আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধ, আন্তর্জাতিক সালিশে যাচ্ছে আদানি
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত অর্থপ্রদানের বিরোধ নিষ্পত্তিতে আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার। সোমবার আদানি গ্রুপের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের অর্থ প্রদানের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক সালিশ প্রক্রিয়া বেছে নিয়েছে আদানি পাওয়ার। ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি নেতৃত্বাধীন এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বকেয়া অর্থ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। দুই পক্ষের মধ্যে ২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) আওতায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আদানি পাওয়ার।
বিবৃতিতে আদানি পাওয়ার বলেছে, কিছু নির্দিষ্ট খাতের ব্যয়ের হিসেব ও বিল করার পদ্ধতি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। এমন অবস্থায় উভয় অংশীদারই বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এতে দ্রুত, মসৃণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক সমাধানের বিষয়ে উভয়পক্ষই আশাবাদী।
তবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনা এখনো চলছে। আলোচনা শেষ হলে প্রয়োজনে আমরা আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়ায় যাব।
২০১৭ সালে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি পাওয়ারের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে ২৫ বছর মেয়াদী একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
আদানি পাওয়ার গড্ডা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎচাহিদার প্রায় এক-দশমাংশ পূরণ করে এই কোম্পানিটি।
গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রয়টার্স বলেছিল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করেছে। কোম্পানিটি ভারতের সরকারের কাছ থেকে পাওয়া কর-সুবিধার ছাড় বাংলাদেশকে না দেওয়ায় এই অভিযোগ করা হয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ আদানিকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য ১৪.৮৭ টাকা (০.১২২ মার্কিন ডলার) হারে মূল্য পরিশোধ করেছে; যা অন্যান্য ভারতীয় কোম্পানির সরবরাহকৃত বিদ্যুতের গড় ৯.৫৭ টাকার তুলনায় অনেক বেশি।
গত সপ্তাহে আদানি পাওয়ার বলেছিল, বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওনা অর্থের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে। গত মে মাসে আদানি পাওয়ারের বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে; যা চলতি বছরের শুরুতে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের কাছে আদানির বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ১৫ দিনের শুল্কের সমান।
সোমবারের বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী ও উচ্চমানের বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে।
আদানি পাওয়ারের গড্ডা প্ল্যান্টটি আমদানি করা কয়লা দিয়ে চলে এবং এই কেন্দ্রে উৎপাদিত পুরো বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানি করার কথা। কোম্পানিটি বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিটি ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্যগুলোকে এগিয়ে নিতে আরও সহায়তা করছে। ২০১৯ সালে নয়াদিল্লি গড্ডার প্ল্যান্টটিকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের অংশ হিসাবে ঘোষণা করে। এর ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আয়কর এবং অন্যান্য শুল্ক ছাড়ের মতো প্রণোদনা পায়।
গত ডিসেম্বরে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আদানি পাওয়ার ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) মাঝে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত চুক্তি ও বাস্তবায়ন চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের করহার পরিবর্তন হলে সেই বিষয়ে বাংলাদেশকে দ্রুত অবহিত করতে হবে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের কাছ থেকে ‘‘কর ছাড় সুবিধাও’’ দেওয়ার কথা আদানির।
কিন্তু আদানি পাওয়ার তা করেনি। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর ও ২২ অক্টোবর বিপিডিবির পক্ষ থেকে আদানির কাছে দুই দফায় চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে ভারত সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সুবিধার বিপরীতে বাংলাদেশে সরবরাহ করা বিদ্যুতের দামে সমন্বয়ের আহ্বান জানানো হয়। এসব চুক্তি এবং চিঠি সবার জন্য উন্মুক্ত না হলেও রয়টার্স দেখেছে বলে সেই সময় জানায়।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিপিডিবির দু’জন কর্মকর্তা বলেছিলেন, দুই দফায় চিঠি দেওয়া হলেও তারা আদানি পাওয়ারের কোনও সাড়া পাননি।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারত সরকারের কাছ থেকে যে করছাড় পেয়েছে আদানি পাওয়ার, সে অনুযায়ী বিদ্যুতের দাম ধরা হলে বাংলাদেশের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে প্রায় শূন্য দশমিক ৩৫ সেন্ট সাশ্রয় হবে বলে বিপিডিবির ধারণা।
