অর্থনীতি
১৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে খানপুরে হবে কনটেইনার-বাল্ক টার্মিনাল
নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই কনটেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হবে ১৮৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৭ হাজার ৮০৯ টাকা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে এই অর্থ ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের প্যাকেজ (পূর্ত কাজ-৩) ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৭টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। তার মধ্যে ৫টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ঢাকার ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড থেকে ১৮৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৭ হাজার ৮০৯ টাকায় এই পূর্ত কাজ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথম সংশোধিত প্রকল্পটি একনেক থেকে অনুমোদিত হয় চলতি বছরের ১৮ জুন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
খানপুর প্রকল্পের আওতায় সিমেন্ট, সার, অন্যান্য শুকনা বাল্ক ও খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম ও ক্যানোপিসহ সিএফএস শেড নির্মাণ, ৬ তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, ভূগর্ভস্থ প্রধান বিদ্যুৎ লাইন, হাই মাস্ট টাওয়ার, সীমানা প্রাচীর ও নিরাপত্তা আলোকায়ন ব্যবস্থা, সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, লাইটনিং অ্যারেস্টার, সমগ্র টার্মিনাল এলাকায় বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থা (রিচ ফর্কলিফট ট্রাকসহ), আসবাবপত্র, সিসিটিভি ও সমন্বিত ভবন ব্যবস্থাপনা সিস্টেমসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব কাজ রয়েছে।
অর্থনীতি
৪২৬ কোটি টাকার সার-ফসফরিক অ্যাসিড কিনবে সরকার
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭০ হাজার টন ইউরিয়া সার এবং চট্টগ্রামের টিএসপিসিএলের জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৪২৫ কোটি ৮২ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৩ টাকা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠেকে এই অর্থ ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের টিএসপিসিএলের জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৯৭ কোটি ৭০ লাখ ৪১ হাজার ৮ টাকা।
জানা গেছে, টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক অ্যাসিড ও রক ফসফেট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র একটি দরপত্র জমা পড়ে। প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান চীনের এম/এস গুয়াংসি পেংইউয়ে ইকো-টেকনোলজি কোং লিমিটেড থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিড মোট ৭৫ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৯৭ কোটি ৭০ লাখ ৪১ হাজার ৮ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ফসফরিক অ্যাসিডের দাম ৭৫০ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ইউরিয়া সার কিনতে ব্যয় হবে ১৩৭ কোটি ৫৩ লাখ ১৩ হাজার ৬২৫ টাকা।
জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পরিকল্পনা মোতাবেক কাফকো, বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনার সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১০ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার জন্য প্রাইস অফার পাঠাতে অনুরোধ করা হলে কাফকো, বাংলাদেশ প্রাইস অফার পাঠায়।
কাফকোর সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৭৩.৬২৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ১ কোটি ১২ লাখ ৮ হাজার ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩৭ কোটি ৫৩ লাখ ১৩ হাজার ৬২৫ টাকা।
এছাড়া বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৯০ কোটি ৫৯ লাখ ২৩ হাজার ৬৪০ টাকা।
জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন এবং আপদকালীন ও জরুরি পরিস্থিতি এবং দেশীয় কারখানায় সারের ঘাটতি মোকাবিলায় আরও ৩ লাখ মেট্রিক টনসহ মোট ৬ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি করা হয়।
সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রতি মেট্রিক টন ৩৮৮ দশমিক ৩৩ মার্কিন ডলার হিসাবে ৪০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ১ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ মার্কিন ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৯০ কোটি ৫৯ লাখ ২৩ হাজার ৬৪০ টাকা।
অর্থনীতি
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বড় ভূমিকা রেখেছে রেমিট্যান্স: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রবাসী ব্যবসায়ীদের দেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রবাসীদের বিনিয়োগ দেশের জন্যে সবচেয়ে বড় কার্যকর সাহায্য। বিনিয়োগে করলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশ উপকৃত হয়। এতে মানুষ নিজেরাই নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। আর গত দেড় বছরে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বড় ভূমিকা রেখেছে রেমিট্যান্স।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরাটন হোটেলে এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনআরবি ওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা এনামুল হক এনাম, এনআরবি ফ্যামিলি সাপোর্টের চেয়ারম্যান জলিল খান প্রমুখ।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন একটি স্বতন্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ জনগোষ্ঠী। দেশের উন্নয়নে তাদের ভূমিকা অনেক বড়।
তিনি বলেন, শুরুতে বাংলাদেশিরা কাজের জন্য যুক্তরাজ্যে যেতেন। পরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাওয়া বাড়ে। এখনো সবচেয়ে বেশি প্রবাসী মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তৌহিদ হোসেন বলেন, গত দেড় বছরে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বড় ভূমিকা রেখেছে রেমিট্যান্স। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত শ্রমিকদের অবদান এতে সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় তরুণরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে অবৈধভাবে যাচ্ছে। তাদের এই মরিয়া হয়ে যাওয়ার কারণ হলো সুযোগের অভাব।প্রবাসীরা যদি দেশে সুযোগ সৃষ্টি করেন, সেটাই হবে তরুণদের জন্য সবচেয়ে বড় অবদান। তবে বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর বানানোর স্বপ্ন না দেখে বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নিতে হবে। অন্তত ভিয়েতনাম বা ভারতের মতো জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব। প্রবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে।
