রাজনীতি
গণভোট আগে না হলে নির্বাচনের কোনো মূল্য নেই: জামায়াত আমির
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট না হলে এর কোনো মূল্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে পূর্ব লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামির আমীর বলেন, ক্ষমতায় গেলে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করা হবে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। গুম খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত ২৫ সেনা কর্মকর্তা ভয়ানক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন ডা. শফিকুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামী ইউরোপের মুখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, জামায়াতে ইসলামির প্রতিনিধি ও সেইভ বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম, সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীন, ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহীসহ অনেকে।
রাজনীতি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার (২ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি রিফাত রশিদ।
এতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ’২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান যে আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দেশ্য নিয়ে সংঘটিত হয়েছিল, তার পূর্ণ বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। বরং দেখা যাচ্ছে, জুলাইয়ের শহীদ পরিবার ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন যেমন নিশ্চিত করা হয়নি, তেমনি তাদের নিরাপত্তাও যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সরকার।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ ছাড়া জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কেও কোনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ আমরা এখনো প্রত্যক্ষ করিনি, যা হাজারও শহীদ ও আহতদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা। তাই জুলাই অভ্যুত্থানের বৈপ্লবিক রূপান্তর নিশ্চিতে এবং ঐতিহাসিক এক দফা, অর্থাৎ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণের নিমিত্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মহানগর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সব ইউনিট কমিটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরায় সচল করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে এবং সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর ও জেলা ইউনিটকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠন সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজনীতি
অবশেষে শাপলা কলিতেই রাজি এনসিপি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, প্রতীক হিসেবে শাপলা কলিতেই রাজি দলটি।
রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলিকে দলের প্রতীক হিসেবে চেয়ে ইসিতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।
রোববার (২ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে নির্বাচন ভবনে সিইসির দপ্তরে প্রবেশ করে নতুন করে প্রতীকের জন্য আবেদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এবার তারা শাপলা, সাদা শাপলা এবং শাপলা কলির মধ্যে শাপলা কলিকে প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ চেয়েছে।
রাজনীতি
একদল সংস্কার ভেস্তে দিচ্ছে, নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে আরেক দল: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেছেন, একদল সংস্কারকে ভেস্তে দিচ্ছে, আরেক দল নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা করছে।
জুলাই সনদ, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সংস্কার বাস্তবায়নের সুপারিশ ইস্যুতে বিএনপি ও জামায়াতের পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়ে কথা বলেন তিনি।
রোববার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ। সংবাদ সম্মেলনে কোনো লিখিত বক্তব্য ছিল না। সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্ব দিয়েই শুরু হয় সংবাদ সম্মেলন।
এসময় তিনি বলেন, জামায়াতের কার্যক্রমে মনে হচ্ছে যে নির্বাচনকে পেছানোর কোনো অভিসন্ধি তাদের আছে কিনা, দুরভিসন্ধি আছে কিনা। একদল সংস্কারকে ভেস্তে দিচ্ছে, আরেক দল নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা করছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে আমাদের মূল্যায়ন এটাই। তবে আমরা এই দুইটার কোনোটাই চাই না। আমরা চাই যথাসময়ে নির্বাচন হবে ফেব্রুয়ারিতে এবং জুলাই সনদেরও আইনি ভিত্তি পাবে এবং বাস্তবায়ন হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের শুরু থেকেই মৌলিক বিষয়গুলোতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বিরোধিতা করার চেষ্টা করেছে। ফলে সংস্কারের পক্ষে তারা কতটুকু আছে, এ বিষয়ে জনগণের ভেতর প্রশ্ন আছে, আমাদের কাছেও প্রশ্ন আছে। আবার অন্যদিকে জামায়াতের কার্যক্রমে মনে হচ্ছে, নির্বাচনকে পেছানোর কোনো দুরভিসন্ধি তাদের আছে কি না। ফলে একদল সংস্কারকে ভেস্তে দিচ্ছে, আরেক দল নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা করছে।
