রাজনীতি
মহান বিজয় দিবসে দেশবাসীকে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশের সব মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই শুভেচ্ছা জানান।
তারেক রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে আমি দল, মত, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে কৃষিজীবী, শ্রমজীবী, পেশাজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, ওলামা-আলেম-পীর-মাশায়েক তথা বাংলাদেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ, প্রতিটি নাগরিককে জানাই মহান বিজয় দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
এর আগে, বিজয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি বলেন, ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পরে জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। আমি এদিনে দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের জানাই শুভেচ্ছা। সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণে ভরে উঠুক তাদের জীবন।
‘এই দিনে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমি স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। বিদেশি শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন- আমি জানাই তাদের সশ্রদ্ধ সালাম।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া স্বাধীনতাযুদ্ধ ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়, পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করার মাধ্যমে। দেশের অদম্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজী রেখে এ বিজয় ছিনিয়ে আনে। তাই ১৬ ডিসেম্বর জাতির অহংকার, আনন্দ আর বেদনার এক মহাকাব্যিক দিন। আজকের এ মহান দিনে আমি সেসব বীর সেনাদের সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানাই।
‘শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক গণতান্ত্রিক নীতিমালার ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ছিল নতুন রাষ্ট্রের মর্মমূলে। কিন্তু অমানবিক ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বারবার সেই প্রত্যয়কে মাটিচাপা দিয়ে সর্বনাশা দুঃশাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়। থামিয়ে দেয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা।’
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের নীলনকশা এখনও চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, আগ্রাসী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অবজ্ঞা করার ঔদ্ধত্য দেখায়। ওই অপশক্তির এদেশীয় এজেন্টরা আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা বিপন্ন করার চক্রান্তজাল বুনে চলেছে। এরা ১৬ গত বছর ধরে একের পর এক প্রহসনের একতরফা নির্বাচন করে জনমতকে তাচ্ছিল্য করেছে। এদেশের মানুষের সব গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়। নাগরিক স্বাধীনতা অদৃশ্য করে মানুষকে করে অধিকারহারা। এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ করা হয়। নিরুদ্দেশ করা হয় সংবাদপত্রসহ বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা। গণতন্ত্রহীন দেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার দাপটে সর্বত্র হতাশা, ভয় আর নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে আসে। ক্ষমতা জবরদখলকারীরা জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে অদৃশ্য ও হত্যা করে এবং লাখ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করে। পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর নৈরাজ্যময় হয়ে উঠে। যিনি জীবনের দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন সেই অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে অন্ধকার কারাগারে রাখা হয়েছিল। অমানবিক নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার জন্য একের পর এক গণবিরোধী পদক্ষেপ নিতে থাকে।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মহান বিজয় দিবসের প্রেরণায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে এবং ২৪ এর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার দুনিয়া-কাঁপানো আন্দোলনে তারা পরাজিত হয়। পতন হয় ইতিহাসের এক নিষ্ঠুরতম একনায়কের। দেশে আবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের প্রত্যাশা জেগে ওঠে। এই মুহূর্তে নির্বিঘ্নে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনকল্যাণমুখী জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য এই বিজয়ের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক-আমরা বিভাজন ভুলে, হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকবো। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সকলের প্রতি সেই আহবান জানাই। বিজয় দিবস উপলক্ষে আমি সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।
এমকে
রাজনীতি
