জাতীয়
তপশিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো হবে: সিইসি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিজিবি সদর দপ্তরে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ও মহড়া পরিদর্শনে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই আমরা আশা করছি, আইন–শৃঙ্খলা বজায় রেখে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারব।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পারফেক্ট লেভেলে চলে গেছে বলে মনে করি না। তবে ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরে আসছে।
সিইসি বলেন, নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। নির্বাচনে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ এম এম নাসির উদ্দীন হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, কেউ নির্বাচন প্রতিহত করতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাতীয়
কড়াইল বস্তিতে আগুনের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগ
রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে আগুনের ঘটনায় বিপুলসংখ্যক ঘর পুড়ে বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল কড়াইল বস্তিতে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে এ আগুন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৯টি ইউনিট কাজ করে রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রধান উপদেষ্টা এ ঘটনায় আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। তিনি বলেছেন, কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ডে যেসব পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছেন, তাদের দুঃখ-কষ্ট আমাদের সকলের বেদনার। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
ফ্রেশ সুগারে ক্ষতিকর রাসায়নিক: মেঘনা গ্রুপ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
মেঘনা গ্রুপের কোম্পানি মেঘনা সুপার রিফাইনারীর উৎপাদিত ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ সুগারে’ চিনির চেয়ে ‘সালফার ডাই অক্সাইড’-এর মাত্রা অনেক পরিমাণ বেশি বলে প্রমাণ পেয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিরাপদ খাদ্য আদালত। ‘সালফার ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ’ নিম্নমানের চিনি তৈরি ও বাজারজাত করায় মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বীথি গ্রেফতারের আদেশ দেন। মামলার বাদী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক (স্যানিটারী ইন্সপেক্টর) মোহাং কামরুল হাসানের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চিনি প্রক্রিয়াকরণে সালফার ডাই অক্সাইড একটি ব্লিচিং এবং সংরক্ষণকারী উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা চিনির রঙ উন্নত করে এবং এর স্থায়িত্ব বাড়ায়। এই রাসায়নিকটি ব্যবহার করে তৈরি চিনিকে ‘সালফিটেড চিনি’ বলা হয় এবং এটি একটি সাধারণ প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি, যদিও এতে কিছু পরিমাণ সালফার থাকতে পারে। সালফার-মুক্ত চিনি তৈরি করা হয় সালফার ডাই অক্সাইড ব্যবহার না করে, যা স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়।
মামলার বাদী খাদ্য পরিদর্শক কামরুল যাচাই বাছাইয়ে পাওয়া তথ্যের বরাতে বলেন, খাদ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি মেঘনা গ্রুপের মেঘনা রিফাইনারি জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে নিম্নমানের চিনি পণ্য বিক্রি করছে। এ কোম্পানির চিনিতে ‘চিনির মাত্রা কম ও সালফারের উপস্থিতি’ পাওয়া গেছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মেঘনা সুগার মিলের উৎপাদিত চিনির একটি নমুনায় ন্যূনতম অনুমোদিত ৯৯.৭০ শতাংশের বিপরীতে ৭৭.৩৫ শতাংশ সুক্রোজ পাওয়া গেছে। একই চিনির নমুনায় সালফার ডাই-অক্সাইড পরীক্ষায় ০.০৮ পিপিএম পাওয়া যায়। বিএসটিআই মানদণ্ড অনুযায়ী, চিনিতে সালফার ডাই-অক্সাইডের কোনো উপস্থিতি থাকার কথা নয় বলে মামলার আবেদনে বলা হয়েছে।
খাদ্য পরিদর্শক কামরুল বলেন, সালফার ডাই-অক্সাইড হলো একটি প্রিজারভেটিভ এবং এটি কৃত্রিমভাবে চিনি সাদা করতে ব্যবহৃত হয়। আর চিনিতে কমমাত্রার সুক্রোজ থাকার অর্থ এতে চিনির বদলে কৃত্রিম মিষ্টি করার উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, ব্যাখায় বলেন ওই কর্মকর্তা। নিরাপদ খাদ্য আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ ডিসেম্বর ঠিক করেছে।
