কর্পোরেট সংবাদ
দেশের প্রথম এসএমই ডেবিট কার্ড চালু করলো প্রাইম ব্যাংক

দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স সুবিধাসহ এসএমই ডেবিট কার্ড চালু করেছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। ফলে এখন থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (এসএমই) সহজে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক অনলাইন পেমেন্ট করতে পারবেন। এই প্রাইম ব্যাংক এসএমই ডেবিট কার্ড স্থানীয়ভাবে পিওএস, এটিএম ও অনলাইন লেনদেনের জন্যও ব্যবহার করা যাবে। একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো এই এসএমই ডেবিট কার্ড গ্রহণ করতে পারবে, আর পার্টনারশিপ বা লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো এসএমই প্রিপেইড কার্ড গ্রহণ করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক একটি সার্কুলারের আলোকে প্রথমবারের মতো এই কার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। যার মাধ্যমে এসএমই উদ্যোক্তারা অনলাইনে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক পেমেন্ট করতে পারবেন। এ উদ্যোগের আওতায় এসএমই ফাউন্ডেশনে নিবন্ধন যাচাই করার মাধ্যমে এসএমই গ্রাহকরা এখন অনলাইনে ব্যবসা-সংক্রান্ত পেমেন্ট করতে পারবেন। বৈধ ব্যবসায়িক ব্যয়ের ক্ষেত্রে এসএমই ডেবিট কার্ডে প্রতিবার সর্বোচ্চ ৬০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত রিফিল করা যাবে, যা বছরে সর্বোচ্চ ৩,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত রিফিল করা যাবে।
আজ মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) রাজধানীর নিকুঞ্জে অবস্থিত প্রাইম টাওয়ারে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড এসপিডি পরিচালক নওশাদ মোস্তফা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড এসপিডি পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক মো. আয়ুব আলী, যুগ্ম পরিচালক এবং মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের পরিচালক সোহেল আলিম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাইম ব্যাংক পিএলসির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম. নাজিম এ. চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রাইম ব্যাংক সবসময় এসএমই উদ্যোক্তাদের আর্থিকভাবে সক্ষম করে তুলতে উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে কাজ করে আসছে। আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স সুবিধাসহ এই এসএমই ডেবিট কার্ড চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা এখন বৈশ্বিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অংশ নিতে পারবেন। এটি আমাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- হেড অব ডিস্ট্রিবিউশনস মামুর আহমেদ; হেড অব এসএমই মোহাম্মদ আমিনুর রহমান এবং প্রাইম ব্যাংক পিএলসির হেড অব কার্ডস জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল।

কর্পোরেট সংবাদ
ব্র্যাক ব্যাংকের ‘আমরাই তারা’ প্রশিক্ষণ পেলেন চট্টগ্রামের ৩০ জন নারী উদ্যোক্তা

দেশের নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়নে ধারাবাহিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ‘আমরাই তারা’ আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন ৩০ জন সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তা।
গত ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তারা ব্যবসায় পরিচালনা, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের বিষয়ে হাতে-কলমে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। পাশাপাশি তাঁরা নেটওয়ার্কিং এবং ব্যবসায়িক পরামর্শ অর্জনেরও সুযোগ পান, যা তাঁদের ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের প্রেসিডেন্ট মুনীর হাসান এবং ব্র্যাকব্যাংক এসএমই ব্যাংকিংয়ের স্মল বিজনেস টেরিটরি ম্যানেজার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ সম্পর্কে ব্যাংকটির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন বলেন, নারী উদ্যোক্তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। একজন নারী উদ্যোক্তা সফল হলে তাঁর পরিবার, সমাজ ও দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়। ‘আমরাই তারা’ কর্মসূচির মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক তাঁদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস ও সুবিধা দিয়ে সক্ষম করে তুলছে, যাতে তাঁরা টেকসইভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারেন।
