আন্তর্জাতিক
গাজায় যুদ্ধবিরতির পর ৬৭ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত: জাতিসংঘ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার পরেও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭ জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। প্রতিষ্ঠানটি এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং গাজার শিশুদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান নেই। শনিবার (২২ নভেম্বর) আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত এক নবজাতক শিশু। এর আগের দিনও ইসরায়েলি হামলায় আরও সাত শিশু নিহত হয়।
পিরেস বলেন, এটি যুদ্ধবিরতির সময় ঘটছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এরা কেবল সংখ্যাতাত্ত্বিক তথ্য নয়— প্রতিটি শিশু একটি পরিবার, একটি স্বপ্ন, একটি জীবন নিয়ে ছিল। হঠাৎ করে অব্যাহত সহিংসতার কারণে সব শেষ হয়ে গেছে।
ইউনিসেফের আগের হিসাবে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৪ হাজার ফিলিস্তিনি শিশু হতাহত হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ২০২৪ সালে প্রতি মাসে গড়ে ৪৭৫ জন ফিলিস্তিনি শিশু আজীবন পঙ্গুত্ব বয়ে আনবে এমন আঘাত পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ট্রমাটিক ব্রেন ইনজুরি, পোড়া ক্ষতসহ অন্যান্য গুরুতর শারীরিক ক্ষতি।
সংস্থাটি আরও বলেছে, গাজা এখন ‘আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিশু অঙ্গহানি-বহুল অঞ্চলে’ পরিণত হয়েছে।
খাদ্য সংকটও শিশুদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। মানবিক সহায়তা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় বহু শিশু অপুষ্টি ও ক্ষুধাজনিত জটিলতায় মারা গেছে বলে বিভিন্ন সংস্থা অভিযোগ করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজাজুড়ে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, সেনাদের ওপর হামলার জবাবে এই অভিযান চালানো হয়েছে। তবে হামাস এই দাবি অস্বীকার করে এটিকে ‘গণহত্যা পুনরায় শুরু করার স্পষ্ট ইঙ্গিত’ বলে অভিহিত করেছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে, তাদের চিকিৎসকরা সাম্প্রতিক হামলায় গুলিবিদ্ধ ও খোলা হাড় ভাঙাসহ গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত বহু নারী ও শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছেন। গাজা সিটির একটি মোবাইল ক্লিনিকে কর্মরত নার্স জাহের জানান, তারা এক নারীকে পায়ের গুরুতর আঘাত এবং একজন নয় বছরের মেয়েকে মুখের গুলিবিদ্ধ ক্ষত নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধে গাজায় শীতের মৌসুমে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী—বিশেষ করে তাঁবু, কম্বল, ওষুধ—গুরুতরভাবে সংকট সৃষ্টি করেছে। ইউনিসেফ বলছে, বহু শিশু খোলা আকাশের নিচে, বৃষ্টিভেজা অস্থায়ী আশ্রয়ে শীতের তীব্র ঠান্ডা সহ্য করছে।
ইউনিসেফের মুখপাত্র পিরেসের মতে, গাজার শিশুদের জন্য বাস্তবতা নির্মম ও স্পষ্টত তাদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান নেই। তিনি বলেন, শীতের আগমন তাদের জন্য নতুন হুমকি। হিটার নেই, পর্যাপ্ত কম্বল নেই—শিশুরা রাতভর কাঁপছে ঠান্ডায়।
এমকে
আন্তর্জাতিক
মিস ইউনিভার্সের মুকুট জিতলেন কটাক্ষের শিকার সেই ফাতিমা
২১ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহরে শুরু হয় মিস ইউনিভার্স ২০২৫–এর ফাইনাল পর্ব, যেখানে কয়েকটি পর্ব পেরিয়ে মিস ইউনিভার্সের ফাইনালে উঠে আসেন পাঁচটি দেশের প্রতিনিধি—মিস ইউনিভার্স থাইল্যান্ড, মিস ইউনিভার্স ফিলিপাইন, মিস ইউনিভার্স ভেনেজুয়েলা, মিস ইউনিভার্স মেক্সিকো ও মিস ইউনিভার্স আইভরিকোস্ট। এরপর বিচারকেরা সব প্রতিযোগীকে দুটি করে প্রশ্ন করেন। সে দুই প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত করা হয় মিস ইউনিভার্স ২০২৫।
আর সেই চূড়ান্ত পর্বে সেরার খেতাব জেতেন ফাতিমা। থাইল্যান্ডে মূল পর্ব শুরুর আগে সবাইকে নিয়ে প্রিপ্যাজেন্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ। নিয়ম অনুযায়ী যে দেশে মিস ইউনিভার্স অনুষ্ঠিত হয়, সে দেশের একটি প্রমোশনাল ভিডিও করতে হয় প্রতিযোগীদের।
