Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

নর্ডিক বিস্ময়, প্রকৃতি, নৈতিকতা ও মানবতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি

Published

on

সেন্ট্রাল ফার্মা

উত্তর ইউরোপের তিন নক্ষত্র, সুইডেন, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড, কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, মানবিক মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, শিক্ষা, ক্রীড়া এবং সামাজিক সচেতনতার জন্যও বিশ্বে অনন্য। তাদের প্রতিটি শহর, বন, নদী এবং পর্বত যেন মানবসভ্যতার এক জীবন্ত পাঠশালা, যেখানে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক শুধুমাত্র সহাবস্থান নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও দায়িত্ববোধের প্রতীক। নর্ডিক সভ্যতার পাঠ যেন মানবিকতার গভীর আলো ছড়িয়ে দেয় পৃথিবীজুড়ে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

উত্তর ইউরোপের শান্ত, তুষারময় ভূমিতে দাঁড়িয়ে আছে তিনটি দেশ, যেগুলো প্রকৃতির শীতলতা, মানুষের উষ্ণতা এবং রাষ্ট্রের মানবিক দায়িত্ববোধের মধ্যে এক অনন্য ভারসাম্য তৈরি করেছে। তাদের প্রতিটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত নৈতিকতা ও ন্যায়বোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। এই দেশগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তারা তাদের নর্দমা, নৈতিকতা, শিক্ষা এবং মানবিক মূল্যবোধ থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষের অধিকার রক্ষা করতে নিরলসভাবে কাজ করে। এই নৈতিক কাঠামোই তাদের সমাজকে পরিচ্ছন্ন, সমতাভিত্তিক ও বিশ্বমানবতার প্রতীক।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

জীবন্ত প্রতিচ্ছবি
আমি সেই ১৯৮৫ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য সুইডেনে এসেছিলাম। তখন শুধু ভাষা শেখা নয়, লিনশোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু ছিল SAS (Scandinavia Area Studies) নামে একটি বিশেষ কোর্স। এই কোর্সের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের নর্ডিক দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করানো, যেন আমরা শুধুমাত্র বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ না থাকি, বরং বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতি, সমাজ ও মূল্যবোধের সঙ্গে পরিচিত হতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বিভিন্ন সময়, স্থান ও প্রেক্ষাপটে ভ্রমণের মাধ্যমে এই দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত করত, যেমন ইতিহাস, নৈতিকতা, শিক্ষা, পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস, সামাজিক ব্যবস্থা এবং মানুষের জীবনধারা। সেই অভিজ্ঞতাগুলো আজও আমার মনে জীবন্ত; আজও আমি কৌতূহলপূর্ণ মনে জানতে চাই, নর্ডিক সমাজ কিভাবে এই সমস্ত দিককে সুন্দরভাবে একত্রিত করে, মানুষের জীবনমান ও বিশ্বাস গড়ে তোলে। এই প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতিতে, সুইডেনে রয়েছে প্রায় দুই লক্ষ সত্তর হাজারেরও বেশি দ্বীপ, যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে নেই, এবং এই দ্বীপসমূহের শান্তি ও বিস্তৃতি যেন প্রকৃতির এক জীবন্ত পাঠ হয়ে ওঠে। নরওয়ের ফিয়র্ডগুলো এত গভীর যে বিশাল ক্রুজ জাহাজগুলো পর্বতের মাঝ দিয়ে চলাচল করতে পারে, যা প্রকৃতি ও প্রযুক্তির এক অসাধারণ সমন্বয়। ফিনল্যান্ডে রয়েছে এক লক্ষ আটাশি হাজারেরও বেশি হ্রদ, আর দেশটি টানা সাত বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই তিন নক্ষত্রে, নরওয়েতে গ্রীষ্মের দিন সূর্য অস্ত যায় না, ফিনল্যান্ডে শীতের রাতে আকাশ জ্বলে নর্দান লাইটসের রঙে, আর সুইডেনের বিস্তীর্ণ হ্রদ ও দ্বীপসমূহ যেন মানুষের হৃদয়ে প্রকৃতির এক নীরব কাব্য রচনা করে। এই বিপরীত দৃশ্যগুলোই বিস্ময় ছড়ায়।

এই দেশগুলোতে জীবনযাত্রার মান শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পরিমাপ নয়; এটি নৈতিকতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি এবং নাগরিক দায়িত্ববোধের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি পূর্ণাঙ্গ মানসিকতা। খাদ্যের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের ক্ষেত্রেও তারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। Livsmedel (খাদ্য) এবং Livskvalitet (জীবনমান) এখানে শুধু ধারণা নয়, বরং নাগরিক আস্থা ও নৈতিক দায়িত্বের প্রতীক।

সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রেও নর্ডিক দেশগুলোর অবদান অসাধারণ। সুইডেনের বিয়র্ন বর্গ টেনিসে বিশ্বখ্যাত কিংবদন্তি, নরওয়ের ইয়োহানেস থিংনেস বো বায়াথলনের তারকা, ফিনল্যান্ডের পাওভো নুরমি অলিম্পিক ইতিহাসে এক অবিনশ্বর নাম। আইস হকি, ঘোড়ার রেস, স্তবহোপ কিংবা শীতকালীন খেলাধুলায় তাদের সাফল্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত।

সংগীতের ভুবনেও এই অঞ্চল বিশ্বকে উপহার দিয়েছে ABBA, Roxette, Avicii এবং Jean Sibelius-এর মতো শিল্পীদের, যাদের সৃষ্টিতে মানবিকতার সুর ধ্বনিত হয়।

এই দেশগুলোতেই জন্মেছেন আলফ্রেড নোবেল, যার চিন্তাধারা মানবতার শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে নোবেল পুরস্কার। এই পুরস্কার কেবল অর্জনের প্রতীক নয়, বরং নৈতিকতা, জ্ঞান এবং মানবকল্যাণের প্রতি গভীর শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।

নর্ডিক দেশগুলো প্রমাণ করেছে, সভ্যতা তখনই পরিপূর্ণ হয়, যখন রাষ্ট্র ও নাগরিক একে অপরের প্রতি আস্থা ও সম্মানের বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। তাদের সমাজে উন্নয়ন মানে শুধু অর্থনীতি নয়, বরং প্রতিটি মানুষ যেন মর্যাদা, নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচারের আলোয় বাঁচতে পারে। এই কারণেই নর্ডিক বিস্ময় আজও বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা, মানবতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

স্বৈরাচার, সংকট বা চাঁদাবাজি নয়, চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

Published

on

সেন্ট্রাল ফার্মা

বাংলাদেশ আজ এক গভীর রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনকাল দেশের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার, দমননীতি, প্রশাসনিক দুর্নীতি এবং মানবাধিকারের অবমাননা রাষ্ট্রের ভিত্তিকে নড়বড়ে করে তুলেছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশটি ধীরে ধীরে একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিণত হয়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ে, সংবাদমাধ্যম শৃঙ্খলিত হয় এবং জনগণের কণ্ঠরোধ করা হয় নির্মমভাবে। এই শাসন কেবল বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাধীনতাকেও বিপন্ন করেছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

