জাতীয়
স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম যুক্ত করতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
স্কুল ফিডিংয়ে ডিম যুক্ত করতে হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, আমাদের স্কুল ফিডিংয়ে দুধ দেওয়া হচ্ছে সেখানে ডিমও যুক্ত করতে হবে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার সহযোগিতায় সভার আয়োজন করে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর।
বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার আরও বলেন, অনেক দরিদ্র ছেলেমেয়ে পুষ্টির যোগান পায় না। সেক্ষেত্রে স্কুলের খাবার তালিকায় ডিম রাখলে সেই পুষ্টি পূরণ সম্ভব।
তিনি বলেন, ডিম খাবারের ক্ষেত্রে দেশের সব মানুষ জড়িত। এটি উৎপাদন ও খাদ্যের সঙ্গেও সবাই জড়িত। গরুর মাংস সবাই কিনতে না পারলেও সহজেই ডিম কেনা যায়। আমাদের ৬ বছর বয়সের মধ্যেই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। তাই স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম যুক্ত করতে হবে।
আমাদের ৮০ শতাংশ ডিম প্রান্তিক পর্যায় থেকে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রান্তিক খামারিরা ৮০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করে। আবার গ্রামের দরিদ্র নারীরাও দু-একটি করে মুরগি পালন করে পুষ্টির যোগান দেয়।
কৃষিতে কীটনাশক ব্যবহারে মুরগি পালন হুমকির মুখে পড়েছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তা ছাড়া হাওরের হাঁসের ডিমের কথা প্রচার করা হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওরের হাঁসের ডিমের বিষয়ে প্রচার করতে হবে।
তিনি সয়াবিন সম্পর্কে বলেন, যে সয়াবিন আমদানি হয় তা জিএমও, সেটি কিন্তু আমাদের ওপর প্রভাব পড়বে। তাই আমাদের দেশে ভুট্টা উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। আর ডিম নিরাপদ হতে হবে।
ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা করোনাকালে ১ লাখ ৮০ হাজার প্রান্তিক খামারিকে সরাসরি প্রণোদনা দিয়েছি। তা ছাড়া প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদনে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।
ড. শাকিলা ফারুক বলেন, মানুষের ওজন, বয়স অনুযায়ী প্রোটিন নিতে হবে। তিনি বলেন, দেশি মুরগির চেয়ে ফার্মের মুরগির ডিম বড় হওয়ায় পুষ্টিগুণ বেশি। তবে সাদা, ব্রাউন, হাঁসের ও কোয়েলের ডিম কোনোটার মধ্যে প্রোটিনের পার্থক্য নেই। তবে দেশি মুরগির ডিমের স্বাদ বেশি।
ডিমের ক্ষেত্রে ৬০-৭০ শতাংশ ব্যয় হয় খাবারে বলে জানান অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান সিকদার। বলেন, আমাদের ডিমের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নেই। তাই পোল্ট্রিশিল্পের জন্য আমাদের রোডম্যাপ দরকার।
ডা. এবিএম খালেকুজ্জামান বলেন, একদিনের বাচ্চার দাম কখনো বেড়ে যায় আবার এক সময় কমে যায়৷ সেজন্য বাচ্চার উৎপাদন গত বছর ৪২ টাকা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ৫৩ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বাজারে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে।
মসিউর রহমান বলেন, আমাদের ডিমের চাহিদার ৮০ শতাংশ উৎপাদন প্রান্তিক খামারিরা। তাদের সাহায্য করতে হবে। বর্তমানে আমাদের উদ্যোগে ৪ বিভাগে ৬০০ খামারিদের নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামীতে আরও দুটি বিভাগে ৬০০ খামারি নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ভোক্তার কাছে ডিম পৌঁছে দিতে আমরা সচেষ্ট থাকলেও মাঝখানের হাতগুলো কমাতে হবে। আর যারা ডিম স্টক করে তাদের ধরতে হবে। বিগত সরকারের আমলে আমাদের অনেকের অফিসে ডিজিএফআইয়ের অফিস বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমন বাধা নিয়ে উৎপাদন করা সম্ভব নয়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ফরিদা আখতার ছাড়াও বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক ও ওয়াপসা বিবির সাবেক সভাপতি মসিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন ও অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান সিকদার।
প্রতিবছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্ব ডিম দিবস পালিত হয়ে থাকে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ডিমে আছে প্রোটিন, খেতে হবে প্রতিদিন।
জাতীয়
পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ৩০ হাজার প্রবাসীর নিবন্ধন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দেশ থেকে ভোট দেওয়ার জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবাসীদের নিবন্ধন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৬১৪ জনে। নির্ধারিত সময় শেষে সংশ্লিষ্ট প্রবাসীদের ঠিকানায় ডাকযোগে ব্যালট পেপার পাঠাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে পুরুষ ২৬ হাজার ৭৭৮ জন এবং নারী ৩ হাজার ৮৬২ জন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকালে ইসির ওয়েবসাইটের তথ্য থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
গত ১৯ নভেম্বর থেকে পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে, চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। আর ২৩ নভেম্বর রাত ১২টার পর (২৪ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিবন্ধন, চলবে একই সময় পর্যন্ত।