আনুষ্ঠানিক ফটোশুটের বাইরেও কিছু ছবি তোলা হয়। কিন্তু মিস ইউনিভার্স মেক্সিকো তা সময়মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতে পারেননি। যে কারণে মিস ইউনিভার্স থাইল্যান্ডের পরিচালক নাওয়াত ইতসারাগ্রিসিল তাঁকে সবার সামনে ‘ডাম্বহেড’ বলে কটাক্ষ করেন।
সঙ্গে সঙ্গে এর জবাব দেন মিস মেক্সিকো ফাতিম বশ। সরাসরি বলেন, ‘আপনি আমাকে একজন নারী হিসেবে যথাযথ সম্মান দিচ্ছেন না।’
এরপরও নিরাপত্তা বাহিনীকে ডেকে তাঁকে শাসানোর চেষ্টা করেন সঞ্চালক। কিন্তু ততক্ষণে মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর পক্ষ নিয়ে নেন বাকি প্রতিযোগীরা। একযোগে আসন থেকে উঠে হল ত্যাগ করেন সবাই। মিস ইউনিভার্সের সেই ইভেন্ট সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল ফেসবুকে।
ঘটনার পর মিস ইউনিভার্স মেক্সিকো এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘একুশ শতকে এসে একজন নারী কখনোই হাতের পুতুল হয়ে থাকতে পারে না। যা ইচ্ছা তা–ই বলতে পারেন না কিংবা সাজাতে পারেন না। আমি এখানে এসেছি সব নারীর প্রতিনিধিত্ব করতে। আমাকে অসম্মান করা মানে পুরো নারী জাতিকে অসম্মান করা।’
ঘটনার পর তিনটি ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে ক্ষমা চেয়েছেন সঞ্চালক। কিন্তু তাতে মন গলেনি মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষের। এ বছরই পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়া নাওয়াতকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনার পর হু হু করে জনপ্রিয়তা বেড়েছে মিস ইউনিভার্স মেক্সিকো ফাতিমা বশের। এমনকি তাঁর সঙ্গে অনুষ্ঠান বর্জন করায় প্রশংসা কুড়ান বাকি প্রতিযোগীরাও। ফাইনালে তো চমক দেখিয়েই নিজেকে প্রমাণ করলেন তিনি ‘ইন্টেলিজেন্ট’।
আন্তর্জাতিক
আবেদনের পাঁচ মিনিটেই মিলছে ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা
কুয়েতে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আবারও উন্মুক্ত হয়েছে ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা। নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালুর ফলে এখন আবেদন প্রক্রিয়া আগের তুলনায় অনেক সহজ ও দ্রুত হয়েছে। আবেদনকারীর তথ্য আপলোড করার পর যাচাইকরণ সম্পন্ন হলেই মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ই-মেইলে পৌঁছে যাচ্ছে ই-ভিসা। এতে স্বস্তি ফিরেছে দেশটিতে থাকা তিন লাখেরও বেশি বাংলাদেশি প্রবাসীর মাঝে।
আগের ৩০ দিনের পরিবর্তে এবার ভিজিট ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিথিল হয়েছে বেতন-শর্ত, ফলে অনেক প্রবাসী এখন শুধু স্ত্রী-সন্তান নয়, চার ডিগ্রি আত্মীয় যেমন খালা, কাকা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নাতি-নাতনি, শ্বশুর-শাশুড়ি কিংবা ছেলে-মেয়ের স্ত্রী/স্বামীকেও কুয়েতে আনতে পারবেন।
নতুন প্ল্যাটফর্মে মোট চার ধরনের ভিসার আবেদন করা যাচ্ছে—
.ট্যুরিস্ট
.ফ্যামিলি ভিজিট
.বিজনেস
.গভর্নমেন্ট ভিসা
সম্পর্ক প্রমাণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জন্মসনদই যথেষ্ট হলেও কিছু পরিস্থিতিতে বিবাহ সনদ লাগতে পারে। সব নথিই অবশ্যই আরবি ভাষায় জমা দিতে হবে। অন্য ভাষার নথি অনুমোদিত অনুবাদ অফিস থেকে আরবিতে রূপান্তর করতে হবে।
জিসিসি দেশগুলোর বহু পেশাজীবী অনলাইনে বা আগমনের সময় সহজেই পর্যটন ভিসা পেতে পারবেন। তালিকায় রয়েছে, কোম্পানির চেয়ারম্যান, এমডি, কূটনীতিক, বিচারক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গোল্ডেন ভিসাধারী, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, হিসাবরক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, পাইলট, মিডিয়া কর্মীসহ আরও অনেক পেশা।
পেশা সম্পর্কিত তথ্য আবেদন করার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই হয়ে যায়। পাশাপাশি আবেদনকারীদের কুয়েতে নিজস্ব অথবা আমন্ত্রণকারীর ঠিকানা প্রদান বাধ্যতামূলক।
ইসরাইলের নাগরিক ছাড়া বিশ্বের সব দেশের নাগরিকই এই সুবিধা পাবেন। তবে ভিজিট ভিসায় কাজ করা বা ভিসা রূপান্তরের চেষ্টা করা সম্পূর্ণ অবৈধ। আইন লঙ্ঘন করলে ভিজিটরকে নির্বাসিত করা হবে এবং স্পন্সরও কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে পারেন।