উল্লেখ্য, চিনির বাজারে মেঘনা গ্রুপ বর্তমানে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে, যা সিটি গ্রুপের সাথে প্রতিযোগিতা করছে। মেঘনা গ্রুপ এবং সিটি গ্রুপ বাংলাদেশের চিনির বাজারের শীর্ষস্থানীয় দুটি প্রতিষ্ঠান। গত বছর মেঘনা গ্রুপের বাজার হিস্যা ছিল ১৭%, যা সিটি গ্রুপের ১৫% এর চেয়ে বেশি ছিল।
এমকে
জাতীয়
নিম্নমানের কিট ক্যাট বাজারজাত: নেসলে এমডির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
নিম্নমানের কিট ক্যাট চকলেট বাজারজাতের অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা ও পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বীথি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছেন।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক (স্যানিটারি ইন্সপেক্টর) কামরুল হাসানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মামলায় পবরর্তী শুনানির তারিখ ১৫ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিম্নমানের কিট ক্যাট চকলেটের বিরুদ্ধে আগে থেকেই একটি মামলা চলছে। ওই মামলায় মামলায় কিট ক্যাটের আমদানিকারক সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোজাম্মেল হোসাইনকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায়ও তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।তদন্তে নেসলে বাংলাদেশের আমদানি করা কিট ক্যাট চকলেট ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করানো হয়। সেই পরীক্ষাতেও নিম্নমানের বলে রিপোর্ট এসেছে।
বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য খাদ্য পরীক্ষাগার এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের দেওয়ার রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান। মামলার শুনানি শেষে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা ও পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেওয়া হয়।
আগের মামলার বিষয়ে নেসলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে হয়, সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজ-এর বিরুদ্ধে কিছু খুচরা দোকানে কিটক্যাট পণ্য সরবরাহ করার অভিযোগে নিরাপদ খাদ্য আইনের অধীনে একটি মামলা দায়ের হওয়ার সংবাদটি আমাদের নজরে এসেছে। আসলে বাংলাদেশে বাজারজাত করা কিটক্যাট পণ্যগুলোর কোনোটাই এদেশে তৈরি নয়। বরং এগুলো ফিনিশড পণ্য হিসেবে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রশ্নবিদ্ধ পণ্যটি নেসলে বাংলাদেশ আমদানি বা বিতরণ করেনি এবং সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে নেসলে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এবার খোদ নেসলে বাংলাদেশের আমদানি করা চকলেট পরীক্ষায় মানহীন পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নেসলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সম্পূরক অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত ১০ নভেম্বর স্বপ্ন এসিআই লজিস্টিকস থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই নমুনা পাঠানো হয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের খাদ্য বিশ্লেষক ইলিয়াছ জাহেদীর কাছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ করা হলে তারা লিখেছে, পণ্যটি বিএসটিআইয়ের মানের আওতাভুক্ত নয়। বিষয়টি বোধগম্য নয়, বাংলাদেশের দেশীয় নামকরা খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিডিএস মানের লোগো ব্যবহার করছে। মান প্রণয়ন না করা পর্যন্ত অন্য একটি দেশের উৎপাদিত পণ্য নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ অনুযায়ী বাজারজাত করার সুযোগ নেই। আমদানি নীতি আদেশ ২০২১/২০২৪ অনুযায়ী বিএসটিআই হতে পরীক্ষণ পূর্বক ছাড়পত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক। বিএসটিআই কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়াই নেসলে কিট ক্যাট পণ্য দুবাই ও ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করে বাজারজাত ও বিক্রয় করে আসছে। এতে করে জনগণকে প্রতিনিয়ত ঠকানো হচ্ছে বলে ও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে আমানিয়া বেকারী অ্যান্ড সুইটস (ইনার সার্কুলার রোড, ফকিরাপুল, ঢাকা) থেকে সংগ্রহ করা কিট ক্যাট মানসম্মত নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে দুধের কঠিন অংশ (ফ্যাটবিহীন দুধ/স্কিম মিল্ক পাউডার, ল্যাকটোজ) ১২ থেকে ১৪ শতাংশ অথবা তার ঊর্ধ্বে থাকার কথা। কিন্তু পরীক্ষার রিপোর্টে মাত্র ৯.