আন্তর্জাতিক
বিশ্ব গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার জানাজার খবর
বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় জানাজা বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সম্পন্ন হয়েছে। লাখো মানুষের অশ্রুসিক্ত বিদায় শেষে তাকে শেরেবাংলা নগরে স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম এই মহীয়সী নারীর প্রয়াণ ও বিশাল জানাজার খবরটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘সাবেক নেত্রীকে বিদায় জানাতে ঢাকায় জনতার ঢল’। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘ লড়াই ও সংগ্রামের প্রতীক খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে রাজধানীর রাজপথ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, শুধুমাত্র একনজর দেখার জন্য এবং শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় ছুটে আসেন।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং জিও নিউজ তাদের বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে পুরো বাংলাদেশ এখন শোকাতুর। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো তার রাষ্ট্রীয় জানাজায় বিপুল জনসমাগমকে ঐতিহাসিক হিসেবে বর্ণনা করেছে। অন্যদিকে, ভারতের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তার জানাজার বিশাল জমায়েতের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি দীর্ঘ ও সংগ্রামী অধ্যায়ের অবসান ঘটল। তার জানাজায় সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, সাধারণ জনগণের হৃদয়ে তার অবস্থান কতটা সুদৃঢ় ছিল। সংসদ ভবন এলাকায় জানাজা শেষে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করার মাধ্যমে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের চিরসমাপ্তি ঘটল।
এমকে
আন্তর্জাতিক
ভারতের এক কূটনীতিকের সঙ্গে গোপনে বৈঠক হয় জামায়াত আমিরের
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, তারা আগামী নির্বাচনে ঐক্য সরকার গঠনের কথা চিন্তা করছেন। এছাড়া এক ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার তথ্যও জানিয়েছেন তিনি। জামায়াত আমির দাবি করেছেন, ভারতীয় ওই কূটনীতিকই তাকে বৈঠকটি গোপন রাখতে বলেছেন। এজন্য এটি গোপন রাখা হয়েছে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের পর যেসব দল সরকার গঠন করতে পারে তাদের সঙ্গে ভারত তাদের যোগাযোগের পরিধি বাড়িয়েছে। এমন সময় জামায়াত আমির নিশ্চিত করেছেন এ বছরের শুরুতে এক ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। যদিও অন্যান্য দেশের কূটনীতিকরা তার সঙ্গে প্রকাশ্যে দেখা করেছেন। কিন্তু ভারতীয় কর্মকর্তা জামায়াত আমিরের সঙ্গে হওয়া বৈঠকের বিষয়টি গোপন রাখতে বলেছেন।
ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমাদের সবাইকে অবশ্যেই একেঅপরের সঙ্গে খোলামেলা হতে হবে। আমাদের সম্পর্ক ভালো করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।”
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে জামায়াত আমিরের সঙ্গে তাদের কূটনীতিকের বৈঠকের বিষয়টি সরাসরি নিশ্চিত করেনি তারা। কিন্তু ভারত সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক’ সম্পর্কের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা সবার সঙ্গে ভারসামপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখি। আমরা কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশের দিকে ঝুঁকতে আগ্রহী নই। এরবদলে আমরা সবাইকে সম্মান করি এবং সব দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চাই।” সূত্র: রয়টার্স।
এমকে
আন্তর্জাতিক
নতুন বছরে যুদ্ধ লাগতে পারে ভারত-পাকিস্তান
দক্ষিণ এশিয়ায় আবারও যুদ্ধের আশঙ্কা দেখছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স (সিএফআর)। সংস্থাটির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে ২০২৬ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। খবর এনডিটিভি।
গত রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করা এক জরিপে এই মূল্যায়ন উঠে এসেছে। এতে চলমান আঞ্চলিক উত্তেজনা ও সাম্প্রতিক সংঘর্ষগুলোর প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসন কঙ্গো, গাজা, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন সংঘাত নিরসনের চেষ্টা চালালেও ভারত-পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ডের উত্তেজনা উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে।
প্রতিবেদনে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, চলতি বছরের মে মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিন দিনের একটি সামরিক সংঘাত ঘটে। ৬ মে রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে অভিযান চালায়। ভারতের দাবি, ওই অভিযানে সন্ত্রাসী শিবির লক্ষ্য করে ১০০ জনের বেশি জঙ্গি নিহত হয়।
পাল্টা হামলায় ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত পাকিস্তান সশস্ত্র ড্রোন দিয়ে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। পরে ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ১০ মে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
সিএফআর আরও জানায়, চলতি বছর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যেও সীমান্ত উত্তেজনা বেড়েছে। অক্টোবরে কাবুলে টিটিপি প্রধান নুর ওয়ালি মেহসুদকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের বিমান হামলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।
প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা বাড়লে ২০২৬ সালে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের মধ্যেও ‘মাঝারি মাত্রার’ সশস্ত্র সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শোক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে তিনি এ শোক প্রকাশ করেন।
পোস্টে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর পরিবার এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। সর্বশক্তিমান তার পরিবারকে এই শোক সহ্য করার শক্তি দান করুন।’
তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