মানুষের মধ্যে ক্ষমতার লালসা একটি প্রাচীন প্রবণতা, কিন্তু যখন তা রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে পরিণত হয়, তখন সমাজে নৈতিকতা, ন্যায়বোধ এবং স্থিতিশীলতা ধ্বংস হয়ে যায়। শেখ হাসিনার সরকারের কর্মকাণ্ডে এই প্রবণতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে তারা জনগণের অধিকারকে দীর্ঘ ষোলো বছর ধরে অবমূল্যায়ন করেছে। গুম, খুন, ভুয়া মামলা ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দমন রাষ্ট্রনীতির অংশে পরিণত হয়েছিল। ক্ষমতার প্রতি শেখ পরিবারের অন্ধ আসক্তি দেশকে স্বৈরতন্ত্রের অন্ধগলিতে নিয়ে যায়। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন এই শাসনব্যবস্থা জাতির মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। যখন জাতির পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায়, তখন শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া গণঅভ্যুত্থান শেখ হাসিনার পতন ঘটায়। সেই মুহূর্ত জাতির আত্মমর্যাদার পুনর্জন্মের প্রতীক হয়ে ওঠে এবং স্পষ্ট করে দেয় যে শেখ পরিবার বাংলাদেশের জন্য এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সম্পর্ক সন্দেহ ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তিস্তা চুক্তি ঝুলে থাকা, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিরীহ নাগরিকদের মৃত্যু এবং বাংলাদেশের বাজারে ভারতের একচেটিয়া বাণিজ্যিক আধিপত্য জনগণের মধ্যে অসন্তোষ গভীর করেছে। ভারতের বিজেপি সরকারের সঙ্গে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এ অঞ্চলের ভারসাম্য নষ্ট করেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপ দেশকে বিভক্ত করেছে এবং সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। জনগণ এখন বুঝেছে এই সম্পর্ক পারস্পরিক নয়, বরং একতরফা। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থতা ও প্রতিবেশীর প্রতি অন্ধ আনুগত্যের নীতি আর টেকসই নয়। প্রয়োজন সাহসী, কূটনৈতিক ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন নেতৃত্ব, যা দেশকে আত্মনির্ভর ও স্বাধীন নীতির পথে ফিরিয়ে আনবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

শেখ হাসিনার আমলে রাজনীতি পরিণত হয়েছিল ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্বার্থরক্ষার যন্ত্রে। সংবিধান বিকৃত করে, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে এবং প্রশাসনকে দলীয়করণের মাধ্যমে তিনি একদলীয় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করেন। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সবকিছু ব্যবহার করা হয়েছিল ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার হিসেবে। এর ফলে গণতন্ত্র ভেঙে পড়ে, নির্বাচন জনগণের মতপ্রকাশ নয় বরং পূর্বনির্ধারিত নাটকে পরিণত হয়। দুর্নীতি ও কালোটাকার প্রবাহে অর্থনীতি দমবন্ধ হয়ে পড়ে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিলুপ্ত হয়, ভিন্নমত মানে নিপীড়ন, গুম ও কারাবাস। বিচার বিভাগ ন্যায়ের বদলে ক্ষমতার যন্ত্রে পরিণত হয়। এটি কেবল রাজনৈতিক নয়, নৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটও বটে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চাবিকাঠি তরুণ প্রজন্মের হাতে। তাদের মধ্যেই রয়েছে পরিবর্তনের শক্তি, উদ্ভাবনের ক্ষমতা ও ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকার। এই শক্তিকে সংগঠিত করতেই গড়ে উঠছে ফিউচার ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ—একটি আন্দোলন, একটি স্বপ্ন এবং একটি দায়িত্ববোধ। এই ফাউন্ডেশন তরুণদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও ইতিহাসের সত্য শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে পারে, নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে পারে এবং সমাজে ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে পারে। ফিউচার ফাউন্ডেশন কেবল একটি সংগঠন নয়, এটি বাংলাদেশের নতুন সামাজিক চুক্তির ভিত্তি—একটি প্রজন্মের অঙ্গীকার, যে দেশকে অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে যাবে।

দীর্ঘ দমনমূলক শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ফলেই আজ গঠিত হয়েছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। এই সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও নৈতিক পুনর্গঠনের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ। এর লক্ষ্য স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করা, মৌলিক অধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা এবং গণতন্ত্রের টেকসই ভিত্তি গঠন করা। এই সরকার কেবল একটি সংকটের প্রতিক্রিয়া নয়, বরং একটি নতুন জাতীয় দিকনির্দেশনা।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী ন্যায়ভিত্তিক অর্থনীতি ও মানবিক উন্নয়নের প্রতীক। এখন তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনর্গঠনের কেন্দ্রে। তার নেতৃত্ব রাজনৈতিকের চেয়ে বেশি নৈতিক, কারণ তিনি দেশকে মানবিক ও সমতাভিত্তিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে আস্থা অর্জন করছে, তারা বিশ্বাস করছে যে একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব যেখানে মানবিক মূল্যবোধই হবে প্রশাসনের মূলে।

বাংলাদেশ আবারও এক নতুন সূচনার দ্বারপ্রান্তে। দমন ও বিভাজনের অন্ধ অধ্যায় পেরিয়ে দেশ আজ নতুন আলো দেখছে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে জাতি প্রমাণ করছে যে সংকট যত গভীরই হোক, ঐক্যবদ্ধ জাতি ও সৎ নেতৃত্বের কাছে তা কখনও অজেয় নয়। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার এই যাত্রায় নতুন প্রজন্মই হবে নেতৃত্বের মশালবাহক। বাংলাদেশ প্রমাণ করবে, সংকট কখনও পরাজয় নয়, এটি নতুন সূর্যোদয়ের আগমনী বার্তা।

তবে প্রশ্ন থেকে যায়, বর্তমানে যা ঘটছে, তা কি সত্যিই সেই প্রত্যাশিত পরিবর্তনের প্রতিফলন? ড. ইউনূস ও তার অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টারা দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে অনেকের কাছে এই ধারণা জন্মেছে যে, সেখানে এখনো ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থই প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে এই আশার পথেও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। হতে পারে রাজনৈতিক দলগুলো কথা দিয়ে কথা রাখেনি, কিংবা প্রশাসনও তার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করতে পারেনি।

তবে যে আলোয় আমরা নতুন সূচনা খুঁজছি, সেই আলো তখনই স্থায়ী হবে যখন আত্মসমালোচনার সাহস আমাদের থাকবে, কে কোথায় ভুল করেছে, কেন সেই ভুল পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণ, কিন্তু বেকারত্বের হারও উদ্বেগজনকভাবে বেশি। ফলে এই বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীর এক অংশ নানা রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রভাবে তাদের শক্তি ব্যবহার করছে ভুল পথে, দলীয় স্বার্থে, এমনকি দুর্নীতির হাতিয়ার হিসেবেও। এই প্রবণতা যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। একদিকে প্রতিবেশী দেশের প্রভাব ও রাজনৈতিক প্ররোচনা, অন্যদিকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিভ্রান্তিকর নেতৃত্বের আহ্বান, সব মিলিয়ে তরুণ সমাজ এক জটিল দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছে।

