আইন-আদালত
তিন হত্যা মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামি ২১৯ জন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় আরও তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় মোট ২১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ রয়েছেন।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসব মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
শামীম হত্যা: রাজধানীর রূপনগরে শামীম হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩৯ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে ভিকটিমের চাচাতো ভাই মো. সম্রাট এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে এ বিষয়ে কোনো জিডি বা অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে কি না, তা ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে দাখিলের জন্য রূপনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- আসাদুজ্জামান খান কামাল, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাবিনা আক্তার তুহিন, শাহেদা তারেক দীপ্তি, কামাল আহমেদ মজুমদার, গাজী মেজবাউল হক সাচ্চু।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ২০ জুলাই বিকেলে মিরপুর-১০ নম্বর সংলগ্ন প্রশিকা মোড়ে উপরোক্ত আসামিদের নির্দেশে গুলিতে শামীম হাওলাদার নিহত হন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
সাদিকুল হত্যা: হাফেজ মাওলানা সাদিকুল হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালতে হাবিবুল্লাহ বাহারের প্রতিবেশী চাচা আশরাফ সিদ্দিকী মামলাটি করেন। আদালত এ মামলার আবেদনটি রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।
এ মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- আব্দুর রাজ্জাক, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে আধুনিক মেডিকেলের পাশে উপরোক্ত আসামিদের নির্দেশে অন্য আসামিরা গুলি ছোড়েন। এতে সাদিকুল গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আমির হত্যা: রাজধানীর রামপুরায় আমীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমীর আদালতে নিহতের স্ত্রী আননী মামলাটি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান (পলাশ) ও এবিএম সিদ্দিক।
গত ১৯ জুলাই বিটিভি ভবনের সামনে উপরোক্ত আসামিদের নির্দেশে অন্য আসামিরা আমীর হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

আইন-আদালত
আবু সাঈদ হত্যা মামলা: ৩০ আসামির বিচার শুরু

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ আসামির মধ্যে ২৪ জন পলাতক ও ৬ আসামি গ্রেপ্তার রয়েছেন। গ্রেপ্তার থাকা আসামিরা হলেন- এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। অভিযোগ গঠনের সময় তারা ট্রাইব্যুনালের এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৩০ জুলাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য ৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।
সেদিন ট্রাইব্যুনালে পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন সরকারি খরচে নিয়োগ পাওয়া চার আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাত মিয়া। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুনুর রশীদ। এছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, মঈনুল করিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
গত ২৮ জুলাই এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ওই দিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি এ মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ মামলার অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি হয়।
গত ২২ জুলাই এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসি, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনারসহ পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। একইসঙ্গে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ শুনানির জন্য ২৮ জুলাই দিন ধার্য করা হয়।
ওই দিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মঈনুল করিম।
সাংবাদিকদের সেদিন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, এ মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে এখনও ২৪ জন পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে আদালতে হাজির না হওয়ায় পলাতক হিসেবেই এসব আসামির বিচারকাজ চলবে। আর গ্রেপ্তার ছয়জনের দুজন এখনও আইনজীবী নিয়োগ দেননি। তাদের ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল জানতে চেয়েছেন।
এছাড়া পলাতক ২৪ জনের পক্ষে সরকারি খরচে চারজন স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অর্থাৎ ছয়জনের জন্য একজন করে আইনজীবী লড়বেন।
এর আগে, ১৩ জুলাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য মামলায় গ্রেপ্তার রাসেল ও পারভেজকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পলাতক ২৪ জনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আদালতে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২।
গত ৩০ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর আগে, ২৪ জুন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। এ ঘটনায় মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়।
আইন-আদালত
এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোকের নির্দেশ

ব্যাংক এশিয়ার প্রায় ৩৮৯ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের মামলায় এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ক্রোক (জব্দ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৪ আগস্ট) ঢাকার ৫ নম্বর অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে ৩৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৪ টাকার ঋণ নেয় এক্সিম ব্যাংক। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও এক্সিম ব্যাংক ওই টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। ওই খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য ঢাকার অর্থঋণ আদালত-৫ এ মামলাটি দায়ের করে ব্যাংক এশিয়া।
আদেশ থেকে জানা যায়, এদিন বাদীপক্ষ আদালতকে জানান, নালিশি ঋণের বিপরীতে এক্সিম ব্যাংকের কোনো সম্পত্তি দায়বদ্ধ নেই। তবে ওই সম্পত্তিতে এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। এক্সিম ব্যাংকের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর হওয়ায় সম্প্রতি অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই এক্সিম ব্যাংকের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ায় প্রধান কার্যালয়ের সম্পত্তি ক্রোক না করলে বাদী ব্যাংক এশিয়ার বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
শুনানি শেষে ও নথি পর্যালোচনা করে বিচারক এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কেন ক্রোক করা হবে না মর্মে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে কারণ না দর্শানো বা আপত্তি দাখিল না করা পর্যন্ত ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় অস্থায়ীভাবে ক্রোক করার আদেশ দেন আদালত।
আগামী ২১ আগস্ট বিবাদীপক্ষ অর্থাৎ এক্সিম ব্যাংকের জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
আইন-আদালত
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ১১৪ জনের মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত ১১৪ জন অজ্ঞাত শহীদের মরদেহ শনাক্তে কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৪ আগস্ট) ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন তারিখে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে শহীদ হন নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয় ১১৪ জনকে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে তাদের ডিএনএ সংগ্রহ ও ময়নাতদন্তের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয় আবেদনে।
আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৬(২) ধারায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন।
কাফি
আইন-আদালত
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।
সোমবার (৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, ৩ আগস্ট এ মামলায় প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ। তাকে জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। পরে আজ পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল।
ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলার সূচনা বক্তব্য শুরু করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তবে বিচারকার্য শুরুর আগে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুপুর পৌনে ১টার দিকে খোকন চন্দ্র বর্মণকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। পরে নিজে আহত হওয়াসহ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি। এ গণহত্যার জন্য দায়ী করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ওবায়দুল কাদের, শামীম ওসমানের সর্বোচ্চ শাস্তি চান তিনি।
এর আগে, এ মামলায় ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য যথাক্রমে ৩-৪ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। গত ৭ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন নিয়ে স্টেট ডিফেন্সের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমির হোসেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
গত ১ জুলাই এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ওই দিন আদালতে প্রসিকিশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তবে সময় চেয়ে আবেদন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
গত ১৬ জুন এ মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১ জুন শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহিদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।
গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই শেষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জমা দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আইন-আদালত
শেখ হাসিনা সব অপরাধের নিউক্লিয়াস: চিফ প্রসিকিউটর

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন চিফ প্রসিকিউটর।
আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সব অপরাধের নিউক্লিয়াস।
সূচনা বক্তব্যের আগে ট্রাইব্যুনালে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ট্রাইব্যুনালে তিনি বলেন, এ মামলার আসামিদের প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ সাজা চান।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও আসামি।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে নিয়েছেন।
একই সঙ্গে আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্য বিবরণ প্রকাশ করেন যে আসামি, সাধারণত তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে পরিচিত) হয়েছেন।
মামলার বিচারকার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।