অর্থনীতি
জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৯০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৯০ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যা এ যাবতকালের যে কোনো অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আয়কর ও ভ্রমণ কর, স্থানীয় পর্যায়ের মূসক খাত এবং আমদানি ও রপ্তানি খাতের প্রত্যেকটিতে রাজস্ব আদায়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল ৭৫ হাজার ৫৫৪ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল ৭৬ হাজার ৬৮ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ১৫ হাজার ২৭০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। বিগত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের রাজস্ব আদায়ের তুলনায় এ বছরের আদায়ের প্রবৃদ্ধি হার ২০ দশমিক ২১ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের আলোচ্য সময়ে মূসক বা ভ্যাট আদায় বেড়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ের মুসক খাত থেকে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সবচেয়ে বেশি ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০২৪-২০২৫, ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল যথাক্রমে ২৬৮৩৮.৪৯, ২৮৪৪৫.৪১ এবং ২৪৫৪৬.৬৫ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় এ বছর স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধি হার ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
আরও বলা হয়, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা যা ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আদায় ২৪,০৮০.৮২ কোটি টাকা, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আদায় ২৩,৭৫১.৩১ কোটি টাকা এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আদায় ২১,০১৬.২০ কোটি টাকার চাইতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি। আয়কর ও ভ্রমণ করের ক্ষেত্রে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক ২৬ শতাংশ।
এছাড়া আমদানি ও রপ্তানি খাতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই’ ২৫-সেপ্টেম্বর’২৫ প্রান্তিকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা যা গত তিন অর্থবছরের একই সময়ে আদায়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এই খাতে আদায় ছিল ২৪,৬২৫.৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই খাতে রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে ২,৮৯২.৫৩ কোটি টাকা। ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বিগত অর্থবছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
এনবিআর জানায়, করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন নিশ্চিতকরণ, কর ফাঁকি প্রতিরোধ এবং ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার করে সরকারি কোষাগারে জমাদানের কাজে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মেধাবী এবং পরিশ্রমী কর্মীরা তাদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির এ ধারাকে আরও বেগবান করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
অর্থনীতি
ফের বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
দেশের বাজারে বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম। লিটারে ৬ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিনের দাম ৯৫৫ টাকা, খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৭৬ টাকা ও প্রতি লিটার পাম তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৬ টাকা।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। নতুন এই দর সোমবার (৮ ডিসেম্বর) থেকেই কার্যকর হবে।
এমকে
অর্থনীতি
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
দীর্ঘ ৩ মাস পর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। দিনাজপুরের হিলি দিয়ে এ চালান এসেছে বাংলাদেশে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় পেঁয়াজ আমদানির এ চালান বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আমদানিকারক রকি এন্টারপ্রাইজের আব্দুল মালেক বাবু। তিনি জানান, আপাতত এ চালানে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।
এদিকে আমদানির খবরে কমেছে পেঁয়াজের দাম। দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে।
সরেজমিনে রোববার সকালে হিলির কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি মুড়ি কাটা পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে ১০০ টাকা এবং দেশি শুকনো মানের পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২০ টাকা কমে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভারত থেকে আমদানির খবরে মোকামে দাম কমে যাওয়ার কারণে খুচরা বাজারেও কমেছে দাম বলছেন ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের আরেক পেঁয়াজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এটি অল্প পরিসরে। প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারক আইপি পাবেন এবং একজন আমদানিকারক ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন। সরকারের কাছে অনুরোধ পেঁয়াজ আমদানির জন্য আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। তাহলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে।
এমকে
অর্থনীতি
নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮.২৯ শতাংশ
শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম হলেও খাদ্য খাতে চলতি বছরের নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগের মাস অক্টোবরে এই হার ছিল ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর গত বছরের নভেম্বরে এ হার ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতিও কিছুটা বেড়েছে। চলতি বছরের নভেম্বরে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশে, যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমেছে। এক বছর আগে, অর্থাৎ ২০২৪ সালের নভেম্বরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।
খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) খাতে নভেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে ৯ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত বছরের নভেম্বরে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
এমকে
অর্থনীতি
আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিচ্ছে সরকার
দেশের বাজার সহনীয় রাখতে আজ রবিবার (০৭ ডিসেম্বর) থেকে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রত্যেকটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে যে সব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন তারাই কেবল আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
জানা গেছে, মাসখানেক আগে হঠাৎ অস্থির হয়ে ওঠে পেঁয়াজের বাজার। চার-পাঁচ দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকার মতো বেড়ে যায় দাম। প্রতি কেজির দর ওঠে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। এরপর সরকার আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে দর কিছুটা কমতে থাকে। ধীর ধীরে কমে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় নেমে আসে।
গত সপ্তাহে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত আছে। নতুন পেঁয়াজও শিগগিরই বাজারে চলে আসবে। তাই কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় আমদানির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। সরকারের এমন পদক্ষেপের সুযোগ নিচ্ছেন মজুতদার ব্যবসায়ীরা। ফলে ফের দাম বাড়ছে।
তবে টিসিবির হিসাবে, গত বছরের চেয়ে এখনও ১০ শতাংশ কম দর রয়েছে পেঁয়াজের। এদিকে বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ না এলেও পাতাযুক্ত পেঁয়াজ এসেছে। প্রতি কেজি কেনা যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানি করা হবে না এমন খবরে দর বেড়েছে। মজুতদার ও কৃষক পর্যায়ে দর বাড়ার কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গত ৯ নভেম্বর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, চার-পাঁচ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম না কমলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা বাজারে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি। দেশে প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজের মজুত রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। তারপরও যদি আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে দাম না কমে তাহলে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে।
অর্থনীতি
ভর্তুকি দিয়ে শিল্প চালানো সম্ভব নয় : শিল্প উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ভর্তুকি দিয়ে শিল্প চালানো সম্ভব নয়। আমাদের সময়ে বা আগামী সরকারের সময় ভালো খবর আসবে। দেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আমাদের আগ্রহ বেশি। তারা যেন আমাদের সহযোগী হয়ে আসেন, সেজন্য আমরা আলোচনা করছি।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে নাটোর চিনিকল পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদেশ থেকে চিনি আমদানি করা আপাতত বন্ধ। কারণ আমাদের দেশের চিনিকলগুলোতে উৎপাদিত যে চিনি জমা রয়েছে, সে চিনি আগে টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করছি। এটা চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, চিনিতে লাভ খুব দ্রুত আসে না। আমাদের দেশের চিনিকলগুলো ব্রিটিশ আমলের তৈরি। আমাদের সারা দেশের যে চাহিদা তার ছোট অংশ আমরা দেশীয়ভাবে শোধ করতে পারি। আমাদের সক্ষমতা শুধু চিনির ওপর না থেকে চিনির সঙ্গে অন্য কিছু উৎপাদনের চিন্তা করছে সরকার।
পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীন, নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাবসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।