এই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৮ হাজার ৩৭৮ জন, জাপান থেকে ৫ হাজার ৬২৪ জন, আমেরিকা থেকে ৪ হাজার ৪০ জন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৩ হাজার ৪৯২ জন, কানাডা থেকে ২ হাজার ৪৯৪ জন আবেদন করেছে।
যে দেশগুলোতে নিবন্ধন চলছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, হংকং, ব্রাজিল, উগান্ডা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, বতসোয়ানা, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, ঘানা, গিনি, মরক্কো, দক্ষিণ সুদান, চিলি, সিয়েরা লিওন, ইকুয়েডর, তাইওয়ান, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গাম্বিয়া, পেরু, জিম্বাবুয়ে ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশ থেকে মোট নিবন্ধন করেছেন সকাল পৌনে দশটা পর্যন্ত ২৯ হাজার ১০০ প্রবাসী।
সৌদি আরবের প্রবাসীরা ৪ থেকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারবেন। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা ৯ থেকে ১৩ ডিসেম্বর, মধ্যপ্রাচ্যের (সৌদি বাদে) অন্যান্য দেশের প্রবাসীরা ১৪ থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত (ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি, সরকারি চাকরিজীবী, কয়েদি ও অন্যান্য দেশে বসবাসরত ভোটাররা) ১৯ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করতে পারবেন।
জাতীয়
রাজনীতিতে জড়িত কাউকে পর্যবেক্ষক করা যাবে না: সিইসি
রাজনীতিতে জড়িত কাউকে পর্যবেক্ষক হিসেবে না দিতে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নির্বাচন ভবনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দিনব্যাপী সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন জাতিকে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি স্বীকার করেন, অতীতের ভুল-ভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিশন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়। আমাদের এজেন্ডা একটাই, একটি ক্রেডিবল ইলেকশন জাতিকে উপহার দেওয়া। একটি ভালো নির্বাচন আয়োজন আমাদের দায়িত্ব। ভালো নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা লাগবে বলে জানান তিনি।
সিইসি পর্যবেক্ষকদের ভোটের মাঠের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় সহযোগিতা চেয়েছেন। পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতি তিনি দুটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
নাসির উদ্দিন বলেন, যারা নতুন পর্যবেক্ষক সংস্থা, তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পর্যবেক্ষণের জন্য যাদের নিয়োগ দেওয়া হবে, তারা যেন রাজনীতি ও কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।
জাতীয়
রাজধানীতে ৩০০ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত: রাজউক চেয়ারম্যান
ঢাকা শহরে ৩০০ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) ভবনে ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাসে প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভা শেষে এ তথ্য জানান রাজউক চেয়ারম্যান।
ঢাকায় গত শুক্র ও শনিবার চার দফা ভূমিকম্পের পর সোমবার দুপুরে এই সেমিনার আয়োজন করে রাজউক। যদিও রাজধানীর ভবনগুলো ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী নির্মাণ নিশ্চিত করা এবং নগর পরিকল্পিত করার দায়িত্ব রাজউকের।
ওই সভায় সরকারে দুজন উপদেষ্টা, রাজউকের চেয়ারম্যান, জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ ভূমিকম্প ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, রাজধানীতে কয়েক দফায় ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় গত শুক্রবার পর্যন্ত ৩০০টি ছোট-বড় ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে।
রাজউকের যেসব কর্মকর্তা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নকশা অনুমোদনের সঙ্গে যুক্ত, তাদের তালিকা রাজউক প্রকাশ করবে কি না, রাজউক চেয়ারম্যানকে এমন প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।
জবাবে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, তারা এর মধ্যেই জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। নিয়মবহির্ভূত এবং নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণে রাজউক ও ভবন মালিক উভয়েরই দায় আছে। প্রথমে দায়ী ভবনমালিক, এরপর কর্মকর্তা।
জাতীয়
ইসির সঙ্গে ৮১ পর্যবেক্ষকের সংলাপ আজ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশীয় ৮১টি পর্যবেক্ষক সংস্থার সঙ্গে আজ সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ও বিকেল দুই ভাগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, সোমবার (২৪ নভেম্বর) ইসি সচিবালয়ের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) ও বিকল্প তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা মো. আশাদুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ইসির চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ গ্রহণের লক্ষ্যে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ৪০টি এবং দুপুর ২টা থেকে ৪১টিসহ মোট ৮১টি পর্যবেক্ষক সংস্থার সঙ্গে মতবিনিময় সভা হবে।
আশাদুল হক আরও বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে সংলাপে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবলায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাযথভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নারী নেত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ইসি।
