রাজনীতি
ফার্স্ট লেডি থেকে প্রধানমন্ত্রী: খালেদা জিয়ার ১০টি অনন্য অর্জন
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
চার দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক ব্যতিক্রমী ও প্রভাবশালী চরিত্র। ক্ষমতার পালাবদল, রাজনৈতিক সংকট, কারাবাস—সবকিছু পেরিয়েও নির্বাচনী রাজনীতিতে তিনি ছিলেন প্রায় অপ্রতিরোধ্য। তার রাজনৈতিক জীবনে এমন কিছু রেকর্ড ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত রয়েছে, যা তাকে সমসাময়িক অন্য সব নেতার থেকে স্বতন্ত্র উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
নিচে তুলে ধরা হলো বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিরল ১০টি রেকর্ড—
নির্বাচনে কখনো পরাজিত না হওয়া
বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রেকর্ড হলো-তিনি জীবনে অংশগ্রহণ করা কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনে (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনসহ) তিনি মোট ২৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং প্রতিটিতেই বিজয়ী হন। এতগুলো ভিন্ন আসনে দাঁড়িয়ে শতভাগ সাফল্যের নজির বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল।
পাঁচ আসনে জয়ের ‘হ্যাটট্রিক’
তৎকালীন নির্বাচনী আইন অনুযায়ী একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচটি আসনে নির্বাচন করতে পারতেন। ১৯৯১, ১৯৯৬ (জুন) ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া পাঁচটি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবগুলোতেই জয় পান। পরবর্তীতে আইন পরিবর্তনের পর ২০০৮ সালে তিনটি আসনে দাঁড়িয়ে তিনটিতেই বিজয়ী হন।
ছয়টি ভিন্ন জেলা থেকে সংসদ সদস্য
খালেদা জিয়া দেশের ছয়টি ভিন্ন জেলা—বগুড়া, ফেনী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও খুলনা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হওয়ার এমন রেকর্ড অন্য কোনো শীর্ষ রাজনীতিবিদের নেই।
ফার্স্ট লেডি থেকে প্রধানমন্ত্রী
তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র নারী যিনি ফার্স্ট লেডি এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী—দু’টি পরিচয়েই রাষ্ট্র পরিচালনার অংশ ছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব পালনের পর তিনি নিজেই সরকারপ্রধান হন।
সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের নায়ক
১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে বেগম খালেদা জিয়া দ্বাদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থা বাতিল করে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে তার অন্যতম বড় রাজনৈতিক অবদান হিসেবে দেখা হয়।
নারী শিক্ষায় যুগান্তকারী উদ্যোগ
তার সরকারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য অর্জন ছিল মেয়েদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করা। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নারী শিক্ষায় বিপ্লব ঘটায় এবং আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা
২০০১ সালে তার সরকার প্রথমবারের মতো ‘মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করে। এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
পরিবেশ রক্ষায় পলিথিন নিষিদ্ধ
২০০২ সালে তার সরকার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। সে সময় এটি ছিল আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত ও প্রশংসিত একটি সিদ্ধান্ত।
সার্কের প্রথম নারী চেয়ারপারসন
১৯৯২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে তিনি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার প্রথম নারী চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন—যা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বের এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সাংবিধানিক স্বীকৃতি
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানের অংশ করেন বেগম খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ক্ষমতা ছাড়ার এই নজিরও তাকে অনন্য করে তোলে।
বর্ণাঢ্য এই রাজনৈতিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারমূলক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক স্থায়ী অধ্যায় হয়ে থাকবেন।
এমকে
রাজনীতি
রুমিন ফারহানাসহ বিএনপির ৯ নেতা বহিষ্কার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে ৯ নেতাকে বহিষ্কার করেছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোটেক রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কার হওয়া নেতারা হলেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ শাহ আলম, হাসান মামুন, আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তরুণ দে, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন বাঞ্চারামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ।
এই নেতাদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই নেতাদের বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনটি শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। এ আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের মনোনয়ন পেয়েছেন জমিয়তের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও দলটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তবে মনোনয়ন না পেলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘের শোক
বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতিসংঘ গভীর শোক প্রকাশ করছে।’
