সারাদেশ
হাজী মো. এরশাদ হোসেন মোল্লার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল
শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মোল্লা কান্দিতে মরহুম হাজী মো. এরশাদ হোসেন মোল্লার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় মরহুমের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় এ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন তাঁর সন্তান মো. গোলাম মোস্তফা মোল্লা।
মিলাদ ও দোয়ার মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন পীরে কামেল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মো. আবু ছালেহ (পীর সাহেব), উত্তর তারাবুনিয়া দরবার শরীফ।
এ সময় বক্তারা মরহুম হাজী মো. এরশাদ হোসেন মোল্লার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, তিনি জীবদ্দশায় এলাকার উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন একজন সৎ, নির্লোভ ও পরোপকারী ব্যক্তি, যার স্মৃতি আজও এলাকার মানুষের হৃদয়ে অমলিন।
অনুষ্ঠানে এলাকার অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শেষে মরহুমের কবর জিয়ারত করা হয়। পরবর্তীতে প্রায় এক হাজার মানুষের জন্য তবারক ও খাবারের আয়োজন করা হয়। শেষে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
সারাদেশ
কুড়িগ্রামে বাড়ছে শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে
উত্তরের সীমান্ত জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা দিনদিন বাড়ছে। টানা তিনদিন ধরে জেলার তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।
বুধবার (৩ ডিসেম্বের) ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সোমবার ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেখা গেছে, সকালে ঘন কুয়াশায় পুরো জেলা ঢেকে থাকে। রাস্তায় মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বিশেষ করে দিনমজুর, রিকশাচালক ও নিম্নআয়ের মানুষদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি।
জানা গেছে, জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের মধ্যে সর্দি, কাশি, জ্বরের উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে সব থেকে বেশি কষ্টে আছেন চরাঞ্চলের মানুষরা। খোলা পরিবেশে হিমেল বাতাসে রাত কাটানো কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের।
ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাডোবা চরের আবেদ আলী ও মুনছুর আলী জানান, সন্ধ্যা শুরু হওয়ার পর বাতাসের সঙ্গে কুয়াশা পড়তে থাকে। চরাঞ্চলে গাছপালা না থাকায় শীতের প্রকোপটা খুবই বেশি। সব থেকে বেশি কষ্ট দেয় বাতাস। ছোট শিশু এবং বয়স্ক মানুষকে নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কম্বল কেনার জন্য ৯ উপজেলাতে ৬ লাখ করে মোট ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আরও কয়েকদিন কুড়িগ্রামে শীত ও কুয়াশা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিনই কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ছে। সামনে শীত ও কুয়াশা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এমকে
সারাদেশ
রূপালী ব্যাংকে থেকে গ্রাহকের ১৯ লাখ টাকা উধাও, ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ
ফেনীর সোনাগাজীতে রূপালী ব্যাংকের একই পরিবারের তিন গ্রাহকের হিসাব থেকে তাদের অজান্তে ১৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই টাকা ভিন্ন কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়। রূপালী ব্যাংকের সোনাগাজীর আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখা থেকে এ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনার দুই সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহককে টাকা ফেরত দিতে পারেনি। ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা ব্যাংকের ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রূপালী ব্যাংকের আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখার গেটে তালা লাগিয়ে সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও তাদের স্বজনরা। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দ্রুত তালা খুলে নেওয়া হয়।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, রূপালী ব্যাংকের সোনাগাজীর আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখার গ্রাহক আবুল বশরের হিসাব থেকে ৩৩ হাজার টাকা, তার বড় ছেলে মনসুর আলমের হিসাব থেকে ১৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ও ছোট ছেলে ইফতেখার আলমের হিসাব থেকে ৯৫ হাজার টাকা ইসলামী ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকের কয়েকটি শাখার বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর (ট্রান্সফার) করা হয়।
গত ১২ নভেম্বর অস্বাভাবিক টাকা ট্রান্সফারের বিষয়টি প্রথমে টের পান ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এরপর হিসাবধারী আবুল বশরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনও টাকা লেনদেন করেননি বলে জানান। বিষয়টি শাখা ব্যবস্থাপক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। ইতিমধ্যে প্রধান কার্যালয়ের একটি দল ওই শাখা পরিদর্শন করেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক আবুল বশর বলেন, আমার চার ছেলে মালয়েশিয়াপ্রবাসী। আমার একটি ও আমার দুই ছেলের আরও দুটি অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানোর ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকতে পারে। ব্যাংক ম্যানেজার আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, লুট হওয়া ছয় লাখ টাকা ফেরত আনা হয়েছে, যা আদৌ সত্য নয়। আমাকে বিগত এক মাস টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে হয়রানি করা হচ্ছে।
