রাজনীতি
এনসিপির মনোনয়ন পাননি আলোচিত রিকশাচালক সুজন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রথম ধাপে ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১২৫টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তবে প্রথম তালিকায় স্থান পাননি কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের স্যালুট জানিয়ে আলোচনায় আসা রিকশাচালক সুজন। সবাই মনে করেছিল, তাঁকে হয়ত ঢাকা-৮ আসনে এনসিপি’র প্রার্থী হিসেবে দেখা যাবে। গত বেশ কিছুদিন এমন খবরই ভেসে বেড়াচ্ছিল বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এছাড়াও এনসিপি’র অফিসেও দেখা গেছে সুজনকে। কিন্তু ঢাকা-৮ আসনে এখন পর্যন্ত কাউকে মনোনয়ন দেয়নি দলটি। ফলে এই আসন থেকে মোহাম্মদ সুজন এনসিপি’র মনোনয়ন পাবেন কিনা, সেটি এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা শেষে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা মনোনয়নপত্র বিতরণ শেষ করেছি। আজ প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করছি। আজ যাদের নাম ঘোষণা করা হলো, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা তদন্ত করে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।’
ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় বিভিন্ন আসনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে:
পঞ্চগড়-১ আসনে মো. সারজিস আলম, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে মো. রবিউল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে মো. গোলাম মর্তুজা সেলিম, দিনাজপুর-৩ আসনে আ হ ম শামসুল মুকতাদির, দিনাজপুর-৫ আসনে ডা. মো. আব্দুল আহাদ, নীলফামারী-২ আসনে ডা. মো. কামরুল ইসলাম দর্পন, নীলফামারী-৩ আসনে মো. আবু সায়েদ লিয়ন, লালমনিরহাট-২ আসনে রাসেল আহমেদ ও লালমনিরহাট-৩ আসনে মো. রকিবুল হাসান জাতীয় নাগরিক পার্টির হয়ে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
রংপুর-১ আসনে মো. আল মামুন, রংপুর-৪ আসনে আখতার হোসেন, কুড়িগ্রাম-১ আসনে মো. মাহফুজুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম-২ আসনে ড. আতিক মুজাহিদ, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু সাঈদ জনি, গাইবান্ধা-৩ আসনে মো. নাজমুল হাসান সোহাগ, গাইবান্ধা-৫ আসনে ডা. আ. খ. ম. আসাদুজ্জামান, জয়পুরহাট-১ আসনে গোলাম কিবরিয়া, জয়পুরহাট-২ আসনে আবদুল ওয়াহাব দেওয়ান কাজল, বগুড়া-৬ আসনে আব্দুল্লাহ-আল-ওয়াকি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মু. নাজমুল হুদা খান (রুবেল খান) এনসিপির হয়ে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
নওগাঁ-১ আসনে কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, নওগাঁ-২ আসনে মো. মাহফুজার রহমান চৌধুরী, নওগাঁ-৩ আসনে পরিমল চন্দ্র (উরাও), নওগাঁ-৪ আসনে মো. আব্দুল হামিদ, নওগাঁ-৫ আসনে মনিরা শারমিন, নাটোর-২ আসনে আব্দুল মান্নাফ, নাটোর-৩ আসনে অধ্যাপক এস. এম. জার্জিস কাদির, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে দিলশানা পারুল, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী (প্রীতি), সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে মনজুর কাদের ও সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে এস এম সাইফ মোস্তাফিজ।
এ ছাড়া পাবনা-৪ আসনে অধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুল মজিদ, মেহেরপুর-১ আসনে মো. সোহেল রানা, মেহেরপুর-২ আসনে অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, ঝিনাইদহ-১ আসনে অ্যাডভোকেট লাবাবুল বাসার (দয়াল বাসার), যশোর-৪ আসনে মো. শাহজাহান কবীর, মাগুড়া-২ আসনে মোহাম্মাদ তরিকুল ইসলাম, বাগেরহাট-২ আসনে মোল্যা রহমাতুল্লাহ, খুলনা-১ আসনে মো. ওয়াহিদ উজ জামান, খুলনা-২ আসনে ফরিদুল হক, পটুয়াখালী-১ আসনে অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা ও পটুয়াখালী-২ আসনে মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন এনসিপির হয়ে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এদিকে ভোলা-১ আসনে অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান, বরিশাল-৪ আসনে আবু সাঈদ মুসা, বরিশাল-৫ আসনে মো. নুরুল হুদা চৌধুরী, ঝালকাঠি-১ আসনে ডা. মাহমুদা আলম মিতু, পিরোজপুর-৩ আসনে ড. মো. শামীম হামিদী, টাঙ্গাইল-১ আসনে সাইদুল ইসলাম (শহিদ সাজিদের পরিবার), টাঙ্গাইল-৩ আসনে সাইফুল্লাহ হায়দার, টাঙ্গাইল-৫ আসনে মাসুদুর রহমান রাসেল, টাঙ্গাইল-৭ আসনে খন্দকার মাসুদ পারভেজ, জামালপুর-৪ আসনে ডা. মো. মোশাররফ হোসেন, শেরপুর-১ আসনে ইঞ্জিনিয়ার মো. লিখন মিয়া ও শেরপুর-২ আসনে খোকন চন্দ্র বর্মণ (আহত) এনসিপির হয়ে এমপি পদে লড়বেন।
