জাতীয়
রাষ্ট্র সংস্কারের এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না: ড. ইউনূস
ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু হয়েছে, তা থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রবিবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র সংগঠন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু হয়েছে, তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তোমরা এর থেকে বেরিয়ে যেও না।” তিনি এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ছাত্রদের সার্বক্ষণিক কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
সভার শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ও আহত শিক্ষার্থীদের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এ সময় হতাহতদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ড. ইউনূস। কাঁদতেও দেখা যায় তাকে।
গত ১৫ বছরের অপশাসনের কথা স্মরণ করে ড. ইউনূস শিক্ষার্থীদের বলেন, এতদিন তারা চুপচাপ স্বপ্নের মধ্যে ছিলো এবং আনন্দ সহকারে লুটপাট করে যাচ্ছিলো। এরা কি এখন চুপচাপ বসে থাকবে। না, তারা খুব চেষ্টা করবে আবার তোমাদেরকে দুঃস্বপ্নের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার। চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখবে না। কাজেই যে কাজ শুরু করেছো, তা সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এর থেকে বেরিয়ে যেও না।
দেশের সফল অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে নোবেল বিজয়ী ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত এই সুযোগ আসেনি। তবে সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়। এই সুযোগ হাতছাড়া হলে বাংলাদেশের আর কোন ভবিষ্যৎ থাকবে না। রাষ্ট্র আর থাকবে না। কাজেই এটা শুধু রাষ্ট্র নয়, পৃথিবীর সম্মানিত রাষ্ট্র হিসেবে যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটা করতে হবে।”
তরুণরা কোন যাদুমন্ত্রে বাংলাদেশে বিপ্লব সংগঠিত করেছে, তা দেখতে সারা দুনিয়ার মানুষ এ দেশে আসবে এমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দুনিয়ার মানুষ দেখতে আসবে, তোমাদের কাছ থেকে শিখতে আসবে। তোমাদের কাছে জানতে চাইবে- কোন মন্ত্র দিয়ে এই বিপ্লব করেছো। এই মন্ত্র তারা শিখতে চাইবে।”
অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে তরুণরা দেশের হাল ধরেছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, তরুণরা দেশের হাল ধরেছে, তারা অনন্য এক বাংলাদেশ তৈরি করে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ চিন্তায় অনড় থাকার পরামর্শ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “তোমাদের চিন্তা স্বচ্ছ ও সঠিক। তোমরা নিজ নিজ চিন্তায় অনড় থাকো। কেউ যদি স্বপ্ন পূরণের চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেয়, সেটা গ্রহণ করো না।”
তিনি বলেন, “স্বপ্ন বাস্তবায়ন থেকে যদি আমরা দূরে সরে যায়, দেশবাসী তাহলে আমাদেরকে সতর্ক করে দেবে। আমাদের কারোর কোনো ইচ্ছা নেই এই স্বপ্নের বাইরে যাওয়ার। আমাদের সার্বক্ষণিক কাজ হলো স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। একযোগে এই কাজ করতে হবে।”
আহতদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “যখন হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের দেখার জন্য যাই, তাদের দিকে তাকাতে কষ্ট হয়। একটা ছেলে, একটা মেয়ে এইরকমভাবে কীভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই দিকে পা চলে গেছে, ওই দিকে মাথা।”
আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে ড. ইউনূস বলেন, “একজন তাজা তরুণ রংপুরে আমাকে বললো, ফুটফুটে একটা ছেলে, স্যার আমি সারাজীবন ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম। এখন দেখেন আমার পা কেটে ফেলেছে। সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে স্যার ক্রিকেট খেলবো কী করে? ক্রিকেট তার মাথা থেকে যাচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “আমাদের যোগ্যতা না থাকতে পারে, ক্ষমতা না থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের প্রতিজ্ঞা রইলো, আমরা স্বপ্ন পূরণ করবো। হাসপাতালের দৃশ্য এবং আন্দোলনের প্রতিদিনের ঘটনা মানুষকে জানাতে হবে বোঝাতে হবে এর পেছনে কী ছিল।”
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মব জাস্টিস বরদাশত করা হবে না: মাহফুজ আলম
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা হলো মব জাস্টিস (গণপিটুনি) এর মতো ঘটনা কোনোভাবে বরদাশত করা হবে না। কেউ অপরাধ করলে আইনানুযায়ী তার বিচার হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই।