বক্তব্যের শুরুতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্মৃতিচারণ করেন তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন না। তিনি দেশের নেতা ছিলেন। গণতন্ত্র রক্ষায় তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি কখনো আদর্শ থেকে সরে যাননি। তার মৃত্যুতে তিনি শোক প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
অর্থনীতি
সুইজারল্যান্ড থেকে এলএনজি আমদানি করবে সরকার
সুইজারল্যান্ডের সোকার ট্রেডিং এসএ থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে স্বল্পমেয়াদে এলএনজি আমদানির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। একই সঙ্গে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে টিভিসি, ভিডিও ডকুমেন্টরি প্রচারের ক্যারাভান অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য ভৌত সেবা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে দেশীয় উৎপাদিত গ্যাসের পাশাপাশি মধ্য দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদি ভিত্তিতে এবং স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে সুইজারল্যান্ডের সোকার ট্রেডিং এসএ জিটুজি ভিত্তিতে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি সরবরাহ এবং এফএসআরইউ (ভাসমান সংরক্ষণ ও পুনঃগ্যাসীকরণ ইউনিট) স্থাপনের জন্য আগ্রহ ব্যক্ত করে প্রস্তাব দাখিল করে।
জিটুজি কমিটির সভায় গ্যাসের সরবরাহ নির্বিঘ্ন করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় সুইজারল্যান্ডের সোকার ট্রেডিং এসএ থেকে ২০২৬ সালে স্বল্পমেয়াদে কিছু সংখ্যাক এলএনজি কার্গো আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে পিপিএ ২০০৬ এর ৬৮ ধারা এবং পিপিআর ২০২৫ এর ৯৯(২) এবং ১০৭(২) বিধি মোতাবেক সুইজারল্যান্ডের সোকার ট্রেডিং এসএ থেকে জিটুজি সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বল্প মেয়াদে এলএনজি ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদ তা পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
এছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৈঠকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজনের লক্ষ্যে জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে নির্মিত আকর্ষণীয় প্রচারসামগ্রী- যথা টিভিসি, ভিডিও ডকুমেন্টরি ইত্যাদি দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচারে অধিকতর ক্যারাভান অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য ভৌত সেবা ক্যাটাগরিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগের অনুমোদন চাওয়া হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এই প্রস্তাবটিও অনুমোদন দিয়েছে।
অর্থনীতি
২৯ দিনে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স
চলতি মাসের প্রথম ২৯ দিনে দেশে এসেছে ৩ বিলিয়ন ৪ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ প্রায় ৩৭ হাজার ১০০ কোটি ২০ লাখ টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত বছর রমজানের ঈদ কেন্দ্র করে মার্চ মাসে একক মাসে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বরের প্রথম ২৮ দিনে এসেছে ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫১ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি। গত বছর একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৪২ কোটি ১০ লাখ ডলার।
চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬০৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪২ কোটি ১০ লাখ ডলার বেশি। এ সময়ে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর ওপর প্রণোদনা, বৈধ পথে টাকা পাঠাতে উৎসাহ এবং এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর সক্রিয় ভূমিকার কারণে প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের ৬ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৬৭ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বেশি। এ হিসাবে অর্থবছরভিত্তিক প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স এসেছে— জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার এবং নভেম্বরে ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলার।
২০২৪–২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল ওই অর্থবছরের রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার— আগের বছরের তুলনায় যা ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
অর্থনীতি
ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল কিনছে সরকার
রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজন ও জনস্বার্থে ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি চালের দাম ধরা হয়েছে ৪৪ টাকা ১ পয়সা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই চাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
এর প্রেক্ষিতে দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ৬টি দরপত্র জমা পড়ে। ৬টি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের বগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৯.৭৭ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ ডলারে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২২০ কোটি ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০৫ টাকা। প্রতি কেজি চালের ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ৪৪ টাকা ১ পয়সা।
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে ভারত ও পাকিস্তান থেকে ১ লাখ টন চাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে ৪৩ টাকা ৫১ পয়সা কেজি দরে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সেদ্ধা চাল এবং পাকিস্তান থেকে ৪৮ টাকা ৩০ পয়সা কেজি দরে ৫০ হাজার টন আতপ চাল ছিল।
জানা গেছে, দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি দরপত্র জমা পড়ে। ৪টি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি’র সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের এম/এস পাত্তাভি অ্যাগ্রো ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারে এই চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২১৭ কোটি ৫৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬৬৫ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫৫.৭৭ ডলার।
এছাড়া দেশের সরকারি খাদ্য মজুত বৃদ্ধি করে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল জিটুজি পদ্ধতিতে পাকিস্তান থেকে আমদানির জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হয়। বাংলাদেশের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানের ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তান চাল সরবরাহের আগ্রহ ব্যক্ত করে পত্র পাঠায়।
পরবর্তীতে দুই দেশেরে মধ্যে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে নির্ধারিত প্রতি মেট্রিক টন ৩৯৫ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ১ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৪১ কোটি ৫২ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা।