গড্ডা প্ল্যান্ট থেকে কেনা বিদ্যুতের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের একটি সারসংক্ষেপ দেখেছে রয়টার্স। সারসংক্ষেপের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত গড্ডা প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। কর ছাড়ের বিষয়টি সমন্বয় করা হলে এই বিদ্যুতে বাংলাদেশের প্রায় ২৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হতো।
আন্তর্জাতিক
হাদি হত্যার দ্রুত-স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুসারে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে দেওয়া ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে দুজারিক জানান, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড জাতিসংঘের নজরে এসেছে। মহাসচিব এই ঘটনার নিন্দা এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, দেশের নির্বাচন সামনে রেখে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সকল পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে। তিনি সংশ্লিষ্টদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, উত্তেজনা কমাতে এবং সহিংসতা এড়াতে সকল পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে, যাতে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিবেশ বজায় থাকে।
এর আগে ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত ও নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বানও জানায় সংস্থাটি। এক বিবৃতিতে মানবাধিকার কমিশনার ফলকার তুর্ক দেশে শান্তি বজায় রাখা এবং দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
জেনেভা থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার বলেন, গত বছর বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি উল্লেখ করেন, গত সপ্তাহে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হাদি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রতিশোধ কেবল বিভেদকে আরও গভীর করবে এবং সবার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে।
আন্তর্জাতিক
রুশ তেল স্থাপনা-টহল জাহাজে ইউক্রেনের হামলা
রাশিয়ার তেল স্থাপনা এবং টহল জাহাজে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এক বিবৃতিতে ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের ড্রোন লুকোইলে রাশিয়ার একটি তেল স্থাপনায় আঘাত করেছে। কাস্পিয়ান সাগরে একটি তেল স্থাপনার কাছে একটি সামরিক টহল জাহাজেও হামলা চালানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মস্কোর তেল অবকাঠামোতে আক্রমণ জোরদার করেছে কিয়েভ। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ শুক্রবার এই হামলার কথা জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে কাস্পিয়ান সাগরে রাশিয়ার অবকাঠামো লক্ষ্য করে ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। তবে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে এমন হামলা এটাই প্রথম।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী বলছে, হামলায় ফিলানোভস্কি তেল স্থাপণার একটি ড্রিলিং প্ল্যাটফর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি মাসে এর আগেও কমপক্ষে আরও দুবার এই স্থাপনা ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার গভীর রাতে ওডেসার আশেপাশের বন্দর অবকাঠামোতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাতজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন।
টেলিগ্রামে এক পোস্টে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ওলেক্সি কুলেবা লিখেছেন, সন্ধ্যায় রাশিয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ওডেসা অঞ্চলের বন্দর অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে।
কুলেবা এবং ওডেসার আঞ্চলিক গভর্নর ওলেহ কিপার বলেছেন, প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে সাতজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন।
বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র জানিয়েছে, পিভডেনিতে ওই হামলা চালানো হয়েছে যা, এই অঞ্চলের তিনটি বন্দরের মধ্যে একটি।
আন্তর্জাতিক
ইউক্রেন এক বছরে ৫ লাখ সেনা হারিয়েছে: রাশিয়া
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে প্রায় ৫ লাখ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলৌসোভ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বোর্ড মিটিংয়ে এ দাবি করেন।
যদিও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইউক্রেন। রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম রাশিয়ান টেলিভিশন (আরটি) জানায়, বুধবার অনুষ্ঠিত ওই বোর্ড মিটিংয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বেলৌসোভ বলেন, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত রুশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে প্রায় ৫ লাখ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। এত বিপুল ক্ষতির কারণে নিকট ভবিষ্যতে কিয়েভের পক্ষে বাহিনী পুনর্গঠন করা কঠিন হবে। কারণ এই প্রাণহানির ফলে দেশটির বেসামরিক জনগণ সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদানে আগ্রহ হারাচ্ছে।
