপি চেয়ারপারসন ও দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৭ দিনব্যাপী শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, আগামী সাতদিনব্যাপী দলের নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন এবং প্রত্যেকটা অফিসে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল করা হবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ ছাড়া নয়াপল্টন এবং গুলশান কার্যালয়ে শোক বই খোলা হবে। পরবর্তীতে দাফন কাফনের সময়সূচি জানানো হবে।
এর আগে, আজ ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খালেদা জিয়া। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
এমকে




