রাজনীতি
ভারতের কনসার্ন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই না: হাসনাত
মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে, ব্যুরোক্রেসিকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে, মিলিটারিকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে, পাশের দেশ ভারতের কনসার্ন নিয়ে আমরা কোনো ক্ষমতায় যেতে চাই না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষীর জবানবন্দি দেওয়ার পর ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ক্ষমতায় যেতে চাই। আমরা জনগণকে নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই। কোন আনহোলি নেক্সাসকে, ম্যানেজ করে আমরা কোনো কন্ট্রোলডভাবে ক্ষমতায় যেতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনগণ যদি আমাদেরকে ম্যান্ডেট দেয়, জনগণকে যদি মনে করে আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার উপযোগী, আমরা যেতে চাই।
এমকে
রাজনীতি
দুর্নীতি দমনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিএনপি: তারেক রহমান
অন্য কেউ নয়, দুর্নীতি দমনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিএনপি- এমন মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশ এবং জনগণকে পক্ষে নিতে না পারলে দেশের অস্তিত্ব নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন দেখা দেবে। বিভাজন ও বিভক্তি রেখে দেশ গড়া সম্ভব নয়।
যেকোনো মূল্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, আইনের মাধ্যমে বিচার করা হবে। দুর্নীতি দমনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিএনপি। সরকার গঠনে সক্ষম হলে স্বাবলম্বী মা এবং স্বাবলম্বী পরিবার গড়ে তুলা হবে।
শিক্ষা খাতের পরিকল্পনার বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, স্কুলে কয়েকটি ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক করা হবে। বাচ্চারা নিজেরাই ঠিক করবে কোন ভাষা শিখবে। ইংরেজির পাশাপাশি আরো একটি ভাষা শিখতে হবে।
তরুণদের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনাও ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে চার কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে। রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা যেভাবে জনগণের কাছে নেওয়া যায় তাই করা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৩ লাখের মতো মসজিদ আছে। মসজিদগুলোতে যে ইমাম-মুয়াজ্জিন সাহেবরা আছেন, তাদের সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।
অনেকেই অনেক কথা বলছে, কিন্তু ক্ষমতায় গেলে কীভাবে দেশ পরিচালনা করবে তা বিএনপির মতো বিস্তারিত কেউ তুলে ধরেনি বলেও মন্তব্য করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এমকে
রাজনীতি
বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইসলামী আন্দোলন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার মুফতি হাবিব
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত পটুয়াখালী জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা ও পটুয়াখালী–১ (পটুয়াখালী সদর–মির্জাগঞ্জ–দুমকি) আসনের মনোনীত প্রার্থী মুফতি হাবিবুর রহমান হাওলাদার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাহার করে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে দল থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে তার প্রার্থিতাও।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা সভাপতি হাওলাদার মো. সেলিম মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দলের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীমের নির্দেশে এবং জেলা আমেলার জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুফতি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ কার্যকর করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং পটুয়াখালী-৪ আসনে কেন্দ্র ঘোষিত প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও নিজেকে সেই আসনে প্রার্থী ঘোষণা দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
একইসাথে মুফতি হাবিবুর রহমানের পরিবর্তে পটুয়াখালী জেলা শাখার সদস্য মাওলানা আবুল হাসান বোখারীকে পটুয়াখালী–১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নতুন সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুফতি হাবিবুর রহমান পটুয়াখালী–৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন। অথচ ওই আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগেই সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছিল।