‘আমরাই তারা’ হলো নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের একটি বিশেষ ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ, যা গেটস ফাউন্ডেশন-এর সহযোগিতায় পরিচালিত। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো, নারী নেতৃত্বাধীন ব্যবসায়ের জন্য এমন একটি টেকসই পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং বাজার ও অর্থায়নে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা হয়।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক ২০টি জেলায় ৩,০০০-এরও বেশি নারী উদ্যোক্তাকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ভবিষ্যতে ‘আমরাই তারা’ কর্মসূচিটি দেশের সব জেলায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির। এভাবে দেশের আরও বেশি নারী উদ্যোক্তাদের এই সুযোগের আওতায় আনতে ব্যাংকটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কর্পোরেট সংবাদ
চট্টগ্রামে শিপিং এজেন্টদের নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মশালা

শিপিং ইন্ডাস্ট্রিতে নিরবচ্ছিন্ন ট্রেড এবং পেমেন্ট সল্যুশনের প্রসারে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএএ) সহযোগিতায় চট্টগ্রামে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
‘সিমলেস ট্রেড অ্যান্ড পেমেন্ট সল্যুশনস: রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড সেন্ট্রাল ব্যাংক রিপোর্টিং ফর শিপিং এজেন্টস’ শীর্ষক কর্মশালায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শিপিং এজেন্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা হয়। এই খাতে টেকসই উন্নতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আয়োজনে সিনিয়র ব্যাংকাররা অটোমেশন, কার্যকর পেমেন্ট ব্যবস্থা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা পরিপালন এবং রিপোর্টিংয়ে স্বচ্ছতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক আরিফুজ্জামান ও অতিরিক্ত পরিচালক মনিরুল হায়দার।
বিএসএএ থেকে উপস্থিত ছিলেন সিকম শিপিংয়ের মালিক আমিরুল হক ও খায়রুল আলম সুজনসহ অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য পরিচালক ও সদস্যরা। ব্র্যাক ব্যাংক থেকে সেশন পরিচালনা করেন ব্যাংকটির হেড অব রিজিওনাল কর্পোরেট (চট্টগ্রাম) কায়েশ চৌধুরী, হেড অব ট্রানজ্যাকশন ব্যাংকিং এ. কে. এম. ফয়সাল হালিম এবং হেড অব অ্যাকাউন্ট সার্ভিসেস তাহের মৃধা।
একটি দূরদর্শী আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক বিশ্বাস করে, শিপিং ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের মেরুদণ্ড এবং জাতীয় অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। এই খাতের আধুনিকায়নে সহায়তা করতে ব্র্যাক ব্যাংক ক্লায়েন্টদের উদ্ভাবনী আর্থিক ও ডিজিটাল সল্যুশন প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি তাঁদের দক্ষতা বাড়াতে ও নিয়ন্ত্রক নির্দেশনা পালনে সহায়তার পাশাপাশি বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাও ত্বরান্বিত করবে।
দেশের শিপিং খাতের উন্নয়নে ব্র্যাক ব্যাংকের এ ধরনের উদ্যোগ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও বেগবান করবে বলে বিশ্বাস করে ব্যাংকটি।
কর্পোরেট সংবাদ
বক্ষব্যাধি ইনস্টিউট ও হাসপাতালে এবি ব্যাংকের কালেকশন বুথ উদ্বোধন

এবি ব্যাংক পিএলসি পূর্ণাঙ্গ আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা নিয়ে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিউট ও হাসপাতালে একটি কালেকশন বুথ উদ্বোধন করেছে। ব্যাংকের মহাখালী শাখার অধীনে পরিচালিত এই বুথটি হাসপাতালের সকল ফি জমা নেয়াসহ ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের পে-রোল সুবিধাদি প্রদান করবে।
বুথটির উদ্বোধন করেন এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মিজানুর রহমান এবং জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিউট ও হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. গোলাম সারওয়ার, চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ; আল মেহেদী, এবি ব্যাংকের ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধান তানিয়া সাত্তার এবং মহাখালী শাখার শাখা ব্যবস্থাপক চৌধুরী এ.এন.এম মোশারফ আলী বেগসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ।
