রাজনীতি
ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ‘জনতার ইশতেহার’ চূড়ান্ত করছে জামায়াত
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ইশতেহার চূড়ান্ত করছে জামায়াতে ইসলামী। দলীয় ফোরাম ছাড়াও বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন মহলের প্রস্তাবের আলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে ইশতেহারটি। এতে নেওয়া হবে সাধারণ জনগণের মতামতও। এজন্য শিগগিরই প্রকাশ করা হবে ‘অ্যাপস’। জাতীয় ও এলাকাভিত্তিক নানা বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য সপ্তাহখানেক সময় দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে নির্বাচনি মাঠে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ‘জনতার ইশতেহার’ শিরোনামে ইশতেহারটিতে ব্যাপক চমক দেখাতে চায় জামায়াত।
ইশতেহারে জনগণের মতামত নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার তিনি নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে লিখেছেন—‘আপনার একটি সুন্দর পরামর্শ বদলে দিতে পারে বাংলাদেশের আগামী। তাই, আপনার মতামতকে সঙ্গে নিয়েই তৈরি হবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার, ইনশাআল্লাহ।’ স্ট্যাটাসটির সঙ্গে ইশতেহার বিষয়ে মতামত পাঠানোর আহ্বানসম্বলিত একটি ফটোকার্ডও জুড়ে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে— আসছে…জনতার ইশতেহার।
নোবেল পুরস্কার গ্রহণে মাচাদোর উপস্থিতি অনিশ্চিত, অসলোয় উত্তেজনানোবেল পুরস্কার গ্রহণে মাচাদোর উপস্থিতি অনিশ্চিত, অসলোয় উত্তেজনা
এদিকে জামায়াত আমিরের স্ট্যাটাসের কমেন্ট অপশনে ইশতেহার বিষয়ে মতামত দিয়ে অসংখ্য পোস্ট করা হয়েছে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।
ফাহিমা আকতার সুমি তার কমেন্টে লিখেছেন—সবার আগে সব মানুষের মনকে সংস্কার করতে হবে। প্রতিহিংসা, অহমিকা, রেষারেষি সবকিছুকে পিছনে ফেলে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ ও দশের জন্য এগিয়ে যেতে হবে।
মমিন নামে একজন আনঅফিসিয়াল পেজ থেকে বলেছেন—আপাতত দাবি একটাই চাঁদাবাজ আর দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই, ডা. শফিকুর রহমান লিডার। এ কাজটা সবচেয়ে কষ্টসাধ্য হবে, তবুও করতে হবে তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহী।
মাসুম বিল্লাহ লিখেছেন—বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স বৈধ পথে প্রেরণে উৎসাহিত করা ও তাদের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
আবুল হাসনাত সেলিম বলেছেন—স্বল্পমেয়াদি (মিশন) এবং দীর্ঘমেয়াদি (ভিশন) ইশতেহার দুই ভাগে প্রণয়ন করা উচিত। এক্ষেত্রে বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
তবে ফেসবুকের এসব কমেন্ট আমলে নেওয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, ইশতেহার বিষয়ে মতামত নেওয়ার বিষয়ে জামায়াত আমির প্রাথমিক ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে কয়েকদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করে একটি অ্যাপস উদ্বোধন করা হবে। সেখানে মতামত দিতে সপ্তাহখানেক সময় দেওয়া হবে। নির্ধারিত বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ও এলাকাভিত্তিক মতামত প্রদান করা যাবে।
তিনি আরো জানান, আমাদের দলীয় ইশতেহার তৈরির প্রাথমিক পর্ব শেষে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। জনগণের মতামত নিয়ে তা শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে। এক্ষেত্রে দলীয় প্রার্থী এবং স্থানীয় ভোটারদের মতামত সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সব মতামত সংরক্ষণে আর্কাইভ থাকবে। সামর্থ্য অনুযায়ী তা বাস্তবায়নের টাইমলাইন তথা স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি বিষয়গুলো সাজানো হবে।
ইশতেহারের নাম ‘জনতার ইশতেহার’ দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট জুবায়ের বলেন, ইশতেহার তো জনগণের জন্য। তাদের পরামর্শ নিয়েই এটা করা হবে। তাই এটা জনতার ইশতেহার।
তিনি জানান, ইশতেহার দ্রুত চূড়ান্ত করা হলেও তা প্রকাশ করা হবে তফসিল ঘোষণার পর নির্ধারিত একটি সময়ে। আমরা নির্বাচন কমিশনে দাবি জানিয়েছি যে, সব দল যেন একই তারিখে ইশতেহার ঘোষণা করে। এ বিষয়ে ইসি সিদ্ধান্ত জানাবে। সে অনুযায়ীই আমাদের ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। সব মিলিয়ে এবারের ইশতেহার খুব আকর্ষণীয়, বুদ্ধিদীপ্ত ও বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রস্তুত করা হচ্ছে বলেও জানান এই নেতা।
রাজনীতি
নির্বাচন সহজ নয়, এখন প্রত্যেকেই সেটি অনুধাবন করতে পারছেন: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আগামী কয়েক দিন পরে নির্বাচন হবে। আমি এক বছর আগে বলেছিলাম, এই নির্বাচনটি আমরা যত সহজ ভাবছি, একচুয়ালি (প্রকৃতপক্ষে) নির্বাচনটি তত সহজ নয়। সেদিন অনেকেই আমার কথাটি একটু হেসেখেলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আজকে কিন্তু আপনারা প্রত্যেকেই অনুধাবন করতে পারছেন আমার সেদিনকার কথার অর্থ।