অন্যদিকে ময়মনসিংহ-১ আসনে মো. আবু রেহান, ময়মনসিংহ-৩ আসনে কবি সেলিম বালা, ময়মনসিংহ-৫ আসনে মিয়াজ মেহরাব তালুকদার, ময়মনসিংহ-৬ আসনে জাবেদ রাসিন, ময়মনসিংহ-৭ আসনে অ্যাডভোকেট এ. টি. এম. মাহবুব-উল আলম, ময়মনসিংহ-৯ আসনে আশিকিন আলম (রাজন), ময়মনসিংহ-১১ আসনে তানহা শান্তা, নেত্রকোণা-২ আসনে ফাহিম রহমান খান পাঠান, নেত্রকোণা-৩ আসনে প্রকৌশলী ইফতেখার হোসেন সিদ্দিকী (শামীম), কিশোরগঞ্জ-২ আসনে আবু সাঈদ (সাঈদ উজ্জ্বল) ও কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে শেখ খায়রুল কবির আহমেদ জাতীয় নাগরিক পার্টির হয়ে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এছাড়াও মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে আলী নেওয়াজ, মুন্সিগঞ্জ-২ আসনে মাজেদুল ইসলাম, ঢাকা-১ আসনে মো. রাসেল আহমেদ, ঢাকা-৪ আসনে ডা. জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা-৫ আসনে এস এম শাহরিয়ার, ঢাকা-৭ তারেক আহম্মেদ আদেল, ঢাকা-৯ আসনে ডা. তাসনিম জারা, ঢাকা-১১ আসনে মো. নাহিদ ইসলাম, ঢাকা-১২ আসনে নাহিদা সারওয়ার নিভা, ঢাকা-১৩ আসনে আকরাম হুসাইন, ঢাকা-১৫ আসনে অবসরপ্রাপ্ত মেজর মুহাম্মদ আলমগীর ফেরদৌস, ঢাকা-১৬ আসনে আরিফুল ইসলাম আদীব, ঢাকা-১৭ ডা. তাজনূভা জাবীন, ঢাকা-১৮ আসনে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, ঢাকা-১৯ আসনে ফয়সাল মাহমুদ শান্ত ও ঢাকা-২০ আসনে ইঞ্জিনিয়ার নাবিলা তাসনিদ এনসিপির হয়ে এমপি পদে লড়বেন।
এদিকে গাজীপুর-৬ আসনে ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল, নরসিংদী-১ আসনে মো. আবদুল্লাহ আল ফয়সাল, নরসিংদী-২ আসনে সারোয়ার তুষার, নরসিংদী-৪ আসনে ডা. মো. মামুনুর রহমান জাহাঙ্গীর, নরসিংদী-৫ আসনে মো. নাজমুল হক সিকদার, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল আমিন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আহমেদুর রহমান তনু, রাজবাড়ী-২ আসনে সাইয়েদ জামিল (জামিল হিজাযী) ও ফরিদপুর-৩ আসনে সৈয়দা নীলিমা দোলা জাতীয় নাগরিক পার্টির হয়ে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অন্যদিকে গোপালগঞ্জ-১ আসনে প্রলয় কুমার পাল, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে মো. আরিফুল দাড়িয়া, শরীয়তপুর-১ আসনে মো. আব্দুর রহমান, সিলেট-১ আসনে এহতেশাম হক, সিলেট-৩ আসনে ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, সিলেট-৪ আসনে মো. রাশেল উল আলম, মৌলভীবাজার-৪ আসনে প্রীতম দাশ, হবিগঞ্জ-৪ আসনে নাহিদ উদ্দিন তারেক, ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনে মাওলানা আশরাফ উদ্দিন মাহদি, ব্রাক্ষণবাড়িয়া-৩ আসনে মো. আতাউল্লাহ এনসিপির হয়ে এমপি পদে লড়বেন।
এছাড়া কুমিল্লা-৪ আসনে হাসনাত আবদুল্লাহ, কুমিল্লা-৬ আসনে নাভিদ নওরোজ শাহ, চাঁদপুর-১ আসনে আরিফুল ইসলাম, চাঁদপুর-২ আসনে ইসরাত জাহান বিন্দু, চাঁদপুর-৫ আসনে মো. মাহাবুব আলম, ফেনী-৩ আসনে মোহাম্মাদ আবুল কাশেম, নোয়াখালী-১ আসনে ব্যারিস্টার মো. ওমর ফারুক, নোয়াখালী-৫ আসনে অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর, নোয়াখালী-৬ আসনে আব্দুল হান্নান মাসউদ, চট্টগ্রাম-৬ আসনে মহিউদ্দিন জিলানী, চট্টগ্রাম-৮ আসনে মো. জোবাইরুল হাসান আরিফ, চট্টগ্রাম-৯ আসনে মো. রিয়াজুল আনোয়ার চৌধুরী সিন্টু, চট্টগ্রাম-১০ আসনে সাগুফতা বুশরা মিশমা, চট্রগ্রাম-১১ আসনে মোহাম্মদ আজাদ দোভাষ, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে জুবাইরুল আলম মানিক, চট্টগ্রাম-১৪ আসনে মুহাম্মদ হাসান আলীম চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আবদুল মাবুদ সৈয়দ, চট্টগ্রাম-১৬ আসনে মীর আরশাদুল হক জাতীয় নাগরিক পার্টির হয়ে সংসদ সদস্য পদে লড়বেন।
