জাতীয়
জাতীয় লজিস্টিক্স উন্নয়ন নীতির খসড়া মন্ত্রিসভায় উঠছে আজ
জাতীয় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সক্ষমতা বাড়ানো, দক্ষতার সঙ্গে পণ্য পরিবহন ও সেবা নিশ্চিতে ‘জাতীয় লজিস্টিকস উন্নয়ন নীতি-২০২৪’ এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।
দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে লজিস্টিকস অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্দেশে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) যৌথ উদ্যোগে লজিস্টিকস ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কিং কমিটি করা হয়। এর আগে মতামত নেওয়ার জন্য জাতীয় লজিস্টিকস উন্নয়ন নীতি-২০২৪ এর খসড়ার গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
জাতীয় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সক্ষমতা বাড়ানো, দক্ষতার সঙ্গে পণ্য পরিবহন ও সেবা নিশ্চিতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকে সভাপতি করে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় লজিস্টিকস উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাকে নিয়ে চলতি গত বছরের ২২ জানুয়ারি ২৯ সদস্যবিশিষ্ট এ জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রথম সভা হয়েছে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি।
জাতীয় লজিস্টিকস উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন, বিদ্যমান নীতি কাঠামো সহজ করা, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো ইত্যাদি বিষয়ে এ কমিটি কাজ করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি এবং লজিস্টিকস খাতকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে সভায় আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, রপ্তানি সক্ষমতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকর্ষণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এ নীতি করা হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে লজিস্টিকস পরিষেবার ব্যয় খাতভেদে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে, যা কমানো গেলে সার্বিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের ফলে একদিকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়বে, অন্যদিকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রাপ্ত বিভিন্ন শুল্ক সহায়তা, ট্রেড রিলেটেড সাপোর্ট মেজারস, স্পেশাল অ্যান্ড ডিফারেনশিয়াল ট্রিটমেন্ট এবং অনেক রিডাকশন কমিটমেন্টের আওতা সংকুচিত হবে। এ নেতিবাচক প্রভাব নিরসনে একটি উন্নত ও দক্ষ লজিস্টিকস ব্যবস্থা স্থাপন করার বিষয়ে সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে মন্ত্রিসভায় ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামে নাটোরে স্থাপনের জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় খসড়া আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে বলেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আজ ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় আসছেন। এবার তিনি ঢাকায় এসে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার কয়েকটি সমন্বিত বৈঠকে অংশ নেবেন।
অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ঢাকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বিস্তৃত ও বহুমুখী আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদের বৈঠকের কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন একটি মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন, এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। লু’র সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব গণমাধ্যমকে বলেন, আলোচনায় শুধু একটি নয়, বিস্তৃত বিষয় থাকবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানান, যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন অগ্রাধিকারে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফরকালে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন।
লু ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকের জন্য একটি আন্তঃসংস্থা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যোগ দেবেন। প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন। সেখানে নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে।
আগামীকাল ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে ডোনাল্ড লু’র।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শনিবার ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু
যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে আসছে। এ ছাড়া প্রতিনিধিদলে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ও ইউএসএইডের এশিয়া বিষয়ক উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌরসহ আরও কয়েকজন।
পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে। এটা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয়, তার একটা বড় প্রতিফলন।
আলোচনায় গুরুত্ব পাবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ যেন ঘুরে দাঁড়ায়, তাই বাংলাদেশের বর্তমান সংকট উত্তরণের চাহিদাগুলো জানতে চাইবে ওয়াশিংটন।
তবে ডোনাল্ড লু ঢাকা আসছেন দিল্লি হয়ে। সেখানে ওয়াশিংটন-দিল্লি প্রতিরক্ষাবিষয়ক ইন্টারসেশনাল সংলাপে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন তিনি। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় ইস্যুর পাশাপাশি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ইউনূসের মেগাফোন কূটনীতিতে ভারতের অস্বস্তি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত অবস্থায় রয়েছে। একদিকে যখন হাসিনার ভারতে থাকার বিষয়টি বাংলাদেশের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকার ভারতকে অবাক করেছে।
বিবিসির আনবারাসান এথিরাজন জানার চেষ্টা করেছেন, এই দুই দেশের সম্পর্ক এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে?
শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবে দেখা হয় এবং তার ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময়টি ভারতের নিরাপত্তার জন্যও সুবিধাজনক ছিল, কারণ শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারত-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দমন করেছিলেন এবং কিছু সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছিলেন।
কিন্তু বর্তমানে ভারতে তার অবস্থান নেয়া এবং তিনি সেখানে কতদিন থাকবেন সে বিষয়টি দুই দেশের দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে। বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে ড. ইউনূসের গত সপ্তাহের এক সাক্ষাৎকারে।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ায় দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, দিল্লিতে থাকার সময় শেখ হাসিনাকে যেন রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়। তিনি ওই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায়, তাহলে শর্ত হচ্ছে তাকে চুপ থাকতে হবে।”
শেখ হাসিনা দিল্লিতে যাবার পর যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তা বাংলাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল, ড. ইউনূস হয়তো সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও এরপর থেকে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে আর কোন বিবৃতি দেননি।
জুলাই ও অগাস্টে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য এবং তাকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের ভেতরে দাবি উঠেছে।
ড. ইউনূস সাক্ষাৎকারে আরো বলেছেন যে, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে একসাথে কাজ করতে হবে। দুই দেশের সম্পর্ক এখন ‘নিম্ন পর্যায়ে’ আছে বলেও তিনি বর্ণনা করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি। তবে কর্মকর্তারা ‘হতাশ’ বলে জানা গেছে।
এক ভারতীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “বাংলাদেশে কী ঘটছে সেগুলোর দিকে ভারত নজর রাখছে এবং ঢাকা থেকে সরকার ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কী ধরনের বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছে সেগুলোর দিকে ভারত লক্ষ্য রাখছে”।
ইউনূসের এ ধরণের বক্তব্যকে ভারতের সাবেক কূটনীতিকরা ‘মেগাফোন কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করছেন এবং বিষয়টিকে তারা বিস্মিত হয়েছেন। ড. ইউনূস মিডিয়ার মাধ্যমে বিতর্কিত দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছেন বলেও তারা মনে করেন।
“বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কথা বলার জন্য এবং দুই দেশের সকল উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য ভারত তাদের প্রস্তুতি থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে,” বলছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার ভিনা সিক্রি। অবসরপ্রাপ্ত এই কূটনীতিক বলেছেন, এই সমস্যাগুলো নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনা করা প্রয়োজন এবং কিসের ভিত্তিতে ড. ইউনূস দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ‘নিম্ন পর্যায়ে’ রয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন তা স্পষ্ট নয়।
তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে।
“ভারতীয় নেতারা কি কোনো মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন না? ড. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তার মতামত প্রকাশ করতে পারেন,” মুকিমুল আহসানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
“আপনি যদি সমালোচনা করতে চান তবে যে কোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন,” বলছিলেন মি. হোসেন।
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ড. ইউনূস টেলিফোনে কথা বললেও এখন পর্যন্ত কোনো মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়নি।
ভারতে একটি বড় ধরণের ঐকমত্য রয়েছে বলে মনে হচ্ছে যে, শেখ হাসিনা যতদিন না অন্য কোন দেশে প্রবেশের অনুমোদন পাচ্ছে, ততদিন তিনি ভারতে থাকতে পারবেন। তবে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বিক্ষোভের সময় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
মি. ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “যেহেতু তাকে বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি করা হয়েছে, আমরা তাকে আইনিভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করব।” তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানালেও শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম।
“তিনি এখানে ভারতের অতিথি হিসেবে অবস্থান করছেন। আমরা যদি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুর প্রতি মৌলিক সৌজন্যতা না করি, তাহলে ভবিষ্যতে কেন কেউ আমাদের বন্ধু হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেবে?” বলেছেন রিভা গাঙ্গুলী দাস, যিনি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার ছিলেন।
মি. ইউনূস তার সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর কাছে না পৌঁছানোর জন্যও দিল্লির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করানো হয়েছে যে সবাই ইসলামপন্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী এবং তারা এই দেশকে আফগানিস্তানে পরিণত করবে। এবং বাংলাদেশ শুধুমাত্র শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ। ভারত এই ব্যাখ্যাতেই বিমোহিত হয়ে আছে।”
কিন্তু ভারতীয় বিশ্লেষকরা ভিন্ন মত পোষণ করেন।
“আমি এই বক্তব্যের সাথে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশে আমাদের হাইকমিশনাররা কোনো লেবেল না দিয়েই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছেন,” ভিনা সিক্রি বলেন।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সময় ঢাকা ও দিল্লির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সেসময় ভারতের উত্তর-পূর্ব থেকে বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঢাকাকে অভিযুক্ত করেছিল দিল্লি। যদিও বিএনপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে বাংলাদেশের অনেকেই উল্লেখ করেছেন যে, ভারতের উচিত বিএনপির সাথে যোগাযোগ করা। সামনে যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন এই দলটি জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