কর্পোরেট সংবাদ
আইএফআইসি ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার পদোন্নতি প্রদান

পেশাগত কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়ার নিরলস প্রয়াসের স্বীকৃতি হিসেবে অক্টোবর মাসে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির ১৩৬ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে চলতি বছরেই আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির বিভিন্ন পদে মোট পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৯১৩ তে উন্নীত হলো।
গত রবিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর আইএফআইসি টাওয়ার-এ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হাইব্রিড পদ্ধতিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা এবং সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ৪০ জন কর্মকর্তার হাতে সরাসরি পদোন্নতির পত্র হস্তান্তর করা হয় এবং ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা ও উপশাখায় কর্মরত আরও ৯৬ জন কর্মকর্তার কাছে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পদোন্নতি পত্র প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা বলেন, আমাদের প্রতিটি সফলতার পেছনে যাঁরা নীরবে, নিষ্ঠায় ও দক্ষতায় অবিচল থেকেছেন- তাঁরা হলেন আইএফআইসি ব্যাংকের প্রকৃত শক্তি। আপনাদের কঠোর পরিশ্রম, দায়িত্বশীলতা ও প্রতিশ্রুতিই আজ আমাদের প্রতিষ্ঠানকে এ জায়গায় নিয়ে এসেছে। আপনাদের প্রতি আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পদোন্নতি শুধু একটি স্বীকৃতি নয়—এটি এক ধরণের সম্মান, যা কর্মীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং একটি অনুপ্রেরণামূলক কর্মপরিবেশ গড়ে তোলে। আমরা বিশ্বাস করি, এই সম্মান আপনাদের আগামী দিনগুলোর পথচলাকে করবে আরও দৃঢ়, আরও উদ্যমী এবং আরও সফল।
কর্পোরেট সংবাদ
এস আলমের অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ব্যাংক খাতের অর্থ লুটকারী এস আলম কর্তৃক অবৈধভাবে নিয়োগকৃত অদক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইসলামী ব্যাংক থেকে অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরাম।
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। একই সাথে সারাদেশে ইসলামী ব্যংকের প্রতিটি শাখার সামনে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম অবিলম্বে ইসলামী ব্যংক থেকে এস আলমের মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্ত করার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক থেকে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণের আহ্বান জানান। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে অবৈধ এসব কর্মকর্তাদের অপসারণ করা না হলে শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকরা বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে বলে জানিয়েছেন।
প্রধান কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মো. মোহতাছিম বিল্লাহ, হাফিজুর রহমান, ইমাম হোসাইন, মাহমুদুল হাসান, এটিএম সিরাজুল হক, ড.হারুনুর রশিদ, মো. মুস্তাফিজুর রহমান ও মো. রতন সহ আরো অনেকে।
এসময় ইসলামী ব্যংক গ্রাহক ফোরাম, সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম, ইসলামী ব্যাংক প্রাক্তন ব্যাংকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী চাকুরী প্রত্যাশী পরিষদ, সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক সিবিএ এবং সচেতন ব্যাংকার সমাজ একই দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যংক জবরদখল করে নেয়। এ ব্যাংক থেকে বৈধ মালিকদের ভয় দেখিয়ে বিদায় করে। পাশাপাশি বিদেশী শেয়ারহোল্ডারদেরও নানাবিধ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিতাড়ন করে। এ ব্যাংককে নিজের কব্জায় নিয়ে তিনি ইচ্ছামত নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা আয় করেছেন। তিনি কোন রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই পটিয়া চট্টগ্রামের লোক নিয়োগ দিয়ে এ ব্যাংকের চমৎকার কর্মপরিবেশ এবং উন্নত গ্রাহক সেবা ধ্বংস করে দিয়েছেন।
