অর্থনীতি
রোজায় কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে তেল-ডাল কিনবে সরকার
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৩ কোটি ৭৫ লাখ লিটার এবং স্থানীয়ভাবে এক কোটি লিটার ভোজ্যতেল কিনবে সরকার। একই সঙ্গে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। ভোজ্যতেল কিনতে ৬৪২ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যয় হবে। ডাল কিনতে ব্যয় হবে ৭২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এসব তেল-ডাল ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে নাইজেরিয়া থেকে আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২ কোটি লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
জানা গেছে, আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট নিরসনে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে জরুরি বিবেচনায় আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২ কোটি লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এ লক্ষ্যে নাইজেরিয়ার ভিডক ফার্মস অ্যান্ড এক্সপোর্টস লিমিটেডের কাছে দরপ্রস্তাব চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি দরপ্রস্তাব দাখিল করে।
টিইসি দরপ্রস্তাবটি পরীক্ষা করে এবং রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা ভিডক ফার্মস অ্যান্ড এক্সপোর্টস লিমিটেড, নাইজেরিয়া (উৎস: ব্রাজিল)-এর কাছে থেকে ২ কোটি লিটার পরিশোধিত সয়াবিন তেল ২৪২ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার টাকায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কিনতে বৈঠকে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি তা অনুমোদ করেছে।
জানা গেছে, ২ লিটার পেট বোতলে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য ধরা হয়েছে ১২১ টাকা ৩২ পয়সা। টিসিবির গুদাম পর্যন্ত অন্যান্য খরচসহ প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম পড়বে ১৫০ টাকা ৩৪ পয়সা।
এই তেল খোলা বাজারে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে এবং ক্রয় করা মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করা হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকরি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিকে জানানো হয়। এতে সরকারের কোনো ভর্তুকির প্রয়োজন হবে না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এক কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির স্টুয়ার্ট ক্লোবানু গেরহার্ড থেকে কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এই তেলও খোলা বাজারে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে এবং ক্রয় করা মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করা হবে। এতে সরকারের কোনো ভর্তুকির প্রয়োজন হবে না।
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট নিরসনে বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে জরুরি বিবেচনায় আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এক কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির প্রতিষ্ঠান স্টুয়ার্ট ক্লোবানু গেরহার্ডের কাছে দরপ্রস্তাব চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি দরপ্রস্তাব দাখিল করে।
টিইসি দরপ্রস্তাবটি পরীক্ষা করে এবং রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা স্টুয়ার্ট ক্লোবানু গেরহার্ড (উৎস: তানজানিয়া)-এর কাছ থেকে এক কোটি ২৫ লাখ লিটার পরিশোধিত সয়াবিন তেল ১৬৫ কোটি ৮৬ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দুই লিটার পেট বোতলে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য ধরা হয়েছে ১৩২ টাকা ৬৯ পয়সা। টিসিবির গুদাম পর্যন্ত অন্যান্য খরচসহ প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য ধরা হয়েছে ১৬৪ টাকা ১১ পয়সা।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল মালয়েশিয়ার সি মিলেনিয়াম ট্রেড এসডিএন ডট বিহাড থেকে কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এই তেলও ক্রয় করা মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করা হবে। এতে সরকারের কোনো ভর্তুকির প্রয়োজন হবে না।
ভোজ্যতেলের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে জরুরি বিবেচনায় আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার জন্য মালয়েশিয়ার সি মিলেনিয়াম ট্রেড এসডিএন ডট বিহাডের কাছে দরপ্রস্তাব চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি দরপ্রস্তাব দাখিল করে। টিইসি দরপ্রস্তাবটি পরীক্ষা করে এবং রেসপনসিভ হয়। দরপ্রস্তাবের সকল প্রক্রিয়া শেষে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৫০ লাখ লিটার পরিশোধিত সয়াবিন তেল ৬৬ কোটি ৪ লাখ ২০ হাজার টাকায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুই লিটার পেট বোতলে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য ধরা হয়েছে ১৩২ টাকা ৮ পয়সা। টিসিবির গুদাম পর্যন্ত অন্যান্য খরচসহ প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য ধরা হয়েছে ১৬৩ টাকা ৩৭ পয়সা।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এক কোটি লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে এক কোটি লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল কেনার জন্য অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ৩টি দরপ্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়।
দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান গাইবান্ধার প্রধান অয়েল মিলস লিমিটেড থেকে ২৫ লাখ লিটার, ঢাকার গ্রিন অয়েল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ২৫ লাখ লিটার এবং ঢাকার মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে ৫০ লাখ লিটারসহ মোট এক কোটি লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল ১৬৭ কোটি ৯০ লাখ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি লিটার রাইস ব্রান তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৬৭ টাকা ৯০ পয়সা।
এছাড়া বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রতি কেজি মসুর ডালের ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ৭২ টাকা ২০ পয়সা। টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ৩টি দরপ্রস্তাবই কারিগরিভাবে ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়।
দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান খুলনার জয়তুন অটো রাইস অ্যান্ড ডাল মিলস লিমিটেড থেকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) ৭২ কোটি ২০ লাখ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এমকে
অর্থনীতি
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সোনার সর্বোচ্চ দাম
টানা ৬ দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ২৮২ টাকা। নতুন নির্ধারিত এই মূল্য দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে মূল্যবৃদ্ধির এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।
এর আগে, দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ১১ হাজার ৯৯৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৮১ হাজার ৭২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৯ টাকা নির্ধারণ করা ছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এদিকে সোনার পাশাপাশি দেশের বাজারে বেড়েছে রুপার দামও। ভরিতে ১৭৫ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ১৩২ টাকা, যা এর আগে চার হাজার ৯৫৭ টাকা নির্ধারণ করা ছিল।
এমকে
অর্থনীতি
ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার
সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া বাজারে আতপ চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আরও আতপ চাল আনা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাইরে চালের দাম কিন্তু বাড়ছে। কারণ, চীন প্রচুর চাল কিনছে। ওদের চাহিদা বেশি। ওরা মূলত ভিয়েতনাম থেকে কিনছে। এটা কিছুটা প্রভাব ফেলছে। তবু এবার আমাদের ৫০ হাজার টন (চালের দাম) গতবারের চেয়ে একটু কম। এটা আমাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা মরক্কো থেকে সার নিয়ে আসছি— ৯০ হাজার টন টিএসপি। আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন সার আসবে। সারের দাম মোটামুটি ভালোই পাচ্ছি।”
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভবনের জন্য ১০৫ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছি। স্থানীয় সরকারের চারটি রাস্তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বিদ্যুতের ১৯টি সাবস্টেশন বিতরণের বিষয় আছে, যার সবগুলোই ময়মনসিংহে। আর আমরা ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল আনব। আমরা এখন থেকেই রোজার প্রস্তুতি নিচ্ছি। অনেক রাইস ব্র্যান অয়েল আসবে, যা তুষ থেকে তৈরি হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ক্যানবেরাতে দূতাবাসের জন্য একটি ভবন হবে। অস্ট্রেলিয়া খুব কঠোর সময়সীমা (টাইম লিমিট) দিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে কাজ না করলে তারা অনুমতি প্রত্যাহার করে নেবে।”
এমকে
অর্থনীতি
একনেকে ৪৬ হাজার কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন
ইস্টার্ন রিফাইনারি সম্প্রসারণসহ ২২ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৩০ হাজার ৪৮২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ ১ হাজার ৬৮৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৪ হাজার ২৪৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ১৪টি, সংশোধিত প্রকল্প ৫টি ও মেয়াদ বৃদ্ধি প্রকল্প ৩টি।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহণ ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ অন্য উপদেষ্টারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
একনেক সভায় অনুমোদিত ২২টি প্রকল্প হচ্ছে- কর্ণফুলী টানেল (আনোয়ারা) থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের গাছবাড়িয়া পর্যন্ত সংযোগ সড়ক উন্নয়ন। দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি (স্থলবন্দর)-ডুগডুগি ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ৩টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিদ্যমান সরু/জরাজীর্ণ কালভার্টসমূহ পুনঃনির্মাণ এবং বাজার অংশে রিজিডপেভমেন্ট ও ড্রেন নির্মাণ।
ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ এবং উভয়পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জস্থ আলীগঞ্জে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারিদের জন্য ৮টি ১৫ তলা ভবনে ৬৭২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ। ঢাকা ওয়াসা প্রশিক্ষণ এবং গবেষণা একাডেমি স্থাপন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ। জলবায়ু সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন।
পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন।সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্টের (কমফ্লোট ওয়েস্ট) অবকাঠামো উন্নয়ন।
সাভারে আর্মি ইনস্টিটিউট অব ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুন:নির্মাণ কোনাবাড়ি, গাজীপুর প্রকল্প।
একনেক সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ৫০ কোটি টাকার কম বয়ে সম্বলিত ১০টি প্রকল্প সম্পকে একনেক সভায় অরহিত করেন।
অর্থনীতি
রেজল্যুশনের আওতায় সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বন্ধ হচ্ছে বিপর্যস্ত ৯টি
শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা ও খেলাপি ঋণের জটিলতায় বিপর্যস্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) খাত পুনর্গঠনে অবশেষে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের সব ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত রবিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে। ইতিমধ্যে বিপর্যস্ত ৯টি এনবিএফআইকে চিহ্নিত করে সেগুলোর অবসায়ন বা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানান, এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি আমানতকারী ব্যক্তিরা পুরো টাকা ফেরত পাবেন। বর্তমানে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং এনবিএফআই কর্তৃক পরিচালিত ব্যবসা ও কার্যক্রমে জনসাধারণের স্বার্থ সংরক্ষণে সব এনবিএফআইয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ প্রযোজ্য হবে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সর্বশেষ সভায় ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো এফএএস ফিন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফিন্যান্স, জিএসপি ফিন্যান্স, প্রাইম ফিন্যান্স, আভিভা ফিন্যান্স, পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৫২ শতাংশই এ ৯টি প্রতিষ্ঠানের। গত বছরের শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক দুই ধরনের আমানতকারী মিলিয়ে ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ১৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার আমানত আটকে আছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা একক গ্রাহকের এবং ১১ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা ব্যাংক ও করপোরেট আমানতকারীর।
একক আমানতকারীদের আমানত আটকে থাকার দিক থেকে শীর্ষে আছে পিপলস লিজিং। প্রতিষ্ঠানটিতে আটকে আছে ১ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া আভিভা ফিন্যান্সে ৮০৯ কোটি টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ৬৪৫ কোটি টাকা, প্রাইম ফিন্যান্সে ৩২৮ কোটি টাকা ও এফএএস ফিন্যান্সে ১০৫ কোটি টাকা আটকে আছে।
অর্থনীতি
রেলপথ উন্নয়নে ৬৮.৮ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি
চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থায় পরিবর্তনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার রেলপথের আধুনিকায়ন ও নতুন নির্মাণে ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবি বাংলাদেশকে ৬৮.৮ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২.১৭ টাকা ধরে)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এডিবি জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি একটি ২.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাইপাস নির্মাণ করা হবে। এর ফলে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারগামী ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম স্টেশনে না থেমেই যাতায়াত করতে পারবে, যা ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনবে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং বলেন, এ প্রকল্প ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে রেল পরিষেবার সক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে। এটি বিশেষ করে পর্যটন এবং মৎস্য শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ট্রান্সপোর্ট ও ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে গড়ে তুলতে এই বিনিয়োগ সহায়ক হবে। ট্রান্স-এশিয়া রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে করিডোরটি বর্তমানে দেশের ৩২ শতাংশ যাত্রী এবং ৫৫ শতাংশ পণ্য পরিবহন পরিচালনা করে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫ কিলোমিটার রেলপথের ট্র্যাক উঁচুকরণ, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং আধুনিক সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। সেইসঙ্গে ৩০টি জ্বালানি সাশ্রয়ী লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ক্রয় করা হবে, যা কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করবে এবং তিনটি স্টেশনকে আধুনিক ও ব্যবহারবান্ধব করা হবে, যেখানে বেসরকারি বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সুযোগ থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।




