জাতীয়
১ জানুয়ারি বন্ধ হচ্ছে অতিরিক্ত মোবাইল সিম
মোবাইল সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো কঠোর অবস্থান নিচ্ছে সরকার। অনিয়ম ও অপব্যবহার রোধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে একজন গ্রাহক তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৫টি সিম সক্রিয় রাখতে পারবেন।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্তমানে যাদের নামে ছয় থেকে ১০টি সিম রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও ধাপে ধাপে সংখ্যা কমিয়ে পাঁচে নামিয়ে আনা হবে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, অনিয়ম ও অপব্যবহার কমিয়ে আনতে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। যদিও মোবাইল ফোন অপারেটররা আগের মতোই এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বে সিম ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। এ তালিকায় বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মতো দেশ।
বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবরে দেশে মোবাইল সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোন ৮ কোটি ৫৯ লাখ, রবি ৫ কোটি ৭৫ লাখ, বাংলালিংক ৩ কোটি ৭৯ লাখ, টেলিটক ৬৬ লাখ ৭০ হাজার। বর্তমানে দেশে মোট নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা ২৬ কোটি ৬৩ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১৯ কোটি সিম সক্রিয়, বাকিগুলো নিষ্ক্রিয় রয়েছে।
গত আগস্টে এক ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সক্রিয় সিম থাকলে অতিরিক্ত সিম ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাতিল বা মালিকানা পরিবর্তনের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। সংস্থার তথ্যমতে, সে সময় এক ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সক্রিয় সিম ছিল প্রায় ৬৭ লাখ। এর মধ্যে গত তিন মাসে প্রায় ১৫ লাখ সিম গ্রাহক স্বেচ্ছায় বাতিল করেছেন। তবে এখনো প্রায় ৫০ থেকে ৫৩ লাখ সিম বাতিল হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব সিম বাতিল না করায় সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে সেগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
জাতীয়
ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি দুর্বল করবে বাংলাদেশকে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতির যে প্রবণতা দৃশ্যমান হচ্ছে, বাংলাদেশের এগিয়ে চলার পথে যে কতটা অন্তরায় তৈরি করবে, তা তুলে ধরলেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেছেন, ধর্মভিত্তিক যে বিভাজনের রাজনীতি হচ্ছে, এটা শেষ বিচারে দেশের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করবে। এটা শেষ বিচারে বাংলাদেশের সমাজকে দুর্বল করবে। ধর্মভিত্তিক বা জাতিগত পরিচয়ের রাজনীতি আগামী দিনে দেশের অর্থনীতিকে কিন্তু দুর্বল করবে। বৈশ্বিক অবস্থানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককেও দুর্বল করবে।
আজ শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আয়োজনে ‘সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার: বর্তমান বাস্তবতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল সংলাপে এ কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, দেশে এখন নিরাপত্তাবোধের অভাব শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা জাতিগত সংখ্যালঘুর মধ্যে সীমিত নেই। এটি সার্বিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
নিরাপত্তার বিষয়টি এখন বড় হয়ে দেখা দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এই নিরাপত্তাবোধের অভাবটা শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা জাতিগত সংখ্যালঘুর মধ্যে সীমিত নয়। নিরাপত্তাবোধের অভাব নারী, মাজার ও সুফির মতো বিভিন্ন ধরনের দার্শনিক চিন্তাভাবনার মানুষ, ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটি, আহমদিয়া সম্প্রদায় ইত্যাদি অনেকের জন্য সত্য। এটা একটা সার্বিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জীবনে বিপত্তি সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, খ্রিষ্টানদের বড়দিনের উৎসবে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অত্যাচার হয়েছে। এগুলো বাংলাদেশের যারা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আছে, তাদেরকে একই ধরনের আচরণ করার ক্ষেত্রে উৎসাহ জোগায়। ভারতবর্ষে কী হচ্ছে—এ দায়দায়িত্ব বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেওয়া উচিত নয়।
তবে সার্বিক বিষয়গুলোতে সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যে মানুষ দেখছে, তা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই নতুন একতাবোধকে যদি ধারণ করা না যায়, তাহলে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, দেশপ্রেম অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার পর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে কথা বলেছেন, তা তুলে ধরে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে সামনে আনার উপলব্ধিটা সঠিক। নিরাপদ বাংলাদেশ করার ক্ষেত্রে নির্বাচনপূর্ব এবং নির্বাচন–পরবর্তী সময়ে পদক্ষেপ কী হবে, এটা এখন বোঝার বিষয়। তিনি মার্টিন লুথার কিংয়ের শব্দকে নিজের মতো করে বলেছেন। ওই প্ল্যানের (উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান) ভেতরে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অবস্থান কী হবে? মানবাধিকারের ভিত্তিতে দেশে একটি নাগরিক সমাজ গড়ে উঠবে—এ কথা কি থাকবে?