বর্তমান প্রজন্মের হাতেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। কিন্তু যদি তাদের মধ্যে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধের বোধ গড়ে না ওঠে, তাহলে এই প্রজন্মই হয়ে উঠতে পারে নেতৃত্বের অন্ধকার মশালবাহক, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন এক ভয়াবহ অধ্যায় রচনা করবে। অথচ তারাই আজ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি শিক্ষিত, প্রযুক্তিসচেতন ও ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার। তাই কেবল ব্যক্তিগত উন্নয়ন নয়, দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গায় দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নৈতিকতা, সততা ও দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে। দুর্নীতিমুক্ত, ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য নিজেদের শক্তি ও বিবেককে কাজে লাগানোই এখন সময়ের দাবি।

বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও সুশাসনের সংগ্রাম অব্যাহত, বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মের জাগরণ ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। যদি তরুণরা দেশপ্রেম, সততা ও সাহসিকতার পথে এগিয়ে যায়, তবে একদিন এই দেশও হবে দুর্নীতিমুক্ত ও সমৃদ্ধ।

দায়িত্ববান নাগরিক হওয়ার প্রথম শর্ত নৈতিকতা ও সততা। একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক তার বিবেক বিক্রি করে না, বরং জাতির মঙ্গলের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। ভোট মানে নেতৃত্ব বেছে নেওয়া, সামান্য অর্থের বিনিময়ে ভোট বিক্রি মানে নিজের ভবিষ্যৎকে বিক্রি করা। সুবিধা পেতে তোষামোদ নয়, সত্যের পাশে দাঁড়াতে হবে। সমাজের উন্নয়ন কেবল সৎ মানুষদের হাতেই সম্ভব।

আমাদের সমাজে অন্যায় ও দুর্নীতি নিত্যদিনের বাস্তবতা, কিন্তু এর বিরুদ্ধে নীরব থাকা মানে অন্যায়কে টিকিয়ে রাখা। প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব সত্যের পক্ষে কথা বলা। ভয় নয়, বিবেকের নির্দেশই হোক পথপ্রদর্শক। সৎ নাগরিক কখনও প্রলোভনে পড়ে না, নিজের নৈতিকতা ও দেশের মর্যাদা রক্ষাই তার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়, প্রতিদিনের ন্যায় ও সমতার চর্চা। যেখানে অন্যায় দেখা যাবে, সেখানেই আওয়াজ তুলতে হবে। গণতন্ত্র টিকে থাকে নাগরিকের সাহসের উপর, নীরবতার উপর নয়।

আজকের যুগে সোশ্যাল মিডিয়া এক নতুন গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম। ফেসবুক, টুইটার বা ইউটিউব হয়ে উঠেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মাধ্যম। এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য, বিভাজন নয় ঐক্যের জন্য।

দুর্নীতি মানে শুধু অর্থের ক্ষতি নয়, এটি জাতির মর্যাদা ও জনগণের আস্থার ধ্বংস। তাই দরকার দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি, যেখানে নেতৃত্ব আসবে সততা, যোগ্যতা ও দেশপ্রেমের ভিত্তিতে। তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণই পারে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটাতে।

আজকের তরুণেরা জানে, প্রকৃত শক্তি সাহস ও বিবেকের সমন্বয়ে। তাদের হাতে যদি থাকে যুক্তি, সততা ও দায়িত্ববোধ, তবে বাংলাদেশ বদলে যাবে। নৈতিকতার ভিত্তিতে পরিবর্তনের জন্য এখনই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।

মানুষের জন্ম হয়েছে স্বাধীন বিবেক ও নৈতিক শক্তি নিয়ে বাঁচার জন্য। সামান্য প্রলোভনের কারণে যেন কেউ নিজের আত্মমর্যাদা বিক্রি না করে। দল বা নেতাকে সমর্থন করা মানে কিন্তু নিজেকে বিক্রি করা না। আমরা যেন ভুলে না যাই, পরিবর্তন শুরু হয় নিজের ভেতর থেকেই। সাহস, সততা ও দেশপ্রেম এই তিনেই গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

হেরেছো কি মরেছো

Published

on

সেন্ট্রাল ফার্মা

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে উঠেছে। যদি আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হই, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা অনিবার্যভাবে হার স্বীকার করতে বাধ্য হব। কিন্তু এটি কি শুধুই ব্যক্তিগত পরাজয়ের গল্প? না। এটি একটি সমষ্টিগত মনস্তাত্ত্বিক ধ্বস, যা মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে, সম্পর্ক ভাঙায় এবং সমাজের অন্তর থেকে আশা শুষে নেয়। যেখানে দুর্নীতি, অত্যাচার, অবিচার এবং মিথ্যা অভিযোগ এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে মানুষ সেগুলো দেখার সুযোগ এবং সাহস খুঁজে পাচ্ছে না, সেখানে অস্থিরতা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে চলেছে হৃদয়ে। এই অস্থিরতা কাটাতে আমাদের সকলকে একযোগে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সকল ষড়যন্ত্র ভেঙে দিতে হবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

পরাজয়ের মনস্তত্ত্ব ও সমাজের ভাঙন
পরাজয়ের অনুভূতি যত গভীর হবে তত বেশি মানুষ আত্মরক্ষার পথ গ্রহণ করবে। বিচ্ছিন্নতার মধ্যে জন্ম নেয় সন্দেহ, প্রতিহিংসা এবং ভুল বোঝাবুঝি। যখন প্রত্যেকে শুধু নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় লড়াই করে, তখন সহানুভূতির জায়গা শূন্য হয়ে পড়ে। পরিবারিক দ্বন্দ্বে ভালোবাসার বদলে ঘৃণা জমে। ঠিক একইভাবে রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক দ্বন্দ্বেও মিশ্র আবেগ সমাজকে ভিতরের দিকে ক্ষতবিক্ষত করে দিতে পারে। আর কেউ যদি বলে আমি শুধু হেরেছি, তুমি কি একটুও হারোনি, তখন সেই প্রশ্নই আস্থা ভাঙায় এবং সবচেয়ে ভয়ানক ভূমিকা নেয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

মুক্তির পথ: নীতি, কৌশল ও অনুশীলন
মুক্তির পথ কেবল স্লোগানের ইস্যু নয়। এটিকে নীতি, কৌশল এবং ধারাবাহিক অনুশীলনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। তার জন্য তিনটি মৌলিক শর্ত অপরিহার্য।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

১. স্বচ্ছতা
অভিযোগ যদি প্রকাশ্য না হয় এবং তদন্ত স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষভাবে না হয়, তাহলে ব্যক্তিগত প্রতিশোধ ও গুজব আগুনের কাজ করবে। দায়িত্বশীল ও স্বচ্ছ তদন্ত ব্যবস্থা গড়তে হবে।

