কর্পোরেট সংবাদ
সরকারি অনুদান গ্রহণে ৭৮ লাখের বেশি উপকারভোগীর পছন্দ ‘নগদ’
সরকারি বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা ভাতা গ্রহণে দেশের ৭৮ লাখের বেশি উপকারভোগীর পছন্দ হয়ে উঠেছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা ‘নগদ’। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এসব উপকারভোগী নগদের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য ভাতা গ্রহণ করেছেন, যা সেবাটির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা, সহজপ্রাপ্যতা ও নির্ভরযোগ্যতার পরিচায়ক বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নারী ও শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় ১,৬৫০ কোটি টাকার বেশি ভাতা ৭৮ লাখেরও বেশি উপকারভোগীর হাতে সফলভাবে পৌঁছে দিয়েছে নগদ।
চলতি অর্থবছরে সরকার দেশের সব মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)-এর মাধ্যমে ভাতা গ্রহণের সুযোগ রাখলেও অধিকাংশ উপকারভোগী ভাতা গ্রহণের জন্য নগদকেই বেছে নিয়েছেন। দেশের ৬৪ জেলার বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, বেদে সম্প্রদায় ও তৃতীয় লিঙ্গসহ নানা শ্রেণির ৭৫ লাখের বেশি উপকারভোগী তাদের নগদ ওয়ালেটের মাধ্যমে নিয়মিত ভাতা গ্রহণ করছেন।
এসব ভাতার মধ্যে হতদরিদ্র ও প্রতিবন্ধীদের জন্য মাসে ৯০০ টাকা, বয়স্কদের জন্য ৬৫০ টাকা এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের জন্য ৬৫০ টাকা করে ভাতা বিতরণ করা হচ্ছে। নারী ও শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় তিন লাখের বেশি উপকারভোগী প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা করে তিন বছর মেয়াদে (৩৬ মাস) ভাতা পাচ্ছেন।
নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, “এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে দেশের ৬৪ জেলার লাখ লাখ উপকারভোগী সরকারি ভাতার টাকা নগদের মাধ্যমে গ্রহণ করেছেন। গ্রাহকের এই আস্থা আমাদের ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে আরও উৎসাহিত করছে। আমরা চাই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি মানুষ যেন কোনো মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই সহজে ও নিরাপদে সেবা পান।”
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা নগদের মাধ্যমে বিতরণ করেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে ভাতা বিতরণ অব্যাহত রেখেছে সরকার, যা ডিজিটাল সেবা প্রদানে সরকারের আস্থা আরও মজবুত করেছে।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভাতা বিতরণের ফলে উপকারভোগীরা এখন মুহূর্তেই সহজে টাকা তুলতে পারছেন, সময় ও খরচ সাশ্রয় হচ্ছে এবং ঝুঁকিও কমছে।
দেশে ডিজিটাল লেনদেনের অবকাঠামো গঠনে সরকারের উদ্যোগের সহযাত্রী হিসেবে নগদ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে ও গ্রাহক সেবাকেন্দ্রিক নানা উদ্ভাবনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
কর্পোরেট সংবাদ
বিভিন্ন দেশে সংগঠিত গণহত্যার প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন
সুদান-সহ সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের মতো ঘটনা ঘটছে। এই গণহত্যা ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে প্রতিবাদী মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার ডাক দেন এবং পরিকল্পিত গণহত্যার বন্ধের আহ্বান জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী, ইয়াশিরুল কবির সৌরভ ও মুবাশ্বির-সহ অন্যান্য সহ-সমন্বয়কবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, আফ্রিকার মহাদেশের সুদান রাষ্ট্র আজ ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে এবং লাখো মানুষ গৃহহীন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এটি বিশ্বের অন্যতম বড় মানবিক সংকটের দেশ। সেখানে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। সর্বশেষ গণহত্যায় রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে আছে অথচ কবর দেয়ার মানুষও নাই। সভ্য পৃথিবীতে গণহত্যা কাম্য নয়। অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধ আন্তর্জাতিক মহলের জোর তৎপরতা চালাতে হবে।
ইবি সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, সুদান-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে গণহত্যা চলছে তার প্রতিবাদে আজকে আমরা মানববন্ধন করছি। চব্বিশের গণ-আন্দোলনে আমাদের অনুপ্রেরণা ছিলো ফিলিস্তিনের গাজাবাসীরা। আজকে ফিলিস্তিন, চীন, সুদান এবং ভারতের কিছু কিছু আঞ্চলে গণহত্যা চলছে। আমরা এসব গণহত্যা বন্ধ চাই এবং কিভাবে বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে কাজ করবো। পাশাপাশি বিশ্বকে এসব বন্ধের আহ্বান করছি।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম
কর্পোরেট সংবাদ
সেন্ট্রাল শরীয়াহ কাউন্সিলের ২৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা
সেন্ট্রাল শরীয়াহ কাউন্সিল ফর ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স অব বাংলাদেশের ২৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় মতিঝিলে কাউন্সিল কার্যালয় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুহতারাম অধ্যক্ষ সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী সভাপতিত্ব করেন এবং সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক শায়েখ এবিএম মাছুম বিল্লাহ সভা সঞ্চালনা করেন।
এসময় বিগত সভার কার্যবিবরণী নিশ্চিতকরণ, ২০২৪ সালের অডিট রিপোর্ট ও বার্ষিক প্রতিবেদন অনুমোদন, ২০২৫ সালের অডিটর নিয়োগ এবং ২০২৬ সালের বার্ষিক বাজেট অনুমোদন করা হয়।
সভায় কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান, বঙ্গভবন জামে মসজিদের খতীব ও আলফা ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের শরীয়াহ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি মাওলানা মো. সাইফুল কাবির, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স পিএলসির শরীয়াহ কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আ. ন. ম. রফীকুর রহমান মাদানী, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ও এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসির শরীয়াহ কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শরীয়াহ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ নজরুল ইসলাম আল মারুফ মাদানী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ও প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শরীয়াহ কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. মাওলানা আবু ছালেহ পাটোয়ারী, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শরীয়াহ কাউন্সিলের সদস্য সাইয়্যেদ জারীর জাফরী মাদানী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এবং কাউন্সিলের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আবুল কালাম আজাদ, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এবং বাংলাদেশ ইনসিওরেন্স এসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম নুরুজ্জামান, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইনসিওরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (ভারপ্রাপ্ত) মো. রফিকুল ইসলামসহ সদস্য কোম্পানির প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তাগণ শরীয়াহভিত্তিক বীমা খাতের সুষ্ঠু ও নৈতিক পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ইসলামী বীমা শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
কর্পোরেট সংবাদ
অক্টোবরে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড করলো নগদ
সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা নগদ একমাসে সর্বোচ্চ লেনদেনের নতুন রেকর্ড করেছে। শেষ হওয়া এই মাসে প্রতিষ্ঠানটি ৩৪ হাজার ৭০৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করেছে। এই অসামান্য অর্জন উপলক্ষ্যে কয়েক কোটি নিবন্ধিত গ্রাহকের বিশাল পরিবারের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে নগদ কর্তৃপক্ষ।
যাত্রা শুরুর পরপরই গ্রাহক প্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে বাজারে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে নগদ। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা ও লেনদেন উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ মাসে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ লেনদেনের অঙ্ক পার করল। এর আগে চলতি বছরের মার্চে একবার মাসে ৩৪ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের অঙ্ক ছুঁয়ে যায় নগদ। তারও আগে ২০২৪ সালের জুন মাসে একবার নগদের মাধ্যমে ৩২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। সব মিলে বাংলাদেশের সামগ্রিক ডিজিটাল লেনদেন নতুন উচ্চতায় তুলে আনার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে নগদ।
নগদ-এর রেকর্ড গড়া এই লেনদেনের ক্ষেত্রে সরকারি ভাতা বিতরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই মাসে নগদের মাধ্যমে সমাজসেবা ও মহিলা অধিদপ্তরের প্রায় ৭৯ লাখ মানুষের মধ্যে ভাতা বিতরণ করেছে নগদ। তাছাড়া উল্লেখযোগ্য লেনদেনের মধ্যে ছিল – ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট, সেন্ড মানি, পেমেন্ট এবং মোবাইল রিচার্জ। আর এসব লেনদেনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় লেনদেনের নতুন রেকর্ড গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাই গ্রাহক পছন্দের সেরা মোবাইল আর্থিক সেবা অপারেটর হয়ে উঠেছে নগদ।