অন্তর্বর্তী সরকারের একমাস পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ছাত্র সংগঠক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মব জাস্টিসের বিষয়ে সরকারের অবস্থান খুব স্পষ্ট। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবে হতে দেওয়া যাবে না। মাজার ও মন্দিরে হামলা বা কোনো ব্যক্তি আক্রোশের কারণে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেউ অপরাধ করে থাকলে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে যারা কাজ করেছেন, জনগণ তাদের বিচার করবে না। তাদের আইনের আওতায় সোপর্দ করতে হবে। কারোর মানবাধিকার লুণ্ঠিত হোক, সেটা আমরা চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইন নিজস্ব গতিতে তাদের বিচার করবে। জনগণ শুধু এটুকু খেয়াল রাখবে, দোসররা যেন কোনোভাবে পার না পেয়ে যায়।’
মব জাস্টিসের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার কঠোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে মাহফুজ আলম আরও বলেন, ‘সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট কঠোর। ইতোমধ্যে অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করার বিষয়ে সরকারের কোনো দিক-নির্দেশনা আছে কি না সে বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করতে দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট কোনো অবস্থান নেই। তবে ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার বানানো যাবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশে একটা ঐকমত্য আছে। এমনকি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি যারা করেন, তারাও এ ব্যাপারে একমত।’
রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল পরিচালনা দুটি আলাদা বিষয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হচ্ছে। সবার মতামত নিয়ে সরকার তার অবস্থান পরিষ্কার করবে। তবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ যে অপরাজনীতি করেছে সেই রাজনীতি যেন ক্যাম্পাসে ফিরে না আসে, সেটা আমাদের অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনায় সরকারের তরফ থেকে হতাহতের ঘটনায় বিচারের ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা উঠে এসেছে। একটি ফাউন্ডেশন গঠনের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আহত পরিবারকে পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।’
দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণহারে মামলা হচ্ছে- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ আলম বলেন, ‘গণমামলা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে প্রত্যেকটি মামলার ক্ষেত্রে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আহত ও নিহতের তালিকা তৈরি করতে খুব ভালোভাবে কাজ করছে সরকার। এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।’
তিনি জানান, অনেকেই পুলিশি ঝামেলার কারণে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়ায় যায়নি। ফলে সবার তথ্য সংগ্রহ করতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। অনেকেই জানাজার নামাজ তাড়াতাড়ি করেছেন পুলিশি ঝামেলার এড়াতে। প্রাথমিক একটি তালিকা হয়েছে। এখন ছাত্ররা করছেন, অনেকে ব্যক্তিগতভাবে করছেন। সবগেলো তালিকা পাওয়ার পর সমন্বিত একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আইন ও বিচারের নতুন সচিব গোলাম রব্বানী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের নতুন সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন একই বিভাগের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন-১) মো. গোলাম রব্বানী।
মো. গোলাম রব্বানীকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের চলতি দায়িত্ব দিয়ে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব (প্রসাশন-২) এস মোহাম্মদ আলী যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করেন।
প্রসঙ্গত, মো. গোলাম রব্বানী ১৯৯৪ সালে সহকারী জজ হিসেবে বিচার বিভাগে যোগদান করেন। এরপর ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি বিসিএস ১৩তম ব্যাচের সদস্য।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ভারতের সঙ্গে সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সম্পর্ক হবে: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক দরকার। কিন্তু সেই সম্পর্ক হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।’
আজ রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ছাত্র সংগঠক ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে পারস্পরিক সমান সম্মান এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষার্থীদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে বলেছেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কাজ করতে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পুলিশ বাহিনী নিয়ে যা বললেন হাসনাত আবদুল্লাহ
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, ‘আপনারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করুন। আপনারা যদি ভেবে থাকেন, আপনারা রাগ করে বসে থাকবেন, অফিস-আদালতের কাজ করবেন না; তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন। এই আন্দোলনে যেমন কামার, কুলি, মুচি ছিল, ঠিক একইভাবে এই আন্দোলনে শিক্ষিত শ্রেণিও ছিল। সুতরাং আপনাদের রিপ্লেসমেন্টও হয়ে যাবে।’