২. সহমর্মিতা
দোষীদের বিচার করতেই হবে, কিন্তু মানুষকে মানুষ হিসেবেই দেখার আগ্রহ হারালে পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। সহমর্মিতা ছাড়া কোনো স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

৩. সংহত আন্দোলন
ভাগ হয়ে থাকা প্রতিবাদ ভাঙনই বাড়ায়। পরিকল্পিত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং নীতিভিত্তিক আন্দোলনই টেকসই পরিবর্তন আনতে পারে। পাশাপাশি আইনি ও নৈতিক জবাবদিহি নিশ্চিত করে ক্ষমতার অপব্যবহার দমন করতে হবে।

রাষ্ট্র যন্ত্রের ওপর বিশ্লেষণ
রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে মৌলিক কাঠামোগুলো প্রয়োজন, সেগুলো আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে কেন পৌঁছেছে? কীভাবে সেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব? নির্বাচন কি একমাত্র সমাধান? বাংলাদেশ আদৌ নির্বাচন সম্পর্কে সচেতন ছিল কি? একটি দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক অবকাঠামো কিভাবে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে?

রাষ্ট্রযন্ত্র কী
রাষ্ট্রযন্ত্র বলতে আমরা বুঝি আইনপ্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান, নির্বাহী বিভাগ, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী কাঠামো এবং তথ্যমাধ্যম। এগুলো একত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বজায় রাখে। যখন এই স্তরগুলো দুর্বল হয়, তখন রাষ্ট্র কেবল নামমাত্রই থাকে। তখন নীতি, ন্যায় ও দায়িত্ববোধ ভেঙে পড়ে এবং দুর্নীতি ও শক্তির অপব্যবহার সমাজে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বসে যায়।

নির্বাচন কি সমাধান
নির্বাচন একটি শক্তিশালী প্রক্রিয়া, কিন্তু এটি নিজে এককভাবে কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত কাঠামোকে শুধরাতে পারে না যদি পরিবেশ নিরপেক্ষ না থাকে। নির্বাচন যদি হয় কেবল ফর্মালিটি, ভোটচুরি ও প্রভাবের মাধ্যমে পরিচালিত, তাহলে তা জনগণের আস্থা হারায়। রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ন্যায্য, মুক্ত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে না পারলে নির্বাচন কেবল আড়ম্বর হয়ে থাকে।

নির্বাচন সম্পর্কে সচেতনতা
বাংলাদেশে নির্বাচন সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানগত শিক্ষা ও নাগরিক সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। ভোটাররা নির্বাচনকে অনেক সময় শুধু একটি ইভেন্ট মনে করেন, যেখানে কাগজে চিহ্ন দেয়া হয়। সচেতন নাগরিক হওয়ার মানে হলো প্রার্থীর নীতি যাচাই করা, তাদের অনুপ্রেরণা বোঝা, এবং ভোটের ফলাফল ধরে রাখার দায়বদ্ধতা পালন করা। এই সচেতনতা গড়ে ওঠে মিডিয়ার স্বাধীনতা, নাগরিক শিক্ষা, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিচারব্যবস্থার স্বতন্ত্রতার মাধ্যমে। যখন এগুলো দুর্বল থাকে, তখন নির্বাচনও দুর্বল হয়।

দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক অবকাঠামো ও জনগণের শাসন
দুর্নীতিগ্রস্ত কাঠামো জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। বরং তা ক্ষমতাসীনদের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ দেয় নিজের অবস্থান দীর্ঘায়িত করার। দুর্নীতি নীতিগত স্বার্থ বিকৃত করে এবং নাগরিকের বিশ্বাস ধ্বংস করে। জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন সততা, জবাবদিহি ও অংশগ্রহণমূলক নীতি। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের ভেতরে স্বচ্ছতা ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে, তাহলেই বাহ্যিক নির্বাচনে সঠিক প্রতিনিধিত্ব সম্ভব।

রাষ্ট্রযন্ত্র রক্ষার প্রস্তাবনা
১. বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা শক্তিশালী করা, বিচারব্যবস্থা হতে হবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও রাজনৈতিক চাপমুক্ত।

২. নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশাসন নিশ্চিত করা, প্রযুক্তিনির্ভর, স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে উন্মুক্ত নির্বাচনব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

৩. সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, তথ্যের মুক্ত প্রবাহ, তথ্য যাচাই ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।

৪. দমনমূলক আইন পর্যালোচনা, সমালোচনা ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রক্ষায় আইনগুলো পুনর্গঠন করতে হবে।

৫. নাগরিক শিক্ষা ও অংশগ্রহণ, ভোটের মূল্যবোধ, নীতিগত বিচার ও জনগণের অধিকার বিষয়ে শিক্ষা বাড়াতে হবে।

৬. অডিট ও জবাবদিহি কাঠামো শক্তিশালী করা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর অডিট ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নিয়ম চালু করতে হবে।

৭. সংগঠিত ও নীতিভিত্তিক অভ্যন্তরীণ আন্দোলন, বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদের বদলে কৌশলগত, শৃঙ্খলাবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে.

সমাপ্তি
হেরে যাওয়া মানে মরে যাওয়া নয় এই সমসাময়িক ভাবনাটিকে আমাদের ভাঙতে হবে। পরাজয় যদি আত্মসমর্পণ হয়, তা সমাজকে ধ্বংস করবে। কিন্তু পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, কথা বলার দরজা খোলা রাখি, এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামো পুনরুজ্জীবিত করি, তবে সেই একই পরিস্থিতিই হতে পারে মুক্তির পথ। রাষ্ট্রের যন্ত্রকে রক্ষা করা শুধু প্রশাসনিক কাজ নয় এটি সামাজিক চুক্তি রক্ষা করা। এর জন্য প্রয়োজন ন্যায়, স্বচ্ছতা এবং সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ।

রহমান মৃধা
গবেষক এবং লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

দুইবার দেশের বিজয় এনেছি, এবার কি হবে পরাজয়?

