আন্তর্জাতিক
ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে সুখবর দিল সৌদি আরব

সৌদি আরবে অবস্থানকালে যেকোনো ধরনের ভিসাধারী একজন মুসল্লি পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন। দেশটির হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ই–ট্যুরিস্ট, ট্রানজিট, শ্রম ও অন্যান্য ভিসাসহ সব ধরনের ভিসাধারীই ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে নতুন এ সুবিধার আওতায় আসবেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সারা বিশ্ব থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যেন আরও সহজে ও স্বস্তিতে পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে চায় সৌদি আরব সরকার। এ জন্য দেশটি ধারাবাহিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন এ উদ্যোগ ওই ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ বলে মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে।
যাঁরা সরাসরি ওমরাহ পালন করতে ইচ্ছুক, তাঁদের জন্য সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ‘নুসুক ওমরাহ’ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা সহজে নিজেদের জন্য উপযুক্ত প্যাকেজ বেছে নিতে ও ওমরাহর ‘অনুমতিপত্র’ সংগ্রহ করতে পারবেন।
এ সমন্বিত ডিজিটাল সেবাব্যবস্থায় ব্যবহারকারীরা খুব সহজে কী কী সেবা চান, তা–ও বেছে নিতে ও সময়সূচি নির্ধারণ করতে পারবেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি প্রকাশ করেছে সৌদি প্রেস এজেন্সি।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুই পবিত্র মসজিদের অভিভাবক বাদশাহ সালমান এবং যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে এ উদ্যোগ। ইমানদারদের নিরাপদ ও আধ্যাত্মিক পরিবেশে দুই পবিত্র মসজিদ পরিদর্শন ও তাঁদের ধর্মীয় আচার পালন করার সুযোগ দিতে তাঁরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি আল্লাহর এই অতিথিদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ ও আধ্যাত্মিক যাত্রা সহজ করতে সেরা সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাঁরা।

আন্তর্জাতিক
ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ বাংলাদেশি নিহত

ওমানের দুকুম সিদরা এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় সাত বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সবাই সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন বলে জানা গেছে।
নিহতদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নে। এরমধ্যে পাঁচজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন— বাবলু, সাহাবুদ্দিন, আমিন সাওদাগর, আরজু ও রকি।
স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, দুকুম এলাকায় মাছধরা শেষে ফেরার পথে একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই কয়েকজনের মৃত্যু হয় এবং বাকিরা হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাণ হারান। একসঙ্গে একই এলাকার সাত প্রবাসীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকায়।
সারিকাইতের এক বাসিন্দা বলেন, একটা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য ছিলেন কেউ কেউ। এই দুর্ঘটনার খবর সহ্য করা সত্যিই কঠিন।
ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাংলাদেশ দূতাবাসও বিষয়টি তদারকি করছে বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক
ভারতীয়দের জন্য যুক্তরাজ্যের ভিসা নীতি শিথিল হবে না: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে একটি উচ্চ-পর্যায়ের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল নিয়ে ভারতে গিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তার এ দুই দিনের সফরের মূল লক্ষ্য হলো সম্প্রতি স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। বুধবার (৮ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে। তবে সফরের আগেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতীয়দের জন্য ভিসা নীতি শিথিল করার কোনো পরিকল্পনা তার সরকারের নেই।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেন যে, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ‘বড় সুযোগ’ রয়েছে। কিন্তু তিনি নিশ্চিত করেন, ভারতীয় কর্মী বা শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন করে কোনো ভিসা সুবিধা খোলার পরিকল্পনা নেই।
উড়োজাহাজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্টারমার বলেন, ভারতের সঙ্গে এই বাণিজ্যচুক্তিতে ভিসার কোনো ভূমিকা নেই। ভিসা নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। তিনি স্পষ্ট করেন যে, তার সরকারের আলোচনার মূল বিষয় হলো ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব, বিনিয়োগ, চাকরি এবং যুক্তরাজ্যের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি, ভিসা নিয়ে নয়।
কয়েক বছর ধরে আলোচনার পর গত জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। এই চুক্তির লক্ষ্য হলো লাখ কোটি পাউন্ডের বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা। এর ফলে যুক্তরাজ্যের গাড়ি ও হুইস্কি অপেক্ষাকৃত সস্তায় ভারতে রপ্তানি করা সম্ভব হবে এবং ভারতীয় পোশাক ও গয়না সস্তায় যুক্তরাজ্যে আমদানি করা যাবে।
এছাড়াও, চুক্তির একটি বিশেষ অংশ হিসেবে যেসব ভারতীয়রা স্বল্পমেয়াদি ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে কাজ করবেন, তারা সামাজিক নিরাপত্তা (সোশ্যাল সিকিউরিটি) ব্যয়ে তিন বছরের জন্য ছাড় পাবেন।
যুক্তরাজ্যের বর্তমান লেবার সরকার দেশটিতে সামগ্রিক অভিবাসন কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে। গত সপ্তাহে দলীয় সম্মেলনেও বিদেশিদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি কঠোর করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ভারতে এসেও স্টারমার সেই অবস্থানেই অটল থাকলেন।
উল্লেখ্য এই সফরে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একশ’রও বেশি উদ্যোক্তা, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক
রসায়নে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী

