অর্থনীতি
জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৬৯ শতাংশ
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। শেষ প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন) তথ্যউপাত্ত বিবেচনায় নিয়ে গত অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির এ সাময়িক হিসাব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
এর আগে, গত ২৭ মে তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত অর্থনীতির গতিধারার ভিত্তিতে গত অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে প্রাথমিক প্রাক্কলন প্রকাশ করে বিবিএস। অর্থাৎ গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকের তথ্যউপাত্ত পাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে যে, আগের হিসাবের চেয়ে সাময়িক হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে।
পরবর্তীতে সব প্রান্তিকের চূড়ান্ত তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে জিডিপি প্রবৃদ্ধির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করবে বিবিএস। সেখানেও সাময়িক হিসাবের সঙ্গে কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। সাধারণত, ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে জিডিপির চূড়ান্ত প্রকাশ করে থাকে বিবিএস।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এর আগে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ দশমিক ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিবিএসের ওয়েবসাইটে গত অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করা হয়। বিবিএসের প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, সাময়িক হিসাব অনুযায়ী গত প্রান্তিকে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার ছিল ১৪ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা।
সাময়িক হিসাবে, গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে স্থির মূল্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২ দশমিক ২৪ শতাংশ। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে যথাক্রমে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
গত অর্থবছরের সর্বশেষ প্রান্তিকে স্থির মূল্যে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের একই প্রান্তিকে তুলনায় কিছুটা কমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ছিল ৪ দশমিক ১১ শতাংশ।
তবে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় তুলনায় বেড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ।
অর্থনীতি
নগদ টাকার লেনদেন কমাতে পারলে দুর্নীতি কমে আসবে: গভর্নর
নগদ টাকার লেনদেন কমাতে পারলে স্বভাবতই দুর্নীতি কমে আসবে। আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও গেটস ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ইন্সট্যান্ট পেমেন্ট সিস্টেম বিষয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় ‘ইনক্লুসিভ ইনস্ট্যান্ট পেমেন্ট সিস্টেম’ তৈরিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও গেটস ফাউন্ডেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের ১৩টি মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিসসহ (এমএফএস) ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা, মাইক্রোক্রেডিট, ইন্স্যুরেন্স ও এনবিএফআইসহ সব ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজেদের মধ্যে আন্তঃলেনদেন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
গভর্নর বলেন, আগামী ২০২৭ সালের জুলাইয়ে এ উদ্যোগ শতভাগ অপারেশনাল হবে। দেশের পূর্ণ জনগোষ্ঠীকে এই সিস্টেমের আওতায় আনা গেলে অর্থনৈতিক লেনদেনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে, কর আদায় বাড়বে এবং দুর্নীতি কমবে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৭ সালের মধ্যে সব মোবাইল ফাইন্যানশিয়াল সার্ভিস, মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠান ও ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমকে এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যাতে আন্তঃলেনদেন সম্পূর্ণরূপে সহজ ও তাৎক্ষণিক হয়।
অর্থনীতি
নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করায় খরচ বাড়বে: অর্থ উপদেষ্টা
নির্বাচন আর গণভোট একসঙ্গে করার কারণে খরচ বাড়বে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে, এ বাজেট নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, নির্বাচন আর গণভোট একসঙ্গে করার কারণে খরচ বাড়বে। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের চাহিদার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্রগুলোতে বডি ক্যামেরা দেওয়া হবে। বরাদ্দ দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নির্বাচন ও গণভোটের জন্য বাজেট নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না জানিয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। তবে নির্বাচনের জন্য এরই মধ্যে যে বাজেট ধরা হয়েছে, গণভোটের কারণে এবং প্রবাসীদের জন্য ভোটের ব্যবস্থা করায় সেই বাজেট বাড়বে।