Published

on

সেন্ট্রাল ফার্মা

১৯৭১ – বিজয়ের অন্তর্নিহিত শিক্ষা
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধু একটি রাষ্ট্রের জন্ম নয়—এটি ছিল বাঙালির আত্মমর্যাদা, আত্মপরিচয় ও মানবিক ন্যায়ের পুনর্জন্ম। সেই যুদ্ধ আমাদের শিখিয়েছে, যখন জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয় তখন কোনো অত্যাচার, কোনো শাসক, কোনো বাহিনীই টিকে থাকতে পারে না। স্বাধীনতার অর্থ তখন কেবল পতাকা নয়, বরং মানুষের সম্মান, অধিকার এবং জীবনের নিরাপত্তা।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

২০২৪ – গণঅভ্যুত্থান ও রাষ্ট্রীয় পরিবর্তনের সূচনা
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় পর আবারও বাংলাদেশের রাস্তায় ফুটে উঠেছে প্রতিরোধের আগুন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল একটি অগ্নিকণিকা, যা মুহূর্তেই রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। যুবসমাজের রক্ত, ছাত্রদের সাহস এবং জনতার নির্ভীক সমর্থনেই পতন ঘটে স্বৈরাচারী সরকারের। এবারের বিজয় বন্দুক নয়—মানুষের বিশ্বাস, ঐক্য ও সত্যের শক্তিতে অর্জিত।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

রক্ত, সহিংসতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই অভ্যুত্থান ছিল রক্তাক্ত, তবুও তা ছিল ন্যায়ের পথে। শত শত প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে একটি নতুন ভোরের আশায়। সেনাবাহিনী শেষ মুহূর্তে সংযমের ভূমিকা নেয়, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে স্বীকৃতি জানায়। বিশ্ব এবার তাকিয়ে আছে—বাংলাদেশ কীভাবে নিজের ভবিষ্যৎ লিখবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

নতুন নেতৃত্বের আবির্ভাব: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
দেশ যখন বিশৃঙ্খলার মুখে, তখনই আবির্ভূত হন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি একদিকে আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতীক, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের আশার মুখ। তার নেতৃত্বে শুরু হয় নতুন বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা—দুর্নীতি দমন, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলার অঙ্গীকার। তবে তাঁর সামনে আছে বড় চ্যালেঞ্জ—রাজনীতির বিষাক্ত সংস্কৃতি ও দীর্ঘদিনের পচন।

দুর্নীতি ও রাষ্ট্রযন্ত্রের পুনর্গঠন
বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র বহু বছর ধরে দুর্নীতি ও অনিয়মে আক্রান্ত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো—একটি স্বাধীন ও কার্যকর দুর্নীতি দমন কমিশন, বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা, এবং সরকারি প্রশাসনে প্রযুক্তিনির্ভর স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা। যে রাষ্ট্র নিজের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারে না, সে রাষ্ট্র কোনোদিনই সত্যিকারের স্বাধীন নয়।

ভারতের ভূমিকা ও আঞ্চলিক বাস্তবতা
ভারত সবসময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনে আগ্রহী এক প্রতিবেশী। ২০২৪–এর পর ভারতের অবস্থানও নীরব পর্যবেক্ষক থেকে কৌশলগত সহযাত্রীতে রূপ নিতে পারে। তবে বাংলাদেশের উচিত নিজস্ব স্বার্থ ও সার্বভৌম নীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া—বন্ধুত্ব বজায় রেখে নির্ভরশীলতা নয়, বরং পারস্পরিক সম্মান ও স্বার্থের ভারসাম্য রক্ষা করা।

আমেরিকার ভূমিকা ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে সমর্থন জানালেও বাস্তবতা হলো—তাদের স্বার্থও নীতির অন্তরালে লুকিয়ে থাকে। মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকলেও বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের অবস্থান ধরে রাখা। অন্ধ অনুকরণ নয়—দৃঢ় কূটনৈতিক ভারসাম্যই এখন সময়ের দাবি।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা: নতুন রাষ্ট্রচিন্তার তিন দিক
একটি জাতি এখন মোড় ঘুরিয়েছে। সামনে তিনটি পথ—

প্রথমত, সংস্কার, ন্যায়বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক ভারসাম্য রক্ষা করে সীমিত পরিবর্তনের বাস্তবমুখী পথ। তৃতীয়ত, বিভাজন ও অনৈক্যের কারণে আবারও অচলাবস্থায় পতন।

কোন পথ বেছে নেবে বাংলাদেশ—এটাই আজকের মূল প্রশ্ন।

রাষ্ট্রপুনর্গঠনের করণীয় ধাপ
প্রথম ৬ মাসে নাগরিক নিরাপত্তা, আইনি স্থিতি ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে হবে। ছয়–আঠারো মাসে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। আঠারো–ছত্রিশ মাসে কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বড় নীতি সংস্কার আনতে হবে। এই রোডম্যাপই হতে পারে একটি টেকসই রাষ্ট্রের ভিত্তি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি: বাস্তববাদ ও মর্যাদা
ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেও বাংলাদেশের স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশীয় অংশীদারদের সাথে সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সম্মান ও জাতীয় স্বার্থনির্ভর। একটি ছোট রাষ্ট্রও যদি আত্মবিশ্বাসী হয়, তবে কোনো পরাশক্তিই তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

মূল প্রশ্নগুলোর বাস্তব পর্যালোচনা
ড. ইউনূসকে সরানো মানে কেবল একজন ব্যক্তিকে নয়—একটি আশা ও আস্থার প্রতীককে সরানো। বাংলাদেশ কোনো পরাশক্তির অঙ্গরাজ্য হবে না, যদি সে নিজের আত্মসম্মান ও জনগণের ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস রাখে। তরুণদের নেতৃত্ব, ন্যায়ের রাজনীতি এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রই নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি গড়বে।

সমাপ্তি: দ্বিতীয় স্বাধীনতার আহ্বান
১৯৭১ ছিল স্বাধীনতার প্রথম জন্ম, ২০২৪ তার আত্মার পুনর্জন্ম। এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা কেবল সরকারের পরিবর্তন নয়—এটি এক মানসিক বিপ্লব, যেখানে নাগরিক নিজেই রাষ্ট্রের মালিক। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তার মানুষের সততা, সাহস ও ঐক্যের ওপর। আমরা যদি নিজেদের দায়িত্ব বুঝি, তবে এই দেশ আবারও মাথা তুলে দাঁড়াবে—সত্য, ন্যায় ও মানবতার আলোর পথে।

স্বাধীনতার অব্যাহত যাত্রা
বাংলাদেশ এখনো জন্ম নিচ্ছে— প্রতিদিন, প্রতিটি মানুষের সিদ্ধান্তে। ৭১ আমাদের দিয়েছে ভূখণ্ড, কিন্তু ২০২৪ আমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে আত্মার আয়না। “স্বাধীনতা কোনো সমাপ্তি নয়, এটি এক অবিরাম যাত্রা। আর বাংলাদেশ সেই যাত্রায় আজ নিজের নাম, ভাষা ও আত্মাকে পুনরুদ্ধার করতে চাইছে।” আজ সময় এসেছে প্রতিটি নাগরিকের ভেতরের বাংলাদেশকে জাগিয়ে তোলার—কারণ সত্যিকারের স্বাধীনতা তখনই সম্পূর্ণ হয়, যখন জনগণ জেগে ওঠে রাষ্ট্র হয়ে।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

দুর্নীতির গহ্বর থেকে রাষ্ট্রের পুনর্জন্ম, সময়ের দাবি

Published

on

সেন্ট্রাল ফার্মা

যাদের কাছে দেশ পরিচালনার জন্য কিছুই নেই, শুধু দুর্নীতি ছাড়া, তারা কিভাবে দেশ পরিচালনা করবে? হ্যাঁ, বলছি বাংলাদেশের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের কথা। স্বৈরশাসনের পতনের পর দীর্ঘ চৌদ্দ মাস কেটে গেল, অথচ দেশের স্থিতিশীলতা আজও ফেরেনি। কারণ একটাই: দুর্নীতিবিরোধী স্লোগানের আড়ালে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতিবাজদের আসল মুখ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