এদিকে কক্সবাজার-১ আসনে মো. মাইমুল আহসাম খান, কক্সবাজার-২ আসনে আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজা উদ্দিন, কক্সবাজার-৪ আসনে মুহাম্মদ হোসাইন ছাড়াও খাগড়াছড়িতে অ্যাডভোকেট মনজিলা সুলতানা, রাঙামাটিতে প্রিয় চাকমা ও বান্দারবানে মংসা প্রু চৌধুরী এনসিপির হয়ে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
রাজনীতি
নির্বাচন সহজ নয়, এখন প্রত্যেকেই সেটি অনুধাবন করতে পারছেন: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আগামী কয়েক দিন পরে নির্বাচন হবে। আমি এক বছর আগে বলেছিলাম, এই নির্বাচনটি আমরা যত সহজ ভাবছি, একচুয়ালি (প্রকৃতপক্ষে) নির্বাচনটি তত সহজ নয়। সেদিন অনেকেই আমার কথাটি একটু হেসেখেলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আজকে কিন্তু আপনারা প্রত্যেকেই অনুধাবন করতে পারছেন আমার সেদিনকার কথার অর্থ।
তিনি বলেন, মানুষের রায় আপনার দলের পক্ষে, ধানের শীষের পক্ষে আনতে হবে। নির্বাচনের দিন, ভোটের দিন, ভোটের মাধ্যমে রায় আনতে হবে। এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এই দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধনী বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া সাত দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা অংশ নিচ্ছেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের জন্য কী কী করতে চাই, সেটা আমরা যদি শুধু আমাদের নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকি তাহলে তো আমরা সংকুচিত হয়ে যাব। আমাদের কাজ হচ্ছে মানুষের ঘরে ঘরে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আবারও বলতেছি, এখনো যদি আমরা সিরিয়াস না হই, সামনে এই দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘গত স্বৈরাচারের ১৫ বছরের ষড়যন্ত্র সব আপনারা মোকাবেলা করেছেন, তাহলে এখন কেন সামনের যে নির্বাচনী যুদ্ধ মোকাবেলা করতে পারবেন না। কেন, আপনার দলের যে পরিকল্পনা সেটা জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারবেন না।’
‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় বিএনপির নেতারা কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
রাজনীতি
ইলেক্টিভ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। ফলে তাকে ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনের বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষায় তার স্বাস্থ্যে বেশ কিছু জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাকে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা এবং বিআইপিএপি মেশিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তার ফুসফুস ও অন্যান্য অর্গানকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য তাকে ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়।
৭৯ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ একাধিক জটিল রোগে ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানায়, গত ২৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার ‘অ্যাকিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস’ ধরা পড়ে, যেগুলোর নিবিড় চিকিৎসা এখনো চলছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। তাতে বলা হয়, ‘শরীরে গুরুতর ইনফেকশনের (ব্যাকটেরিয়া অ্যান্ড ফাঙ্গাল ইনফেকশন) কারণে তাকে উন্নত অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
পাশাপাশি কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার ডায়ালাইসিস শুরু করা হয়। এখনো নিয়মিত ডায়ালাইসিস দিতে হচ্ছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে। এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও ‘ডিআইসি’র ফলস্বরূপ তাকে রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান (ব্লাড অ্যান্ড ব্লাড প্রোডাকশন) ট্রান্সফিউশন দিতে হচ্ছে।