নতুন এই মাইলফলক অর্জন উপলক্ষ্যে সকল গ্রাহক, কর্মী, উদ্যোক্তাসহ সম্পৃক্ত সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। তিনি বলেন, সাফল্য কখনোই ঘটনাচক্রে আসে না। এটা সকলের যৌথ পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার ফসল। তাছাড়া সবাই যখন একই লক্ষ্য ও একই মূল্যবোধ ধারণ করে কাজ করে তখন শ্রেষ্ঠত্বের জন্য লড়াই করাটাও সহজ হয়।
মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্তমানে নগদ আরও উন্নত সেবার মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থের অধিকতর নিশ্চয়তা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। নগদের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিষদের ওপরেও গ্রাহকদের আস্থা আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আর গ্রাহকদের আস্থার কারণেই বাড়ছে লেনদেন।
সর্বোচ্চ লেনদেনের এই মাসে একদিনে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ১৫ অক্টোবর। এদিন নগদের গ্রাহকেরা মোট এক হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল সেবা হিসেবে যাত্রা শুরু করার পর থেকে একের পর এক উদ্ভাবন ও গ্রাহকবান্ধব সেবার কারণে নগদের গ্রাহক সংখ্যা দ্রুততার সঙ্গে বাড়তে থাকে। এখনও নগদের অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিন এই সেবাটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রাহক যুক্ত হচ্ছেন।
কর্পোরেট সংবাদ
নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে প্রকাশ্যে ঋণ দিল এনআরবিসি ব্যাংক
এনআরবিসি ব্যাংকের ভোলার বিভিন্ন শাখা-উপশাখার প্রান্তিক, ভূমিহীন কৃষক ও নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী ২১ জন গ্রাহকদের মাঝে প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভোলার একটি হোটেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঅর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের আর্থিক অন্তর্ভূক্তি নিয়ে মতবিনিময় ও প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে চেক হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রূপ রতন পাইন।
এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. তৌহিদুল আলম খানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক মো. ফিরোজ আহমেদ, এনআরবিসি ব্যাংকের এসএমই ও কৃষি অর্থায়ন বিভাগের প্রধান শেখ আহসানুল হক, মাইক্রো ক্রেডিট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মো. রমজান আলী ভূইয়া, বরিশাল-খুলনা জোনের প্রধান মো. আব্দুল হালিম এবং বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের ২৪ বাণিজ্যিক ব্যাংকের স্থানীয় শাখাগুলোকে নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। ১০, ৫০, ১০০ টাকার হিসাবধারী প্রান্তিক, ভূমিহীন কৃষক, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গঠিত ৭৫০ কোটি টাকার পুনঅর্থায়ন তহবিল থেকে এনআরবিসি ব্যাংক শুধু ভোলা জেলার ১৩৭ জন গ্রাহকের মাঝে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। সারাদেশে এ তহবিল থেকে ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের পরিমান ১৫০ কোটি টাকা। গ্রাহকরা মাত্র ৭ শতাংশ সুদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারছেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রূপ রতন পাইন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক কর্মসূচির লক্ষ্য প্রতিটি মানুষের অন্তত একটি করে ব্যাংক হিসাব থাকবে। পাশাপাশি তারা উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠে নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখবেন। তাদেরকে স্বল্প সুদে পুনঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সেই তহবিল থেকে সহায়তা নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের মাঝে স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ করছে। আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক কর্মকাণ্ডকে বেগবান এবং প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নের নানা ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মিলে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. তৌহিদুল আলম খান বলেন, টেকসই উন্নয়নে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের আর্থিক উন্নয়নের বিকল্প নেই। অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সকল মানুষকে অর্থনীতির মূলধারায় যুক্ত করার যে উদ্যোগ নিয়েছে আমরা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করছি। এনআরবিসি ব্যাংকের শাখা-উপশাখাগুলো সারাদেশে বিস্তৃত। বিস্তৃত এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের দোরগড়ায় ব্যাংকিং সেবা পৌছে দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক।