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আন্দোলনকারীদের একটি স্লোগান তাঁর মনে নাড়া দিয়েছে। সেটি হলো সুশীলতার দিন শেষ, জবাব চায় বাংলাদেশ।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সেই সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ শুধু জবাব চায় না যে হাদির হত্যাকারীদের বিচার হোক। বাংলাদেশ এই জবাব চায়, তার নিজস্ব নাগরিকদের অধিকার কীভাবে রক্ষিত হবে, সেই জবাবটাও একই সঙ্গে দিতে হবে। যে নারীকে অত্যাচার করা হয় শুধু তাঁর পোশাকের জন্য, তার বিচারটা কী হবে? যে বাউলগান গাইতে পারে না, তাঁর অধিকারটা কী হবে? এসবের জবাব দিতে হবে।
আবার বাংলাদেশে চলমান নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুদের কেউ যাতে যুক্ত না হয়, সেই সতর্কবার্তাও দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
এই সংলাপে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিওর সভাপতিত্বে এই সংলাপে আরও বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সারা হোসেন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম এ আজিজ, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায়, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দেব প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জন কর্মকার।
জাতীয়
একই পরিবারের হিন্দিভাষী ১৪ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা এলাকার সীমান্ত দিয়ে ভারতের ওডিশা রাজ্যে বসবাসরত একই পরিবারের ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। তাদের মধ্যে ছয়জন নারী ও চারজন শিশু।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঠেলে পাঠানোর পর দর্শনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই হয় তাদের।
পরদিন শুক্রবার রাতে খবর পেয়ে কনকনে শীত নিবারণের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ভুক্তভোগীদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন। পরে পুলিশ ও বিজিবি তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায়।
ভুক্তভোগীদের দাবি, তারা ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা। দেশটির ওডিশা রাজ্যের সাতকুড়া ধনিপুরে ৭০ বছর ধরে সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন।
তারা সবাই মুসলিম ও ভারতের ওডিশার নাগরিক। সেখানে তাদের বাড়িঘর রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে আব্দুল জব্বার নামের একজন জানান, আড়াই বছর বয়সে বাবা-মায়ের হাত ধরে তারা ওডিশায় বসবাস শুরু করেন। সেখানেই তাদের বিয়ে ও সংসার শুরু হয়।
বাংলাদেশের কোন জেলায় তাদের বাড়ি ছিল, তার কিছুই জানেন না তিনি। মাসখানেক আগে এক গভীর রাতে সেখানকার পুলিশ জব্বারসহ তাঁর পরিবারের ১৪ সদস্যকে ধরে নিয়ে যায়। আটগড় জেলখানায় এক মাস পাঁচ দিন হাজতবাস শেষে গত বৃহস্পতিবার সবাই মুক্তি পান। ওইদিন রাত ৩টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা তাদের জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। ভারতীয় পুলিশ তাদের ‘বাংলাদেশি’ অপবাদ দিয়ে ধরে জেলে পাঠায়।
এ সময় তাদের আধার কার্ড, রেশন কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর সীমান্তে এনে কাঁটাতারের বেড়ার গেট খুলে তাদের ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দর্শনা নীমতলা সীমান্ত গলিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে তাদের। শুক্রবার ভোরে তারা অবস্থান নেন দর্শনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। তবে ওইদিন রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়। এদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেন তাা।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ঠেলে পাঠানো ভুক্তভোগীদের মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ। তাদের সবাইকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা করানো হবে। চিকিৎসা শেষে জেলা প্রশাসক ও দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন-আদালত
নতুন প্রধান বিচারপতির শপথ রোববার
দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর শপথ অনুষ্ঠান আগামী রোববার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ১০টায় বঙ্গভবনে তাকে শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে যুক্তরাজ্য থেকেও আন্তর্জাতিক আইনে এলএলএম ডিগ্রি নেন। ১৯৮৫ সালে তিনি জেলা আদালতে ও ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি ও দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ২০২৮ সালের ১৭ মে অবসরে যাবেন।
জাতীয়
তারেক রহমানকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত রোববার
সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় নাম তুলতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নথি রোববার (২৮ ডিসেম্বর) কমিশনের কাছে উত্থাপন করা হবে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে দুপুরে তারেক রহমান ও তার কন্যা নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এসে ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেন।
ইসি সচিব বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং উনার মেয়ে জাইমা রহমান আজকে ভোটার নিবন্ধন ফর্ম জমা দিয়ে এখানে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।
ভোটার তালিকা আইনের ২০০৯ এর ১৫ ধারা অনুযায়ী কমিশনের এখতিয়ার আছে যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক বা ভোটার হওয়ার সক্ষম ব্যক্তিকে ভোটার করতে পারেন। সেই বিবেচনায় ওনারা ঢাকা-১৭ আসনের ১৯ নং ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় নিবন্ধন হয়েছেন।