১২ শতাংশ পাওয়া গেছে। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরপরেই বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের (আমানিয়া বেকারী অ্যান্ড সুইটস) ম্যানেজারকে নোটিশ করেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। বিক্রেতা চকলেটগুলো (কিট ক্যাটগুলো) আমদানিকারক সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজ ও উৎপাদনকারিকে (নেসলে) অপরাধী চিহ্নিত করেন।
মামলায় কিট ক্যাটের আমদানিকারক সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজের (৭ মকিম কাটারা, সাখাওয়াত ম্যানশন, চকবাজার ঢাকা) মালিক মোঃ মোজাম্মেল হোসাইনকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইনের ২৬, ৩৭, ৩৯, ৪০ এবং ৫৮ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বলে জানা গেছে। কিট ক্যাটের আমদানিকারক সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজের নম্বরে ফোন দিলে রিসিভ করেন তুহিন নামের এক ব্যক্তি। কিট ক্যাটের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। মালিক এখন বাইরে রয়েছে, তিনি এলে আপনাকে ফোন দিতে বলব।
পরিদর্শক কামরুল বলেন, ‘মামলাটি দায়ের করা হয়েছে নেসলে উৎপাদিত কিটক্যাট চকলেট-কোটেড ওয়েফার পরীক্ষা করে নিম্নমানের প্রমাণ পাওয়ার পর। দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যটির নমুনা ওয়েফার বিস্কুট এবং তার চকোলেট আবরণ—দুটি ভাগে পরীক্ষা করা হয়েছিল। উচ্চ অ্যাসিডিটি পচন নির্দেশ করে বা সহজভাবে বললে বোঝায় যে খাবারটি পচা। মানদণ্ডের সীমার চেয়ে কম দুধের কঠিন পদার্থ এবং দুধের ফ্যাট থাকার অর্থ হলো, যে খাবারটিকে দুগ্ধজাত পণ্য হিসেবে বাজারজাত করা হয়, তাতে দুধের উপস্থিতি নেই।’
এই বিষয়ে নেসলে বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব দেবব্রত রায় চৌধুরী বলেন, কিটক্যাট এর মত প্রোডাক্টের জন্য বিএসটিআই কোনো স্ট্যান্ডার্ড ডেভেলপ করেনি। যে কারণে কিটক্যাটে কিন্তু বিএসটিআই’র কোনো সিল থাকে না। তারা যে স্ট্যান্ডার্ড ডেভেলপ করেছে সেটা চকলেট বিস্কুটের। এ বিষয়ে তারা আমাদের একটি এনওসি দিয়েছে। দুবাই ও ভারত থেকে কিটক্যাট আমদানি করার দাবি করে এ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের এই পণ্য পরীক্ষা করে সরকারের আরেকটি সংস্থা বিসিএসআইআর। প্রত্যেকটা কনসাইনমেন্ট ছাড়ের জন্য এ পণ্য পরীক্ষার পর বিসিএসআইআর এর প্রতিবেদন নেওয়া হয়। সেটি দেখেই পণ্যটির ছাড়পত্র দেয় কাস্টমস। নেসলের পণ্যে গড়বড় করার কোনো সুযোগ নেই দাবি করে কোম্পানি সচিব বলেন, সারা পৃথিবীতে কিটক্যাট প্রোডাক্টটা বিক্রি হয়। ওটা খুবই সংবেদনশীল, যে কারণে ওটা একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা (মামলাকারী) আমাদের সঙ্গে অফিসিয়ালি কোনো যোগাযোগই করেনি। যখন আমাদের ডিস্ট্রিবিউটারের সাথে যোগাযোগ করছে তখন সাথে সাথেই তারা কাগজপত্র জমা দিয়েছে। এরপরেও আমি খুবই অবাক হচ্ছি সে মামলা করে দিয়েছে। উনি সবাইকে ইগনোর (আমলে নিচ্ছেন না) করছেন। আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারী। ৩২ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কখনো এরকম হয়নি। এরকম করলে আমরা কীভাবে ব্যবসা করব।
সারা বিশ্বে বেশ সমাদৃত। কিট ক্যাটের যাত্রা শুরু হয় ‘রাউনট্রি’স চকলেট ক্রিস্প’ নামে। ১৯৮৮ সালে নেসলে (সুইজারল্যান্ড) এটি অধিগ্রহণ করে কিট ক্যাট নামকরণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বজুড়ে নেসলে কোম্পানি এই চকোলেটটি উৎপাদন করে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করে হার্শে কোম্পানি। বহুজাতিক কোম্পানির ওই পণ্যের গুণগতমানের অবস্থা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। তারা বলেছেন, এ রকম একটি নামকরা কোম্পানি যদি ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে, তাহলে কার ওপর আস্থা রাখব। নেসলের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিৎ।
এমকে
জাতীয়
অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার লকারে ৮৩২ ভরি সোনার সন্ধান
অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি ভল্ট ভেঙে ৮৩২ ভরি স্বর্ণালংকারে সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) এই ভল্ট দুইটি ভাঙ্গার সময় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ইতোমধ্যে লকারের একটি সিজার লিস্ট করা হচ্ছে। এর আগে লকার দুটি জব্দ করে এনবিআরের এই গোয়েন্দা সংস্থা।
সিআইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নামে অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চে থাকা ৭৫১ এবং ৭৫৩ নম্বর ভল্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের রেগুলেশন অনুযায়ী ভাঙা হয়। ভল্ট দুটি থেকে মোট ৮৩২ ভরি স্বর্ণালংকারে সন্ধান পাওয়া যায়।
তবে স্বর্ণের বাইরে আর কি ধরনের জিনিস রয়েছে, তা জব্দ তালিকার পর জানা যাবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
অবশ্য একই দিন শেখ হাসিনার নামে রক্ষিত পূবালী ব্যাংকের একটি শাখায় রক্ষিত ভল্ট খোলা হলেও সেখানে কোনো স্বর্ণালংকার বা কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, পূবালী ব্যাংকের ওই ভল্টে কেবল একটি পাটের বস্তা পাওয়া গেছে। তবে এই তথ্যের সত্যতা নিয়ে দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমকে
জাতীয়
বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকায় নবনিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জঁ-মার্ক সেরে-চারলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন ধারায় নিতে তার দেশের প্রস্তুতির কথা জানান। তিনি দুদেশের মধ্যে বিশেষ করে গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে স্বার্থের সঙ্গতি গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লেট বলেন, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মুখে দাঁড়িয়ে, যখন দেশ ইতিহাস সৃষ্টিকারী জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। এটি ফ্রান্স ও বাংলাদেশের জন্য আমাদের অংশীদারত্বকে এগিয়ে নেওয়া এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণের সময়।
তিনি আরও জানান, এ মাসের শুরুর দিকে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বাংলাদেশের প্রতি ফ্রান্সের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেছেন। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, ফ্রান্সের প্রায় ১৫ লাখ নাগরিক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বসবাস করছে, যা ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার প্রায় তিন শতাংশ।
তিনি বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল খোলা এবং স্বাধীন চলাচলের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত। ফ্রান্স বাংলাদেশের সঙ্গে আরও কার্যকর সম্পর্কের জন্য বড় সম্ভাবনা দেখছে।
রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ এ ধরনের নির্বাচন পরিচালনায় ফ্রান্সের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে পারবে।
তিনি কিছু ইউরোপীয় দেশের উদাহরণ তুলে ধরেন, যেখানে নির্বাচনকালীন পরিকল্পিত ভুল তথ্য প্রচার এবং সামাজিক বিভাজনের প্রচেষ্টা দেখা গেছে।
রাষ্ট্রদূত জঁ-মার্ক সেরে-চারলে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশকে সবচেয়ে কম উন্নয়নশীল দেশের (এলডিসি) অবস্থান থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহযোগিতা সম্প্রসারণে ফ্রান্স প্রস্তুত বলে জানান।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সের এ প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানান এবং দেশটিকে ‘বিশ্বস্ত ও দীর্ঘদিনের অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি রাষ্ট্রদূতকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংশোধনী উদ্যোগ ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বর্ণনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে বলেন, আপনার নিয়োগের সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে।
তিনি ফ্রান্সের ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন—যা গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জলবায়ু কার্যক্রম এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার বিষয়ে অবদান রেখেছে।
ড. ইউনূস তার দীর্ঘদিনের ফ্রান্স সফর এবং ফরাসি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন, যা তিনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের আগে গড়ে তুলেছিলেন।
এমকে