বক্তারা বলেন, ইসলামী ব্যাংক মানবতা দেখিয়ে এতদিন এসব কর্মকর্তাদের চাকরিতে রেখেছে। এতে ব্যাংকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিবছর এসব অবৈধ কর্মকর্তার পিছনে ১৫০০ কোটি টাকার উপরে ব্যায় হচ্ছে। ইসলামী ব্যাংক তাদের বৈধ করার জন্য যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার আয়োজন করেছিল। ব্যাংকের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে তারা এ বাংকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বড় ধরণের বিদ্রোহ। এ ধরণে বিদ্রোহীদের ব্যাংকে বহাল রাকার আর কোন বৈধ পথ খোলা নাই। তাদেরকে দ্রুত অপসারণ করার জন্য বক্তারা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। তারা সারা দেশ থেকে মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেয়ার দাবী জানান।
তারা আরো বলেন, অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণকে কোন ভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন বলা যাবে না। ৬৩ টি জেলার মানুষকে বঞ্চিত করে শুধুমাত্র পটিয়া এবং চট্টগ্রামের লোকদের রাতের আঁধারে বাক্স বসিয়ে চাকরি দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মানবাধিকার লংঘন করা হয়েছিল। অবৈধ কর্মকর্তাদের অপসারনের মাধ্যমে এ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকরা যেকোন মূল্যে ইসলামী ব্যাংককে মাফিয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে।
জানা গেছে, এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের পর ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদমর্যাদায় শুধুমাত্র চট্টগ্রামের ৭২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ৪৫০০ জনের বেশি শুধুমাত্র পটিয়া উপজেলার। সারা দেশের চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে একটি জেলার প্রার্থীদের গোপনে নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের শৃংখলা চরমভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
এছাড়াও ব্যাংকের পুরোনো কর্মীদের ব্যাংক থেকে বিতাড়ন করে নিজ উপজেলার লোক নিয়োগ দেয়ার কর্মসূচী হাতে নেয় এস আলম। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে জুলাই বিপ্লব পর্যন্ত ব্যাংকের দেড় শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারিকে নানাবিধ ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় এবং বরখাস্ত করে।
নূরুল হক নামক একজন ড্রাইভার বলেন, আমাকে তৎকালীন এইচআরের একজন প্রতিনিধি ডেকে নিয়ে বলেন “আপনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। তা না হলে আপনি সার্ভিস বেনিফিট থেকে বঞ্চিত হবেন।” বাধ্য হয়ে আমি পদত্যাগপত্র জমা দেই। এভাবে বারবার চাপ দেয়া হয়। আমার মত খলিল, আব্দুর রহমান, আব্দুল মোমিন ও দেলোয়ারও পদত্যাগপত্র জমা দিতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, এভাবে ড্রাইভার, মেসেঞ্জার ও ক্লিনারসহ কয়েকশ নিম্নপদস্থ এবং আরো বেশ কিছু কর্মকর্তা ও নির্বাহীদের জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো হয়। আমাদের সবারই চাকরির বয়স আরও পাঁচ বছর অবশিষ্ট ছিল। এস আলমের পিএস আকিজ উদ্দিন পটিয়া উপজেলা থেকে লোক নিয়োগ দেয়ার জন্য এমন করেছিল বলে তিনি জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাহী বলেন, এস আলমের কথামত ভুয়া বিনিয়োগের ফাইলে সাক্ষর না করায় ব্যাংকের বেশ কজন ঊর্ধ্বতন নির্বাহীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের হাতে হাতকড়া পরিয়ে অপরাধী হিসেবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
উল্লেখ্য, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তার যোগ্যতা ও দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য ব্যাংক ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র মাধ্যমে মূল্যায়ন পরীক্ষার আয়োজন করে। এসব কর্মকর্তারা মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করে। ২৭ সেপ্টেম্বর এসব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ৫৩৮৫ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বলা হয়। ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে এদের একটি বড় অংশ অর্থাৎ ৪৯৭১ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। এর মধ্যে ৪১৪ জন কর্মকর্তা মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেন। যারা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ব্যাংক তাদের ওএসডি করেছে এবং বিদ্রোহী ৪০০ জনকে চাকুরিচ্যুত করেছে। পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত তাদেরকে অপারেশনাল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।