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না: নাহিদ ইসলাম
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা শেষে শাহবাগের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে ধর্মের নামে ভোট চাওয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের নামে যেমন দেশকে বিভাজন করা যাবে না, তেমন ইসলামের নামেও দেশকে বিভাজন করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ আমার এবং জুলাইও আমার।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন সুরাহা করতে পারি নাই।
এনসিপির এই আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাধ্যমে মুজিববাদ দিয়ে বাংলাদেশকে বিভাজিত করে রেখেছিল। আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তি। পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র কায়েম করার বারবার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের বয়ান থেকে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা বের করে নতুন বয়ান প্রতিষ্ঠা করেছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার পর বিষয়টিকে সহজভাবে দেখার আর কোনো উপায় নাই। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ ছাড়া আমাদের আর কোনো নিরাপত্তা বাহিনী নাই। পুলিশ বাহিনী যদি ব্যর্থ হয়, আমরা পাল্টা আঘাত চালিয়ে যাবো।
নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই আহ্বায়ক বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চাই।
রাজনীতি
গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য বাসভবন এবং অফিস প্রস্তুত করেছে বিএনপি। রাজধানীর গুলশান এভিনিউর ১৯৬নং বাসাতে উঠবেন তিনি। এই বাসার পাশেই ভাড়া করা বাসা ‘ফিরোজা’য় থাকেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা চেম্বারও তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া গুলশানে আরেকটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছে, যেটি থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানের ৯০নং সড়কে ১০/সির নতুন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে জাতীয় রিল-মেকিং প্রতিযোগিতা কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন।
আগামী ২৫ ডিসেম্বর টানা ১৭ বছর লন্ডনে নির্বাসিত থাকার পরে ঢাকায় ফিরছেন তারেক রহমান। তার আগমন উপলক্ষে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ২৫ তারিখ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে নেতাকর্মীরা সংবর্ধনা জানাতে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের নেতার অপেক্ষা আছে দেশবাসী। সেদিন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সড়কের দুই পাশে সুশঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবে। আমরা সেই প্রস্তুতির কাজ করছি।’
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তারেক রহমানকে কীভাবে অভ্যর্থনা দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তারেক রহমানের বাসভবন ঠিক করা হয়েছে গুলশান এভিনিউর ১৯৬নং বাসাটি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়াকে এই বাড়িটি বরাদ্দ দেয়। কয়েক মাস আগে এই বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রাজউকে চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজু। সেই বাড়িতে উঠছেন তারেক। এই বাসার সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাসার সামনে নিরাপত্তা ছাউনি বসানো হয়েছে। সড়কের সামনে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীরা জানান, এখানে তারেক রহমান সাহেব থাকবেন, সেজন্য এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তারেক রহমানের জন্য গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চেয়ারপারসনের চেম্বারের পাশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা চেম্বার তৈরি করা হয়েছে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও আলাদা চেম্বার তৈরি করা হয়েছে তার জন্য। কেন্দ্রীয় কার্যালয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আলাদা চেম্বার আছে। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্যও আরেক চেম্বার করা হলো।
এদিকে গুলশানের ৯০ সড়কের ১০সি বাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে বিএনপি অফিস হিসেবে। চার তলায় এই ভবনে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখানে দোতলায় রয়েছে ব্রিফিং রুম। অন্যান্য তলায় বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে গবেষণা সেল।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমরা এখন অধীর আগ্রহে সময় গুনছি কখন আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্রের মানসপুত্র আধুনিক স্বনির্ভর রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঢাকার মাটিতে পা রাখবেন। সে লক্ষ্যে আপনি যাই বলুন, আমাদের সব প্রস্তুতি তাকেই ঘিরে। ইনশাল্লাহ দেশের মানুষ যেমন প্রত্যাশা করছে, আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের নেতা হারানো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন।’
