অর্থনীতি
রিটার্ন জমার সময় বাড়লো আরও একমাস
দ্বিতীয় দফায় অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় একমাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি করা হয়েছে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) এনবিআরের সচিব মো. একরামুল হক সই করা আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সময় একমাস বাড়ানো হয়েছিল, যা ৩১ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। আয়কর আইন অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষদিন।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নির্বাচন সামনে রেখে করদাতাদের আরো সুবিধা দিতে রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। আর অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করায় করদাতাদের প্রস্তুতিরও সময় দিতে হয়। সে জন্য সময় বাড়ানো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সম্প্রতি রিটার্ন জমার সময় বাড়বে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, সময় বাড়ানোর ব্যাপারটা এখনই বলা যাবে না। এটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত, যেহেতু প্রথমবারের মতো আমরা অনলাইনটাকে বাধ্যতামূলক করেছি। আমি এখনই কিছু বলতে পারছি না। তবে সরকার চাইলে বাড়াতে পারে।
চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছর এখন পর্যন্ত ২৬ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে তাদের ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন। গত আগস্টে সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করে এনবিআর।
এমকে
অর্থনীতি
১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা
পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৬। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাণিজ্য মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ডিআইটিএফ-২০২৬ আয়োজন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
এ সময় ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আব্দুর রহিম খান ও ইপিবির মহাপরিচালক বেবি রাণী কর্মকার উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাণিজ্য সচিব বলেন, এবারের বাণিজ্য মেলায় অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল/প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় ই-টিকিটিং (অন-স্পট টিকিট ক্রয় ব্যবস্থার পাশাপাশি অনলাইনে টিকিট ক্রয়পূর্বক কিউআর কোড স্ক্যান করে মেলায় প্রবেশ)-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে কনসেশনাল রেটে ‘পাঠাও’ সার্ভিস।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর বিভিন্ন কার্যক্রম ও রপ্তানি খাতসমূহের সক্ষমতা প্রক্ষেপণ করার লক্ষ্যে ‘Export Enclave’ তৈরি/নির্মাণ করা হয়েছে। এবারের বাণিজ্য মেলায় ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ এর জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদের স্মরণে স্থিরচিত্র প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ স্কয়ার নির্মাণ করা হয়েছো। মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর/পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিদেশি উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে থাকছে ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য তৈরি করা হয়েছে সিটিং কর্নার। শিশুদের নির্মল চিত্তবিনোদনের জন্য মেলায় থাকছে ২টি শিশু পার্ক। পণ্য প্রসার ও বিপণনের জন্য মেলায় থাকছে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। মহিলা, প্রতিবন্ধী, কুটির/তাঁত/বস্ত্র/হস্ত শিল্পের উদ্যোক্তাদের সংরক্ষিত স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এবারের মেলায় পলিথিন ব্যাগ এবং সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে হ্রাসকৃত মূল্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ সরবরাহ করা হবে।
এছাড়া, তারুণ্যের শক্তি ও উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে মাসব্যাপী মেলায় থাকছে সেমিনার/সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আয়োজন।
পঞ্চমবারের মতো বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পূর্বাচলস্থ বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে। মেলার লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩২৪টি প্যাভিলিয়ন/স্টল/রেস্টুরেন্ট দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
দেশি বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিশিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হবে এবার।
সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে বাংলাদেশ স্কয়ার, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কালচারাল সেন্টার, রিক্রিয়েশনাল কর্নার এবং সেন্টারের উত্তর-পূর্ব পাশে ২টি শিশু পার্ক ও উত্তর-পশ্চিম পাশে মসজিদ/নামাজ ঘর স্থাপন করা হয়েছে।
ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য মেলায় থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক এটিএম বুথ। মা ও শিশুদের জন্য মেলায় থাকবে মা ও শিশু কেন্দ্র। এছাড়া, অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবার মধ্যে রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, মসজিদ, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার বেঞ্চ, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেলায় সাধারণ দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট (খেজুরবাগান/খামারবাড়ি), নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্যে বিআরটিসির ২০০টির বেশি ডেডিকেটেড শাটল বাস চলবে। মেলা প্রাঙ্গণ থেকে শাটল বাসের সর্বশেষ ট্রিপ ছাড়বে রাত ১১টায়। নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী ফার্মগেট (খেজুরবাগান/খামারবাড়ি) থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত ভাড়া ৭০ টাকা, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ৪০ টাকা, চাষাড়া থেকে ১২০ টাকা, মুক্তারপুর থেকে ১৩০ টাকা, নরসিংদী থেকে ১০০ টাকা এবং মেলা প্রাঙ্গণ থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত ভাড়া ১০০ টাকা (জনপ্রতি) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, স্বল্পমূল্যে যাত্রী পরিবহনের জন্য পাঠাও অ্যাপসের মাধ্যমেও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মেলার টিকিটের মূল্য (জনপ্রতি) টা: ৫০.০০ (প্রাপ্ত বয়স্ক) এবং শিশুদের (১২ বছরের নীচে) ক্ষেত্রে টা: ২৫.০০ (পঁচিশ)। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীগণ ও জুলাই আহতগণ তাঁদের কার্ড প্রদর্শনপূর্বক বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। পর্বের ন্যায় মেলাটি মাসব্যাপী সকাল ৯:৫৫ টা হতে রাত ৯.৫০ টা পর্যন্ত চলবে (সাপ্তাহিক ছুটির দিনসমূহে রাত ১০টা পর্যন্ত)। এছাড়া, পাঠাও অ্যাপস্ এর মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে মেলায় যাত্রী পরিবহনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হচ্ছে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণার্থে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী মেলা প্রাঙ্গণ ও প্রাঙ্গণের বাইরে নিয়মিত টহল দেবে। এছাড়া সার্ভিস গেট ও ভিআইপি গেট এর শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে। নিরাপত্তা অগ্রাধিকার বিবেচনায় মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রবেশ গেট, পার্কিং এরিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, মেলার প্রবেশ গেটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইভাবে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে মেলায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে ফায়ার ব্রিগেড।
এবারের মেলায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। এক্সিবিশন হলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুরুষ ও মহিলা পৃথক টয়লেটের পাশাপাশি এক্সিবিশন হলের বাইরেও পর্যাপ্ত সংখ্যক টয়লেট রয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দুই শতাধিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।
মেলায় খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গঠিত টিম মেলা চলাকালীন প্রত্যহ ভেজালবিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। মেলায় ৫টি প্রতিষ্ঠানকে প্রিমিয়ার রেস্টুরেন্ট/প্রিমিয়ার মিনি রেস্টুরেন্ট/কফি সপ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মেলায় এক্সিবিশন সেন্টারের ভিতরে ৫০০ আসন বিশিষ্ট একটি ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে যাতে মেলায় আগত দর্শনার্থী নির্ধারিত মূল্যে চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত খাবার খেতে পারবেন। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও পেশেন্ট কেয়ার এটেনডেন্ট উপস্থিত থেকে ফ্রি প্রাথমিক চিকিৎসা ও চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে।
মেলার থাকবে পর্যাপ্ত কার পার্কিংয়ের সুবিধা। ৫ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধাসম্বলিত দ্বিতল কার পার্কিং বিল্ডিং ছাড়াও এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে এবং রাজউক এর গরুর হাট মাঠসহ ৩টি বিস্তর পার্কিং এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মেলার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং এর জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি অস্থায়ী সচিবালয় ও দর্শনার্থীদের সব প্রকার তথ্য প্রদানের জন্য একটি তথ্য কেন্দ্র।
এমকে
অর্থনীতি