সব চিকিৎসার পরও জ্বর না কমার কারণে এবং পাশাপাশি রেগুলার ইকোকার্ডিওগ্রাফিতে অরটিক ভাল্ভে কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হওয়ায় টিইই (ট্রান্স অয়েসোপিগাল ইকো) করা হয় এবং সেখানে ইনফেক্টিভ অ্যান্ডোকার্ডাইটিস ধরা পরে। সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের পরামর্শে এ রোগের চিকিৎসা গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়।
চিকিৎসা কার্যক্রম ও মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল বোর্ড (এমডিটি) গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডে এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের জনস হপকিন্স এবং লন্ডন ক্লিনিকের মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রফেসর ডা. শাহাবউদ্দিন তালুকদার এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে রয়েছেন প্রফেসর এফ এম সিদ্দিকী ও প্রফেসর এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
খালেদা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে কোনো প্রকার গুজব বা ভুল তথ্য না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মেডিকেল বোর্ড। একইসঙ্গে রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে।
রাজনীতি
তৃণমূল এনসিপি গঠনের ঘোষণা মুনতাসীর মাহমুদের
সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তৃণমূল জাতীয় নাগরিক পার্টি (তৃণমূল এনসিপি)।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় বাংলামোটর এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে তৃণমূল এনসিপি নামের রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ করার কথা জানিয়েছে একটি সূত্র।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানানো হবে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
সন্ধ্যায় ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সংগঠক মুনতাসীর মাহমুদ জানান, খুব দ্রুত তৃণমূল এনসিপির কার্যক্রম শুরু হবে। যারা জুলাইকে ধারণ করে সততা ও নীতির উপরে থেকে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করতে চান, তারা যোগাযোগ করুন।
মুনতাসীর মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে যারা বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছি। এর বাইরে ইসলামপন্থী, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের মানুষদের নিয়ে তৃণমূল এনসিপি কাজ করবে।’
শিগগিরই তৃণমূল এনসিপি আত্মপ্রকাশ করবে বলেও জানান তৃণমূল এনসিপির সংগঠক।
রাজনীতি
একযোগে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি এনসিপির ৪০ নেতাকর্মীর
অনিয়মের অভিযোগ এনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনিসিপি) ভোলা জেলা শাখার নবগঠিত ৭২ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি স্থগিত করে তৃণমূলকে প্রাধান্য দিয়ে গঠিত কমিটি পুনঃগঠনের দাবি জানিয়েছেন নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে একযোগে ৪০ নেতাকর্মী পদত্যাগ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এনসিপির ভোলা জেলা শাখার ব্যানারে জেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৬ মাসের জন্য ভোলা জেলা কমিটির অনুমোদন দেন। এতে অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমানকে আহ্বায়ক ও মেহেদী হাসান শরীফকে সদস্য সচিব করে ৭২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াসির আরাফাত। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভোলা জেলা এনসিপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশের পরপরই জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনিয়ম ও অবিচারের অভিযোগে অনেকেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। ইতোমধ্যে যুগ্ম আহ্বায়ক হাসানুজ্জান পদত্যাগ করেছেন, আরও প্রায় ৪০ জন নেতাকর্মী পদত্যাগের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে আমাদের আপত্তি ও অভিযোগগুলো হলো- তৃণমূলকে উপেক্ষা করে মনগড়া কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং কমিটি ঘোষণার আগে কোনো