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে ছাত্র-নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দেওয়া বক্তব্যে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিসহ অন্যান্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ছাত্র এবং পুলিশ হচ্ছে ভাই-ভাই। আমাদের কোনও বিভেদ নাই। আপনারা আপনাদের কাজে ফিরে আসুন। আপনাদের মধ্যে যারা খুনিদের দোসর ছিল তাদেরকে আমরা জানি। সব পুলিশ কিন্তু বেনজীর না। সব পুলিশ ডিবি হারুন না। আমার বাবা, আমার ভাই; তারাও কিন্তু পুলিশ। সুতরাং পুলিশদের আমরা সহযোগিতা করবো। রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজে যারা বর্তমানে মাঠে রয়েছেন, তাদেরকে আমরা প্রতিপক্ষ না ভেবে সহযোগী ভেবে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবো। পুলিশদের প্রতি বার্তা দেখেন, বেনজীর দেশে থাকতে পারেনি। ডিবি হারুন ভালো নেই। সুতরাং আপনারা জনমুখী না হয়ে ক্ষমতামুখী হলে আপনাদের অবস্থাও বেনজীর এবং হারুনের মতো হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদেরকে বিভাজিত করেছে। বিভাজনের রাজনীতি বিদ্যমান রেখে তারা ফ্যাসিজম কায়েম করেছে। তারা সবসময় বিভাজন করেছে- কারা দাড়িওয়ালা, কাদের দাড়ি নাই; কারা মাদরাসা শিক্ষার্থী, কারা না। কিন্তু এই ফ্যাসিজম পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা উদাহরণ তৈরি করেছি। মন্দিরে মন্দিরে যখন হামলা হয়, তখন সেই মন্দির পাহারা দিয়েছে আমাদের দাড়ি-টুপিওয়ালা ভাইয়েরা। আমাদের সবার প্রথম পরিচয় আমরা বাংলাদেশি।’
হাসনাত বলেন, ‘দাড়ি-টুপি যাদের রয়েছে তাদেরকে সবসময় প্রান্তিকীকরণ করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, যে দাড়ি-টুপির মানুষগুলো সেদিন উত্তরায় নেমে এসেছিল, যাত্রাবাড়ীতে দুর্গ গড়ে তুলেছিল, তাদের সমন্বয়কের পরিচয় লাগেনি। উত্তরায় যারা শহীদ হয়েছিল, তাদের সমন্বয়কের পরিচয় লাগেনি। ঠিক একইভাবে এ রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজে আমাদের সমন্বয়ক হওয়ার প্রয়োজন নেই, সহ-সমন্বয়ক হওয়ার প্রয়োজন নেই। এখানে যারা রয়েছে প্রত্যেকেই সমন্বয়ক, প্রত্যেকেই সহ সমন্বয়ক।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আগস্টে ২৭২ কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ
গত আগস্ট মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ২৭২ কোটি ৬৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
এতে বলা হয়, জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ২৯ কেজি ১৩১ গ্রাম স্বর্ণ, ১৬ কেজি ৩০০ গ্রাম রূপা, ৩ কেজি ৬০১ গ্রাম সাপের বিষ, ১ লাখ ২১ হাজার ৫৫১টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ২৫ হাজার ৯২২টি ইমিটেশন গহনা, ১২ হাজার ১৮৩টি শাড়ি, ৪ হাজার ৫৭টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল/তৈরি পোশাক, ২ হাজার ২৬১ মিটার থান কাপড়, ২ হাজার ২৭ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ৭৩১ কেজি ৫০০ গ্রাম চা পাতা, ৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৩ কেজি চিনি, ১৭ হাজার ৩৮০ কেজি কয়লা, ১৯ হাজার ৪৩৯টি মোবাইল ডিসপ্লে, ১ লাখ ২৬ হাজার ৩০৪টি চশমা, ১ হাজার ৩৬৬ কেজি ৫০০ গ্রাম জিরা, ৬টি ট্রাক, ১২টি পিকআপ, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯টি ট্রলি, ১৯১টি নৌকা, ১৭টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৩৮টি মোটরসাইকেল এবং ৩২টি বাইসাইকেল।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৩টি পিস্তল, ২টি গান জাতীয় অস্ত্র, ১টি মর্টার শেল, ১টি ম্যাগজিন এবং ১৮ রাউন্ড গুলি।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১২ লাখ ৬১ হাজার ৪৬৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১২ কেজি ৯১৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ৭ কেজি ৩৫ গ্রাম হেরোইন, ১৫ হাজার ৭২৬ বোতল ফেনসিডিল, ১৮ হাজার ৭৫৬ বোতল বিদেশী মদ, ৫৬৮ লিটার বাংলা মদ, ১ হাজার ৮৫৯ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৩৭৭ কেজি ৫৮ গ্রাম গাঁজা, ১ লাখ ৭৪ হাজার ২৮৪ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩৯ হাজার ৫৯৭টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৩ হাজার ৯৮০ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১ কেজি ২৫০ গ্রাম কোকেন, ১ হাজার ৪৫ বোতল এমকেডিল/কফিডিল, ২ লাখ ৮০ হাজার ১১৫টি বিভিন্ন প্রকার ঔষধ, ২০ বোতল এলএসডি এবং ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭০টি অন্যান্য ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৩ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১২৫ জন বাংলাদশি নাগরিক ও ২২ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ৪ হাজার ৫০৬ জন মায়ানমার নাগরিককে আটকের পর তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এমআই