তারেক রহমানের ফেরা বিনিয়োগকারীদের জন্য কনফিডেন্স বুস্টার: বিডা চেয়ারম্যান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধবতার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ; বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা কনফিডেন্স বুস্টার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) তার ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা সিগন্যাল দেয় যে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধবতার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ; বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা কনফিডেন্স বুস্টার। গত সপ্তাহে আরও একটা ভালো ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে: বাংলাদেশ-জাপান ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ)।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি লেখেন, বিশ্ববাজারে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) বা ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) আবশ্যক। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বি দেশগুলো এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। ভিয়েতনামের এমন চুক্তি আছে প্রায় ৫০টি দেশের সঙ্গে, কম্বোডিয়ার আছে প্রায় ২০টি দেশের সঙ্গে। আর আমাদের এমন কম্প্রিহেনসিভ এগ্রিমেন্টের সংখ্যা শূন্য। আমরা এই গোল্ডেন ডাক ব্রেক করতে যাচ্ছি জাপানের সঙ্গে ইপিএ করে। গত সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে নেগোশিয়েশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ধাপসমূহ সম্পন্নের পর এটি কার্যকর হবে।
তার ভাষ্যে তিন কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য এটা বিশাল একটি পদক্ষেপ। তা হলো-
১. বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান
বিনিয়োগকারীরা ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে অপারেট করতে পছন্দ করে। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো সেই ফ্রেমওয়ার্কটা তৈরি করেছে এফটিএ বা ইপিএ-র মাধ্যমে। আমাদের এগুলো না থাকার কাফফারা হিসেবে জাপানের উদাহরণ দেওয়া যায়। এত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়া সত্বেও বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ গত ৫৪ বছরে হয়েছে মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলার। এই ইপিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে জাপানি বিনিয়োগকারীরা পলিসি কনটিনুইটি, লিগ্যাল জুরিসডিকশন, এমএফএন, ইত্যাদি বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাবে। আগামী দিনে বিনিয়োগ শুধু পরিমাণে নয়, বৈচিত্র্য ও গুণগত মানেও বহুগুণে বাড়বে। জাপান হতে বিশেষ কিছু খাতে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে, আইটি ও ডিজিটাল সেবা, লজিস্টিকস ও সাপ্লাই চেইন, ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোটিভ যন্ত্রাংশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও কৃষি/অ্যাগ্রো-প্রসেসিং। সেই সঙ্গে আমাদের দেশের তরুণদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে।
২. জাপানে আমাদের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার
বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রথম দিন থেকেই পোশাকসহ ৭,৩৭৯ টি পণ্যে জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। পক্ষান্তরে, জাপান ১,০৩৯ টি পণ্যে বাংলাদেশের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। সেবা বাণিজ্য খাতেও উভয় দেশ উল্লেখযোগ্য অঙ্গীকার করেছে। বাংলাদেশ জাপানের জন্য ৯৭টি উপখাত উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাতে ৪টি মোডে সার্ভিস উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সব মিলিয়ে জাপান ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
৩. সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলোর একটা বড় সমাধান হচ্ছে দ্রুত বাণিজ্যিকভাবে ইম্পর্ট্যান্ট দেশগুলোর সঙ্গে এই চুক্তি সম্পন্ন করা। অন্যান্য দেশে এসব এফটিএ/এপিএ নেগোসিয়েশনের জন্য সরকারে স্পেশালিস্ট এক্সপার্ট টিম থাকে। আমরা প্রথমবারের মতো একটা সলিড দল তৈরি করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমেরিকা, কোরিয়া, তুরস্ক, ইত্যাদি দেশের সঙ্গে অলরেডি কথা শুরু হয়েছে। এই দলটা কিছুদিনের মধ্যেই ঝানু নেগোসিয়েটরে পরিণত হবে।
তিনি আরও লেখেন, ২০২৫ সালে আমরা চেষ্টা করেছি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে বেসিক কিছু ট্র্যাক সেট করা। আশা করছি আগামী সরকার এই ভীত গড়ার উদ্যোগ থেকে উপকৃত হবে এবং দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
এমকে
অর্থনীতি
আরও ১১৫ মিলিয়ন ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক
তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে রবিবার অতিরিক্ত ১১ কোটি ৫০ লাখ (১১৫ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মূল্যমানের বিপরীতে প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৩০ পয়সা বিনিময় হারে এ ডলার কেনা হয়েছে। এক্ষেত্রে কাট–অফ হারও ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব তথ্য জানায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, সর্বশেষ এই ক্রয়ের ফলে শুধু ডিসেম্বর মাসেই মোট ডলার কেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। আর চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই–ডিসেম্বর) মোট ক্রয়ের পরিমাণ হয়েছে ৩০৪ কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন ডলার, যা প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের সমান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, রোববার তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে আগামীকাল সোমবারের মূল্যমানের বিপরীতে প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৩০ পয়সা হারে মোট ১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার কেনা হয়েছে। এতে ডিসেম্বর ও চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ডলার ক্রয়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
অর্থনীতি
পোশাক-বস্ত্র খাতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ: বিটিএমএ সভাপতি
দেশের পোশাক ও বস্ত্র খাতে অন্তর্বর্তী সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল।
তিনি বলেন, ওনারা (সরকার) তো ফ্যাক্টরির জন্ম দিতে পারেনি, বন্ধ করতে পেরেছে। ২৫০টা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়েছে, পঞ্চাশের অধিক টেক্সটাইল বন্ধ হয়েছে। আর অর্ধ বন্ধ হিসেবে আছে অর্ধেকের বেশি। এগুলাকে যদি বন্ধের হিসাবে আনেন তাহলে ১০০-এর ওপর স্পিনিং মিল বন্ধ আছে। তো ওনাদের কী সফলতা গত এক বছরে? আমি মনে করি টোটালটাই ব্যর্থতা। এত ক্ষতি, এত বোঝা আর নিতে পারছি না।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে বিটিএমএ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় শওকত আজিজ রাসেল এসব কথা বলেন। সুতা উৎপাদন খাতে দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যমান বহুবিধ সমস্যা ও তা থেকে উত্তরণে সরকারের করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য এ সভা হয়। এতে আরও বক্তব্য দেন বিটিএমএর সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী ও মোহাম্মদ আলী খোকন, সাবেক পরিচালক রাজীব হায়দার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বাণিজ্য উপদেষ্টা যথেষ্ট চেষ্টা করছেন। কিন্তু উনি এককভাবে সবকিছু করতে পারেন না। প্রথমে দেখেন আত্মঘাতী একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তুলার ওপর শুল্ক। আমরা মনে হয় ভারতীয় সুতাকে উৎসাহিত করছি তুলার ওপর শুল্ক বসিয়ে। শুল্ক দিলে আপনি সুতার ওপর দেবেন, যাতে তুলা এনে আমি এখানে সুতা উৎপাদন করতে পারি। বিষয়টি উল্টো হলো না? এটা উঠাতে আমাদের প্রচুর শ্রম দিতে হয়েছে। তারপর আসেন করপোরেট কর ১২ থেকে ৩৭ শতাংশ করে দিয়েছে। এই বাড়তি কর আমাদের বিশাল ক্ষতি করছে এবং এটি এখনো বহাল আছে। যত রকমে টাকা উপার্জন করা যায়, ওয়ান পার্সেন্ট ট্যাক্স, টার্নওভার ট্যাক্স, সব আমাদের ওপর বাড়িয়ে দিয়েছে। তারপর প্রণোদনা তো ক্রমশ কমিয়ে দিল, পোশাকের জন্য দিল, আমাদের জন্যও দিল। সেগুলো কি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হচ্ছে না?’
অর্থনীতি
স্বর্ণের দাম বাড়লো ভরিতে ১ হাজার ৫৭৫ টাকা
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ২৯ হাজার ৪৩১ টাকা হয়েছে। দেশের বাজারে সোনার এত বেশি দাম আগে কখনো হয়নি।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে শনিবার ঘোষণা দিয়ে আজ (রোববার) সব থেকে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫৭৪ টাকা। তার আগে ২৪ ডিসেম্বর ৪ হাজার ১৯৯ টাকা, ২৩ ডিসেম্বর ৩ হাজার ৯৬৬ টাকা, ২২ ডিসেম্বর ১ হাজার ৫০ টাকা, ১৬ ডিসেম্বর ১ হাজার ৪৭০ টাকা, ১৪ ডিসেম্বর ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা।
এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৬ টাকা। এই রেকর্ড দাম নির্ধারণের ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো। ফলে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠেছে সোনা।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৫৭৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৪৩১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ১৮ হাজার ৯৯২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৮৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৩১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ১০৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩১ টাকা।
এর আগে গতকাল ঘোষণা দিয়ে আজ সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৫৭৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৫১৭ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ১৭ হাজার ৫৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৮৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ১০৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৩ টাকা। আজ রোববার এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৫ হাজার ৭৭৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৯৫৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ৩ হাজার ৭৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।