এবিষয়ে আবুল বশর আরও বলেন, আমাদের হিসাবের টাকার পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ব্যাংকের। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে সহযোগিতা না করে থানায় মামলা করার জন্য পরামর্শ দিয়ে দায় মুক্ত হতে চাইছে। আমি সহায়তা চেয়ে ব্যাংকে ও থানায় গেলে দফায় দফায় আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে মামলা না করে উল্টো গ্রাহককে মামলা করতে বলছে। আমি গতকাল মঙ্গলবার রাতে সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত চাই, দোষীদের বিচার চাই এবং আমাদের আত্মসাৎ করা সব টাকা ফেরত চাই।
রূপালী ব্যাংক আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) দিদারুল আলম বলেন, তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে ট্রান্সফার হওয়া টাকাগুলো অ্যাপসের মাধ্যমে ট্রান্সফার করা হয়েছে। অ্যাপসের লেনদেন হেড অফিস সরাসরি তদারকি করে। এই লেনদেনে আমি বা আমার শাখার কারও দায় নেই। বিষয়টি তদন্তের পর্যায়ে আছে। আমরা থানা-পুলিশকেও এ বিষয়ে সহযোগিতা করছি। তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে ২৭ বার টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। প্রতিবার টাকা ট্রান্সফারের আগে গ্রাহক আবুল বাশরের মোবাইল ওটিপি নম্বর যায়। তিনি ওটিপি কনফার্ম করার পরে টাকাগুলো উত্তোলন হয়। এখন তিনি ওটিপি ব্যবহার করেছেন, না তার পরিবারের কেউ ওটিপি ব্যবহার করেছেন এটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
ব্যাংকার্স ফোরাম সোনাগাজী উপজেলা শাখার সভাপতি ও ইসলামী ব্যাংক পিএলসি সোনাগাজী শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মনসুরুল আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করে একটি প্রতারক চক্র এসব কাজ করে থাকে। ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. সাইফুল আলম বলেন, রূপালী ব্যাংক আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখায় গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক থানায় অভিযোগ দিতে এসেছিলেন। তাকে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও তিনি জমা দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারাদেশ
সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে।
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) রাত দুপুর ২টার দিকে আন্তর্জাতিক পিলার ৭৬ ও ৭৭ নম্বরের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানে না বলে জানিয়েছে বিজিবি।
নিহতরা হলেন- শিবগঞ্জের দুর্লভপুর ইউনিয়নের গাইপাড়া গ্ৰামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে ইব্রাহিম রিংকু (২৮) ও পাকা ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে মমিন মিয়া (২৯)।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, রোববার গভীর রাতে ৪/৫ জনের একটি দল ওয়াহেদপুর বিওপির পাশ দিয়ে সীমান্তে গরু আনতে যায়। এ সময় ভারতের নিমতিতা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা রিংকু ও মমিনকে আটক করে, আর অন্যরা পালিয়ে আসে। পরে বিভিন্ন স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আটক দুজনকে মারধর করে হত্যা করে তাদের মরদেহ পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
পাকা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রফিক উদ্দিন বলেন, স্থানীয় বাজারে গিয়ে শুনেছি, ভারতে গরু আনতে গিয়ে দুজন নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলেও এলাকায় গুঞ্জন চলছে। কিন্তু পরিবারগুলো ভয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিতে সাহস পাচ্ছে না।
৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এখনো কোনো পরিবার আমাদের কাছে অভিযোগ দেয়নি।
এমকে
সারাদেশ
আট কুকুরছানা হত্যার দায়ে গ্রেফতার সেই নারী
পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত নিশি খাতুনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১টায় ভাড়াবাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেন।
আকলিমা খাতুন জানান, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯ এর ৭ ধারায় রাত ৯টার দিকে থানায় মামলা করা হয়। মামলায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি আক্তারকে আসামি করা হয়।
এদিকে অভিযুক্ত ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তার পরিবারকে সরকারি কোয়ার্টার থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা থেকে এনিমেল অ্যাকটিভিস্ট কমিটির একটি তদন্ত টিম ঈশ্বরদীতে এসেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নকে মঙ্গলবারের মধ্যে গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়তে লিখিত নির্দেশ দেওয় হয়েছিল। তারা ইতোমধ্যে বাসা খালি করে অন্যত্র চলে গেছেন।