যাদের নেই সৃজনশীল শিক্ষা, নেই সামাজিক দায়িত্ব, নেই কোনো দেশগঠনের দৃষ্টি—তাদের হাতে শুধু ধান্দাবাজি, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, হানাহানি ও সন্ত্রাস। এই মানুষগুলোই এখন রাষ্ট্র চালায়! তারা যদি সত্যিই দেশ পরিচালনা করতে পারতো, তাহলে শেখ হাসিনা ষোল বছর ক্ষমতায় থাকতে পারতো না।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

যদি ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষ স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে না দাঁড়াতো, তাহলে কি সম্ভব হতো এই দুর্নীতিবাহিনীকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা? একটি দরিদ্র দেশের মানুষ যখন তেল আনতে নুনের খরচ যোগাতে পারে না, তখন সেই দেশের শাসকশ্রেণি যদি বিলাসিতা, ঘুষ ও অরাজকতায় মত্ত থাকে—এটা কেবল রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা নয়, এটি জাতির আত্মহনন।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমরা আসলে কী করছি? আমাদের রাজনীতি আজ আত্মবিনাশের পথে, এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে সেই পচনের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন রন্ধ্রে রন্ধ্রে বুঝতে পারছি কেন ভারত আমাদের বারোটা বাজাচ্ছে! এটা ভারতের দোষ নয়—আমরাই সুযোগ তৈরি করছি, আর তারা তা দক্ষতার সাথে কাজে লাগাচ্ছে। ভারত আমাদের প্রতিপক্ষ নয়, আমাদের দুর্বলতার দর্পণ। যে জাতি নিজস্ব নীতি ও মর্যাদায় টিকে থাকতে পারে না, তাকে অন্য কেউ কখনো সম্মান করবে না।

যে সকল দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা বলে তারা বাংলাদেশের ভাগ্য বদলাবে, তারা আসলে নিজেদের ভাগ্য মজবুত করার খেলায় ব্যস্ত। কারণ না আছে তাদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা, না আছে নীতিনিষ্ঠ পরিকল্পনা, না আছে শক্তিশালী অর্থনৈতিক রিজার্ভ। তাহলে এইসব দুর্নীতিবাজদের পিছনে সময় নষ্ট করে কোনো সমাধান আসবে? কী মনে হয়?

জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রেমিটেন্স যোদ্ধারা বিদেশে প্রতিনিয়ত সমস্যার মুখে পড়ছে। আগামী দিনে যদি শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যায়, রেমিটেন্স কমে যায়—তখন কী হবে এই দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রব্যবস্থার? একটি জাতির জন্য এটি কেবল অর্থনৈতিক বিপর্যয় নয়, এটি আন্তর্জাতিক পরিসরে এক প্রকার নির্বাসন।

গণতন্ত্রের ভণ্ডামি ও বাস্তবতার প্রশ্ন
বাংলাদেশের বর্তমান গণতন্ত্র এক প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। এখানে নির্বাচন মানে টাকা, অস্ত্র, আর ভয় দেখানোর প্রতিযোগিতা। রাজনীতি মানে পরিবারতন্ত্র, যেখানে জনগণ কেবল দর্শক আর ভোট কেবল একদিনের মঞ্চনাটক।

এই ভণ্ড গণতন্ত্রের কারণে প্রশাসন ভেঙে পড়েছে, ন্যায়বিচার বিক্রি হয়েছে, এবং সমাজে নৈতিকতার জায়গা দখল করেছে ধান্দাবাজি ও ভয়। গণতন্ত্র তখনই অর্থবহ, যখন নেতৃত্ব জবাবদিহি করে; যখন রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে দক্ষতা, সততা ও দূরদৃষ্টি থাকে। বাংলাদেশে আজ সেই তিনটি জিনিসই অনুপস্থিত।

তাই গণতন্ত্র নয়—এই দেশের দরকার শৃঙ্খলা, কঠোরতা, এবং বাস্তব উন্নয়নবাদী রাষ্ট্রনীতি। বাংলাদেশের আজকের বাস্তবতা এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্র একেবারেই অচল। যে দেশে নির্বাচন মানে অর্থ আর অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, যেখানে রাজনীতি মানে পরিবারতন্ত্র আর দুর্নীতির সমীকরণ, সেখানে গণতন্ত্র নামের নাটক কেবল লুটপাটের বৈধ লাইসেন্স ছাড়া আর কিছু নয়। পশ্চিমা মডেল আমাদের জন্য নয়—আমাদের প্রয়োজন শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ ও কঠোর রাষ্ট্রচিন্তা। আর এখানেই চীনের পথ বাংলাদেশের জন্য আশার আলো।

চীন কোনো দিবাস্বপ্নের দেশ নয়—চীন হলো প্রমাণ, যে সুশাসন মানে বক্তৃতা নয়, কাজ। সেখানে দুর্নীতি করলে মৃত্যুদণ্ড হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করলে নিজ দলের মধ্যেই বিচার হয়, এবং রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণ হয় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে, নির্বাচন কমিশনের নাটক বা তোষণ দিয়ে নয়। বাংলাদেশে এই দৃঢ়তা নেই, কারণ এখানে সবাই দায় এড়িয়ে বাঁচতে চায়। এখানে কেউ চায় না জবাবদিহিতা, কারণ জবাবদিহি মানেই দুর্নীতির পর্দা উন্মোচন।

চীন তার জনগণকে দিয়েছে বাস্তব উন্নয়ন—বিদ্যুৎ, শিল্প, প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান। ওরা সময় নষ্ট করেনি স্লোগানে, তারা সময় দিয়েছে পরিকল্পনায়। বাংলাদেশকে এখন সেই পথেই যেতে হবে। যেখানে দুর্নীতি হবে রাষ্ট্রদ্রোহ, যেখানে নেতার কাজ হবে সেবা, লুট নয়। চীনের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক মানে শুধু বিনিয়োগ নয়, মানে একটি শৃঙ্খলিত প্রশাসনিক কাঠামো শেখা।

আমাদের দরকার developmental authoritarianism—একটি এমন প্রশাসনিক কাঠামো, যা দুর্নীতির নরম সুরে নয়, কঠোর বাস্তবতায় কাজ করে। চীনের শৃঙ্খলা বাংলাদেশের জন্য ওষুধের মতো। আজ যে রাষ্ট্রে স্কুলে ঘুষ, হাসপাতালে দালালি, আদালতে কেনাবেচা, সেখানকার রোগ একটাই—দুর্নীতি। এই রোগে ওষুধ লাগবে; আর এই ওষুধের নাম ‘state discipline’। পশ্চিমা গণতন্ত্র বলবে, “মানবাধিকার।” কিন্তু যে দেশে মানুষ নিজের অধিকারই জানে না, সেখানে মানবাধিকার শুধু মশকরা। প্রথমে দরকার রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা, পরে আসবে মানবাধিকার।