তিনি বলেন, মানুষের রায় আপনার দলের পক্ষে, ধানের শীষের পক্ষে আনতে হবে। নির্বাচনের দিন, ভোটের দিন, ভোটের মাধ্যমে রায় আনতে হবে। এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এই দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধনী বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া সাত দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা অংশ নিচ্ছেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের জন্য কী কী করতে চাই, সেটা আমরা যদি শুধু আমাদের নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকি তাহলে তো আমরা সংকুচিত হয়ে যাব। আমাদের কাজ হচ্ছে মানুষের ঘরে ঘরে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আবারও বলতেছি, এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এই দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘গত স্বৈরাচারের ১৫ বছরের ষড়যন্ত্র সব আপনারা মোকাবেলা করেছেন, তাহলে এখন কেন সামনের যে নির্বাচনী যুদ্ধ মোকাবেলা করতে পারবেন না। কেন, আপনার দলের যে পরিকল্পনা সেটা জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারবেন না।’
‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় বিএনপির নেতারা কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
রাজনীতি
ইলেক্টিভ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। ফলে তাকে ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনের বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষায় তার স্বাস্থ্যে বেশ কিছু জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাকে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা এবং বিআইপিএপি মেশিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তার ফুসফুস ও অন্যান্য অর্গানকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য তাকে ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়।
৭৯ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ একাধিক জটিল রোগে ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানায়, গত ২৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার ‘অ্যাকিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস’ ধরা পড়ে, যেগুলোর নিবিড় চিকিৎসা এখনো চলছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। তাতে বলা হয়, ‘শরীরে গুরুতর ইনফেকশনের (ব্যাকটেরিয়া অ্যান্ড ফাঙ্গাল ইনফেকশন) কারণে তাকে উন্নত অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
পাশাপাশি কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার ডায়ালাইসিস শুরু করা হয়। এখনো নিয়মিত ডায়ালাইসিস দিতে হচ্ছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে। এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও ‘ডিআইসি’র ফলস্বরূপ তাকে রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান (ব্লাড অ্যান্ড ব্লাড প্রোডাকশন) ট্রান্সফিউশন দিতে হচ্ছে।
সব চিকিৎসার পরও জ্বর না কমার কারণে এবং পাশাপাশি রেগুলার ইকোকার্ডিওগ্রাফিতে অরটিক ভাল্ভে কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হওয়ায় টিইই (ট্রান্স অয়েসোপিগাল ইকো) করা হয় এবং সেখানে ইনফেক্টিভ অ্যান্ডোকার্ডাইটিস ধরা পরে। সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের পরামর্শে এ রোগের চিকিৎসা গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়।
চিকিৎসা কার্যক্রম ও মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল বোর্ড (এমডিটি) গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডে এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের জনস হপকিন্স এবং লন্ডন ক্লিনিকের মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রফেসর ডা. শাহাবউদ্দিন তালুকদার এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে রয়েছেন প্রফেসর এফ এম সিদ্দিকী ও প্রফেসর এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
খালেদা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে কোনো প্রকার গুজব বা ভুল তথ্য না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মেডিকেল বোর্ড। একইসঙ্গে রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
রাজনীতি
তৃণমূল এনসিপি গঠনের ঘোষণা মুনতাসীর মাহমুদের
সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তৃণমূল জাতীয় নাগরিক পার্টি (তৃণমূল এনসিপি)।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় বাংলামোটর এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে তৃণমূল এনসিপি নামের রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ করার কথা জানিয়েছে একটি সূত্র।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানানো হবে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
সন্ধ্যায় ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সংগঠক মুনতাসীর মাহমুদ জানান, খুব দ্রুত তৃণমূল এনসিপির কার্যক্রম শুরু হবে। যারা জুলাইকে ধারণ করে সততা ও নীতির উপরে থেকে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করতে চান, তারা যোগাযোগ করুন।
মুনতাসীর মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে যারা বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছি। এর বাইরে ইসলামপন্থী, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের মানুষদের নিয়ে তৃণমূল এনসিপি কাজ করবে।’
শিগগিরই তৃণমূল এনসিপি আত্মপ্রকাশ করবে বলেও জানান তৃণমূল এনসিপির সংগঠক।
রাজনীতি
একযোগে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি এনসিপির ৪০ নেতাকর্মীর