জানা গেছে, ১ নভেম্বর আটটি কুকুরছানা বস্তাবন্দি করে ডুবিয়ে হত্যা করেন নিশি খাতুন।
এমকে
সারাদেশ
শিক্ষক ছাড়াই পরীক্ষা দিলো প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা
সহকারী শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির মধ্যেই ফেনীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার হলে শিক্ষক ছাড়াই পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। কেবল প্রধান শিক্ষক একাই পরীক্ষা গ্রহণের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করছেন। পরীক্ষা নিতে বিভিন্ন স্কুলে ছুটতে দেখা গেছে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের। সহযোগিতা করেছেন অভিভাবকরাও।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) ও মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ফেনীর বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা গেছে, সহকারী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে বসে কর্মবিরতি পালন করছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী ওয়াজি উল্লাহ পরীক্ষার হলে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বিতরণ করে চলে গেছেন। আর শিক্ষার্থীরা যে যার মতো করে পরীক্ষা দিচ্ছে। আবার কোন কোন হল ঘুরে দেখা গেছে, পরীক্ষা নিতে সহযোগিতা করছেন অভিভাবকরা। প্রথম দিন ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বুঝতে সমস্যা হলেও যে যার মতো করে খাতায় উত্তর লিখেছে। এমন হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির চিত্র দেখা গেছে ফেনীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। তবে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা নিতে প্রধান শিক্ষককে সহযোগিতা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার ফেনীর ৫৫৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ হাজার ৪৫ জন সহকারী শিক্ষক কর্মবিরতি পালন করছেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা গ্রহণের এমন চিত্র দেখে হতাশ অভিভাবকরা।
এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেনী সরকারি মডেল স্কুলের একাধিক অভিভাবক জানান, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রাথমিকেও পরীক্ষা গ্রহণ করা উচিত। এজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দাবি জানান তারা।
আরেক অভিভাবক রেহানা আক্তার জানান, ইংরেজি প্রশ্নপত্র বুঝতে অনেকের কষ্ট হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করার মত কোন শিক্ষক ছিল না। এভাবে পরীক্ষা নিয়ে কি মূল্যায়ন হবে? প্রাথমিকে পড়াশোনা করা সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা। এভাবে চলতে থাকলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতি অভিভাবকদের বিমুখতা তৈরি হবে এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কমে যাবে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপ্না মজুমদার বলেন, স্কুলে ডেপুটিশনসহ ১০ জন সহকারী শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। দাবি আদায়ে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। চাকরির শেষ পর্যায়ে এসেও কোন পদোন্নতি হয়নি। সহকারী শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার।
বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক নাজমুল ইসলাম বলেন, ভোটগ্রহণ, ভোটার তালিকা, টিকাদানসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন সহকারী শিক্ষকেরা। অথচ আজকে আমরা বৈষম্যের শিকার, আমরা অবহেলিত। দশ বছর পরও আমরা টাইম স্কেল পাইনি।
এক্ষেত্রে আমাদের চাকরির শর্ত পূরণ হচ্ছে না। আমাদের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা নবম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেড পাচ্ছে। আমাদের ক্ষেত্রে শুধু অজুহাত দেওয়া হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও গোহাড়ুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন খোন্দকার জানান, ডিজি মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সুষ্ঠভাবে প্রথম দিনের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সাময়িক সমস্যা হলেও আমরা চেষ্টা করছি সুন্দরভাবে পরীক্ষা নিতে।
এ প্রসঙ্গে দাগনভূঞা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলার ১০২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতির মধ্যে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কয়েকটি বিদ্যালয় থেকে অভিযোগ এসেছে। ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দীন আহাম্মদ জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষা নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে অভিভাবক ও অফিস সহকারীরা সহযোগিতা করেছে। আশা করি এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।
সহকারী শিক্ষকদের উপস্থিতি ছাড়া কিভাবে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে এ প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মদ জানান, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা পরীক্ষা নিচ্ছেন। যেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা বিশৃঙ্খলা করেছে অভিযোগ এলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



