রাজনীতি
গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিচ্ছেন আসিফ মাহমুদ
সদ্য পদত্যাগ করা স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আবার গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রাশেদ খান বলেন, ‘আমাদের ছাত্র সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিল আসিফ মাহমুদ। ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সব লড়াই-সংগ্রামে ছিল সে। এমনকি সেসময় অনেক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসিফের সঙ্গে আমাদের আলাপ চলছে। এর আগেও সে গণঅধিকার পরিষদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। দলে তাকে সম্মানজনক পদ দেওয়া হবে। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। খুব শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তবে তাকে আমরা যেকোনো মূল্যে দলে ফেরাতে চাই।’
এর আগে, বুধবার সন্ধ্যায় যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বিকেলে সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন। তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন করব, এটা নিশ্চিত। যে দল থেকেই নির্বাচন করি সেটা পরে জানানো হবে।’
জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার উদ্দেশ্যে উপদেষ্টার পদ ছাড়েন আসিফ মাহমুদ। রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা রয়েছে, তিনি ঢাকা-১০ আসন (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) থেকে নির্বাচন করতে পারেন। ইতোমধ্যে তিনি এ আসনের ভোটারও হয়েছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন সরকারে জায়গা পান। তাদের মধ্যে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রথমে শ্রম উপদেষ্টা এবং পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
এমকে
রাজনীতি
জনতার মতামতেই তৈরি হবে জামায়াতের নির্বাচনি ইশতেহার: জামায়াত আমির
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে দলীয় ইশতেহার তৈরিতে অনলাইনে জনমত নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) জামায়াত আমির নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখেন, আপনার একটি সুন্দর পরামর্শ বদলে দিতে পারে বাংলাদেশের আগামী। আপনার মতামতের ভিত্তিতেই তৈরি হবে আমাদের নির্বাচনি ইশতেহার। ‘জনতার ইশতেহার’ শীর্ষক একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এসব মতামত সংগ্রহ করা হবে।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এক নির্বাচনি প্রচারণায় জামায়াত আমির বলেন, সব নাগরিকের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা দেখতে চায় জামায়াত। বিদ্যমান বৈষম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক অবস্থার অবসান ঘটাবে জামায়াত ইসলামী। দেশের শ্রমিক ও সম্পদশালীদের মধ্যকার আকাশচুম্বী ব্যবধান কমিয়ে আনা ছাড়া সব মানুষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
এ দিন ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, আমাদের অনেক বন্ধু বলেন, তারা ক্ষমতায় গেলে আমাদের বাদ দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবেন। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় গেলে তিন শর্তে তাদের নিয়েই জাতীয় সরকার গঠন করব। দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ আর টেন্ডারবাজদের কারণে দেশের মানুষের স্বস্তি নিশ্চিত হচ্ছে না। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন দুর্নীতির বিস্তার ঘটে গেছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সুষ্ঠু না হওয়ায় দেশের অপরাধ কমানো সম্ভব হয়নি মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সব অপরাধের যাত্রা শুরু হয় অপ-নির্বাচন থেকে। তাই আগামীর নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু করে সত্যিকারের জনগণের প্রতিনিধিদের দেশ গড়ার সুযোগ দিতে হবে। অনেকে নির্বাচনের আগে ওয়াদা করে ক্ষমতায় গেলে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন প্রতিষ্ঠা করবে না। তাদের প্রতি আহ্বান জানাব, পারলে একবার ঘোষণা দিন যে ক্ষমতায় গেলে কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠা করবেন।
এমকে
রাজনীতি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা শোয়াইব গ্রেপ্তার
যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক শোয়াইব হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে যশোর শহরের ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার শোয়াইব সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি একটি মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন।
ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঞা জানান, ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি মারামারি মামলায় শোয়াইবের বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে দুই মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন যশোরের একটি আদালত। এই মামলায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ওই পরোয়ানায় তাকে গ্রেপ্তার করে কোতয়ালি থানা পুলিশ। পরে কোতয়ালি পুলিশ তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে যায়।
মামলায় শুধু তিনিই নন, তার বাবা সিরাজুল ইসলাম এবং ভাই জুবায়ের হোসেনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। মামলাটি করেছিলেন কুতুবপুর হাফেজিয়া মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য একই গ্রামের শামসুর রহমান।