রসায়নে ২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন এবং ওমর এম. ইয়াগি নামে তিন বিজ্ঞানী। ধাতব-জৈব কাঠামো (Metal–Organic Frameworks বা MOF) উদ্ভাবনের জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে সুইডেনের স্টকহোম থেকে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স।
নোবেল কমিটির ভাষ্যমতে, তারা এমন এক নতুন আণবিক স্থাপত্য (molecular architecture) তৈরি করেছেন, যেখানে ধাতব আয়নগুলো কোণার পাথরের (cornerstones) মতো কাজ করে এবং সেগুলোকে সংযুক্ত করে দীর্ঘ জৈব অণু। এভাবে তৈরি হয় স্ফটিক কাঠামো, যার মধ্যে থাকে অসংখ্য ফাঁপা জায়গা বা গহ্বর। এই ছিদ্রযুক্ত উপাদানগুলোই ধাতব-জৈব কাঠামো বা MOF নামে পরিচিত।
এই কাঠামোগুলো ব্যবহার করে মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ, পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ, বিষাক্ত গ্যাস সংরক্ষণ বা রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার মতো কাজ করা সম্ভব। শুধু তা-ই নয়, এসব MOF বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা ও নির্দিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ শোষণের ক্ষেত্রেও কার্যকর।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান হেইনার লিংকে বলেন, ধাতব-জৈব কাঠামো একটি বিপ্লবী উদ্ভাবন। এগুলো দিয়ে নতুন বৈশিষ্ট্যের, কাস্টমাইজড উপাদান তৈরি করা সম্ভব, যা বিজ্ঞানের বহু অজানা দরজা খুলে দিয়েছে।
এই উদ্ভাবন কেবল একাডেমিক গবেষণাতেই নয়, পরিবেশ রক্ষা, জ্বালানি সংরক্ষণ এবং টেকসই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নির্মাণেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রসায়নে এখন পর্যন্ত ১১৬ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে ২০১৮ সালে ৯৭ বছর বয়সে নোবেল জেতেন জন বি গুডএনাফ। অপরদিকে ১৯৩৫ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে জম্মানজনক এ পদক জেতেন ফেদ্রিক জোলিয়ট।
বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নোবেল ১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। এ পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়েছে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নাম অনুসারে। ঊনবিংশ শতকের এই বিজ্ঞানী শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিনামাইট আবিষ্কার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন। তিনি উইল করে গিয়েছিলেন যে তার যাবতীয় অর্থ থেকে যেন প্রতি বছর পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, শান্তি ও সাহিত্য—এই ৫টি খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারের নামকরণ হবে তার নামে। ১৯৬৯ সাল থেকে এই ৫ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনীতিও।
অর্থনীতি
বিশ্ববাজারে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়ালো সোনার দাম