এর অংশ হিসেবে গত ১৩, ১৬, ১৭ ও ১৯ নভেম্বর দুই সেশনে অন্তত ৪৭টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয়
ঢাকায় ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ৪০ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে
টাঙ্গাইলের মধুপুর ফল্ট বা ফাটলরেখায় ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের সাড়ে ৮ লাখ বা ৪০ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে। এতে দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা আছে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) নিজেদের একটি সমীক্ষার বরাত দিয়ে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। যদিও রাজধানীর ভবনগুলো ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী নির্মাণ নিশ্চিত করা এবং নগর পরিকল্পিত করার দায়িত্ব রাজউকের।
রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) ভবনে ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাসে প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় রাজউকের পক্ষ থেকে সমীক্ষার তথ্য উপস্থাপন করা হয়। ঢাকায় গত শুক্র ও শনিবার চার দফা ভূমিকম্পের পর গতকাল সোমবার দুপুরে এই সেমিনার আয়োজন করে রাজউক। এতে সরকারে দুজন উপদেষ্টা, রাজউকের চেয়ারম্যান, জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ ভূমিকম্প ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজধানীর ভবনগুলোর ঝুঁকি মূল্যায়নের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান।
এ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষকে যুক্ত করে ভবন মূল্যায়নের কাজ শুরুর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, অপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।
রাজউক এবং সিটি করপোরেশনকে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে উল্লেখ করে পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, যেখানে ভাঙতেই হবে, সেখানে যেন আর কোনো রকম নমনীয়তা না দেখানো হয়, সেটা খুবই জরুরি। প্রয়োজনে রাজউককে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
সেমিনারে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, রাজউকের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খুব তাড়াতাড়ি ‘টাউন ইম্প্রুভমেন্ট অ্যাক্টের’ সংশোধন হচ্ছে।
ভূমিকম্প হলে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হবে, তা নিয়ে রাজউকের সমীক্ষাটি করা হয় ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের’ (২০১৫-২০২৪) রাজউক অংশের অর্থায়নে। ৫৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
দেশে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল ১৮৮৫ সালে। এই ভূমিকম্প হয়েছিল মধুপুর ফাটলরেখায় (ফল্ট)। এরপর ১৪০ বছর হতে চললেও এত বড় ভূমিকম্প ওই ফাটলরেখায় আর হয়নি।
রাজউকের সেমিনারে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মো. ওয়াহিদ সাদিক। তিনিই মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হলে কী ক্ষতি হতে পারে, তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মধুপুর ফাটলরেখায় ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকার ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৯টি ভবন ধসে পড়তে পারে, যা মোট ভবনের ৪০ শতাংশের কিছু বেশি। এতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে, যা প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার সমান। ভবনগুলো মেরামত অথবা পুনর্নির্মাণে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার (৫ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা)।
ভূমিকম্পের এই ঝুঁকির কথা দেশে বহু বছর ধরেই বলা হচ্ছে। তারপরও ঢাকায় পুরোনো, ঝুঁকিপূর্ণ, নকশাবহির্ভূতভাবে নির্মাণ করা এবং অবৈধ ভবনের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে ভবন নির্মাণের সময়ই আইনকানুন মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাজউকের।
১৯৫৬ সালে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার উন্নয়ন ও পরিবর্ধনের বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে ‘ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ডিআইটি)’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ডিআইটি ১৯৮৭ সালে রূপ নেয় রাজউকে।
রাজউকের রূপকল্প হলো ‘আওতাধীন এলাকায় পরিকল্পিত ও টেকসই নগরায়ণ এবং বাসযোগ্য আবাসন নিশ্চিতকরণ।’ সংস্থাটির অভিলক্ষ্যে সবার জন্য নিরাপদ আবাসন এবং দুর্যোগ সহনশীল নগর বিনির্মাণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সংস্থাটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রবল। নগরকে পরিকল্পিত করার বদলে আবাসন প্রকল্প করার মাধ্যমে প্রভাবশালীদের প্লট দেওয়ার দিকে বেশি নজর দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে রাজউকের বিরুদ্ধে।
নগর–পরিকল্পনাবিদ এবং জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, রাজউকের তিনটি কাজ। পরিকল্পনা তৈরি করা, উন্নয়ন করা এবং উন্নয়নের নিয়ন্ত্রণ করা। উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তারা হতাশাজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, বড় ভূমিকম্পে ৪০ শতাংশ ভেঙে পড়বে বলা হচ্ছে, এর মূল দায় রাজউকের। ভবনমালিক এবং প্রকৌশলীরাও দায় এড়াতে পারেন না।



