আইন-আদালত
চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী জালাল উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থ বৈধ করার চেষ্টা এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে চাঁদপুর-২ (মতলব) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিনসহ পাঁচজনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ড. জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সপরিবারে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন।
তিনি বলেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে চলে গেলে চলমান অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে জটিলতা তৈরি হতে পারে। জনস্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন হওয়ায় আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
দুদক মহাপরিচালক জানান, ড. জালাল উদ্দিন ছাড়াও মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- তার পরিবারের সদস্য শাহানাজ পারভিন, সাঈদ মোহাম্মদ রিজভী, সাঈদ মোহাম্মদ আলভী এবং আয়েশা তাসিনীমা তানিভী।
আদালতে দাখিল করা আবেদনে দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা এস এম মামুনুর রশীদ উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থ উপার্জন করে তা নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, গোপন সূত্রে জানা গেছে- অভিযুক্তরা দেশত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দুদকের পক্ষে উপস্থিত পাবলিক প্রসিকিউটরের বক্তব্য এবং দাখিল করা নথিপত্র পর্যালোচনা করে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
আদালতের আদেশে বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন-প্রশাসন), স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ, মালিবাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, আদেশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্তদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ আদেশের অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব, পরিচালক (পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন), সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ও অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইন-আদালত
দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী
দেশের ২৬ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নিয়োগ চূড়ান্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বঙ্গভবনে তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে নতুন প্রধান বিচারপতির শপথগ্রহণের কথা রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ১৯৬১ সালের ১৮ মে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা প্রয়াত এএফএম আবদুর রহমান চৌধুরীও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি অনার্স ও এলএলএম ডিগ্রি নেওয়ার পর যুক্তরাজ্যে আন্তর্জাতিক আইনের ওপর আরেকটি মাস্টার্স করেন।
জুবায়ের রহমান চৌধুরী ১৯৮৫ সালে জজ কোর্টে ও ১৯৮৭ সালের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট জুবায়ের রহমান চৌধুরী অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগ পান। দুই বছর পর হাইকোর্ট বিভাগে তার নিয়োগ স্থায়ী হয়।
২০২৪ সালের ১২ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তাকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন এবং ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট তিনি শপথ পাঠ করেন।
এমকে
আইন-আদালত
হাদি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এ আদেশ দেন।
আদালতে দেওয়া আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট হওয়ায় আসামি দেশত্যাগ করলে তদন্ত কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে প্রধান আসামির বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।
আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দেন।
মামলার নথিতে বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে দুর্বৃত্তরা। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) হাদির মরদেহ দেশে আনা হয়। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিসৌধের পাশে শরিফ ওসমান হাদিকে দাফন করা হয়।
এমকে
আইন-আদালত
হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ পেছালো
আওয়ামী লীগের শাসনামলে র্যাবের টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৩ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জন।
আসামিপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল নতুন দিন ঠিক করেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে আজ আসামিপক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও তাবারক হোসেন ভূইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এর আগে আওয়ামী লীগের শাসনামলে র্যাবের টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য ২১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু সেনা কর্মকর্তাদের আইনজীবীরা সময় আবেদন করে। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিয়ে তাদের পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদেশের জন্য আগামী ২৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত।
নির্ধারিত দিনে গ্রেফতার আসামি ও সেনা কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ প্রিজন ভ্যানে করে ক্যান্টনমেন্ট কারাগার থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এর আগের শুনানিতে ট্রাইব্যুনালে গ্রেফতার ১০ আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও ব্যারিস্টার তবারক হোসেন ভূইয়া। পলাতক সাত আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রীয় খরচে নিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম, সুজাদ মিয়া ও মো. আমির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য নতুন দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল।
মামলার ১৭ আসামির মধ্যে ১০ জন গ্রেফতার আছেন। তারা হলেন- কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, কর্নেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কর্নেল কে এম আজাদ, কর্নেল মো. কামরুল হাসান, কর্নেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল মোমেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারোয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।
পলাতক সাত আসামি হলেন- ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা-বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশিদ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. হারুন অর-রশিদ এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. খায়রুল ইসলাম।
আইন-আদালত
সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের দিন নির্ধারণ রয়েছে আজ।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ আদেশ দেবেন। ফলে আসামিদের বিচার শুরু হবে কি হবে না তা জানা যাবে।
এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট আসামি ১৭ জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন— র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
পলাতক অন্যরা হলেন— শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।
গত ১৪ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সাতজনের হয়ে লড়েন তাবারক হোসেন। এছাড়া আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম, তিনজনের পক্ষে সুজাদ মিয়া ও শেখ হাসিনার হয়ে লড়েন আইনজীবী মো. আমির হোসেন। শুনানিতে প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা কারণ (গ্রাউন্ড) এনে নিজেদের মক্কেলের অব্যাহতি চেয়েছেন। তবে প্রসিকিউশনের পক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে, ৩ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে টিএফআই সেলের বীভৎসতা তুলে ধরার পাশাপাশি গুমের অন্ধকার পেরিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক নতুন বাংলাদেশ উদিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য দুভাবে নির্ধারণ হতো বলেও উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ভাগ্য ভালো হলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো। দ্বিতীয়ত সাত-আট বছর গুম রাখার পর ফেলে রাখা হতো অজানা কোনো স্থানে।
চলতি বছরের ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। একইসঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত তারিখে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন আদালত। ৮ অক্টোবর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে ১৭ জনের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
আইন-আদালত
গুমের ঘটনায় হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তার বিচার শুরুর নির্দেশ
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুমের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে জেআইসি গুমের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ হয়। শুনানি নিয়ে এ সংক্রান্ত বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের (১৮ ডিসেম্বর) দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানি ও আদেশ দেওয়া হয়েছে। তারও আগে গত ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ দিন ঠিক করেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার শাইখ মাহদী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু, মাহিন এম রহমান, মাসুদ সালাউদ্দিন ও মো. আমির হোসেন।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর থেকে গত বছরের ৬ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে গুমের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৫টি অভিযোগ রয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী। তাদের মধ্যে শেষ তিনজন গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন।