“গত ৫ই অগাস্ট, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে কোনো ভারতীয় কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। আমি কারণ জানি না,” বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উল্টো বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা নিয়মিত বৈঠক করছেন।
শেখ হাসিনার পতনের পরের দিনগুলোয় নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়। এতে সন্দেহভাজন ইসলামপন্থীদের দ্বারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়ে যায়। ভারত ইতোমধ্যে হিন্দুদের ওপর হামলার খবরে বেশ কয়েকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন মাজারে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশে সুন্নি মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, এবং কট্টরপন্থীরা মাজার ও সমাধিকে ‘ইসলাম সম্মত নয়’ বলে মনে করে।
সিরাজগঞ্জ জেলায় আলী খাজা আলী পাগলা পীরের মাজারের তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী তামান্না আক্তার বলেন, “কয়েকদিন আগে একদল লোক এসে আমার শ্বশুরের সমাধি ভাংচুর করে এবং কোনো অনৈসলামিক অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদের সতর্ক করে”।
বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন বলেছেন, যারা ধর্মীয় স্থানকে টার্গেট করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ইসলামী কট্টরপন্থীরা যদি বাংলাদেশে একটি শক্ত অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে সেটা যত ছোটই হোক না কেন, তা দিল্লির জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।
গত কয়েক সপ্তাহে, একজন দণ্ডিত ইসলামী জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে নয়জন সন্দেহভাজন মৌলবাদী গত মাসে জেল ভেঙে পালিয়ে যায় – তাদের মধ্যে চারজনকে পরে গ্রেফতার করা হয়।
নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসিম উদ্দিন রাহমানি গত মাসে জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। শেখ হাসিনার সরকার এই গোষ্ঠীটিকে ২০১৬ সালে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করেছিল।
২০১৫ সালে এক নাস্তিক ব্লগারকে হত্যার অভিযোগে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্যান্য বিচারাধীন মামলার কারণে কারাগারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তিনি কারাগারে ছিলেন।
“গত মাসে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে মুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ভারত চেনে,” প্রাক্তন কূটনীতিক রিভা গাঙ্গুলি দাস একে একটি “গুরুতর বিষয়” বলে অভিহিত করেছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
হত্যা মামলায় প্রমাণ ছাড়া গ্রেপ্তার নয়: পুলিশ সদরদপ্তর
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া হত্যা ও অন্যান্য মামলায় আসামিদের প্রাথমিক তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহার করা হবে। এ ছাড়া সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলেও জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদরদপ্তর থেকে ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসান সই করা এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সারা দেশের থানার অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) পাঠিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হবে। একইসঙ্গে সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়ের করা মামলায় সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থান-কেন্দ্রিক হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্তের আগে কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার নমুনা প্রশ্নে আবু সাঈদ প্রসঙ্গ
চলতি বছরের বিদ্যালয়ের বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের (বার্ষিক পরীক্ষা) নমুনা প্রশ্নে স্থান পেয়েছে সরকারিতে চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের প্রসঙ্গ। নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের একটি নমুনা প্রশ্নে আবু সাঈদের একটি ইলাস্ট্রেশন দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে দুটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ওয়েবসাইটে বার্ষিক সামষ্টিক ওই মূল্যায়ন নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই নমুনা প্রশ্নের আলোকে বিদ্যালয়গুলো নিজেদের মতো করে প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করবে।
এনসিটিবির নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ওই নমুনা প্রশ্নে আবু সাঈদের একটি ছবি দিয়ে দুটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছে।
গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদকে নিয়ে কৌশিক সরকারের আঁকা ছবি স্থান পেয়েছে নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের নমুনা প্রশ্নের একটি অংশে।
বর্তমানে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম চললেও অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এজন্য আগের শিক্ষাক্রমকে প্রাধান্য দিয়ে কার্যক্রম শুরুর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন নির্দেশিকা তৈরি করে দিয়েছে এনসিটিবি। ওই নির্দেশিকায় বিভিন্ন শ্রেণির নানা বিষয়ের নমুনা প্রশ্নও যোগ করে দেওয়া হয়েছে।
নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের জন্য প্রস্তুত করা ওই নমুনা প্রশ্নের একাংশে বলা হয়েছে: ‘নিচের ছবিটি কৌশিক সরকারের আঁকা। ছবিটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করো এবং সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দাও।
‘ক. ছবির বিষয় এবং চিত্রশিল্পী/চিত্রগ্রাহকের দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা কর।
‘খ. ছবিটি ‘স্মৃতিস্তম্ভ’ কবিতার মূল চেতনা তুলে ধরে কি? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।’
প্রশ্নকাঠাতে দেখা গেছে, বাংলার রচনামূলক দৃশ্যপটনির্ভর অংশে ২০ নম্বর প্রশ্নে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আবু সাঈদের ছবি এঁকে তা নিয়ে এই প্রশ্ন করা হয়েছে।
এমআই