নতুন অফিস খোলার পরে বিকেলে এই প্রথম সংবাদ সম্মেলনে মাহাদী আমিন বলেন, এটি বিএনপির একটি কার্যালয়। এখান থেকে নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত যে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরবেন ইনশাআল্লাহ। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে গণ মানুষের মাঝে রয়েছে তীব্র আবেগ, আকাঙ্ক্ষা ও আগ্রহ। আমাদের নেতা বিশ্বাস করেন, আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হলে রাজনীতি এবং আদর্শের ঊর্ধ্বে গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য আমাদের এ রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য। ইতোমধ্যে বিএনপি প্রণীত দেশ গড়ার পরিকল্পনার শীর্ষক কর্মসূচি নিয়ে ঢাকায় এক সপ্তাহব্যাপী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা এসেছিলেন। আমাদের তৃণমূলের মানুষের নেতা তারেক রহমান দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, যেহেতু এই বাংলাদেশটা আমাদের সবার ধর্ম-বর্ণ-আদর্শ -দর্শন-রাজনীতির অবস্থান, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের দল-মত পার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে এক হয়ে এই দেশটাকে গড়তে হবে, সবাইকে একযোগে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
মাহদী আমিন বলেন, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা একটি জাতীয় রিল মেকিং প্রতিযোগিতা শুরু করতে যাচ্ছি। আমাদের এই আয়োজন শুরু হবে আজ থেকে এবং এই প্রতিযোগিতা চলমান থাকবে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে দেশ এবং বিদেশের সব শ্রেণি এবং পেশার মানুষ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে তাদের নিজ নিজ যে পরিকল্পনা, প্রত্যাশা, ভাবনা-চিন্তা তা প্রত্যেকটি এক মিনিটের রিল ভিডিওর মাধ্যমে অনলাইনে সাবমিট করতে পারবেন। এই রিল হতে পারে ছোট্ট একটা ভিডিও, যেখানে যে কোনো কন্টেন্টের মাধ্যমে প্রত্যেকটা অংশগ্রহণকারী তাদের নিজেদের বক্তব্য, স্যাটায়ার, গান, সংলাপ, ডকুমেন্টারি অ্যানিমেশন কিংবা কয়েকটি ছবি বা আর্টের সমন্বয় সেটি সাবমিট করতে পারবেন। যার মাধ্যমে হতে পারে গঠনমূলক সমালোচনা। হতে পারে নতুন কোনো ভাবনা। হতে পারে সুবিস্তৃত কোনো পরিকল্পনা কিংবা ব্যক্তিগত অভিব্যক্তির বহির্প্রকাশ।
তিনি বলেন, আমার ভাবনায় বাংলাদেশ- এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশ গড়ার মহাপরিকল্পনায় দেশের প্রতিটি মানুষকে সম্পৃক্ত করার সুযোগ করে দেওয়া এবং একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল হিসেবে গণমানুষের যে ভাবনা এবং পরিকল্পনা সেগুলোকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পৃক্ত করা। আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান সুযোগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে চিন্তাগুলোকে পৌঁছে দিতে চাই এবং তৃণমূলের সাথে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বে যদি বিএনপি আসে সেই দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীর একটি আন্তরিকতার এবং সৌহার্দ্যের মেলবন্ধন তৈরি করতে চাই। বাংলাদেশের সব তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ যে কোনো বয়সের যে কোনো নাগরিক তিনি দেশে থাকুক কিংবা দেশের বাইরে থাকুক যেন নিজের ভাবনাকে সর্বোচ্চ সৃজনশীলতার মাধ্যমে কন্টেন্টরূপে জনসম্মুখে উপস্থাপন করতে পারেন সে সুযোগ আমরা এর মাধ্যমে তৈরি করে দিতে চাই।
তিনি জানান, আমার ভাবনায় বাংলাদেশ- এই কর্মসূচির সবচাইতে বড় চমক হচ্ছে, যারা বিজয়ী হবেন মেধাভিত্তিক সেই বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের শীর্ষ ১০ জনকে আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একান্ত আলাপচারিতার সুযোগ দিব।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, জিয়া উদ্দিন হায়দার, চেয়ারপারসনের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য সাইমুম পারভেজ এবং মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
আ.লীগ ৫০ প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে: রাশেদ খান
আওয়ামী লীগ একটি মিশন নিয়েছে—প্রায় ৫০ জন প্রার্থীকে হত্যা করবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, তাদের এই মিশনের অংশ হিসেবে আমাদের বিপ্লবী যোদ্ধা ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ওসমান হাদি ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুলি চালানো হয়েছে। অথচ এখনো সেই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা করে রাশেদ খান আরও বলেন, ‘৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার আগে প্রশ্ন আসে—তাহলে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র্যাব ও যৌথ বাহিনী কী করছে?’