দলীয় অনুমোদন ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় মুফতি হাবিবুর রহমানকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলাজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
রাজনীতি
জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি আবারও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বে: তারেক রহমান
জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি আবারও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দুর্নীতি কীভাবে বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দিচ্ছে- তা বুঝতে দূরে যাওয়ার দরকার নেই। মেধার ভিত্তিতে চাকরি খুঁজতে বের হওয়া একজন গ্র্যাজুয়েটের সঙ্গে কথা বললেই বুঝবেন। মাসের পর মাস ধরে একটি সাধারণ সরকারি সেবা পেতে হিমশিম খাওয়া কৃষকের দিকে তাকান। হাসপাতালে গিয়ে এক তরুণের পরিবার কীভাবে ভোগান্তিতে পড়ে, সেটা শুনুন। অথবা ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখতে ঘুস দিতে বাধ্য হওয়া উদ্যোক্তাদের ভোগান্তি দেখুন।
তিনি বলেন, ‘খাবারের দাম কেন বাড়ে, স্কুলে ভালো পড়াশোনা কেন মেলে না, রাস্তায় কেন নিরাপত্তা নেই- সবকিছুর পেছনে সেই একই কারণ: দুর্নীতি। এটা লাখো মানুষের প্রতিদিনের জীবনকে দমবন্ধ করে ফেলেছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নতুন নয়, এটা বহু যুগের আলোচনার বিষয়। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস আমাদের সেই লড়াইয়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, আর মনে করিয়ে দেয় সেই সময়টাও, যখন বাংলাদেশ সত্যিকারের অগ্রগতি করেছিল। আর সেই সময়টা এসেছে মূলত বিএনপির আমলে।’
তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরানো, পরিচ্ছন্ন সরকারি সেবা আর অর্থনীতিকে মুক্ত করার কাজে হাত দিয়েছিলেন- যা অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার কমিয়ে দিয়েছিল।
‘তারপর প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিকায়ন শুরু হয়; নতুন ক্রয় নীতিমালা, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা, আর পরিষ্কার নজরদারি।’
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ২০০৪ সালে ‘দুদক’ গঠন; একটি স্বাধীন কমিশন, যেখানে সরকার চাইলে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বিশ্বব্যাংক, এডিবি সবাই বলেছিল- এটা বাংলাদেশের জবাবদিহির বড় অগ্রগতি।
তারেক রহমান বলেন, টিআইবি’র জরিপেও দেখা গেছে- ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। মানুষ নিজেরাই বলেছে- দুর্নীতি কমেছে। এটা কোনো গল্প নয়, এটা তখনকার সংস্কারের প্রমাণ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও লিখেছেন, বিএনপি গর্ব করতে পারে কিছু বড় পরিবর্তনের জন্য। এর মধ্যে রয়েছে-
• শক্তিশালী অর্থ ব্যবস্থাপনা: বাজেট নিয়ন্ত্রণ, অডিট, ব্যাংকিং ও মানি লন্ডারিং-বিরোধী আইন।
• স্বচ্ছ ক্রয় নীতি: প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র, নিয়মের মধ্যে সরকারি ক্রয়- যা পরবর্তীতে দেশের সবচেয়ে বড় স্বচ্ছতার আইনের ভিত্তি তৈরি করে।
• উন্মুক্ত বাজার: টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহন; যেখানে প্রতিযোগিতা বাড়ায় দুর্নীতি কমে, সাধারণ মানুষের সুযোগ বাড়ে।
• ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: প্রশাসন কম জটিল, কম ইচ্ছাধীন, বেশি মানুষের কাছে জবাবদিহি।
তাই কথাটা স্পষ্ট- দুর্নীতি কমানোর ক্ষেত্রে ধারাবাহিক রেকর্ড একমাত্র বিএনপি’রই আছে।
তারেক রহমান আগামীদিনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরও শক্তভাবে চালাতে বিএনপির কিচু পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন-
• প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা: আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশন, সরকারি সেবা; কেউই যেন রাজনৈতিক চাপের মধ্যে না থাকে।
• পুরোপুরি স্বচ্ছতা: উন্মুক্ত দরপত্র ব্যবস্থা, সম্পদ বিবরণী, রিয়েল-টাইম অডিট, শক্তিশালী তথ্য অধিকার আইন।
• বিচার ও আইনশৃঙ্খলা সংস্কার: পেশাদার পুলিশিং, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ।
• ই-গভর্ন্যান্স: লাইসেন্স, জমি, পেমেন্ট; সব অনলাইনে এনে ঘুসের সুযোগ কমানো (বিশ্বমান অনুযায়ী ৩০–৬০ শতাংশ দুর্নীতি কমতে পারে)।
• হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা: অনিয়ম ফাঁস করতে যারা সাহস দেখায়, তাদের নিরাপত্তা প্রদান।
• নৈতিক শিক্ষা: স্কুল–কলেজ থেকেই সততার চর্চা পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা।
• শক্তিশালী আর্থিক নজরদারি: ডিজিটাল ব্যয় ট্র্যাকিং ও স্বাধীন অডিট, সংসদের কঠোর তদারকি।
বহু বছর অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই অবশ্যই কঠিন হবে। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসই প্রমাণ করে- যখন সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন একসঙ্গে আসে, তখন পরিবর্তন অসম্ভব নয়।
‘জনগণ যদি দায়িত্ব দেয় বিএনপি আবারও সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।’ যোগ করেন তারেক রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার পোস্টে টিআইবির দেওয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে দুর্নীতির সূচকের একটি চিত্র তুলে ধরেন।
রাজনীতি
আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, ধর্মকে ব্যবহার করি না: জামায়াত আমির
আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, আমরা ধর্মকে ব্যবহার করি না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতাবাসে আট দেশের দূতদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন জামায়াত আমির।
তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে নির্বাচন পেছানো কাম্য নয়। তবে কোনো কারণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব না হলে দেশ গুরুতর সংকটে পড়বে।’ তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে যদি জামায়াত নির্বাচিত হয়, তবে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। নির্বাচনে ২০০ আসনে জিতলেও সেই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘পিআর আমাদের দাবি, আমরা এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হই এবং দেশসেবার সুযোগ পাই তখনো আমরা পিআর বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
ইলেকশনের সময় নতুন করে যারা বেশি বেশি নামাজ শুরু করেন, টুপি পরেন, তসবি হাতে নিয়ে ঘোরেন—ধর্মকে তারাই বোধ হয় ব্যবহার করেন। আমরা সারা বছর তসবিহ হাতে নিয়ে ঘুরি না, তসবিহ বুকে নিয়ে ঘুরি।’
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশবাসী তার (বেগম খালেদা জিয়া) অসুস্থতার জন্য তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া করছে। যার যতটুকু শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পাওয়া সে যেন এটা পায়, সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘আমিও তো মরব, আমরা কেউ তো চিরদিন থাকব না। আমাদের এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। আমাদের বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সমাজের থাকা, চলা ও অচল হওয়ার কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত নয়।’
বৈঠকের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাধারণ নির্বাচন ও রেফারেন্ডাম যদি একই দিনে হয়, সেখানে কোনো প্রবলেম হবে কি না, জানতে চাওয়া হয়। আমরা বলেছি, আমাদের দেশের মানুষ ততটা এখনো কনশাস (সচেতন) না।
এ জন্য একই দিনে দুটো নির্বাচন হলে দুটি নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে, ভোটার টার্নওভারও কম হতে পারে। এসব কারণ সামনে রেখেই আমরা বলেছিলাম—দুটো নির্বাচন আলাদা আলাদা হওয়া উচিত। সে দাবি এখনো আমাদের আছে। সরকার ইচ্ছা করলে সে দাবি এখনো বাস্তবায়ন করতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তারা (আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা) আরো জানতে চেয়েছেন, পিআরের (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) ব্যাপারে আমাদের অবস্থান কী? আমরা বলেছি, পিআর আমাদের দাবি, আমরা এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গেলে, তখনো পিআর বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