তিনি আরও দাবি করেন, চলতি বছরে ইউক্রেন এক লাখ তিন হাজারের বেশি সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম হারিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান, যেগুলো পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় ইউক্রেন পেয়েছিল।
উল্লেখ্য, ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করা এবং ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কিয়েভের তদবিরকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।
যুদ্ধ শুরুর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি একটি ডিক্রি জারি করেন। ওই ডিক্রির মাধ্যমে ইউক্রেনের ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
যুদ্ধের শুরুতে বেসামরিকদের জন্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগদানের সর্বনিম্ন বয়স ছিল ২৭ বছর। পরে তা কমিয়ে ২৫ বছর করা হয়।
এমকে
আন্তর্জাতিক
রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানালো আমিরাত
নতুন বছর সামনে রেখে পবিত্র রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানালো সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি জানিয়েছে, ১৪৪৭ হিজরি সনের রমজান মাসের চাঁদ মঙ্গলবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি দেখা যেতে পারে। সে হিসাবে রমজান শুরু হতে পারে বৃহস্পতিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি। আর ২০২৬ সালে ঈদুল ফিতর শুরু হতে পারে শুক্রবার, ২০ মার্চ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, রমজান যদি ৩০ দিনে পূর্ণ হয়, তাহলে শেষ দিনটি ঈদের ছুটির সঙ্গে যুক্ত হয়। সে ক্ষেত্রে ১৯ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত টানা চার দিনের ছুটি পেতে পারেন দেশটির বাসিন্দারা।
২০২৬ সালে ঈদুল আযহা হতে পারে বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ সরকারি ছুটি। এই ছুটি শুরু হবে আরাফাত দিবস (জিলহজ ৯) দিয়ে, এরপর জিলহজের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ ঈদুল আযহা পালিত হবে।
ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিজ ডিপার্টমেন্টের (আইএসিএডি) সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, আরাফাত দিবস পড়তে পারে মঙ্গলবার, ২৬ মে, আর ঈদুল আযহা শুরু হতে পারে বুধবার, ২৭ মে। ছুটি চলতে পারে শুক্রবার, ২৯ মে পর্যন্ত। এর সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি যোগ হলে, বাসিন্দারা টানা ছয় দিনের ছুটি উপভোগের সুযোগ পেতে পারেন।
অন্যান্য ইসলামি উৎসবের মতোই, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঈদের চূড়ান্ত তারিখ নির্ভর করবে সরকারি চাঁদ দেখার ঘোষণার ওপর। কর্তৃপক্ষ সময় ঘনিয়ে এলে আনুষ্ঠানিকভাবে ছুটির তারিখ নিশ্চিত করবে। দেশটির সরকারি ১২ দিনের ছুটির বড় অংশই পড়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা উপলক্ষে।
দেশটির সরকারি আইন অনুযায়ী, ঈদের তারিখ পরিবর্তনযোগ্য নয়। ইসলামিক হিজরি ক্যালেন্ডার ও চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করেই ঈদের দিন নির্ধারিত হয়। তবে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক হিসাব অনুযায়ী সম্ভাব্য তারিখ আগেভাগে অনুমান করা যায়।
আন্তর্জাতিক
হাসনাতের হুঁশিয়ারিতে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের ভারতবিরোধী মন্তব্য এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারির বিরুদ্ধে কঠোর সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে সংযুক্ত করা বা আলাদা করার ধারণা সম্পূর্ণ অরুচিকর, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং বিপদজনক।
শর্মা বলেন, গত এক বছরে বারবার বলা হয়েছে যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশে যুক্ত করা উচিত। কিন্তু ভারত একটি বড় দেশ, পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। বাংলাদেশ কীভাবে এমন কথা ভাবতে পারে? তিনি আরও হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি এমন শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব চলতে থাকে, ভারত চুপ থাকবে না। প্রয়োজনে সঠিক শিক্ষা দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে, টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ সম্প্রতি সেভেন সিস্টার্স খ্যাত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে সম্মান না করে—তাহলে বাংলাদেশ ভারতবিরোধী শক্তি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিতে পারে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) শর্মা এই মন্তব্যের জবাবে জানান, বাংলাদেশের রাজনীতিকরা যদি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে অনধিকার চর্চা অব্যাহত রাখে, তবে ভারতও চুপ থাকবে না, উচিত শিক্ষা দেবে।
ঘটনায় প্রতিক্রিয়ায়, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনকে হুমকি এবং বাংলাদেশি নেতাদের ভারতবিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানানোর জন্য।