ইসি সচিব বলেন, এটা আজকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া যেটা আছে, সেটা আমাদের বলা হয় যে ফরম ২। ওই ফরম ফিলাপ করে ওনারা ছবি তুলেছেন, বায়োমেট্রিক্স দিয়েছেন এবং ওনারা আবেদন করেছেন যে ওনাদের যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আগামীকাল কমিশনে এটা পেশ করা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্তের পরে ওনারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি হবেন। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি যেটা আগামী ১২ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত। সেক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত লাগবে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, উনারা আগেই অনলাইনে ফরম পূরণ করেছেন। এখন আমাদের কাছে এসে কেবল আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
এনআইডি ডিজি বলেন, এরপর সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য সার্ভারে সার্চ করে দেখবে যে সেটা কারো সঙ্গে ম্যাচ করে কিনা। ম্যাচ না করলে ৫ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এনআইডি নম্বর জেনারেট হবে। এটা আমাদের কারো হাতে নেই।
এক্ষেত্রে আমাদের কাছ থেকেও এনআইডি বা স্মার্টকার্ড নিতে পারবেন। আবার নিবন্ধনকারীর মোবাইলে মেসেজ যাবে, সেখান থেকেও ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সপরিবারে দেশে ফিরেছেন তারেক রহমান। বিএনপি আগেই জানিয়েছিল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ভোটার হবেন। এর আগে দলটির পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে বগুড়া-৬ আসনের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে হলে যে কোনো এলাকার ভোটার হলেই হয়। ২০০৮ সালের ছবিযুক্ত ভোটার তালিকার সময় সঙ্গত কারণে ভোটার হতে পারেননি তিনি। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে। তার আগেই ভোটার হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে মা জুবাইদা রহমানের সঙ্গে ইটিআই ভবনে আসেন জাইমা রহমান। নিবন্ধন সম্পন্ন করে বেরিয়ে যান পৌনে ১টার দিকে।
পরবর্তীতে তারেক রহমান ইটিআইতে আসেন দুপুর ১টায়। বেরিয়ে যান সোয়া ১টার দিকে। জুবাইদা রহমান এর আগে জুন মাসের দিকে গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসার ঠিকানায় ভোটার হন। ১৯৬ নম্বর বাসভবনের ঠিকানা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, গুলশান-২ নম্বর, ১৯ ওয়ার্ড, ঢাকা-১৭ আসন।
এমকে
জাতীয়
এই সরকার কোনো দলের পক্ষে নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আমরা মনে করি, এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই আমরা চাই, মানুষ যেন তার ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারে। আমি আপনাদের স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, এই সরকার কোনো দলের পক্ষে নয়।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে ভোলা শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ভোটের গাড়ি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) প্রত্যেকটি মানুষ যেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দেখতে পায়। আমরা মনে করি, এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই আমরা চাই, মানুষ যেন তার ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারে। আমি আপনাদের স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, এই সরকার কোনো দলের পক্ষে নয়। আগামী পরশুদিন মনোনয়ন সংগ্রহের শেষ দিন। তখন আপনারা জানতে পারবেন কারা কারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সবাই ভোট দিয়ে আপনাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু বিশেষ দাবিদাওয়ার প্রেক্ষিতে পরিবর্তনটি হয়েছে (আওয়ামী লীগ সরকার পতন)। যে পরিবর্তনের জন্য আমাদের ছেলে-মেয়েরা জীবন দিয়েছে। তাদের দাবিদাওয়াকে সামনে রেখে আমরা একটি ছোটখাটো তালিকা তৈরি করেছি। শতভাগ প্রতিফলিত হয়েছে- তা নয়, তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই তালিকাটি প্রথমবারের মতো জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে, যাতে আপনারা বলতে পারেন এসব পরিবর্তন আপনারা চান কি চান না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন, আলাদাভাবে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। তালিকার শতভাগ বিষয়ের মধ্যে যদি আপনারা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ বিষয়ে একমত হন, তাহলে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিতে পারবেন। আর একমত না হলে ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগও থাকবে। সামনে আমাদের আপামর জনগণের দুটি দায়িত্ব রয়েছে কী কী পরিবর্তন চান বা চান না, সে বিষয়ে মতামত দেওয়া। যদি পরিবর্তন চান, তাহলে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে পরবর্তী বাংলাদেশের ওপর। কারণ, পরবর্তী বাংলাদেশে যারা জনপ্রতিনিধি হয়ে আসবেন, তারা আপনাদের মতামতকে মূল্যায়ন করবেন। আরেকটি বিষয় হলো, দেশ যে স্বাভাবিক লাইন থেকে সরে গিয়েছিল, তা আবার যথাযথ স্থানে ফিরিয়ে আনা। যাতে আপনাদের অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত করতে না পারে, সে ধরনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। পরবর্তী সংসদের দায়িত্ব থাকবে এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা। আপনাদের মতামতকে আপনাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পক্ষে অগ্রাহ্য করা সম্ভব হবে না, কারণ কিছুদিন পর ভোটের জন্য তাদের আবার আপনাদের কাছেই যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভোটের গাড়ির মূল উদ্দেশ্য হলো জনগণকে ভোট দেওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা। আমরা চাই, একটি উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই ভোটকেন্দ্রে এসে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করুক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন যতক্ষণ পর্যন্ত না চাইবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ধরনের সহায়তাও করবে না। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সবাই অত্যন্ত সিরিয়াস।
এমকে