জামায়াত আমির আরো বলেন, ‘অতীতের যে কালচার, আমরা তো জিতে গেছি এখন আর পিআরের দরকার কী—এটাকে আমরা পাল্টে দিতে চাই। মানুষ এখন অনেক রাজনৈতিক দলের কমিটমেন্টের (প্রতিশ্রুতি) ওপর আস্থা রাখে না। তারা বলে, আপনারা তো কমিটমেন্ট রক্ষা করেন না। এই যে একটা ব্যাড কালচার হয়ে গেছে, এটাকে পাল্টানোর দায়িত্ব কাউকে না কাউকে নিতে হবে, সেই দায়িত্বটা আমরাই নিতে চাই।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন—সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব কিভাবে হবে, সব মানুষের সিকিউরিটি কিভাবে নিশ্চিত হবে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানটা কিভাবে হবে? যদি আমরা নির্বাচিত হই, তাইলে প্রথমে ১০০ দিনে আমাদের জনগণের প্রতি কী বক্তব্য থাকবে, কী করণীয় থাকবে—এই বিষয়গুলো তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, আমাদের সবকিছুই ফ্রেম করা আছে, আমরা যখন যেটা প্রযোজ্য সেটা সামনে রিলিজ (প্রকাশ) করব।’
জামায়াত আমির বলেন, তারা একটা ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ দেখতে চান। আমরা বলেছি, জনগণের ভালোবাসায় আমরা নির্বাচিত হলে সেই ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ আমরা গড়ব ইনশাআল্লাহ, আমরা কোনো দলকেই বাদ দেব না। আগামী পাঁচ বছরে দেশের স্থিতিশীলতা, ইকোনমি ফিরিয়ে আনা, আইনের শাসন সমাজে কায়েম করা এবং সমাজ থেকে দুর্নীতিকে নির্মূল করার জন্য আমাদের একটি জাতীয় সরকারের প্রয়োজন। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারই গঠন করব।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা ইলেকশন (নির্বাচন) পেছানোর কোনো সুযোগ আছে মনে করি না, এবং এটি উচিত নয় মনে করি। আমরা মনে করি, ফেব্রুয়ারির ঘোষিত এই টাইমলাইনের ভেতরে নির্বাচন হওয়াই দেশের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এর সামান্য কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দেশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এমকে
রাজনীতি
আমিও একজন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম: জেলা জামায়াত আমির
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের আপামর জনসাধারণ, সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে উল্লেখ করে চাঁদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা বিল্লাল হোসাইন মিয়াজী বলেছেন, ‘আমি তখন চতুর্থ শ্রেণীতে লেখাপড়া করি। আমাদের গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। আমরা বাড়ি বাড়ি থেকে তাদের জন্য চাল, ডাল ইত্যাদি উঠিয়ে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তাইলে আপনি কি আমাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলতে পারেন না? আমি কি সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম না?’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ‘অঙ্গীকার’-এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মাওলানা বিল্লাল হোসাইন বলেন, ‘যাতে আমরা স্বাধীনভাবে নিজেদের জীবন যাপন করতে পারি। আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সবকিছুকেই যাতে আমরা স্বাধীনভাবে নিজেরা নিজেদেরটা করতে পারি। কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি যাতে আমাদের উপরে নাক গলাতে না পারে। এটাই ছিল আমাদের মূল মুক্তিযুদ্ধের টার্গেট।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং আমাদেরকে যারা আসলে একটু বাঁকা চোখে দেখতেছে, আমি তাদের প্রতি অনুরোধ করব, বাঁকা চোখে না দেখে দেশ গঠন করার লক্ষ্যে আমরা আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা একত্রে কাজ করি।’
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘এই দেশের আপামর বাঙালি মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে মেজর জিয়া, পরবর্তীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। কিন্তু সেই ইতিহাস বিকৃত করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এই দেশ যতোদিন টিকে থাকবে, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানুষের মণিকোঠায় থাকবেন। তাদেরকে সম্মান জানানো দেশের প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব।’
প্রসঙ্গত, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ১৯৭১ সালের এই দিনে চাঁদপুর পাক হানাদারমুক্ত হয়। এদিন চাঁদপুর থানায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আউয়াল কিরন। তবে তার আগেই জেলার ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ শত্রুমুক্ত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
এর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করেন। এছাড়া বেলুন উড়িয়ে ও দেশের সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।
এমকে