কর্পোরেট সংবাদ
আমেরিকান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে এক অনবদ্য সন্ধ্যা
আমেরিকান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন তাদের বহুল প্রশংসিত ‘ব্রেইন গেইন সিরিজ’-এর সর্বশেষ পর্ব আয়োজন করে। গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) গুলশানে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির (ইউসিবি) প্রধান কার্যালয়ে এটি আয়োজন করা হয়। ‘সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজেস: এ গ্লোবাল পারস্পেকটিভ’ শিরোনামের এই সেশনে মূল বক্তা ছিলেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ও আমেরিকান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য আসিফ সালেহ।
বৈঠকটি পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত, চিন্তাশীল ও অনুপ্রেরণামূলক সন্ধ্যায়। এতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, বিশিষ্ট উদ্যোক্তা, উন্নয়নকর্মী ও গণমান্য অতিথিবৃন্দ। সবার আগ্রহের মূল বিষয় ছিল—কীভাবে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবন বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় বাস্তব পরিবর্তনের অনুঘটক হতে পারে।
মূল বক্তব্যে আসিফ সালেহ তাঁর সমৃদ্ধ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরেন এক অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি—নিউইয়র্ক ও লন্ডনে গোল্ডম্যান স্যাকস-এ ১২ বছরের পেশাগত জীবন থেকে শুরু করে ইউএনডিপি বাংলাদেশ ও ব্র্যাক-এ নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা পর্যন্ত।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারি, বেসরকারি ও অলাভজনক—এই তিন খাতের যৌথ উদ্যোগ অপরিহার্য। সহযোগিতাই এখন সবচেয়ে বড় শক্তি।’
তিনি ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে বৈশ্বিক সামাজিক উদ্যোগের মডেল ও উন্নয়ন কাঠামোকে স্থানীয় বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে টেকসই সামাজিক প্রভাব তৈরি করা সম্ভব। তাঁর বক্তব্য তরুণ পেশাজীবীদের অনুপ্রাণিত করে নতুনভাবে ভাবতে—নিজেদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে দেশের উন্নয়নে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায়।
অনুষ্ঠানের সূচনা করেন আমেরিকান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ও ইউসিবি চেয়ারম্যান শরীফ জাহির। তিনি বলেন, আমেরিকান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বিশ্বাস করে—বিদেশে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দেশের উন্নয়নে বিনিয়োগ করাই প্রকৃত ব্রেইন গেইন।
পুরো সেশনটি সঞ্চালনা করেন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি নুসরাত আমান। তিনি সুচিন্তিত প্রশ্ন ও উপস্থাপনার মাধ্যমে আলোচনা পর্বকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেন। তাঁদের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে উঠে আসে সামাজিক উদ্যোগের পরিবর্তিত রূপরেখা, উন্নয়ন সহযোগিতার নতুন দিগন্ত, এবং যুক্তরাষ্ট্র-শিক্ষিত পেশাজীবীদের জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হওয়ার বাস্তব পথনির্দেশ।
২০১১ সালে শুরু হওয়া আমেরিকান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ‘ব্রেইন গেইন ইনিশিয়েটিভ’-এর মূল লক্ষ্য হলো—বিদেশে শিক্ষিত বাংলাদেশিদের অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা ও বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কাজে লাগানো। এই উদ্যোগ আজ প্রমাণ করছে, যেখানে একসময় ‘ব্রেইন ড্রেইন’ ছিল উদ্বেগের কারণ, এখন সেটিই রূপ নিয়েছে ‘ব্রেইন গেইন’-এর আশাবাদী বাস্তবতায়।
আসিফ সালেহ নিজেই এই দর্শনের এক অনন্য উদাহরণ। ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম তাঁকে ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার (২০১৩)’ এবং এশিয়া সোসাইটি তাঁকে ‘এশিয়া ২১ ফেলো (২০১২)’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাঁর যাত্রা প্রমাণ করে—বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি দেশের উন্নয়নে কীভাবে পরিবর্তনের শক্তি হয়ে উঠতে পারে।