এখন ফ্যামিলি ভিজিট ভিসায় সর্বোচ্চ তিন মাস অবস্থানের সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি এক বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিজিট ভিসা চালু হয়েছে, তবে প্রতিবার প্রবেশের পর সর্বোচ্চ এক মাস অবস্থান করে দেশে ফিরে যেতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিজিট ভিসার অপব্যবহার হলে বাংলাদেশের জন্য এ সুবিধা আবারও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্বজনদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি প্রবাসীদের নিশ্চিত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক
মার্কিন কারখানায় চীনা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করবে না টেসলা
যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত গাড়িতে চীনা যন্ত্রাংশ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ইলোন মাস্কের কোম্পানি টেসলা। ওয়াশিংটন-বেইজিং চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে এ বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) নির্মাতা চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর রয়টার্স।
প্রতিবেদন অনুসারে এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কারখানায় কিছু চীনা যন্ত্রাংশের বিকল্প ব্যবহার শুরু করেছে টেসলা। আগামী এক বা দুই বছরের মধ্যে বাকি সব যন্ত্রাংশের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজে বের করার পরিকল্পনা করছে তারা।
বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি এ কোম্পানি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যকার শুল্কের ওঠা-নামা এবং বাণিজ্যবৈষম্য গাড়ির দাম ও সরবরাহ ব্যবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করছে। তাই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেসলা।
গত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্রের কারখানা থেকে উত্তর আমেরিকার বাজারে সরবরাহ বাড়িয়েছে কোম্পানিটি। গত এপ্রিলে টেসলা জানিয়েছিল, চীনা যন্ত্রাংশের বিকল্প খুঁজছে তারা।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী চীনে উৎপাদিত এ কোম্পানির ইভির বিক্রি গত মাসে ২০২৪ সালের অক্টোবরের তুলনায় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৬১ হাজার ৪৯৭ ইউনিটে নেমে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্যবিবাদের কারণে চলতি বছর সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বৈশ্বিক গাড়ি শিল্প। উচ্চ শুল্ক, দুষ্প্রাপ্য খনিজ ও চিপের সম্ভাব্য ঘাটতির কারণে কোম্পানিগুলো চীননির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে।
গত সপ্তাহে জেনারেল মোটরস তাদের সরবরাহকারীদের চীনা যন্ত্রাংশ সরাতে নির্দেশ দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, টেসলার এ পদক্ষেপ থেকে প্রতীয়মান হয় যে বৈশ্বিক বাণিজ্য অনিশ্চয়তার মধ্যে মার্কিন নির্মাতারা সরবরাহ চেইন সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা সৌদির
আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি পুনর্গঠন এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। দেশটিতে সফরকালে সৌদি বিনিয়োগ ৬০০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে নেওয়ারে বড় ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) এ তথ্য জানায় বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
এর আগের দিন ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যৌথ ব্রিফিংয়ে এমবিএস বলেন, আমরা আশা করছি আজ বা আগামীকাল ঘোষণা দিতে পারবো যে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের প্রকৃত বিনিয়োগ বাড়িয়ে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত করছি।
তিনি আরও জানান, প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)সহ বিভিন্ন খাতে দুই দেশের মধ্যে একাধিক বড় চুক্তি হবে, যা ভবিষ্যতে আরও বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ক্রাউন প্রিন্সের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, মানে, ৬০০ বিলিয়ন এখন ১ ট্রিলিয়ন হবে? জবাবে এমবিএস বলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। আজ যে চুক্তিগুলো স্বাক্ষর হচ্ছে, সেগুলোই এই বৃদ্ধিকে সম্ভব করবে।
ট্রাম্প সৌদি বিনিয়োগের প্রশংসা করে বলেন, আপনি যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে সম্মত হয়েছেন-এজন্য ধন্যবাদ। আর যেহেতু আমার বন্ধু, তাই হয়তো এই অঙ্ক ১ ট্রিলিয়নেও পৌঁছাতে পারে। তবে এ বিষয়ে আমাকে আরও কিছু কাজ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রিমা বিনত বান্দার আল সউদ এ বৈঠককে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি জানান, দুই দেশ বেশ কয়েকটি বড় দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। যদিও এসব চুক্তির বিস্তারিত তিনি প্রকাশ করেননি।
রিমা বলেন, এই চুক্তিগুলো দুই দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি সৌদি ও মার্কিন নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি আরও জোরদার করবে।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে ফের বাড়লো স্বর্ণের দাম
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী এবং আসন্ন চাকরি প্রতিবেদনের দিকে বিনিয়োগকারীদের গভীর মনোযোগের মধ্যেই বিশ্ববাজারে সোনার দাম বৃদ্ধি দেখিয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে মূল্যবান ধাতুটির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ স্পষ্ট হওয়ায় দাম ১ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা ৪৭ মিনিট (১০.৪৭ জিএমটি) পর্যন্ত স্পট সোনার দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ১১২ দশমিক ৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে ডিসেম্বরে সরবরাহযোগ্য মার্কিন ফিউচার সোনার দামও ১ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ হাজার ১১২ দশমিক ৯০ ডলার হয়েছে।
এফএক্সটিএম-এর সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট লুকমান ওটুনুগা বলেন, আগের সেশনে সোনার দাম মনস্তাত্ত্বিক সীমা ৪ হাজার ডলারের কাছ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর বাজারে সতর্কতার মধ্যেও আজ সোনা কিছুটা ঝলমল করছে।
বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন ফেডের অক্টোবর বৈঠকের কার্যবিবরণী এবং বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হতে যাওয়া সেপ্টেম্বরের চাকরি প্রতিবেদনের জন্য। রয়টার্স জরিপ অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫০ হাজার নতুন চাকরি সৃষ্টির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ওটুনুগা আরও বলেন, যদি নতুন অর্থনৈতিক তথ্য সুদের হার কমানোর পক্ষে যায়, তাহলে সোনার দাম ৪ হাজার ১৩০ থেকে ৪ হাজার ২০০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। তবে ফেড কর্মকর্তাদের কঠোর মন্তব্য বা প্রত্যাশার চেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক তথ্য এলে দাম আবার ৪ হাজার ডলারের নিচে নামতে পারে।
নতুন তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের মধ্যভাগে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারভাতা গ্রহণকারীর সংখ্যা দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে ট্রেডারদের প্রত্যাশা কমে ৪৬ শতাংশে নেমেছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ৬৩ শতাংশ ছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, ফেডের বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ও শ্রমবাজার নিয়ে মতপার্থক্য কতটা গভীর—সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে। সুদহার কমার সম্ভাবনা থাকলে সোনার জন্য তা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে, আর শ্রমবাজার শক্তিশালী থাকলে সোনার দাম চাপের মুখে পড়ে।
অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর বাজারেও উত্থান দেখা গেছে। স্পট সিলভারের দাম ৩ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৫২ দশমিক ২৭ ডলার, প্লাটিনাম ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৫৬৬ দশমিক ৩২ ডলার এবং প্যালাডিয়াম ২দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৪৩৩ দশমিক ৪৬ ডলার প্রতি আউন্স হয়েছে।