অভিযোগে বলা হয়, মাদরাসা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফোন করে শামসুর রহমানকে বাইরে যেতে বলা হয়। রাত ১০টার দিকে তিনি সেখানে গেলে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। তার পরিবার এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়।
স্থানীয়রা সে সময় তাকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি চিকিৎসা নিয়ে ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থানায় মামলা করেছিলেন। এই মামলায় শুধুমাত্র শোয়াইব হোসেনের জেল-জরিমানা হয়। অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লস্কর সোহেল রানা গত ২৫ অক্টোবর ওই সাজা প্রদান করেছিলেন। বাকি আসামিরা খালাস পান।
জুলাই আন্দোলনে যশোরের পরিচিত মুখ ছিলেন শোয়াইব হোসেন। জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে প্রতিটি কার্যক্রমে ছিলেন সক্রিয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির বিভিন্ন কার্যক্রমে তাকে দেখা গেলেও জেলা কমিটির কোনো পদে তিনি ছিলেন না। তবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। গত ২৭ জুলাই একটি ফেসবুক পোস্টে সব কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ান শোয়াইব।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘২০১৮-তে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতির যাত্রা, ২০২৪-এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারেও কোটা প্রথা বহালের প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলনের শুরু থেকে ১ দফা, পরবর্তীতে ফ্যাসিস্টের পতনের মাধ্যমে বিপ্লবের অংশ হতে পেরে গর্বিত।’
পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বৈষম্য বা অন্য কোনো কমিটিতে ছিলাম না, তবে জাতীয় নাগরিক কমিটি নামক অরাজনৈতিক প্লাটফর্মে ছিলাম। ছিলাম শুধুই রাজপথের কর্মী হয়ে। আপাতত সরে দাঁড়াচ্ছি! রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আবারও দেখা হবে রাজপথে ইনশাআল্লাহ।’
এমকে
রাজনীতি
ইউনূস স্যারকে দিয়ে হাতিয়ার ব্লকবাঁধের জন্য ২১শ কোটি টাকা বরাদ্দ করিয়েছি: হান্নান মাসউদ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারকে দিয়ে হাতিয়ার ব্লকবাঁধের জন্য ২১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে শাপলা প্রতীকে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে মনোনয়ন পেয়ে হাতিয়ার আফাজিয়া বাজারে পথসভায় তিনি এ কথা জানান।
আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, অনেকে বলে ক্ষমতায় আসলে এই করবে সেই করবে, ব্লকবাঁধ করবে। মোহাম্মদ আলী (আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি) করে নাই, তার আগে কেউ করে নাই। কেন আফাজিয়া বাজার থেকে ১৫ কিলোমিটার ভাঙতে হলো। সব দোষ মোহাম্মদ আলীর। স্পিডবোট ভাড়া ৪০০-৫০০ টাকা মোহাম্মদ আলীর আগেও ছিল। তখন এত টাকা কারা খাইসে। তেলের দাম ৬৫ টাকা ছিল, কিন্তু আমাদের থেকে ৪০০-৫০০ টাকা করে কারা নিছে।
তিনি আরও বলেন, বড় বড় গলাবাজি যারা করে তাদের বইলেন আপনারা কারা তা দেখেছি। আপনাদের সামনে একটা জিনিস দেখাতে চাচ্ছি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের সাথে দেখা করে পুরো হাতিয়ার জন্য সাড়ে ২১ কিলোমিটারের স্থায়ী ব্লকবাঁধ ও বেড়িবাঁধের প্রজেক্ট রেডি করেছি। সুখচর থেকে বাংলা বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার ব্লক এবং তার ১০০ মিটার উপরে স্থায়ী বেড়িবাঁধের জন্য ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আমাদের বলেছে ৮০০ কোটি টাকায় কাজ করতে হবে। আমি ইউনুস স্যারকে বলেছি ২১০০ কোটি টাকা লাগবে। সেই টাকার প্রথম ধাপে সাড়ে ১১ কিলোমিটার কাজ হবে ইনশাআল্লাহ। আপনারা ক্ষমতায় আসার পর যদি করতে হয়, তাহলে হান্নান মাসউদের রিভিউ করা কাজ করতে হবে।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হান্নান মাসউদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি-গণঅধিকারসহ যত দল আছে এবং যারা হাতিয়াতে আছে তাদের সবাইকে বলছি আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন। আর আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দ্বীপ হাতিয়াকে বাঁচাই। আমরা হাতিয়ার লোকজন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ দ্বীপকে ভূমিদস্যু থেকে বাঁচাবো, জলদস্যু থেকে বাঁচাবো, নদী ভাঙন থেকে বাঁচাবো। তাই আমি দলমত নির্বিশেষে সকলকে আহ্বান করব আসেন আমরা সবাই মিলে যায়, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাতিয়াকে বদলাই।
তিনি আরও বলেন, হাতিয়াকে বাঁচাতে হলে দলে দলে লড়াই করা যাবে না, মারামারি হানাহানি করা যাবে না। হাতিয়ার মানুষ যদি নিজেদের মধ্যে আরেকবার সংঘাতে জড়ায় তাহলে আর হাতিয়ার মানুষের মুক্তি মিলবে না।
হান্নান মাসউদ বলেন, আমি আজ এখানে কোনো নির্বাচনী জনসভা করতে আসিনি। যদিও আমাকে আমার দল থেকে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন দিয়ে শাপলা কলি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি বলব হাতিয়ার মানুষ না চাইলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। হাতিয়ার মানুষ চাইলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। হাতিয়ার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে বলবো না, তাই দলবল নির্বিশেষে আমরা সবাইকে নিয়ে নতুন একটি হাতিয়া গড়তে চাই।