গণভোট আগে হবে, না নির্বাচনের দিন হবে- এটাতে বিএনপি-জামায়াত আবার একটা দ্বন্দ্বে চলে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। এই দ্বন্দ্ব অযথা ও অপ্রয়োজনীয় বলেন তিনি।
উচ্চকক্ষে পিআর, দুই কক্ষে পিআরের দাবি এনে এই ইস্যুটাকে ঘুরিয়ে দেওয়ার একটা চেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সনদে কী কী সংস্কার হবে, কী কী প্রস্তাব থাকবে এবং সেটার আইনি ভিত্তিটা কীভাবে হবে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আদেশ জারি করবেন কি না- এগুলো প্রধান ইস্যু ও প্রধান তর্কের জায়গা। এই জায়গাগুলোতে একমত হলে গণভোট আমরা নির্বাচনের দিনও করতে পারি, আগেও করতে পারি। সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি।
এনসিপি ফেব্রুয়ারিতে যথাসময়ে নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন চায় বলে উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা মনে করি চলতি মাসের মধ্যেই আদেশ জারি হয়ে যাওয়া উচিত। মৌলিক সংস্কারে যে জায়গাগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, আমরা মনে করি সেসব বিষয়ে গণভোটে যাওয়া উচিত। গণভোট নির্বাচনের দিন হতে পারে, আগেও হতে পারে। এটা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
জুলাই সনদ অবশ্যই এবং অবশ্যই অধ্যাপক ইউনূসকে জারি করতে হবে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ। তিনি বলেন, জুলাই সনদ যদি তথাকথিত রাষ্ট্রপতির থেকে জারি হয়, রাষ্ট্রপতি কার্যালয় থেকে থেকে জারি হয়, তাহলে এই সনদের কোনো আইনি ও রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরি হবে না।
এক প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, রাজনৈতিক অনৈক্য তত তৈরি হবে, দ্বন্দ্ব-প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। তবে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলেন তিনি। নির্বাচনকে ভন্ডুল করার সব ধরনের ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগের জায়গা থেকে করা হবে বলেন নাহিদ। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দলে অনুপ্রবেশ করে নির্বাচন ভন্ডুলের ষড়যন্ত্র যাতে করতে পারে সে জন্য সব দলকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানান নাহিদ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে নাহিদ বলেন, আমরা মনে করি, এই যে গণহত্যা, এটা আসলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ অপরাধ করেছে, কেবল ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনা নয়৷
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায়, তাহলে অবশ্যই ভারতকে আওয়ামী লীগের চোখে বাংলাদেশকে দেখার নীতি থেকে সরে আসতে হবে। তাদের বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তার দল আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে। কোন আসন থেকে নির্বাচন করতে চান, জানতে চাইলে নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি যেহেতু ঢাকার সন্তান, আমাকে তো ঢাকা থেকেই হয়তো…৷ আর আমরা এখন পর্যন্ত ৩০০ আসন ধরেই এগোচ্ছি। আমরা হয়তো এই মাসেই আমাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করব। তখনই আসলে দেখা যাবে যে আমাদের কে কোথা থেকে দাঁড়াচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির দলীয় প্রতীকের ব্যাপারে তিনি বলেন, নতুন দল হিসেবে সহযোগিতার পরিবর্তে আমাদের কাজে বাধা তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন। অথচ শাপলা কলির যে সিদ্ধান্ত, সেটি তারা এক মাস আগেও দিতে পারতো। আমরা শাপলাই চাই।
রাজনীতি
জাতিকে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতিকে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (২ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, আজ তারই উত্তরসূরি তারেক রহমানও সুদূর প্রবাস থেকে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে সংগ্রামের ধারাবাহিকতা গড়ে উঠেছিল, সেটিই আজ অব্যাহত রেখেছেন তারেক রহমান। জাতিকে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বর আমাদের কাছে এবং গোটা জাতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যখন মানুষ অনিশ্চয়তা ও হতাশার মধ্যে রয়েছে, তখন আবারও দেশের শত্রুরা মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় ৭ নভেম্বরের ঐক্যের চেতনা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।
৭ নভেম্বরের দিনটি রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭৫ সালে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী অবস্থা থেকে মুক্ত করা হয়। দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীরা শহীদ প্রেসিডেন্টকে বন্দি করে রেখেছিল। সেই অবস্থা থেকে দেশপ্রেমিক সৈনিক ও জনগণ তাকে মুক্ত করে নিয়ে আসে। এরপরই ইতিহাসে শুরু হয় বাংলাদেশের সাফল্যের নতুন অধ্যায়।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন এবং দ্রুতই দেশকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে যান, যেখানে পূর্বে যেভাবে বাংলাদেশকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ বলা হতো, সেখান থেকে তিনি দেশকে সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তে তুলে ধরেন। তার আমলেই শুরু হয় বাংলাদেশের পুনর্জাগরণ, একটি ইমাজিন টাইগার হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনা।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক ক্ষণজন্মা পুরুষ। আমরা সবাই জানি, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন ২৬শে মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে অকুতোভয় সেই সামরিক কর্মকর্তা ঘোষণা দেন, “I hereby declare the independence of Bangladesh.”। এরপরের পাঁচ বছর ছিল আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের ইতিহাস। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তখন দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একদলীয় শাসনব্যবস্থা-বাকশাল।