তিনি বলেন, এর আগে অপারেশন ডেভিল হান্ট ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার ফ্যাসিবাদের দোসর যারা সরকার, উপদেষ্টা পরিষদ ও বিভিন্ন বাহিনীতে রয়েছে, তাদের ধরতে অপারেশন ডেভিল হান্ট-২ ঘোষণা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলে ক্ষমতায় এসে বাস্তবে সেই সংস্কার দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং গত ১৬ মাসে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনই দৃশ্যমান হয়েছে। এর ফলেই আজ দেশে গুপ্তহত্যা ও অস্থিতিশীলতা বাড়ছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় এই সরকারের অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও উপদেষ্টাদের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সরকার সবসময় বলেছে, তারা রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করবে, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলবে—যা হবে আমেরিকা ও ইউরোপের মতো আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা; কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন জনগণ দেখেনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৬ মাসে আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে তাদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ার ফলেই তাদের দুর্বৃত্তরা আজ গুপ্তহত্যায় নেমেছে।
গণ অধিকার পরিষদের এ নেতা আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার—তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারাও যে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন দেখেছিলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই বাংলাদেশ আমরা গড়তে পারিনি।’
আওয়ামী লীগকে সরাসরি অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, ‘যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দাবি করে, তারাই গণতন্ত্র হত্যা করেছে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’
রাশেদ খান বলেন, ‘এ কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। ওই অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছে। নির্বিচারে গুলি করে শিশু, বৃদ্ধ, তরুণ এমনকি মা-বোনদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা আর সেই অন্ধকার সময়ে ফিরে যেতে চাই না।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘এই নির্বাচন অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত হতে হবে। সরকার যদি জাতিকে এমন একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারে, তবেই নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথ সুগম হবে।’
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির প্রার্থী
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মো. মাসুদুজ্জামান মাসুদ। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
মাসুদুজ্জামান মাসুদ জানান, দল থেকে আমার ওপর কোনো চাপ, নির্দেশনা বা হুমকি নেই। আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তাজনিত কারণে আমি নিজ থেকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তাজনিত কিছু বিষয় আছে। নেগেটিভ পরিবেশও এর একটা কারণ। মূলত আমার ফ্যামিলি হচ্ছে ম্যাটার।
মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজ থেকে আমাকে মূল্যায়ন করে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য যে আমি সেটা ধরে রাখতে পারলাম না। আমার অনেকটা তীরে এসে তরী ডোবানোর মতো অবস্থা। এরজন্য আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
তিনি বলেন, পরবর্তীকালে দল যাকেই মনোনয়ন দেবে, আমি তার পক্ষে কাজ করবো। আমি প্রতিশ্রুতি দিলাম সংসদ সদস্য না হলেও আমি মানুষের পাশে থাকবো।
এমকে
রাজনীতি
পাকিস্তানের মতো এবার হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে জিততে হবে: রাশেদ প্রধান
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছিল, হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে বুদ্ধির যুদ্ধ করতে হবে। পাকিস্তানের মতো এবার হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জিততে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা মানচিত্র পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি, নামকাওয়াস্তে স্বাধীনতা পেয়েছি, কিন্তু সার্বভৌমত্ব পাই নাই। পাকিস্তান বাহিনীকে পরাজিত করে হিন্দুস্তানের করদ রাজ্যে পরিণত হয়েছিলাম।
রাশেদ প্রধান বলেন, মুজিব থেকে হাসিনা, কোনো সরকার আমাদের হিন্দুস্তানের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেয় নাই। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বাদ নিতে চাই।
তিনি আরও বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে গুলি আসলে পাল্টা গুলি ছুড়তে হবে। ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। ভূমি দখল ও অবৈধ পুশ ইন রুখে দিতে হবে। খুনি হাসিনাকে ফেরত আনতে দেশি ও বিদেশি চাপ প্রয়োগ করতে হবে। ভারতীয় অশ্লীল সংস্কৃতি, বিনোদন ও চিকিৎসা ত্যাগ করতে হবে। ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে হবে। দেশে বসবাসরত ভারতীয় দালালদের চিহ্নিত করতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসনকে কবর দিতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাগপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহিদুর রহমান বাবলা, প্রকাশনা সম্পাদক এস এম জিয়াউল আনোয়ার, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাংঠনিক সম্পাদক ওলিউল আনোয়ার, ঢাকা জেলা সভাপতি শামীম আহমেদ, শ্রমিক জাগপা সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এমকে