চীনের মডেল বাংলাদেশে আনতে হবে তিন ধাপে –
প্রথম, প্রশাসনে শূন্য সহনশীলতা নীতি; দ্বিতীয়, দলীয় রাজনীতি থেকে আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করা; তৃতীয়, পরিকল্পিত শিল্পায়ন ও স্থানীয় উৎপাদনমুখী রাষ্ট্রনীতি।

চীন এগুলো করেছে বলেই তাদের গ্রামের মানুষ আজও উন্নয়নের সুফল পায়। বাংলাদেশের মানুষ পায় না, কারণ উন্নয়ন মানে এখানে দলীয় ঠিকাদারি আর মিডিয়ার প্রচার। এখন সময় এসেছে—পশ্চিমা অনুকরণ বন্ধ করে এশীয় বাস্তবতার পথে হাঁটার। যদি সত্যিই বাংলাদেশকে আমরা বাঁচাতে চাই, তাহলে চীনের থেকে শিখতে হবে কীভাবে দুর্নীতিকে কবর দিতে হয়, কীভাবে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে কঠোর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হয়। এই দেশের মাটিতে এখন আর স্লোগান নয়—প্রয়োজন লোহার শাসন, কাঠামোগত সংস্কার এবং নতুন রাষ্ট্রদৃষ্টি।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সত্যের দেয়াল ভাঙতে পারেনি কেউ

Published

on

সেন্ট্রাল ফার্মা

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার এজেন্সি অফিসারদের বিরুদ্ধে আদালতে হাজিরা-এক নতুন ন্যায়যাত্রার সূচনা

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এক দীর্ঘ প্রতীক্ষার জাগরণ
বাংলাদেশে ‘গুম’ শব্দটি কেবল একটি অপরাধ নয়, এক নিঃশব্দ আতঙ্কের প্রতীক। হঠাৎ মানুষ হারিয়ে যেত, পরিবার জানত না তারা জীবিত না মৃত, অথচ রাষ্ট্রের নীরবতা ছিল আরও ভয়াবহ। কিন্তু এবার সেই নীরবতার দেয়াল ভাঙতে শুরু করেছে। আজ আদালতে হাজির হয়েছেন ২৫ জন সেনা সদস্য, যারা হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ একাধিক গুম ও গোপন বন্দিশালার ঘটনায় অভিযুক্ত। এটি শুধুই বিচার নয়—এটি সেই রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতার সূচনা, যা এতদিন শুধু জনগণের কণ্ঠে ছিল, নীতিনির্ধারকের হাতে নয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

দেয়ালে লেখা সত্য, রঙে ঢাকা মিথ্যা
তদন্তে উঠে এসেছে, হুম্মাম কাদের চৌধুরী যখন গুম অবস্থায় ছিলেন, তিনি সেলের দেয়ালে নিজের নামের সংক্ষিপ্ত চিহ্ন “HQ” লিখে রেখেছিলেন। পরবর্তী তদন্তে দেখা যায়, সেই লেখাটি আর নেই। দেয়াল নতুন রঙে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তবুও ভিডিও কলে হুম্মাম বলেন, “হ্যাঁ, এই দেয়ালেই আমি HQ লিখেছিলাম।” দেয়ালের প্রলেপ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, সাদা রঙের নিচে সেই লেখার ছায়া এখনও রয়ে গেছে—যেন মুছে ফেলার চেষ্টা করেও মুছে যায়নি সত্য।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

টাইলস, দরজা ও নিখোঁজ সত্য
ব্যারিস্টার আরমানের বর্ণনা অনুযায়ী, তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি টাইলস করা সিঁড়ি বেয়ে একটি রুমে নেওয়া হতো। গুম কমিশন প্রথমে যায় এবং দেখে—টাইলস নেই, বাম পাশে কোনো রুমও নেই। কিন্তু আরও খোঁজে দেখা যায়, টাইলসের দাগ রয়ে গেছে, এবং দেয়ালের বাম দিকে আসলেই একটি বন্ধ দরজার চিহ্ন। দেয়াল ভেঙে বের করা হয় সেই লুকানো দরজা, আর সেখানে পাওয়া যায় ভাঙা টাইলসের অংশ — যা আরমানের বর্ণনার সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। সেই টাইলসের ভাঙা টুকরো যেন দেশের ভাঙা ন্যায়বোধের প্রতীক—যা আজ আবার জোড়া লাগছে।

প্রমাণ ধ্বংসের চেষ্টায় প্রমাণ আরও স্পষ্ট
হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই এসব স্থানে দ্রুত রঙ ও পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়। লক্ষ্য ছিল—প্রমাণ মুছে ফেলা। কিন্তু যতই ঢেকে দেওয়া হয়েছে, সত্য ততই ফুটে উঠেছে। গুম কমিশনের সদস্যরা, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে “আয়নাঘর” পরিদর্শন করেন। যারা একসময় এসব কেন্দ্রকে “গুজব” বলেছিল, আজ তারা নিশ্চুপ, কারণ দেয়ালের ভেতরেই লুকানো ছিল মানবতার অপরাধের সাক্ষ্য।

এক নজিরবিহীন বিচার
আজ যখন ২৫ সেনা সদস্য আদালতে হাজির হয়েছেন, এটি কেবল একটি আইনি ঘটনা নয়—এটি ইতিহাসের পাতা বদলে দেওয়ার সূচনা। বাংলাদেশে প্রথমবার এজেন্সি অফিসারদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। একসময় যাদের হাতেই ছিল ভয় ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা, আজ তারা জবাবদিহির মুখোমুখি। এটাই গণতন্ত্রের প্রথম নিঃশ্বাস, দীর্ঘ অন্ধকারের পর।

এক বৈশ্বিক আহ্বান
আজকের বাংলাদেশ আর একা নয়। আমরা পৃথিবীর নাগরিক—Global Citizen—যারা একই ন্যায়ের মানদণ্ডে বিশ্বাস করি। ন্যায়বিচার কোনো ভূখণ্ডের সম্পত্তি নয়, এটি সমগ্র মানবজাতির আত্মার দাবি। আমরা বিশ্বাস করি, অপরাধী কে, কোন দলে, কোন পদে — তা বিবেচ্য নয়; ন্যায়বিচার হতে হবে নিরপেক্ষ, অটল ও মানবিক। এই বিচার শুধু ভুক্তভোগীর জন্য নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, যাতে তারা কখনো আবার দেয়াল-ঢাকা রক্ত বা মিথ্যা রঙের ভেতর নিজেদের হারিয়ে না ফেলে।

আমাদের দায়িত্ব
আজ যখন প্রমাণ মিলছে, বিচার শুরু হচ্ছে — তখন সমাজের প্রতিটি স্তরে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সচেতন থাকা, সাহসী থাকা, সত্যের পাশে থাকা। আমরা যেন ভুলে না যাই—রাষ্ট্র মানে কেবল সরকার নয়; রাষ্ট্র মানে আমরা সবাই। সুতরাং, আমরা প্রত্যেকে যদি ন্যায়ের অংশীদার হই, তবে অন্যায় আর টিকবে না। আমরা যদি চুপ থাকি, মিথ্যা টিকে থাকবে। আমরা যদি কথা বলি, সত্য বাঁচবে।