তিনি আরও বলেন, সেই সময় বাংলাদেশে প্রশাসনিক ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অপশাসনের কারণে ১৯৭৪ সালে ঘটে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, যেখানে লাখ লাখ মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭৫ সালের পরবর্তী সময়ে অবস্থার পরিবর্তন ঘটান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি প্রথম রাজনৈতিক সংস্কারের হাত দেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে দেশকে নিয়ে আসেন বহুদলীয় গণতন্ত্রে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, নিষিদ্ধ হওয়া পত্রিকা পুনরায় চালু করেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেন, গঠন করেন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। অর্থনীতিতে তিনি সূচনা করেন নতুন যুগের। তার হাত ধরে গড়ে ওঠে গার্মেন্টস শিল্প, বিদেশে শ্রমিক প্রেরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যার মাধ্যমে রেমিট্যান্স আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ।
তিনি বলেন, নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে জিয়াউর রহমান নেন যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কৃষিতে বিপ্লব ঘটে তার খাল খনন কর্মসূচি, উচ্চফলনশীল বীজের আমদানি এবং সার ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে। শিল্পে তিন শিফটে উৎপাদন শুরু হয়, কর্মসংস্থান বাড়ে, নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়, দেশ তখন এক কর্মযজ্ঞে মেতে ওঠে।
বিএনপির এই মহাসচিব বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবুও তার দর্শন, তার আদর্শ আজও বেঁচে আছে। তার প্রদত্ত বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শন কখনও পরাজিত হয়নি আর তাই বিএনপিও পরাজিত হয়নি। বারবার ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, সবশেষে আবারও বলি, ৭ নভেম্বর আমাদের রাজনৈতিক ও জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। আমরা এই দিনটিকে স্মরণ করি, কারণ এর মধ্য দিয়েই জেগে ওঠে জাতির চেতনা। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সেই দর্শনকে সামনে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের পথে।
রাজনীতি
ফের জামায়াত আমির নির্বাচিত হলেন শফিকুর রহমান
২০২৬-২০২৮ কার্যকালের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত হয়েছেন ডা. শফিকুর রহমান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অভ্যন্তরীণ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম গতকাল ১ নভেম্বর (শনিবার) রাতে সংগঠনের ‘আমির’ নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন।
দলটির প্রচার ও মিডিয়া বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৯ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশের (সদস্য) রুকনদের নিকট থেকে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোটগ্রহণের কার্যক্রম শেষে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম ভোট গণনা শেষ করেন।
প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী ২০২৬-২০২৮ কার্যকালের জন্য সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত হয়েছেন ডা. শফিকুর রহমান।
ডা. শফিকুর রহমান ১৯৫৮ সালের ৩১ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৭৪ সালে স্থানীয় বরমচাল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৬ সালে সিলেট এম সি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৮৩ সালে সিলেট মেডিকেল কলেজ (বর্তমান এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ) থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনের পর চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন।
শফিকুর রহমান জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৭৩ সালে জাসদ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগদান করেন। পরবর্তি সময়ে এই সংগঠনের সিলেট মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি এবং সিলেট শহর শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৪ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের মাধ্যমে তিনি বৃহত্তর রাজনীতিতে পদার্পন করেন। এরপর সিলেট শহর, জেলা ও মহানগরী আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর রুকনদের (সদস্য) প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে আমির নির্বাচিত হন।