বিশ্ববাজারে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে সোনার দাম। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সোনার দাম প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ডলার অতিক্রম করেছে। বুধবার এশিয়ার বাজারে সোনার দর আউন্স প্রতি দাঁড়ায় ৪০০০.০১ ডলার, যা বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। খবর এএফপি, রয়টার্স।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারি অচলাবস্থা এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনা কেনায় আগ্রহী হচ্ছেন। এর ফলেই দাম ঊর্ধ্বমুখী।
এছাড়া ফ্রান্সের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাও সোনার বাজারে বড় প্রভাব ফেলেছে। বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে সরে গিয়ে সোনা কেনার দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি শাটডাউন বুুধবার অষ্টম দিনে পৌঁছেছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশ স্থগিত রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা এখন বিকল্প সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে বাজার বিশ্লেষণ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা, বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা ক্রয় বৃদ্ধি, ইটিএফের চাহিদা এবং মার্কিন ডলারের দুর্বলতার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে।
ঐতিহ্যগতভাবে অস্থির সময়ে সোনাকে নিরাপদ সম্পদ হিসেবে দেখা হয়। ২০২৪ সালে স্পট গোল্ডের দাম ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। গত বছরের তুলনায় স্পট গোল্ডের দাম ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, আমরা এখন যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো দাম বেশি থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগকারীরা সোনা কিনছেন এবং এর ফলেই সোনার দাম উর্ধ্বমুখী।
স্পট সিলভার ০.৫ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৪৮.০৩ ডলার, প্ল্যাটিনাম ২.২ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৬৫৩.২১ ডলার এবং প্যালাডিয়াম ১.৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৫৫.৩২ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা ছাড়াও ফ্রান্সের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে।
আন্তর্জাতিক
মিয়ানমারে বৌদ্ধদের উৎসবে জান্তার হামলা, নিহত ৪০

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় এক শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছিল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উৎসবে। সেই আয়োজন ভেস্তে দিতে ভয়াবহ এক বোমা হামলা চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ৮০ জন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও রয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যার দিকে মধ্যাঞ্চলীয় চাউং উ শহরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উৎসব পালনের পাশাপাশি জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির এক নারী সদস্য বলেছেন, সন্ধ্যায় থাদিঙ্গুত পূর্ণিমা উৎসবের জন্য চাউং উ শহরে শত শত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। এ সময় উৎসবে অংশ নেওয়া লোকজন জান্তা শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন। ঠিক সেই সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে সামরিক বাহিনী।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উৎসব ও জান্তা-বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে দুটি বোমা ফেলে অন্তত ৪০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বোমা বিস্ফোরণে আরও ৮০ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, কমিটির সদস্যরা লোকজনকে হামলার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল। যে কারণে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই একটি মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার উড়ে এসে অনুষ্ঠানস্থেলে দুটি বোমা নিক্ষেপ করে।
ওই নারী বলেন, বোমার আঘাতে শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আমরা বিস্ফোরণের স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মানবদেহের খণ্ড-বিখণ্ড অংশ, মাংসের টুকরা ও হাত-পা সংগ্রহ করছিলাম।
সোমবারের সেই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন চাউং উ এলাকার আরেক বাসিন্দা। তিনি বোমা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্যারাগ্লাইডারটি মাথার ওপর উড়তে দেখে দৌড়াতে শুরু করে লোকজন। আর ঠিক তখনই দুটি বোমা ফেলা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে তিনি বলেন, আমার দুই সহযোদ্ধা আমার সামনেই মারা গেছেন। আরও অনেকেই আমার চোখের সামনে নিহত হয়েছেন।
মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও সামরিক জান্তার হামলায় ৪০ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে এই হামলার বিষয়ে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কোনও মুখপাত্রের মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এএফপি।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। সশস্ত্র বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর সঙ্গে জোট বেঁধে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশটির গণতন্ত্রকামীরা।
এদিকে মিয়ানমারে আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দেশটির জান্তা সরকার বলেছে, আগামী নির্বাচনই জাতীয় পুনর্মিলনের পথ তৈরি করবে। তবে, মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা ইতোমধ্যে আসন্ন নির্বাচনকে সাজানো অভিহিত করে তা ঠেকানোর হুমকি দিয়েছে।