নরেন্দ্র মোদি আরও লিখেছেন, ‘ঢাকায় ২০১৫ সালে তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাতের কথা আমি স্মরণ করছি। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এবং উত্তরাধিকার দুই দেশের অংশীদারিত্বকে পরিচালিত করবে বলে আমরা আশা করি। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
এমকে
আন্তর্জাতিক
বৃষ্টি-শীতের তাণ্ডবে ভয়াবহ ভোগান্তিতে গাজার ফিলিস্তিনিরা
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শীতকালীন বৃষ্টি ও তীব্র ঠান্ডা নতুন করে ভয়াবহ দুর্ভোগ ডেকে এনেছে। লাখো বাস্তুচ্যুত মানুষ এখন ছেঁড়া-ফাটা তাঁবু ও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দীর্ঘদিনের দখলদার ইসরাইলের বর্বর হামলায় ঘরবাড়ি হারানো এসব মানুষের জন্য প্রকৃতির এই প্রতিকূলতা যেন আরেক দফা দুর্যোগ।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) গাজার ওপর দিয়ে শক্তিশালী নিম্নচাপ বয়ে গেছে। ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ায় অনেক এলাকায় তাঁবু ভেসে গেছে, আশ্রয়কেন্দ্র প্লাবিত হয়েছে। চলতি শীত মৌসুমে এটি তৃতীয় বড় ধরনের নিম্নচাপ, আর সামনে আরও একটি শক্তিশালী ঝড় আসার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক পরিবার ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকেই তাঁবুতে বসবাস করছে। প্রায় পুরো যুদ্ধকালজুড়েই তারা স্থায়ী কোনো আশ্রয় পায়নি। আসন্ন বৃষ্টি ও শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে ভারী বর্ষণে গাজার বহু তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয় ডুবে যায়। কারণ, উপত্যকার অধিকাংশ স্থাপনা আগেই দখলদয়ার বাহিনীর বর্বর হামলায় ধ্বংস বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুধু ডিসেম্বর মাসেই ঠান্ডাজনিত কারণে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজন শিশু। প্রবল শীত ও ভেজা পরিবেশে হাইপোথার্মিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কিছু ভবন ধসে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।
গাজা পোর্ট এলাকায় সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মকর্তা ইব্রাহিম আবু আল-রিশ জানান, ঝড়ের মধ্যে ভঙ্গুর তাঁবুতে থাকা মানুষেরা সাহায্যের জন্য তাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমরা প্লাস্টিক দিয়ে ডুবে যাওয়া তাঁবু ঢাকার চেষ্টা করছি, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়।”
আল জাজিরার প্রতিবেদক ইব্রাহিম আল খলিলি বলেন, নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে শীতের প্রকোপ বাস্তুচ্যুত মানুষের দুর্ভোগ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বৃষ্টিতে কাদায় তলিয়ে যাচ্ছে পুরো এলাকা, একই কষ্ট বারবার ফিরে আসছে।
মানবিক সংস্থাগুলো বলছে, এই সংকট মোকাবিলায় দ্রুত আরও ত্রাণ ও আশ্রয় সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া জরুরি।
এই মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফরের প্রস্তুতির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। গেল ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি এখনো আংশিকভাবে টিকে আছে। যদিও শতাধিকবার ইসইরাইল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪১৪ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ হাজার ১৪২ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৬৭৯টি মরদেহ।
সর্বশেষ হিসাবে, দখলদার বাহিনীর হামলা শুরু হওয়ার পর গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৭১ হাজার ২৬৬ জনে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ।
এমকে
আন্তর্জাতিক
জান্তাশাসিত মিয়ানমারে ৫ বছর পর ভোটগ্রহণ চলছে
দীর্ঘ পাঁচ বছরের প্রতীক্ষা আর রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর অবশেষে ভোট শুরু হয়েছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম দেশটিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছে জান্তা সরকার। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে রাজধানী নেইপিদো, বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয়সহ জান্তানিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে কড়া পাহারায় ভোটগ্রহণ চলছে।
এএফপি জানিয়েছে, জান্তা শাসিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে এই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে তিন ধাপে মোট এক মাস ধরে। তবে সংঘাতবিক্ষুব্ধ মিয়ানমারের বড় একটি অংশ এখন বিদ্রোহীদের দখলে থাকায় সেসব অঞ্চলে কোনো ভোট হচ্ছে না। গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি-র দল এনএলডি-কে নিষিদ্ধ রেখে এই নির্বাচন আয়োজন করায় বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
২০২০ সালের শেষ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু কারচুপির অজুহাতে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জেনারেল মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর সু চিসহ হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে বন্দি করা হয়। ২০২৩ সালে এনএলডি-কে বিলুপ্ত ঘোষণা করে জান্তা সরকার, যার ফলে এবারের নির্বাচনে জনগণের প্রিয় দলের কোনো অংশগ্রহণ নেই।
বর্তমানে কারাগারে বন্দি অং সান সু চির বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা দিয়েছে জান্তা। সব মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তার প্রায় ১৫০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন মূলত সামরিক জান্তার ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার একটি কৌশল মাত্র। যেখানে বড় শহরগুলোতে ভোটের আমেজ থাকলেও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত প্রদেশগুলোতে জান্তার কোনো কর্তৃত্ব নেই।
মিয়ানমারের এই নির্বাচন লোহিত সাগর বা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতির মতোই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এক নতুন অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের চলমান লড়াইয়ের মধ্যে এই একপাক্ষিক ভোট মিয়ানমারকে কতটা স্থিতিশীল করতে পারবে, তা নিয়েই এখন বড় প্রশ্ন।
এমকে