নির্বাচন এবং গণভোট দুইদিন করা অনেক কঠিন বিষয় বলেও মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি আরও বলে, নির্বাচন এবং গণভোট একদিনে করাই ভালো। পৃথিবীর অনেক দেশেই এ ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।
এছাড়া সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থনীতি
বিশ্ববাজারে কমলো স্বর্ণের দাম
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আরও কিছুটা কমেছে। গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের সময় আজ সোমবার আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম ৩৩ ডলার কমেছে। বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা বলছে, আগামী কিছুদিন স্বর্ণের দাম নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করবে। দাম একেবারে কমে যাবে না, আবার অনেকটা বেড়েও যাবে না।
চলতি বছর স্বর্ণের দাম একটানা অনেক দিন বাড়ার পর সম্প্রতি কিছুটা কমেছে। তা সত্ত্বেও সোনার দাম এখন পর্যন্ত আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলারের ওপরে। নিউইয়র্কের সময় অনুযায়ী, রোববার রাত ১১টার সময় স্বর্ণের দাম ছিল আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০ ডলার ৪৩ সেন্ট।
তবে বেশ কিছু কারণে সোনার দাম সীমিত পরিসরের মধ্যে ওঠানামা করবে বলে মনে করছেন বাজার–বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বেশ কিছু অর্থনৈতিক সূচকের দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন শাটডাউন থাকার কারণে কী পরিস্থিতি হয়, সেদিকে নজর রাখছেন তাঁরা। দেশটির মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কী দাঁড়ায়, সেদিকে বিনিয়োগকারীদের তীক্ষ্ণ নজর। সেই সঙ্গে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়, অর্থাৎ ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার হ্রাস-বৃদ্ধি করে কি না, সেদিকেও বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আছে। ডিসেম্বর মাসে ফেডের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠক। ফলে এই সময়ে মধ্যে, অর্থাৎ আগামী এক মাস সোনার দাম খুব বেশি ওঠানামা করবে না।
ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহারের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য আরও কিছু সূচক গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলোর মধ্যে আছে সাপ্তাহিক কর্মসংস্থানের হার, ভোক্তাদের আত্মবিশ্বাস, উৎপাদনবহির্ভূত খাতের পিএমআই। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ডিসেম্বর মাসে ফেডের নীতি সুদহার ঘোষণার আগে সোনার দাম স্থিতিশীল থাকবে।
সোনার দাম হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আরেকটি যে বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, ডলারের বিনিময় হার। সোনার দাম আপাতত স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা বেশি হলেও একটি কারণে দাম হঠাৎ কমে যেতে পারে। সেটা হলো, ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়া। দ্য অ্যালয় মার্কেটের প্রধান নির্বাহী ব্র্যান্ডন অ্যাভেরসানো বলেন, সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো মার্কিন ডলারের আবার শক্তিশালী হয়ে ওঠা। এতে সোনার চাহিদা কমে যেতে পারে। বিনিয়োগকারীরা তখন মার্কিন ডলারভিত্তিক বন্ডের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারেন। সেটা হলে সোনার দাম আবার কমে যেতে পারে। খবর ইনভেস্টোপিডিয়ার
এ বছর সোনার দাম ৪০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ইতিহাসে এই প্রথম আউন্সপ্রতি দাম ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অ্যাভেরসানোর মতে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণেই মূলত সোনার দামের এই উল্লম্ফন। পাশাপাশি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার নিয়ে উদ্বেগ এবং অন্যান্য মুদ্রার দুর্বলতার কারণেও সোনার এই দাম বৃদ্ধি বলে তিনি মনে করেন। বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সরকার—সবাই মনে করে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়লে অন্তত সোনার দাম অক্ষুণ্ন থাকবে। উদাহরণ হিসেবে ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের কথা বলা যায়, যখন প্রায় সব সম্পদের দাম কমলেও (সরকারি বন্ড ছাড়া) সোনার দাম বরং ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছিল।
সোনার বাড়তি চাহিদাও দাম বাড়ার আরেকটি বড় কারণ। অ্যাভেরসানো বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময়ে শুধু সাধারণ মানুষই নিশ্চিত সম্পদ হিসেবে সোনা কেনে না, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও একই কাজ করে। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন রেকর্ড পরিমাণ সোনা কিনছে। উদাহরণ হিসেবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি কয়েক বছরে নজিরবিহীন পরিমাণে সোনা কিনেছে। ফলে বাজারে সোনার সরবরাহ কমে যাচ্ছে। সে কারণে দাম বেড়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়লে দেশের বাজারে বাড়ানো হয়। আবার বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশের বাজারে কমানো হয়।
