জাতীয়
ফের ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে আবারও তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম ভারতীয় দূতকে তলব করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের দপ্তরে যান। আসা-যাওয়া মিলিয়ে পাঁচ মিনেটের কম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে যান প্রণয় ভার্মা।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, দিল্লি, কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশি মিশন এবং কূটনীতিকের নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে, গত ১৪ ডিসেম্বর প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। সেদিন ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্যে সরকারের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে দেশটির সহযোগিতা কামনা করা হয়।
সেদিন ভারতীয় দূতকে তলবের পরে এক প্রেস নোটে দিল্লি দাবি করে, দেশটির ভূখণ্ড কখনো বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমে ব্যবহার করা হয়নি। প্রেস নোটে আরও বলা হয়েছিল, আমরা সবসময় বলে আসছি যে, বাংলাদেশে মুক্ত, ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হওয়া উচিত। এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করবে এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
পরে অবশ্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন নির্বাচন নিয়ে ভারতকে নসিয়ত না করার পরামর্শ দেন।
অন্যদিকে ১৭ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাল্টা তলব করা হয়।
জাতীয়
নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চায় পুলিশ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চেয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনের ডিসি-এসপি, সব রেঞ্জের ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের আয়োজিত এক সভায় এ ক্ষমতা প্রদানের দাবি জানানো হয়।
বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পুলিশ সুপাররা (এসপি) বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে আসামিসহ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করছি। আমাদের পর্যাপ্ত যানবাহন সংকট রয়েছে।
জনবল সংকটের কারণে পর্যাপ্ত জনবল বাড়ানো প্রয়োজন। একই দিনে দুটি নির্বাচন, বড় একটা চ্যালেঞ্জ হবে। নির্বাচনের দিন অসুস্থ, প্রতিবন্ধী লোক ভোট দিতে গেলে পুলিশকে বলা হয় সহযোগিতা করার জন্য। এখানে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মীদের রাখলে সুবিধা হবে। তারা বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোতে পুলিশের যে বাজেট ছিল এটা বৈষম্য ছিল। এই নির্বাচনে বাজেট বাড়ানো প্রয়োজন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানোর পাশাপাশি পুলিশেরও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া প্রয়োজন।
জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) বলেন, মাঠপর্যায়ে এখনো যে বৈধ অস্ত্র রয়েছে। দ্রুত অস্ত্রগুলো রিকভারি করতে আপনাদের (নির্বাচন কমিশনের) সহযোগিতা চাই। দূর অঞ্চলে যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টার দেওয়া দরকার।
তারা বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে অপতথ্য প্রচার আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি। আইনের বাইরে আমরা একটি কাজও করতে রাজি নই। আমাদের অনেক উপজেলায় গাড়ি পুড়ে গেছে। সেসব উপজেলায় গাড়ি প্রয়োজন। এ ছাড়া গণভোটের প্রচারের জন্য সময় বাড়ানো দরকার। আবার সীমান্ত জেলাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তারা।
এমকে
জাতীয়
১৬ পৃষ্ঠার বই ৫০০ টাকায় কিনতে সরকারের নির্দেশ
মাত্র ১৬ পৃষ্ঠার বই, ‘জুলাই ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান স্মৃতিস্মারক’। শুভেচ্ছা মূল্য ৫০০ টাকা। প্রকাশ না হলেও বইটির প্রচার-প্রসারে নির্দেশ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। এরপর এটি কিনতে সরকারি কর্মকর্তারা আদাজল খেয়ে নেমেছেন। অর্থ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা দপ্তর– সবখানে বইটি কেনার অনুরোধে চলছে চিঠি চালাচালি।
মজার ব্যাপার, বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘জুলাই চেতনা পাবলিকেশন’। এটির কর্ণধার আশরাফুল আলম। জুলাই চেতনা পাবলিকেশনের অফিস পর্যন্ত নেই। সরকারি দপ্তরের নিবন্ধনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বইটি এখনো প্রকাশ হয়নি বলে স্বীকার করেন জুলাই চেতনা পাবলিকেশনের কর্ণধার আশরাফুল আলম। প্রকাশের আগেই কিনতে সরকারি নির্দেশনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৮৪৪ শহীদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো একটি সামাজিক দায়িত্ব। সরকার একা সব কাজ করতে পারবে না। এজন্য আমরা সহযোগী হিসেবে কাজ করছি।’
আইনি বৈধতা ছাড়া এভাবে ভুঁইফোঁড় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান খুলে বই বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফুল রেগে যান। প্রতিবেদক জুলাইয়ের চেতনা ধারণ (ওন) করেন কিনা প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, ‘শহীদদের প্রতি হৃদয় থেকে আবেগ থাকলে ছাপানোর আগেই উদ্যোগ নেওয়া যায়।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগের আমলে এমন চিত্র ছিল বেশ চেনা। বইয়ের পাতায় শেখ মুজিবুর রহমান বা তাঁর পরিবারের কেউ থাকলেই সরকারি দপ্তরে সেটি কেনার হিড়িক পড়ত। মান বা দাম দেখা হতো না। রাষ্ট্রীয় অর্থে অনেক ভুঁইফোঁড় প্রকাশনী রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পরে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এমনটি কাম্য নয়।
কথাসাহিত্যিক জিয়া হাশান বলেন, দুঃখজনক হলো, আওয়ামী আমলের মতোই জুলাই নিয়ে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বাজারেই আসেনি, সেই বই কীভাবে মন্ত্রণালয় কেনার নির্দেশ দেয়?