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ‘এই দুঃখজনক মুহূর্তে জাতিসংঘ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার এবং প্রিয়জনদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে তার সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছে।’
এদিকে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ‘খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া।
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার জানাজা বুধবার দুপুর ২টায়
আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর দুপুর ২টায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার মাঠ এবং মানিক মিয়া এভিনিউসংলগ্ন এলাকায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
আজ মঙ্গলবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব তথ্য জানান।
মির্জা ফখরুল জানান, জানাজা পড়াবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আবদুল মালেক।
এ ছাড়া পুরো আয়োজনের সঞ্চালনায় থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। জানাজা শেষে ‘জিয়া উদ্যানে’ জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে তাকে শায়িত করা হবে।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা-দাফন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেন দলটির শীর্ষ নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এমকে
রাজনীতি
খালেদা জিয়া গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন: তারেক রহমান
খালেদা জিয়া গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান লিখেছেন, আমার মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
‘অনেকের কাছে তিনি ছিলেন দেশনেত্রী, আপোষহীন নেত্রী; অনেকের কাছে গণতন্ত্রের মা, বাংলাদেশের মা। আজ দেশ গভীরভাবে শোকাহত এমন একজন পথপ্রদর্শককে হারিয়ে, যিনি দেশের গণতান্ত্রিক পথযাত্রায় অনিঃশেষ ভূমিকা রেখেছেন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের জন্য। আজীবন লড়েছেন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে; নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে।
‘ত্যাগ ও সংগ্রামে ভাস্বর হয়েও তিনি ছিলেন পরিবারের সত্যিকারের অভিভাবক; এমন একজন আলোকবর্তিকা যার অপরিসীম ভালোবাসা আমাদের সবচেয়ে কঠিন সময়েও শক্তি ও প্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি বারবার গ্রেপ্তার হয়েছেন, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, সর্বোচ্চ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তবুও যন্ত্রণা, একাকিত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও তিনি অদম্য সাহস, সহানুভূতি ও দেশপ্রেম সঞ্চার করেছিলেন পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মাঝে।’
তারেক রহমান আরও লিখেছেন, দেশের জন্য তিনি হারিয়েছেন স্বামী, হারিয়েছেন সন্তান। তাই এই দেশ, এই দেশের মানুষই ছিল তার পরিবার, তার সত্তা, তার অস্তিত্ব। তিনি রেখে গেছেন জনসেবা, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
‘আপনারা সবাই আমার মার জন্য দোয়া করবেন। তার প্রতি দেশবাসীর আবেগ, ভালোবাসা ও বৈশ্বিক শ্রদ্ধায় আমি ও আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ।’
এর আগে, ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৬টায় খালেদা জিয়ার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বেগম জিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া সাত দিন শোক পালনের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনামলে দীর্ঘদিন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন খালেদা জিয়া, কারাভোগ করেছেন। চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হয়নি। ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেগম জিয়া। এরপর করোনার কারণে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিলেও গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় বন্দি রাখা হয়।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে চিকিৎসা না পাওয়ায় ধীরে ধীরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় খালেদা জিয়ার।
এরমধ্যে ২০২৪ সালের জুলাইতে কোটা সংস্কার আন্দোলন দাবিতে দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন, যা শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের আন্দোলনে গড়ায়। টানা ৩৫ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে পর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনা। পরদিন ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। তার স্বাস্থ্যের অনেকটা উন্নতি হয়েছিল। তবে নানা রোগে জটিলতা ও শরীর–মনে ধকল সহ্য করে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। বয়সও ছিল প্রতিকূল। প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তেন। হাসপাতালে ভর্তি করানো হতো।
সবশেষে গত ২৩ নভেম্বর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এক মাসের কিছু বেশি সময় তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এমকে
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে জামায়াত আমিরের শোক
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে দেওয়া স্টাটাসে তিনি এই শোক প্রকাশ করেন।
তিনি লিখেছেন-‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে রহম করুন, ক্ষমা করুন এবং তাঁর প্রিয় জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।
তাঁর আপনজন, প্রিয়জন ও সহকর্মীদেরকে মহান আল্লাহ সবরে জামিল দান করুন। আমিন।
এমকে