ধরনের আলোচনা বা মতামত নেওয়া হয়নি। কমিটির ২০ জন সদস্য আমাদের তৃণমূলের পরিচিত নন, যা সম্পূর্ণ মনগড়া ও তৃণমূল বিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত। এছাড়া যোগ্য ও পরিশ্রমী নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। এতে দীর্ঘদিন পরিশ্রম করা পরীক্ষিত এবং সাংগঠনিকভাবে তৎপর নেতাদের যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। তদবির, ব্যক্তিগত সুপারিশ ও বায়াসড রেকমেন্ডেশনের ভিত্তিতে কমিটি প্রদান-ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও প্রভাব খাটিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও দল বিরোধী।
কেন্দ্রীয় নীতিমালা ও বিধিমালা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন হয়েছে। কমিটিতে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের সক্রিয় নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে এনিসিপির বিরোধিতা করছে, যা আমরা ডাকসু নির্বাচনে দেখেছি। আমরা চাই ঘোষিয় কমিটি স্থগিত করে পূর্ণগঠন করা হোক, কেন্দ্র আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি না মানলে কমিটির ৪০ সদস্য পদত্যাগ করবো।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভোলা জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াসির আরাফাত, তাজিম রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুল্লাহ আতিক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো.রাকিব, কোষাধ্যক্ষ হাফেজ মো.জহিরুল ইসলাম, সদস্য নাসরিন জাহান হাবিব, সবুজ মিয়া, লিমন সুজন, আলাউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
এগুলো দিয়ে সকালে সিসা খাইবা; বান্ডেল টাকা দিয়ে গণ অধিকারের নেতা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক এসকে শফিকুল ইসলাম শুভ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে একাধিক টাকার বান্ডেল প্রদর্শন করে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হলে তাকে নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক ও সমালোচনা।
শফিকুল ইসলাম শুভর পোস্ট করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়—তিনি টাকার বান্ডেলগুলো আলাদা আলাদা ভাগে সাজিয়ে রেখে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলছেন। ওই সময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রচারণার জন্য এই চার বান্ডেল দিলাম ব্যানার-ফেস্টুনের জন্য।
আর এটি লাগাইবা শুধু মোটরসাইকেল বহরের জন্য। আর এটি রাখো নির্বাচনের দিন চা-সিগারেট খাওয়াইবার জন্য মানুষকে দিবা। এই ৭/৮ বান্ডেল যেগুলো আছে—এগুলো দিয়ে সকাল বেলা সিসা খাইবা, বইসা বইসা…’
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমনভাবে টাকার বান্ডেল প্রদর্শন করাকে অনেকেই ‘অশোভন’, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন’ ও ‘অসুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবে মন্তব্য করছেন।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ভিপি নূরের গণ অধিকার পরিষদকে বাঞ্ছারামপুরে পরিচিত করিয়েছি। দলের জন্য বান্ডেল টাকা খরচ করেছি। দলের জন্য হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। দলে ডোনেশন দিয়েছি। দলকে এলাকায় পরিচিত করালাম। এখন আমাকে বাদ দিয়ে আরেক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে দিল!
ভিডিওটি পোস্ট নিয়ে বলেন, একটি পক্ষ গণ অধিকার পরিষদের আমার লিডারের কাছে বলেছে আমার নাকি টাকা-পয়সা নেই, আমাকে কেন নমিনেশন দেবে। হয়তো বিরোধী দলের প্রার্থী এই কথা পৌঁছাইছে। তাহলে আমার টাকা-পয়সা নেই—এই শব্দ তারা কোথায় থেকে পেল? আমি ২টা কম্পানির মালিক—এইডা কি তাদের জানার দরকার নেই? আমি সরকারকে যেই ট্যাক্সগুলো দিছি, এই টাকা দলের ফান্ডেও ছিল না।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, বাঞ্ছারামপুরে প্রতিষ্ঠিত করেছি গণ অধিকার পরিষদ। সেই জায়গা থেকে আমাকে নিয়ে আলোচনা করলে তো আমার একটা ক্ষোভ আসবে। এ জন্যই এই টাকার বান্ডেল ফেসবুকে প্রদর্শন করা। আমার টাকা নেই—আয় দেখ, টাকা আছে কি বা নেই।