অনিয়মের অভিযোগ এনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনিসিপি) ভোলা জেলা শাখার নবগঠিত ৭২ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত করে তৃণমূলকে প্রাধান্য দিয়ে গঠিত কমিটি পুনঃগঠনের দাবি জানিয়েছেন নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে একযোগে ৪০ নেতাকর্মী পদত্যাগ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এনসিপির ভোলা জেলা শাখার ব্যানারে জেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৬ মাসের জন্য ভোলা জেলা কমিটির অনুমোদন দেন। এতে অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমানকে আহ্বায়ক ও মেহেদী হাসান শরীফকে সদস্য সচিব করে ৭২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াসির আরাফাত। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভোলা জেলা এনসিপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশের পরপরই জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনিয়ম ও অবিচারের অভিযোগে অনেকেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ইতোমধ্যে যুগ্ম আহ্বায়ক হাসানুজ্জান পদত্যাগ করেছেন, আরও প্রায় ৪০ জন নেতাকর্মী পদত্যাগের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে আমাদের আপত্তি ও অভিযোগগুলো হলো- তৃণমূলকে উপেক্ষা করে মনগড়া কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং কমিটি ঘোষণার আগে কোনো ধরনের আলোচনা বা মতামত নেওয়া হয়নি। কমিটির ২০ জন সদস্য আমাদের তৃণমূলের পরিচিত নন, যা সম্পূর্ণ মনগড়া ও তৃণমূল বিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত। এছাড়া যোগ্য ও পরিশ্রমী নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এতে দীর্ঘদিন পরিশ্রম করা পরীক্ষিত এবং সাংগঠনিকভাবে তৎপর নেতাদের যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। তদবির, ব্যক্তিগত সুপারিশ ও বায়াসড রেকমেন্ডেশনের ভিত্তিতে কমিটি প্রদান-ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও প্রভাব খাটিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও দল বিরোধী।
কেন্দ্রীয় নীতিমালা ও বিধিমালা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন হয়েছে। কমিটিতে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের সক্রিয় নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে এনিসিপির বিরোধিতা করছে, যা আমরা ডাকসু নির্বাচনে দেখেছি। আমরা চাই ঘোষিয় কমিটি স্থগিত করে পূর্ণগঠন করা হোক, কেন্দ্র আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি না মানলে কমিটির ৪০ সদস্য পদত্যাগ করবো।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভোলা জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াসির আরাফাত, তাজিম রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুল্লাহ আতিক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো.রাকিব, কোষাধ্যক্ষ হাফেজ মো.জহিরুল ইসলাম, সদস্য নাসরিন জাহান হাবিব, সবুজ মিয়া, লিমন সুজন, আলাউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
এগুলো দিয়ে সকালে সিসা খাইবা; বান্ডেল টাকা দিয়ে গণ অধিকারের নেতা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক এসকে শফিকুল ইসলাম শুভ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে একাধিক টাকার বান্ডেল প্রদর্শন করে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হলে তাকে নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক ও সমালোচনা।
শফিকুল ইসলাম শুভর পোস্ট করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়—তিনি টাকার বান্ডেলগুলো আলাদা আলাদা ভাগে সাজিয়ে রেখে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলছেন। ওই সময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রচারণার জন্য এই চার বান্ডেল দিলাম ব্যানার-ফেস্টুনের জন্য।
আর এটি লাগাইবা শুধু মোটরসাইকেল বহরের জন্য। আর এটি রাখো নির্বাচনের দিন চা-সিগারেট খাওয়াইবার জন্য মানুষকে দিবা। এই ৭/৮ বান্ডেল যেগুলো আছে—এগুলো দিয়ে সকাল বেলা সিসা খাইবা, বইসা বইসা…’
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমনভাবে টাকার বান্ডেল প্রদর্শন করাকে অনেকেই ‘অশোভন’, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন’ ও ‘অসুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবে মন্তব্য করছেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ভিপি নূরের গণ অধিকার পরিষদকে বাঞ্ছারামপুরে পরিচিত করিয়েছি। দলের জন্য বান্ডেল টাকা খরচ করেছি। দলের জন্য হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। দলে ডোনেশন দিয়েছি। দলকে এলাকায় পরিচিত করালাম। এখন আমাকে বাদ দিয়ে আরেক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে দিল!
ভিডিওটি পোস্ট নিয়ে বলেন, একটি পক্ষ গণ অধিকার পরিষদের আমার লিডারের কাছে বলেছে আমার নাকি টাকা-পয়সা নেই, আমাকে কেন নমিনেশন দেবে। হয়তো বিরোধী দলের প্রার্থী এই কথা পৌঁছাইছে। তাহলে আমার টাকা-পয়সা নেই—এই শব্দ তারা কোথায় থেকে পেল? আমি ২টা কম্পানির মালিক—এইডা কি তাদের জানার দরকার নেই? আমি সরকারকে যেই ট্যাক্সগুলো দিছি, এই টাকা দলের ফান্ডেও ছিল না।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, বাঞ্ছারামপুরে প্রতিষ্ঠিত করেছি গণ অধিকার পরিষদ। সেই জায়গা থেকে আমাকে নিয়ে আলোচনা করলে তো আমার একটা ক্ষোভ আসবে। এ জন্যই এই টাকার বান্ডেল ফেসবুকে প্রদর্শন করা। আমার টাকা নেই—আয় দেখ, টাকা আছে কি বা নেই।