অপ্রকাশিত বই কিনতে সরকারি তোড়জোড়
সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছে একটি ‘অত্যন্ত জরুরি’ চিঠি। তার বিষয় হিসেবে লেখা, ‘জুলাই ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতিস্মারক’ নামের একটি বিশেষ বই কেনা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী শরীফ উদ্দিন আহমেদ স্বীকার করেছেন, তিনি অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে বইটি কেনার জন্য চিঠি দিয়েছেন। তবে কাজী শরীফ বইটি দেখেছেন কিনা, কত কপি কিনতে বলেছেন– প্রশ্নে উত্তর না দিয়ে কল কেটে দেন। একাধিকবার কল করলেও রিসিভ হয়নি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সারমিন সুলতানা এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির যুগ্ম পরিচালক ফরিদুল হকের সই করা পৃথক চিঠিতে বইটি কেনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে অদৃশ্য বই কেনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও দুজনের কেউই রিসিভ করেননি।
অবশ্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো প্রস্তাব মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো মন্ত্রণালয় থেকে তাদের কাছে আসেনি।
যেভাবে এলো নির্দেশনা
জানা যায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ‘জুলাই চেতনা পাবলিকেশন’ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার কাছে একটি আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দেয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ধরে রাখতে বইটি গুরুত্বপূর্ণ। এতে ৮৪৪ শহীদের ছবি, পরিচয় ও তথ্য থাকবে। বলা হয়, এটি দেশের শিক্ষার্থী, গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য একটি ‘মূল্যবান দলিল’ হবে।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বইটি কেনার জন্য ‘ডিও লেটার’ (আধা সরকারিপত্র) ইস্যু করেন। তাঁর নির্দেশের পরপরই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা সম্পর্কিত সব দপ্তরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বইটি কিনে সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সূচিপত্রের কর্ণধার সাঈদ বারী বলেন, যে বই এখনো ছাপা হয়নি, তা কিনতে তোড়জোড় কেন, বুঝতে পারছি না। অপ্রকাশিত বই কিনতে উপদেষ্টার নির্দেশনা খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।
তিনি আরও বলেন, এভাবে বই কেনার নিয়মও বোধ হয় নেই। বই তারা জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র বা এ রকম প্রতিষ্ঠানে দিতে পারতো। সরাসরি মন্ত্রণালয় থেকে এমন নির্দেশনা ভালো হলো না।
এমকে
জাতীয়
দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভ
ভারতের রাজধানী দিল্লির চানক্যপুরীতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী দল। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও বাজরং দলসহ হিন্দু সংগঠনগুলো সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে বিচার দাবি করছে। ময়মনসিংহে তরুণ হিন্দু শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা এবং মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার এই প্রতিবাদ জানায় তারা।
বিক্ষুব্ধরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় এবং ‘বাংলাদেশ মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে কুশপুত্তলিকা পোড়ায়। তবে বিক্ষোভকারীদের হাইকমিশন ভবন থেকে ৫০০ মিটার দূরে আটকে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক স্তরের ব্যারিকেড, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এর আগে, গত শনিবার রাতে কূটনৈতিক পাড়ার একই জায়গায় বাংলাদেশের হাই কমিশনারের বাসভবনের সামনে হঠাৎ একদল লোক বিক্ষোভ করে। ওই সময় হাই কমিশনারকে ‘প্রাণনাশের হুমকি’ দেওয়া হয় বলে সেদিন অভিযোগ করেছিলেন বাংলাদেশি হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।
এ ছাড়া সোমবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা আবেদন কেন্দ্রের সামনেও হিন্দু জাগরণ মঞ্চ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ যৌথভাবে বিক্ষোভ করে। পরে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনে দিল্লি, শিলিগুড়ি, আগরতলা ও গুয়াহাটির বাংলাদেশের ভিসা সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ সরকার ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রাঙ্গণ ও আবাসস্থলের বাইরে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে উগ্রপন্থি গোষ্ঠীর ভাঙচুরের ঘটনায় ভারত সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, কূটনৈতিক মিশনগুলোতে এ ধরনের পরিকল্পিত সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন কেবল কর্মীদের নিরাপত্তাই বিঘ্নিত করে না, বরং দুই দেশের পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং শান্তি ও সহনশীলতার মূল্যবোধকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