অর্থনীতি
২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে এসেছে ২১৩ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি নভেম্বরের প্রথম ২২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৩ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪২ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২১ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪০ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, নভেম্বরের ১৬ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত দেশে এসেছে ৬১ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ৯ থেকে ১৫ নভেম্বর এসেছে ৭৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার, ২ থেকে ৮ নভেম্বর এসেছে ৭১ কোটি ১০ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আর নভেম্বরের প্রথম দিন প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৪ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
এ ছাড়া গত অক্টোবর ও সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছে যথাক্রমে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ও ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। আর গত আগস্ট ও জুলাইয়ে এসেছে যথাক্রমে ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ও ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
অর্থনীতি
ট্রাভেল এজেন্সি খাতে নতুন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি
ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোট। রোববার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন করে তারা এই দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের আইন ও ২০২১ সালের সংশোধনী আইনের পরিবর্তন করে নতুন যে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করেছে তা বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে মালিক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, যা পুরো খাত এবং জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক জালাল উদ্দিন টিপু বলেন, নতুন অধ্যাদেশে যেসব সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে তার অনেকগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিশেষ করে ধারা ৫–এ অন্য এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করলে সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলো টিকে থাকতে পারবে না। দেশে যে ৫ হাজার এজেন্সি আছে, তাদের অধিকাংশেরই এয়ারলাইন্স থেকে সরাসরি টিকিট ইস্যুর সক্ষমতা নেই। আর অনলাইন ও অফলাইনের জন্য যে ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা জামানত রাখার কথা বলা হয়েছে, তা ছোট এজেন্সিগুলোর পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, অধ্যাদেশের ধারা ৯-এ পরিবারের বাইরে ব্যবসা হস্তান্তর নিষিদ্ধ করা, এক ঠিকানায় রিক্রুটিং এজেন্টের কার্যক্রম সীমিত করা এবং বিনা শুনানিতে লাইসেন্স স্থগিত করার মতো বিধানগুলো খাতটিকে অকার্যকর করে দেবে। দেশের প্রচলিত আইনেই একই ঠিকানায় একাধিক ব্যবসার লাইসেন্স বৈধ। বহু রিক্রুটিং ও হজ এজেন্সি দীর্ঘদিন ধরে টিকিট সেবা দেওয়ার জন্য একই অফিস থেকে ট্রাভেল ব্যবসা পরিচালনা করছে।
সংগঠনের সদস্যসচিব জুমান চৌধুরী বলেন, এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, পরিবারের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক গ্যারান্টি সীমিত থাকার কারণে তারা বড় এজেন্সি থেকে টিকিট সংগ্রহ করে গ্রাহকদের সেবা দেন। এটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানানো হলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি জানান, ২০২১ সালের আইনে নির্ধারিত শাস্তি সংসদীয় যাচাই-বাছাই এর মাধ্যমে পাস হয়েছিল। সেটিকে হঠাৎ করে তিন বছর কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক। যে কোনো অপরাধের বিচার দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমেই সম্ভব। আলাদা করে অতিরিক্ত কঠোর শাস্তির প্রয়োজন নেই,—যোগ করেন তিনি।
বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে কোনো খাতে অধ্যাদেশ জারি করা হলে তা সাধারণত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জাতীয় সংসদে আলোচনা করে আইন সংশোধন করা অধিক গ্রহণযোগ্য ও যৌক্তিক হবে।
৫ হাজার নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভবিষ্যৎ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অধ্যাদেশটি বাতিলের আহ্বান জানান সংগঠনের নেতারা।
মানববন্ধন শেষে আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ে কাছে স্মারকলিপি দেন।