শেষ কথা
বাংলাদেশ এখন এক নতুন প্রভাতের মুখে দাঁড়িয়ে। গুম, নির্যাতন, ভয়, অন্ধকার—সবকিছুর ওপরে উঠতে হলে আমাদের প্রয়োজন মানবতার সাহস। এই বিচার প্রক্রিয়া যেন কেবল প্রতিশোধের নয়, বরং ন্যায় ও সংস্কারের প্রতীক হয়। আমরা শুধু বাংলাদেশের নাগরিক নই, আমরা পৃথিবীর নাগরিক—Global Citizen—যাদের দায়িত্ব সত্যকে রক্ষা করা, মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো, এবং প্রমাণ করা যে—অপরাধ থেকে কেউ মুক্ত নয়, ন্যায়বিচার কারও করুণায় নয়, এটি মানবতার অধিকার।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com 

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

সেন্ট্রাল ফার্মা সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজার4 hours ago

সেন্ট্রাল ফার্মার নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড গত ৩০ জুন,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কোম্পানিটি আলোচিত...

সেন্ট্রাল ফার্মা সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজার4 hours ago

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওইম্যাক্স ইলেকট্রোড লিমিটেড গত ৩০ জুন,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানিয়েছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের...

সেন্ট্রাল ফার্মা সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজার5 hours ago

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড গত ৩০ জুন,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের...

সেন্ট্রাল ফার্মা সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজার5 hours ago

সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ

সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সভায় ফান্ডটির ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক/...

সেন্ট্রাল ফার্মা সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজার5 hours ago

আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক এমডিকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা

আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড ইস্যুতে জালিয়াতির অভিযোগে আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে...

সেন্ট্রাল ফার্মা সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজার6 hours ago

সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের আয় বেড়েছে ১০৪ শতাংশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারী পিএলসি গত ৩০ সেপ্টেম্বর,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই’২৫-সেপ্টেম্বর’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।...

সেন্ট্রাল ফার্মা সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজার8 hours ago

ফার কেমিক্যালের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ দর কমেছে ফার কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের...

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
সেন্ট্রাল ফার্মা
রাজনীতি57 minutes ago

বিএনপিতে যোগ দিলেন মীর মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

সেন্ট্রাল ফার্মা
আন্তর্জাতিক1 hour ago

বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধ, আন্তর্জাতিক সালিশে যাচ্ছে আদানি

সেন্ট্রাল ফার্মা
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার1 hour ago

পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইবিতে ভিন্নধর্মী প্রতিযোগীতা

সেন্ট্রাল ফার্মা
মত দ্বিমত2 hours ago

স্বৈরাচার, সংকট বা চাঁদাবাজি নয়, চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

সেন্ট্রাল ফার্মা
জাতীয়2 hours ago

শাপলা কলি প্রতীকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি

সেন্ট্রাল ফার্মা
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

বিভিন্ন দেশে সংগঠিত গণহত্যার প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন

সেন্ট্রাল ফার্মা
জাতীয়3 hours ago

এনসিপিসহ ৩ দল নিয়ে দাবি-আপত্তি আহ্বান ইসির

সেন্ট্রাল ফার্মা
অর্থনীতি3 hours ago

একদিনেই পেঁয়াজের দাম বাড়লো কেজিতে ২০ টাকা

সেন্ট্রাল ফার্মা
আইন-আদালত3 hours ago

তিন শতাধিক বিচারককে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত

সেন্ট্রাল ফার্মা
মত দ্বিমত3 hours ago

নর্ডিক বিস্ময়, প্রকৃতি, নৈতিকতা ও মানবতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি

সেন্ট্রাল ফার্মা
রাজনীতি57 minutes ago

বিএনপিতে যোগ দিলেন মীর মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

সেন্ট্রাল ফার্মা
আন্তর্জাতিক1 hour ago

বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধ, আন্তর্জাতিক সালিশে যাচ্ছে আদানি

সেন্ট্রাল ফার্মা
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার1 hour ago

পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইবিতে ভিন্নধর্মী প্রতিযোগীতা

সেন্ট্রাল ফার্মা
মত দ্বিমত2 hours ago

স্বৈরাচার, সংকট বা চাঁদাবাজি নয়, চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

সেন্ট্রাল ফার্মা
জাতীয়2 hours ago

শাপলা কলি প্রতীকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি

সেন্ট্রাল ফার্মা
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

বিভিন্ন দেশে সংগঠিত গণহত্যার প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন

সেন্ট্রাল ফার্মা
জাতীয়3 hours ago

এনসিপিসহ ৩ দল নিয়ে দাবি-আপত্তি আহ্বান ইসির

সেন্ট্রাল ফার্মা
অর্থনীতি3 hours ago

একদিনেই পেঁয়াজের দাম বাড়লো কেজিতে ২০ টাকা

সেন্ট্রাল ফার্মা
আইন-আদালত3 hours ago

তিন শতাধিক বিচারককে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত

সেন্ট্রাল ফার্মা
মত দ্বিমত3 hours ago

নর্ডিক বিস্ময়, প্রকৃতি, নৈতিকতা ও মানবতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি

সেন্ট্রাল ফার্মা
রাজনীতি57 minutes ago

বিএনপিতে যোগ দিলেন মীর মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

সেন্ট্রাল ফার্মা
আন্তর্জাতিক1 hour ago

বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধ, আন্তর্জাতিক সালিশে যাচ্ছে আদানি

সেন্ট্রাল ফার্মা
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার1 hour ago

পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইবিতে ভিন্নধর্মী প্রতিযোগীতা

সেন্ট্রাল ফার্মা
মত দ্বিমত2 hours ago

স্বৈরাচার, সংকট বা চাঁদাবাজি নয়, চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

সেন্ট্রাল ফার্মা
জাতীয়2 hours ago

শাপলা কলি প্রতীকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি

সেন্ট্রাল ফার্মা
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

বিভিন্ন দেশে সংগঠিত গণহত্যার প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন

সেন্ট্রাল ফার্মা
জাতীয়3 hours ago

এনসিপিসহ ৩ দল নিয়ে দাবি-আপত্তি আহ্বান ইসির

সেন্ট্রাল ফার্মা
অর্থনীতি3 hours ago

একদিনেই পেঁয়াজের দাম বাড়লো কেজিতে ২০ টাকা

সেন্ট্রাল ফার্মা
আইন-আদালত3 hours ago

তিন শতাধিক বিচারককে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত

সেন্ট্রাল ফার্মা
মত দ্বিমত3 hours ago

নর্ডিক বিস্ময়, প্রকৃতি, নৈতিকতা ও মানবতার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি