ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
‘র্যাবের গুলিতে পা হারানো’ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক লিমন এখন যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত
ঢাকার অদূরে সাভার অবস্থিত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক মো. লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন নিজ বিভাগের একাধিক নারী শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, ক্লাসে বিভিন্ন অশালীন কথা বলা ও ফেসবুকে আপত্তিকর বার্তা পাঠাতেন বিভাগের প্রভাষক লিমন। এ অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, ৮ মাস আগের ঘটনায় গত ২ ডিসেম্বর করা মামলায় পিকনিকের কথা বলে আশুলিয়ায় নিয়ে গিয়ে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ‘ধর্ষণ’ ও ভিডিও ধারণের মামলার পর আন্দোলনে রয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে বিভাগের প্রভাষক লিমনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আসার পর দুটি ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকায় তিনিসহ বিভাগের আরেকজন শিক্ষককে ছুটিতে পাঠিয়ে একটি তদন্ত কমিটি করেছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, লিমনকে ১৬ বছর বয়সে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে কুখ্যাত অপরাধী বিবেচনা করে বাম পায়ে গুলি করে র্যাব—৮ এর কয়েকজন সদস্য। পরে লিমনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেদিনই তার বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করে র্যাব। এর ৪ দিন পর লিমনের বাম পা কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে তিনি কৃত্রিম পা দিয়ে চলাফেরা করছেন।
সেই সময় রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ঠুরতার শিকার তরুণ লিমন পিজিএস কাউখালী কারিগরি বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১০ সালে এসএসসি এবং ২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করেন। ২০১৭ সালে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে অনার্স এবং ২০১৯ সালে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০২০ সালে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদানে লিমনের একাডেমিক যোগ্যতা কম ছিল। তবে তিনি ‘মানবিক’ বিবেচনায় সেই সময় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের পরোক্ষ শক্তিতে নানা অনিয়ম করতে থাকেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সর্বশেষ গত ৪ ডিসেম্বর নিজ বিভাগে ধর্ষণে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে থানায় গিয়ে তোপের মুখে পড়েন তিনি।
ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়, প্রভাষক লিমন হোসেন বিভিন্নভাবে তাদের যৌন হয়রানি করছেন। তিনি তার কেবিনে নারী শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে বিভিন্ন অশালীন মন্তব্য করতেন। অনেক সময় তাদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অশালীন বার্তা পাঠাতেন। যেমন, তার স্ত্রী তাকে সুখী করতে পারে না, সে যৌনতার ক্ষেত্রে অনেক একাকীত্বতায় ভোগেন, এছাড়াও অনেক আপত্তিকর কথা, যা প্রকাশ করার মতো নয়।
এছাড়াও অপর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। পাঁচটি দফা উল্লেখ করা ওই অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষক লিমন হোসেন ধর্ষণে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সশরীরে থানায় গিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টাও অপরাধের শামিল।
এছাড়া ক্লাসে পড়ানোর ছলে তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিষয় সকলের সামনে উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীদের হেয় করেন।
একজন শিক্ষক হিসেবে তার পড়ানোর পদ্ধতি কোনো ভাবেই গবেষণা কেন্দ্রিক নয় উল্টা তিনি গলাদ্ধকরণ পদ্ধতিতে বিশ্বাস করেন। যা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধাকে বিনষ্ট করেন।
তিনি স্বজনপ্রীতি নীতি ব্যবহার করে, ব্রিটিশ পদ্ধতি Divide and Rule policy প্রয়োগ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেন যা পরবর্তীতে বড় অপরাধের জন্ম দেয়।
ক্যাম্পাসে বিগত দিনে ঘটে যাওয়া প্রায় সকল অপরাধের সাথে জড়িত চক্রের সাথে এমনকি সম্প্রতি বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের সাথেও প্রভাষক লিমন হোসেনের একান্ত সম্পর্কে বিদ্যমান এবং তাদের প্রকাশ্য মদদদাতা তিনিই যা শিক্ষার্থী মনে ক্রমশ ভীতি সঞ্চারণ করে যাচ্ছে।
এর আগে রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসের একটি মিলনায়তনে শিক্ষার্থীরা প্রভাষক লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরে বক্তব্য দেন। সেখানে তারা দ্রুত লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, উনি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী। যা আমাদের বিব্রত করে। এমনকি নিজের ব্যক্তিগত জীবনের প্রেম-বিচ্ছেদের গল্পও বারবার বলে বিব্রত করতে থাকেন। কে কার সাথে মিশবে না মিশবে সে ব্যাপারেও তিনি বারবার হস্তক্ষেপ করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক লিমন হোসেন বলেন, এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি এ ধরনের কোনো কথা বলি নাই। এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
তিনি আরও বলেন, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের প্রধান ড. ওয়াহিদা জামান লস্কর বলেন, যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের সভাপতির দায়িত্বের বিষয়ে প্রশাসন থেকে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। তবে উপাচার্যের কাছে প্রদানকৃত অভিযোগ পত্রের বিষয়ে তিনি এখনো অবগত নন।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে সাত দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলাকালে আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রফিকুল আলম ও প্রভাষক লিমন হোসেনকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এই সময়ে তারা একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।
তদন্ত কমিটিতে ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলাম খানকে সভাপতি ও বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবু রায়হানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে বাড়ির কাছের মাঠে গরু আনতে গিয়ে র্যাবের গুলিতে পা হারায় লিমন। ওই সময় সে উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। রাজাপুর উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী দুই সহোদর মিজান ও মোর্শেদকে ধরতে গিয়ে সোর্সের ভুল তথ্যের কারণে ১৬ বছরের কিশোর লিমনের পায়ে গুলি করে র্যাব। পরে চিকিৎসকরা তার একটি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ রাতেই লিমনসহ ৯ জনের নামে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন র্যাবের ডিএডি লুৎফর রহমান। একটি অস্ত্র আইনে এবং অপরটি সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। দুটি মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন লিমন। ২৪ মার্চ লিমনকে রাজাপুর হাসপাতাল থেকে নেওয়া হয় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে। ২৫ মার্চ লিমনকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে। সেখানে ২৭ মার্চ চিকিৎসকরা লিমনের বাম পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলেন।
এমকে
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবিতে অর্ডিন্যান্স লঙ্ঘন অভিযোগ: ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত, ভুল ক্রেডিট বণ্টন এবং অর্ডিন্যান্স লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এতে একাডেমিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্ণারে এক সংবাদ সম্মেলনে মানোন্নয়ন পরীক্ষার জন্য আবেদনকারী ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ১২ জন শিক্ষার্থীদের পক্ষে ৫ জন শিক্ষার্থী এ–সংক্রান্ত বিস্তারিত অভিযোগ তুলে ধরে দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহমান, বায়েজিদ বোস্তামী, নাহিদ আক্তার নোভা, মাহথির মোহাম্মদ চমন ও রবিউল ইসলাম।
তারা জানান, করোভাইরাস পরিস্থিতি এবং ‘জুলাই বিপ্লব’–পরবর্তী দীর্ঘ সেশনজটের সময়ে তারা বারবার জট নিরসনের দাবি জানালে তৎকালীন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাশিদুজ্জামান জানান, প্রতিটি সেমিস্টারের মান উন্নয়ন পরীক্ষা নিতে সময় বেশি লাগায় সেশনজট কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
এ কারণ দেখিয়ে তিনি ৩য় বর্ষ ১ম সেমিস্টার থেকে সব মান উন্নয়ন পরীক্ষা স্থগিত করে ঘোষণা দেন যে ৪র্থ বর্ষ শেষে একসঙ্গে সব সেমিস্টারের মান উন্নয়ন নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়— যে সব কোর্সে ৩.০০–এর নিচে নম্বর পাবে, সেসব কোর্সে পরবর্তীতে মান উন্নয়ন পরীক্ষার সুযোগ থাকবে; সেমিস্টারের গড় সিজিপিএ বিবেচ্য হবে না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী— ধারা ১০.৬: প্রতি একাডেমিক ইয়ারে যেকোনো কোর্সে ৩.০০–এর নিচে গ্রেড পেলে সেমিস্টার শেষে ১৫ দিনের মধ্যে রিটেক দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ধারা ১৩.২: ৪র্থ বর্ষের চূড়ান্ত ফলাফলের পর যাদের যেকোনো কোর্সে গ্রেড ‘বি’–এর নিচে থাকবে, তারা অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে রিটেক দিতে পারবে।
অর্ডিন্যান্সে গড় সিজিপিএ ৩.০০-এর বেশি হলে মান উন্নয়ন দেওয়া যাবে না—এমন কোনো বিধান নেই। এসব নিয়ম অমান্য করে চেয়ারম্যান একক সিদ্ধান্তে শুধুমাত্র ‘ফেইল করা’ শিক্ষার্থীদের জন্য মান উন্নয়ন পরীক্ষা সীমিত করেন, যা বিভাগীয় প্রতিশ্রুতিভঙ্গ।
শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষে বিভাগীয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী মোট ক্রেডিট হওয়ার কথা ছিল ১৩৬। কিন্তু তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক ড. সালমা সুলতানার ভুল ক্রেডিট বিতরণের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ১২৮ ক্রেডিট অনুযায়ী একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ৪র্থ বর্ষের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের সময় ভুল ধরা পড়ে। তখন বিভাগ হঠাৎ করে ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের পুরনো অর্ডিন্যান্স চাপিয়ে ফল প্রকাশ করে। অথচ শিক্ষার্থীরা সেই অর্ডিন্যান্সের অন্তর্ভুক্ত নন। এতে স্পষ্টতই অর্ডিন্যান্স লঙ্ঘন হয়েছে। ২০১৮–১৯ অর্ডিন্যান্স চাপিয়ে দিয়ে শুধু ‘ফেইল করা’ শিক্ষার্থীদের রিটেক ও মান উন্নয়ন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, আর বাকি শিক্ষার্থীদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আমরা কোনো বেআইনি সুবিধা চাইনি। আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার—মান উন্নয়ন পরীক্ষার সুযোগ চেয়েছি। কিন্তু বিভাগের ধারাবাহিক ভুলের কারণে আমরা ভুক্তভুগী হয়েছি। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে দৌড়ঝাঁপ করেও সমাধান পাইনি। অর্ডিন্যান্স লঙ্ঘন করে ফল প্রকাশ করে এবং প্রতিশ্রুতি ভেঙে আমাদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের ভুলের দায় শিক্ষার্থীদের ওপর চাপানো অন্যায়। এই সপ্তাহের মধ্যেই মান উন্নয়ন পরীক্ষার অনুমতি দিতে হবে। অন্যথায় প্রমাণ হবে—ইংরেজি বিভাগ শিক্ষার্থী-বান্ধব নয়। যে বিভাগ শিক্ষার্থী-বান্ধব নয়, সে বিভাগ তার কার্যক্রম চালানোর নৈতিক যোগ্যতা রাখে না। এসময় দাবি না মানলে তারা পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান।
এবিষয়ে বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান বলেন, এবিষয়ে আমি উপাচার্যের সাথে কথা বলেছি। আমি বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত আছি। আপাতত আমার কোন মন্তব্য নেই।
বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ২০ জন শিক্ষার্থী মান উন্নয়ন পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিল, আমরা একাডেমিক কমিটি থেকে তাদের নাম পাঠিয়েছিলাম। যাদের মধ্যে ৮ জন শিক্ষার্থী যাদের রিটেক ছিল তাদেরকে অনুমোদন দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। বাকি ১২ জন পরবর্তীতে আবারো আবেদন করে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আবারো একাডেমিক কাউন্সিলের একটা মিটিং হয় এবং আমরা সেই ১২ জনের নাম কন্ট্রোলার অফিস পাঠাই। পরবর্তীতে উপাচার্য স্যার এটাকে আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের আশ্বাস দেন। এখন বিষয়টি কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ-কাফের’ আখ্যা দিলেন রাবি শিক্ষক
নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ ও ‘কাফের’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত আইডিতে একটি পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন– ‘আজ মুরতাদ কাফির বেগম রোকেয়ার জন্মদিন।’ তার এ মন্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান জানান, তিনি সাজিদ হাসান নামের একজনের পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে ওই কথাগুলো লিখেছেন। তার মতে, ‘ওই পোস্ট পড়ে মনে হয়েছে, বেগম রোকেয়া ইসলামবিদ্বেষী ছিলেন। সাজিদ হাসানের পোস্টের পুরো লেখাটা পড়লে বেগম রোকেয়ার সেই পরিচয় এসে যায়।’
কথাগুলো কেন লিখেছেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এই পোস্টের লেখাগুলো ভেরিফিকেশনের জন্য বড় আলেমের কাছে যেতে হবে। আপনি বুঝবেন না। আলেমের কাছে গেলেই আপনি বুঝবেন, তিনি কাফের বা মুরতাদ ছিলেন কিনা।
বেগম রোকেয়ার আর কোনো লেখা পড়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি দাবি করেন, তার লেখা উপন্যাস তিনি পড়েছেন।
সাজিদ হাসানের পোস্টে দেখা যায়, বেগম রোকেয়ার রচনাবলী থেকে খণ্ড খণ্ডভাবে ইসলাম সম্পর্কিত কথাগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাবি উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত। এটা অনেকের ভালো লাগবে না। এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে এন্ডোর্স (সমর্থন) করি না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন উপমহাদেশের নারীশিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধের অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি কখনোই ধর্মবিদ্বেষী ছিলেন না বরং কুসংস্কার, বৈষম্য ও অজ্ঞতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।
এমকে
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ঢাবির চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৮৯ শতাংশই ফেল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তি প্রোগ্রামের চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এই পরীক্ষায় পাসের হার ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ৮৮ দশমিক ৭৫ শতাংশই অকৃতকার্য হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর ভর্তি ওয়েবসাইটে এ ফলাফল পাওয়া যাবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ওয়েবসাইটে (https://admission.eis.du.ac.bd/) এই ফল প্রকাশিত হবে। ফলপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইটে লগইন করে অথবা প্রবেশপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে নিজ নিজ ফলাফল দেখতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চারুকলা অনুষদের ৮টি বিভাগে ১৩০টি আসনের বিপরীতে ৬ হাজার ৫২১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। এরমধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৫ হাজার ৩৫২ জন শিক্ষার্থী।
প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, মাত্র ৬০২ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। আর অকৃতকার্য হয়েছেন ৪ হাজার ৭৫০ জন শিক্ষার্থী। উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ১৫৪ জন এবং ছাত্রী ৪৫৭ জন।
এমকে
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ
ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। রবিবার (০৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সাইন্সল্যাব এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বাসে যাতায়াতের সময় কথা-কাটাকাটির জেরে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে ঢাকা কলেজ সংলগ্ন উত্তরা ব্যাংকের সামনে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সেদিন পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, রাজধানীর ঐতিহাসিক ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। কখনও কখনও তা ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয়।
গত ৯ নভেম্বর এই তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমঝোতা করতে অভিনব উদ্যোগ নেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মাহফুজুল হক। আয়োজন করা হয় এক শান্তি চুক্তি অনুষ্ঠানের। সেখানে ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা একে অন্যকে ফুল দিয়ে এবং কোলাকুলি করে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করেন। তবে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা এই শান্তি চুক্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
সচিবালয় অভিমুখী সড়কে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের অবস্থান
রাজধানীর শিক্ষা ভবনের পাশের সংযোগ সড়ক থেকে সচিবালয় অভিমুখী সড়কে অবস্থান নিয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। এতে হাইকোর্ট মোড় থেকে সচিবালয় অভিমুখে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে একটার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীরা শিক্ষাভবনের সামনের সড়কে বসে পড়েছেন। পুলিশ সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা তৈরি করেছে। এতে এই লেন দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর রাতভর শিক্ষাভবন মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন আন্দোলনের সংগঠক নাঈম হাওলাদার। পরে একদল শিক্ষার্থী রাতে মোড়েই কাঁথা বিছিয়ে ঘুমান। সকাল থেকে অন্যরা পুনরায় জড়ো হওয়া শুরু করেছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা এক দফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া ফিরে যাবেন না।