বাংলাদেশ সরকার ভারতকে এই ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের সব মিশন ও কূটনৈতিক কর্মীদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করেছে, আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ভারত সরকার কূটনীতিকদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষায় দ্রুত এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এমকে
জাতীয়
শাহজালালে ২৪ ঘণ্টা যাত্রী ছাড়া বাকীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
আগামীকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানযাত্রী ছাড়া সহযাত্রীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিমানবন্দর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনের কথা রয়েছে।
বার্তায় বিমানবন্দর জানায়, ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিমানবন্দর এলাকায় যাত্রী ব্যতীত সব ধরনের সহযাত্রী ও ভিজিটর প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
যাত্রীসেবা, নিরাপত্তা এবং অপারেশনাল শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ অপারেশনাল ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে শুধুমাত্র বৈধ টিকিটধারী যাত্রীদের বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশের অনুমতি থাকবে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দেশে ফিরবেন। তার দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবন শেষে প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
জাতীয়
অপবাদ থেকে মুক্ত হতে চাই, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ সবার সুযোগ নেই: সিইসি
সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে আগের সব অপবাদ থেকে মুক্ত হতে চাই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
সিইসি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের ওপর যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে, তা থেকে আমরা মুক্তি চাই। আমরা প্রমাণ করতে চাই যে একটি সঠিক ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারি। আর এটি সম্ভব কেবল আইনের শাসনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবার সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ডিসি-এসপি, বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিইসি।
সভার শুরুতে সিইসি সম্প্রতি প্রয়াত ওসমান হাদির রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। অনুষ্ঠানে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নাসির উদ্দিন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আইনের শাসন কাকে বলে আমরা তা দেখিয়ে দিতে চাই। আইনের শাসন মানে আইন হবে অন্ধ। ‘ল’ (Law) সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করবেন। আপনাদের ওপর গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়ী থাকব।
বিগত নির্বাচনগুলো নিয়ে সমালোচনার কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, সামষ্টিকভাবে আমাদের ওপর দোষারোপ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আমরা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছি বা ম্যানেজড ইলেকশন করছি। এই অপবাদ থেকে আমরা মুক্তি চাই। মাঠ পর্যায়ে আপনারা যারা সরকারকে সচল রাখেন, সিস্টেমটাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনাদের।
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাহস জুগিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, আপনারা বুক ফুলিয়ে যখন আমাকে সাহস দেবেন, আমিও তখন সাহসী হব। আপনাদের অঙ্গীকার আমাকে সাহসী করে তোলে। আপনারা যখনই আইনের প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী পদক্ষেপ নেবেন, বিধি-বিধানের আলোকে কাজ করবেন— ইনশাআল্লাহ নির্বাচন কমিশন আপনাদের পাশে থাকবে।
তিনি বলেন, আমাকে খুশি করার দরকার নেই। আপনারা আপনাদের অধীনস্থদের আইনের মাধ্যমে পরিচালনা করবেন। সিস্টেম যাতে ঠিকমতো ডেলিভারি দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা আপনাদেরই করতে হবে। কোনো ধরনের বিচ্যুতি যেন না ঘটে, সেদিকে কঠোর নজর রাখতে হবে।