এদিকে পথসভাকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকে দ্বীপের বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে আফাজিয়া ঘাটে আসতে থাকে লোকজন।
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হাতিয়া উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী শামছুল তিব্রিজ, হাতিয়া উপজেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. ইউসুফ রেজা, হাতিয়া উপজেলার ছাত্রশসক্তির আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ নিরবসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় ও উপজেলা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
অভ্যুত্থান-পরবর্তী ক্যাম্পাসে প্রথম লাশ উপহার দিলো ছাত্রদল: ছাত্রশিবির
অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়ে উচ্চমাধ্যমিক ২০২৪–২৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান রানা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এই ঘটনাকে ‘ছাত্রদলের উপহার দেওয়া লাশ’ বলে মন্তব্য করেন এবং দায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী ৭ ডিসেম্বর তেজগাঁও কলেজ ছাত্রাবাসে মাদকসেবনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দীর্ঘদিন ধরে ওই দুই গ্রুপ ছাত্রাবাসে মাদক বিক্রি ও সেবনের মাধ্যমে আবাসিক পরিবেশকে অস্থির করে তুলছিল বলে ছাত্রদের অভিযোগ। সংঘর্ষের সময় সাকিবসহ বেশ কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীও আক্রান্ত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাকিবের মৃত্যু হয়।
ছাত্রশিবির নেতারা বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনা কোনোভাবেই সাধারণ নয়—এটি একটি সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। তাদের দাবি, এ ঘটনা ছাত্রদলের ‘ধারাবাহিক সহিংস রাজনীতির’ প্রতিফলন এবং হলের অভ্যন্তরে আধিপত্য বিস্তারের চর্চা এর মূল কারণ। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেন তারা।
শিবিরের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রদল বিভিন্ন ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও আধিপত্যের রাজনীতি চালিয়ে আসছে। ফ্যাসিবাদী আমলে নিজেদের চরিত্র লুকিয়ে রাখলেও অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে তাদের ‘হিংস্র রূপ’ আবারও প্রকাশ পেয়েছে বলে অভিযোগ সংগঠনটির।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় ছাত্রশিবির। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়ে সংগঠনটি নিহত সাকিবুল হাসান রানার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানায়।
রাজনীতি
নতুন বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদের আবির্ভাব হতে দেয়া যাবে না: ড. হেলাল উদ্দিন
জামায়াতে ইসলামী শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয় মানবিক সংগঠন বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির (ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী) অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো জামায়াতে ইসলামী কেবল গতানুগাতিক রাজনীতি করে না। জামায়াতে ইসলামী মানুষের কল্যাণে মানবিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। যেখানে মানুষের দুর্ভোগ, দুর্দশা সেখানে ছুটে যায় জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে মতিঝিল দক্ষিণ থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ পূর্বক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, নতুন বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদের আবির্ভাবে হতে দেওয়া যাবে না। ৫ আগস্ট পরবর্তী যারা সারাদেশে খুন, ধর্ষন, লুটপাট, সন্ত্রাসী আর চাঁদাবাজি করছে তারা এদেশে নব্য ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়। তারা নিজেদেরকে দেশের মালিক মনে করতে শুরু করেছে। চাঁদার টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে যারা নিজেরা নিজেদের ২ শতাধিক নেতাকর্মীকে খুন করেছে তাদের কাছে দেশ ও জাতি কখনো নিরাপদ নয়। তাদেরকে ভোটের মাধ্যমেই বয়কট করতে হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা-৮ আসনে এক প্রার্থী নিজের জন্ম এখানে; বাবার জন্ম এখানে বলে মানুষের কাছে ভোট চাচ্ছে। ঐ প্রার্থীকে জনগণ অতীতে নির্বাচিত করলেও তিনি নিজের উন্নতি ছাড়া জনগণের জন্য কিছু্ই করেননি। বাপ-দাদার জন্ম এখানে বলার সঙ্গে সঙ্গে বাপ-দাদার পরিচয় এবং কর্ম কী ছিল সেটিও জনগণের সামনে তুলে ধরতে তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা-৮ আসনের জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, যারাই ভোট চাইতে যাবে তাদের কাছ থেকে জানতে হবে অতীতে তারা জনগণের জন্য কী করেছে। কীভাবে ব্যাংকের মালিক হয়েছে কীভাবে স্কুল-কলেজসহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছে সেই জবাব নিয়ে আগামীতে ভোট দিতে তিনি ঢাকা-৮ আসনের ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।
মতিঝিল দক্ষিণ থানা জামায়াত আমির মাওলানা মোতাছিম বিল্লাহ’র সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মো. ইমাম হোসেনের পরিচালনায় ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তনে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে থানার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




